নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিড লাইফ ক্রাইসিস এবং দাম্পত্যে উল্টোযাত্রা: ভাবতে হবে এখুনি

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪

[লেখাটি কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষনালব্ধ নয়। বিধায় তথ্যগত বিভ্রাট হতেই পারে। লেখার মূল থীমটুকু অনুধাবন করলে ভাল হবে। আমার ডাক্তার ও সমাজবিজ্ঞানী বন্ধুরা দরকারী সংশোধনী দিলে খুশি হব। বিশাল লেখা হওয়া স্বত্বেও সিরিজ আকারে দিলাম না, কারন আমাদের পাঠকের সিরিজ পড়ার হার খুবই কম। আমি বিশ্বাস করছি, যাদের কাছে জরুরী মনে হবে, তারা লেখাটি একবারেই পড়বেন।]

একটা উপমা দিয়ে শুরু করি। এই এনালজিটা অনেকবার আমি লিখতে গিয়েও লিখিনি। ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত হতে পারে-এই ভয়ে। এমনিতেই আমরা বাঙালীরা প্রচন্ড জাজমেন্টাল। বিষয়ের খুব গভীরে না গিয়েই কাউকে মাটিতে নামিয়ে আনি মুহূর্তেই। যাহোক, বক্তব্যের মূল সুরটি ধরতে চেষ্টা করুন। ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে যারা চাকরী করেন, তারা জানেন, এখানে উৎপাদনকারী বিভাগগুলোতে মানুষ প্রথমে শ্রমিক পর্যায়ে কাজে ঢোকে। ধীরে ধীরে তারা অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা বাড়িয়ে একসময়ে বড় হতে হতে জিএম পর্যায়ে উন্নীত হন। তো এই উৎপাদন বিভাগগুলোতে যারা আসেন, তারা চাকরীতে ঢোকার কিছুদিন পরে সাধারনত তাদের সহকর্মী নারীদের বিয়ে করে সংসার পাতেন। তারপর একটা সময়ে ওই নারীটি সংসারের বাস্তবতায় কর্মক্ষেত্র ছেড়ে সংসারে হারিয়ে যান। স্বামী প্রবর স্বাভাবিক সাংসারিক বাস্তবতাতেই কাজ চালিয়ে যান। তারপর একদিন তিনি ভাগ্য ভাল থাকলে জিএম লেভেলে চলে যান। এই পথ পরিক্রমায় তিনি নানারকম পরিবর্তন, পরিমার্জন, ব্যক্তিগত হালনাগাদকরন, শিক্ষন প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে যাবার সুযোগ পান। তাতে একজন ব্যক্তি হিসেবে তার উন্মেষ ঘটে। একই সাথে পরিবর্তন ঘটে তার রুচী, পছন্দ, দৃষ্টি, চাহিদা আর স্বভাবে। ওই আমরা যাকে ’জাতে ওঠা’ বলি আরকি। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই তার সামাজিক স্ট্যাটাস আর চাহিদা বদলে যায়। কিন্তু মুশকীল হল, তার ওই যে শ্রমিক স্ত্রী (অপারেটর কিংবা হেলপার পর্যায়ের) যাকে তিনি সেই বছর কুড়ি আগে বিয়ে করেছিলেন, তিনি তো সেই সংসারের ঘানি টানার আর হেশেল, বাচ্চাকাচ্চা সামলানোর মধ্যেই ছিলেন। তিনি তো আর তার স্বামীর মতো এ্যাডভান্সমেন্টের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ পাননি। ফলে স্বামী জিএম হয়ে গেলেও তিনি তো রয়ে গেছেন শ্রমিকই (তুচ্ছার্থে নয়)। তার উপর বয়সের ফেরে তার সেই তরুনী বয়সের গ্ল্যামারও গেছে হারিয়ে। ফলে তার জিএম স্বামীর তো আর ওয়ার্কার বউ ভাল লাগে না। বিভিন্ন কর্পোরেট অনুষ্ঠানে তখন ননগ্ল্যামারাস বউকে নিয়ে যেতে দ্বিধায় ভোগেন। আমার এক সহকর্মীর ভাষায়, “স্বামী না হয় জিএম সাব হইছে, বউতো আর জিএম হয় নাই।” (এখানে কোনো পেশাকে খাটো করে দেখানোর জন্য কথাটি বলা হয়নি। প্রতিটি পেশাই সমান মর্যদাপূর্ন)।

এবার কাজের কথায় আসি। কথাটা হল চালশে বয়সের দাম্পত্য আর ব্যক্তিগত দৃষ্টির পরিবর্তন ও সংঘাত নিয়ে। চালশেতে দাম্পত্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে। সম্পর্ক লঘু হয়ে যাওয়া নিয়ে। বাঁধনটা আলগা হয়ে যাওয়া নিয়ে। আমার এক বন্ধু জহির একবার আমাদের একটা ব্যাচভিত্তিক গ্রূপে লিখল, "৪০ খুব অস্থির বয়সকাল। মেয়ের মাও তাকায়, মেয়েও তাকায়।" এই লেখাটা পড়ে আমার এই বিষয়টা নিয়ে লেখার ইচ্ছা জাগে। এমনিতেই মানুষে মানুষে সম্পর্ক আমার লেখার প্রিয় বিষয়। চল্লিশ বা সংলগ্ন বয়সে সত্যিই মিড লাইফ ক্রাইসীসে নর ও নারী অবশ্যম্ভাবীভাবে আক্রান্ত হবে আর তাদের মধ্যেকার একসময়কার প্রেম তরল হয়ে পড়বে-সেটা সুনিশ্চিত না হলেও অনেকটা অলঙ্ঘনীয়। অল্পকিছু ব্যতিক্রম ছাড়া কাহিনীতে টুইস্ট আসার হার খুবই বেশি।

একটু উইকি করা যাক, midlife crisis বিষয়টা আগে বুঝতে:-”A midlife crisis is a transition of identity and self-confidence that can occur in middle-aged individuals, typically 45–64 years old. The phenomenon is described as a psychological crisis brought about by events that highlight a person's growing age, inevitable mortality, and possibly shortcomings of accomplishments in life. This may produce feelings of depression, remorse, and anxiety, or the desire to achieve youthfulness or make drastic changes to current lifestyle.” চালশেতে সম্পর্ক ও দাম্পত্য পানসে হয়ে পড়ে-সেটি কি আপনি বিশ্বাস করেন? না করলে ভাল। যদি করে থাকেন, তবে ভেবে দেখেছেন, কেন? কারনগুলো একটু তলিয়ে দেখুন। তবে কারন যাই হোক, এখানে “এক হাতে তালি বাজে না” তত্ত্বটি নিরঙ্কূশভাবে প্রযোজ্য হবে না। দাম্পত্যে কখনো কখনো একহাতে তালি বাজে। কীভাবে? আরো পড়ুন।

আমার এক পরিচিত লোক ছিলেন। অফিস হতে বাসায় যেতে যেন তার রাজ্যের অনিহা। ভোরে অফিস ধরতে বের হতেন। সাথের সহকর্মীরা বাসায় যেতে উদগ্রীব হলেও তিনি রাত নামলেও অফিস ছাড়ার নাম করতেন না। তারপর যখন অফিসও বন্ধ হয়ে যেত, তিনি বাসার এলাকায় ফিরে দোকানে চা পান খেতেন, দেশের খোঁজখবর নিতেন, রাতের ঢাকা শহর দেখতেন। রাত গভীর হলে আর না পেরে বাসায় ফিরতেন। কারন? অনেক। তার মধ্যে একটা হল, ঘরে পড়ন্ত বয়সি গ্লামারলেস স্ত্রী। সন্তানদের সাথে জেনারেশন গ্যাপ। আর অফিসে অফুরন্ত ওয়াইফাই। জাজমেন্টাল হবার ঝুঁকি নিয়ে একটা অবজারভেশন বলি। প্রতিদিন আমি যখন আমার মিরপুরের বাসায় ফিরি, তখন সনি সিনেমা হল, লাভ রোড সংলগ্ন চায়ের আড্ডাগুলোতে এমনকি রাত ১০ টার দিকেও প্রচুর বয়সী, মাঝবয়সী পুরুষ মানুষকে দেখি, চা হাতে আড্ডা দিচ্ছে। বাসাবাড়ি বলতে তাদের কিছু আছে-সেটা তাদের অগ্যস্ত আড্ডার শরীরি ভাষা দেখে মনে হয়না। (অন্য আরো দিক আছে সেটা মাথায় রেখেও বলি) বাসায় ফেরার তাড়া নেই-এটা একটা বাস্তবতা। অনেক কারনের মধ্যে মধ্যবয়সী দাম্পত্যের লঘু আকর্ষণ আর পানসে হয়ে পড়া সম্পর্ক অন্যতম।

মিড লাইফ ক্রাইসিস কত বয়সে ঘটে?
উইকিপিডিয়া ঘেঁটে যা পেলাম, তা হল: এই অবস্থা ৪৫-৬৪ বয়সের দিকে হতে পারে। তবে এর মানে এটা নয়, যে প্রতিটি মানুষের ঠিক মধ্যজীবনেই এই সংকট হানা দেয়। এর সংক্রামকতা পুরুষদের মধ্যে ৩-১০ বছর এবং মহিলাদের মধ্যে ২-৫ বছর। মিড এজ ক্রাইসিসের লক্ষণ একজন মানুষের ওপরে কীভাবে পড়তে পারে জানতে আবারো উইকি করি:-
১.a deep sense of remorse for goals not accomplished.
২.a fear of humiliation among more successful colleagues.
৩.longing to achieve a feeling of youthfulness.
৪.need to spend more time alone or with certain peers.
৫.a heightened sense of their sexuality or lack thereof.
৬.ennui, confusion, resentment or anger due to their discontent with their marital, work, health, economic, or social status.
৭.ambitious to right the missteps they feel they have taken early in life

সহজ ভাষায় দাম্পত্যে মিড লাইফ ক্রাইসিসের প্রভাব সম্পর্কে বলতে গেলে বলব:
১.ঠুনকো ও পলকা বিশ্বাসের জগত এবং ক্রমহ্রাসমান দাম্পত্য শান্তি মিড লাইফ ক্রাইসিসের সবচেয়ে বড় নেতিবাচক প্রভাব।
২.দ্বন্দ্ব, সন্দেহ, অবিশ্বাস...........অতঃপর ঝগড়া, হানাহানি, কানাকানি, সম্মানহানি আর অতঃপর অবশ্যম্ভাবিভাবে বিচ্ছেদ কিংবা পৃথকবাস অথবা পরকীয়া-অত্যন্ত কমোন পরিণতি।
৩.মিড লাইফ ক্রাইসিস মানসিক বৈকল্যেও গড়ায়। যখন সমাধানের কোনো পথ খোলা না থাকে বা রাখা না হয়। নিরুপায় মন বিকৃতির জন্ম দিতে বাধ্য।
৪.মিড লাইফ ক্রাইসিসজনীত পারিবারিক জটিলতা সন্তানদের মনোঃজাগতিক বৃদ্ধিতে সুদীর্ঘ প্রভাব ফেলে। তাদের মানসিক গঠন বাঁধাগ্রস্থ কিংবা নেতিবাচকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরিণতিতে ভবিষ্যতে তারা একজন সুযোগ্য মানুষ হয়ে ওঠার পরিবর্তে বিভিন্ন ধরনের অসংগতি, বিকৃতি নিয়ে সমাজের বিষফোড়ায় পরিণত হয়।
৫.মিড লাইফ ক্রাইসিসের গভীর সামাজিক ক্ষত আছে। অসুখী নারী ও ততোধিক অসুখী পুরুষ তাদের আশপাশের সমাজকে কলুষিত করতে বাধ্য।

কেন দাম্পত্যে হানা দেয় মিড লাইফ ক্রাইসিস:-
আমাদের দেশে আজকাল গড়পড়তা পুরুষ মানুষ বিয়ে করেন ২৫ হতে ৩২/৩৩ এর মধ্যে। আজকালকার বিয়েশাদির একটা বড় অংশই হয় লাভ ম্যারেজ কিংবা লাভ পরবর্তি এ্যারেঞ্জড ম্যারেজ। তো এহেন লাভ ম্যারেজে পুরুষ ও নারী দীর্ঘদিন নিজেদের মধ্যে নানা মিথষ্ক্রীয়া, মান অভিমান, জানা শোনা দেখা, বিনিময়শেষে অবশেষে যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তখন তাদের মধ্যে শক্ত বাঁধন তৈরী হবারই কথা। (আমি বিয়ে বললেও, বিয়েসহ যেকোনো যৌথবাসকেই দাম্পত্য হিসেবে ধরছি। ) কিন্তু কেন যেন এদেশে হয় তার উল্টো। নর ও নারী যেন নিজেদের আবিষ্কার করেন, “আর কী ই বা জানার আছে”-অবস্থায়। নিজেদের আর আবিষ্কার করার, পরষ্পরকে জানার, বোঝার, বোঝানোর, বুঝে নেবার, মানার, মানিয়ে নেবার আগ্রহ বাড়ার বদলে যেন হারিয়ে ফেলতে শুরু করেন। দৃষ্টিভঙ্গীটি এমন, প্রেম টিকিয়ে রাখতে বহু ছাড় দিয়েছি। এখনতো গাঁটছড়া বেঁধেইছ। এখন তাহলে আর এত আপোষ কেন? নর ও নারী উভয়ের মনেই একই অনুভূতি কাজ করতে শুরু করে। দিনদিন সেটা কমার বদলে বাড়তে থাকে। মধ্যবয়সে, যখন নর ও নারীর শারিরীক আকর্ষণও কমতে থাকে, তখন আর কাছে আসার কোনো কারন খুঁজে পান না তারা। বিবাহপূর্ব প্রেম বা বিবাহ পরবর্তি স্বল্পকালীন প্রেম চোখে একটা রঙিন চশমা পড়িয়ে রাখে। অনেক অসম্ভব আর অসঙ্গতিই তখন চাপা পড়ে থাকে উছলে পড়া আবেগের কাছে। রোমান্টিসিজমের পর্দাটা ছিন্ন হতে শুরু করে চালশেতে। আবার মনে করাই, আমি আলাদাভাবে কোনো কারন বা সম্প্রদায়কে মিড লাইফ ক্রাইসীসের জন্য দায়ী মনে করছি না। আমি শুধু ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে কথা বলছি। আর যেহেতু আমি সমাজবিজ্ঞানী কিংবা মনোবিজ্ঞানী কোনোটাই না, তাই প্রমানিত সত্য আমার লেখা হতে আশা করা বৃথা।

আমি যতটুকু বায়োলজি বুঝি, গড়পড়তা ৪০ বছরের পরে (৪৫ হতে ৫১ বছরে) অধিকাংশ বাঙালী নারীর মেনসট্রূয়াল পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে তার প্রজনন ক্ষমতা রহিত হয়। মেনোপজ হয়ে যায় তারও কিছুদিনের মধ্যে। (মেডিক্যাল ফ্যাক্ট ভিন্ন হতে পারে)। ফলাফল, স্বামী বা পার্টনারের সাথে শারিরীক বিষয়গুলো তার দিক হতে আবেদন হারায়। সৃষ্টির অমোঘ নিয়মেই নারীর বায়োলজিক্যাল বৃত্তিগুলো বেশিরভাগই তাদের জন্য বিরাট বিরাট একেকটি ঝড়ের মতো। রীতিমতো বিপদ বলা চলে। মেনোপজের অবশ্যম্ভাবি পরিণতি ছাড়াও নারীকে সন্তানধারন, মেনসট্রুয়েশন, প্রসব পরবর্তি প্রভাব, জটিলতা, নাজুক শারিরীকবৃত্তিক প্রক্রিয়ার প্রভাবে নানা জটিলতায় আক্রান্ত হওয়া-এসবকিছুর ভিতর দিয়ে যেতে হয়। মেনোপজের স্বাভাবিক কিছু শারীরবৃত্তিক প্রভাব আছে। আছে মানসিক পরিবর্তনও। কিন্তু তার বিপরীতে তার পার্টনার বা স্বামী তথা পুরুষের পিরিয়ড বন্ধ হওয়া বা মেনোপজের মতো কোনো বয়সভিত্তিক শারিরীক পরিবর্তন নেই। হ্যা, আরো অনেক বয়সের পরে (৮০ পর্যন্তও হতে পারে) পুরুষের শারিরীক চাহিদা ও প্রজনন ‍উর্বরতারও অবসান ঘটে। যেটা নারীর স্বাভাবিক যৌনাকর্ষন অবসানের বয়সের অনেক পরে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, মধ্যবয়সে নর ও নারীর যৌথবাসের অন্যতম প্রধান অনুঘটকটিতে একপাক্ষিক পরিবর্তন ঘটে। অনেকেই এটাকে চালশেতে দাম্পত্য সম্পর্কে অব্যাখ্যাত অবনমনের সবচেয়ে বড় কারন মনে করেন।

এবার দেখি আমাদের বীরপুঙ্গব পুরুষদের দিকটা। একটা কথা বলা হয়ে থাকে। পুরুষ কখনো বুড়ো হয় না। পশ্চিমে নাকি যৌবন আসেই ৬০ বছরে। বঙ্গদেশে তার পুনর্জন্ম ঘটে ষাটে। নারীর নানারকমের শারিরীক ও মানসিক সৃষ্টিগত বাস্তবতার বিপরীতে আমার পুরুষপুঙ্গবদের প্রায় কোনোরকম শারিরীক জটিলতা বা বাস্তবতার ভিতর দিয়ে যেতে হয় না। তারা থাকেন হাত পা ঝাড়া। তাছাড়া নারীর চির রক্ষণশীল যৌনপছন্দের বিপরীতে পুরুষ একেবারেই উন্মুক্ত। তাকে পরিণতি নিয়ে যেহেতু ভাবতে হয় কম, দায় নিতে হয় কম, তাই তার চাহিদা ও দাবী থাকে তীব্র, তাৎক্ষণিক ও প্রগলভ। নারী স্বাভাবিকভাবেই অনেক রক্ষনশীল, চিন্তাশীল আর চুজি হয়ে থাকে একটি সম্পর্কে। বিশেষত তা যদি শারিরীক সম্পর্কে গড়াতে হয়। একই অভ্যাস বজায় থাকে গৃহবাসী দাম্পত্যেও। পুরুষের নাকি কোনো চয়েজ নেই। নেই কোনো পিছুটান। নেই সময়ের বাঁধা রুটীন। বিপরীতে নারীকে ভাবতে হয় অনেক কিছু। তার উপরে আছে সৃষ্টির অদ্ভূৎতম সৃষ্টি নারীর জটিল মনোঃবৃত্তীয় জগত। সবমিলে দাম্পত্য শুরুর এক বা দেড় দশক পরে পুরুষ ও নারীর মধ্যে সার্বিক সমঝোতার দাবীর পরিমান এত এত বেড়ে যায়, যে দু’জনের পক্ষেই তাকে সামলে নেয়ার ক্ষমতা বা ইচ্ছা কমতে বাধ্য। যার স্বাভাবিক পরিণতি শীতল দাম্পত্য হতে শুরু করে দাম্পত্যে ভাঙনেও গড়ায়। আর যখন সম্পর্ক না ভেঙে জুড়ে থাকে স্রেফ সামাজিক বা পারিবারিক বাস্তবতায়, সন্তানের দায়ে, তখন দাম্পত্য পা বাড়ায় নিষিদ্ধ পথে। আমি বহু ঘটনাতে দেখেছি, এক পুরুষ নারীর গর্ভধারনের ৯-১০ মাসেই ধৈর্য হারায়, জড়ায় অন্য সম্পর্কে। একই চর্চা দেখতে পাই প্রবাসী স্বামীর স্ত্রীদের একটা বড় অংশের বিষয়ে। সংযম ও অপেক্ষার স্বল্পায়ুর অভিযোগনামা বাড়ছে আজকাল। আলোচনাকে ওপথে আর বেশি নাই বা নিলাম।

আমাদের দেশের টিপিক্যাল ও ট্রাডিশনাল সামাজিক ও পারিবারিক ধারা মিড লাইফ ক্রাইসিসের জন্য অনেকখানি দায়ী। আমাদের পরম্পরা ও ঐতিহ্য-যাকে আমরা আমাদের গৌরব মনে করি, তার বেশ কিছু বিষয় ব্যক্তিপর্যায়ে মিড লাইফ ক্রাইসিসের জন্ম দেয়-এটা বিশ্বাস করবেন? মানতে কষ্ট হবে, তবু বলি। আমাদের দেশের সমাজ বাস্তবতায়, একজন মানুষ, বিশেষত পুরুষরা জন্মে আর বাঁচেই যেন অন্যের জন্য। বিশেষত বাবা-মায়ের বৃদ্ধকালের অবলম্বন হবার জন্যই যেন তাদের জন্ম। এর স্বাভাবিক ফল হিসেবে পরিবার ও সমাজের দাবীর তীব্র চাপ থাকে নতুন সংসার পাতা নর ও নারীর ওপর। সেই চাপ ও দাবী মেটাতে তারা তাদের নিজেদের জীবন ও দাম্প্যত্যেকে জানা, বোঝা, উপভোগ করার সুযোগ অনেক কম পায়। একটা দীর্ঘ সময় ধরে তারা স্যাকরিফাইস ও কম্প্রোমাইজ করতে বাধ্য হয়। তবে এই ত্যাগ যতই মহান হোক, তার অন্য ফল তো ফলবেই। যেটা গিয়ে ধাক্কা দেয় মধ্য বা পড়ন্ত বয়সে, যখন তাদের দায়ীত্বের বোঝাটা একটু হালকা হয় কিংবা বাঁধনটা একটু আলগা হয়। নর ও নারী উভয়ই তাদের হৃত ক্ষমতা, অধিকার, যৌবন, সুবিধা, প্রাপ্যগুলো পুষিয়ে নিতে চায়। ফলাফল? স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে চাওয়া আর পাওয়ায় বিরাট ব্যবধান। মনোমালিন্য, কলহ, কর্কষ দাম্পত্য তখুনি আসে। নারী বিশ্বাস করে না তার নরকে। স্বামী সহ্য করতে পারে না তার স্ত্রীর তথাকথিত খবরদারী, অতিরিক্ত চাওয়াকে। এককালের টম ক্রূজের মতো স্বামী ততোদিনে টাকপড়া এক ব্যাটা মানুষ হয়তো। স্ত্রীও হয়তো তিন বাচ্চার গ্ল্যামারলেস মা। নর ও নারীর চোখ তখন খোঁজে অদৃশ্য কোনো নতুন টম ক্রূজ বা কেট উউন্সলেটকে। দু’জনের মধ্যে আবার একজন যদি একটু বয়স বেঁধে রেখে থাকতে সক্ষম হন, তখন সমস্যা আরো বাড়ে। নারী তার গ্ল্যামারাস হাসবেন্ডকে সন্দেহ করতে শুরু করে। স্বামী আবার ভাবে, আমি যেহেতু আকাশপানে তাকাই, সেও নিশ্চই!!! হাসবেন না। রাগবেন না। রাস্তাঘাটে একটু চোখ বোলালে সত্যতা পাবেনই। পার্কে, সিনেমায়, মাঠে আপনি সৌন্দর্যের খোঁজে থাকা মধ্যবয়সী নর ও নারী-উভয়ের দেখাই পাবেন।

আমাদের সমাজ বাস্তবতায় পুরুষকেই মূলত একাই সংসারের আর্থিক দায়ীত্ব নিতে হয়। কখনো সেটা বাস্তবতার চাপে, কখনো তার তীব্র অহংবোধের জন্যও। ২৫-৩০ বয়সের একজন পুরুষ যখন একা থাকে, তখন সে তার বাবা-মা সহ ভাইবোন কেন্দ্রীক পরিবারের দায়িত্ব নেয়। তারপর স্ত্রী সন্তান এলে তারাও ওতে যোগ হয়। তার উপর যোগ হয় প্রবল সামাজিক চাপ, প্রতিযোগীতা, ওপরে ওঠার, প্রতিষ্ঠিত হবার, ভবিষ্যতের সঞ্চয়ের চাপ। তার দাবী মোকাবেলা করতে গিয়ে পুরুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ে বিত্ত বানাতে। বিত্তের দৌড়ের একটা চোরাবালি পরিণতি হল, সে কখনো তার খোঁজক বা প্রেমিককে মুক্তি দেয় না নিজের প্রেতযোনী হতে। একবার কড়ির ধান্দায় পড়লে পুরুষ তা হতে কখনো বের হতে পারে না। ঘরের নারী ও বাচ্চারাও বিত্তের স্বাদ পেতে পেতে তা থেকে আর বের হতে পারে না। বরং দিনকে দিন বাড়ে তার সর্বগ্রাসী ক্ষুধা। লক্ষীর পেছনে অন্ধের মতো ছুটে চলা পুরুষ আর তাতে ইন্ধন দিতে থাকা নারী থামতে পারে না। টাকা কামানোর কূহক স্রোতে হারাতে থাকে পারষ্পরিক সময়, সম্পর্ক, বিনিময়, প্রেম, যৌনতা, সামাজিকতা, নানা দাম্পত্য মিথষ্ক্রিয়া। টাকা হয়তো আসতে থাকে বানের পানির মতো। কিন্তু তাকে ধরার যুদ্ধ লড়তে গিয়ে আলগা ও পাতলা হতে থাকে নর ও নারীর পবিত্র বাঁধন। তারপর যখন বিত্ত কামানো শেষ, তখন উভয়ে খেয়াল করে দেখে, দু’জনের মধ্য হতে অভাবের সাথে সাথে ভালবাসাও সরে গেছে বহুদূরে। শুকিয়েছে সেই এক কালের প্রেমের স্রোত। ব্যাসিক হিউম্যান ইন্সটিঙ্কট ফেরত আসতে তাড়া দেয়, কিন্তু তখন অনেক দেরী। তারপর যেটা হয়, তা হল, স্বামী আর স্ত্রীর কিছুদিন সেই যৌবনের দাম্পত্য প্রেমের ছন্দে ফেরার চেষ্টা। কিন্তু তা ওই কিছুদিনই মাত্র। অচীরেই তারা ব্যর্থ হয়, বা হতে বাধ্য হয়। দাম্পত্য শুকনো কাদামাটি নয়, যে জল ঢাললেই তা নরম কাদায় পরিণত হবে।

আমি যদি খুব সংক্ষেপে বোদ্ধাদের কথার অনুরনন ঘটাই, তাহলে নিচের বিষয়গুলোকেও মিড লাইফ ক্রাইসিসে অশান্ত দাম্পত্যের কারন হিসেবে দেখাব:
১.আমার কাছে মনে হয়, দাম্পত্যের সত্যিকার লক্ষ্য, থীমটাই আমরা বুঝি না। সমাজ অনুমোদিত যৌনতার অধিকার প্রাপ্তিটা যে বিয়ের বা দাম্পত্যের মুখ্য লক্ষ্য নয়, সেটা আমরা না জেনেই সম্পর্কে গাঁটছড়া বাঁধি।
২.যৌনতা কিংবা সামাজিক যৌথবাসের বাইরেও যে দাম্পত্যে অনেক কিছু করার আছে, সে নিয়ে আজতক আমাদের দেশে কোনো প্রিম্যারেজ কাউন্সেলিং বা গ্রূমিং হয় বলে আমি অন্তত শুনিনি।
৩.যুক্তি দিয়ে বোঝানো কঠিন, তবু বলছি, শিক্ষার বিস্তার খুব অদ্ভূৎভাবে হলেও এদেশে মিড লাইফ ক্রাইসীস বাড়াচ্ছে। কীভাবে? শিক্ষা (বা তথাকথিত প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী) মানুষকে দায়ীত্ববান ও কম্প্রোমাইজিং হবার বদলে আত্মকেন্দ্রীক ও অনমনীয় হবার সাহস যোগাচ্ছে। আপোষ যেখানে নেই, ক্রাইসীস তো সেখানে বাসা বাঁধবেই।
৪.যৌথ পরিবার প্রথার অবসানও এর জন্য আংশিক দায়ী। হ্যা, যৌথ বা একক পরিবারের অবশ্যই অন্যান্য সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই আছে। তবে এই মিড লাইফ ক্রাইসিসটা যৌথ পরিবার প্রথা থেকে আমাদের স্বেচ্ছায় বেড়িয়ে যাবার অন্যতম নেতিবাচক উপজাত।
৫.পারষ্পরিক সম্মান, ত্যাগের মানসিকতার ঘাটতি, অনমনীয় ব্যক্তিত্ব, আপোষহীনতার চর্চা, সামাজিক কিংবা বংশগত অবস্থানে স্বামী ও স্ত্রীর বৈপরীত্য একটা পর্যায়ে ক্রাইসিস সৃষ্টি করেই।
৬.আমাদের দেশের সমাজ, আত্মীয় ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও প্রাইভেসীর মর্ম বুঝবার অক্ষমতাও কিছুটা দায়ী।
৭.জানেন কিনা? আমাদের দেশে ছেলে ও মেয়ের বিয়ের পরে তাদের পরিবারের সদস্যরা বিশেষত মেয়ের বাবা-মা-খালা-ফুফুরা ক্রমাগত মেয়েকে বুদ্ধি দিতে থাকে, সংসার মজবুত করতে যত দ্রূত সম্ভব মা (ও বাবা) হয়ে যেতে। নব্য বিবাহিত দু’জন নর ও নারী নিজেদের ভাল করে জেনে বুঝে নেবার আগেই সন্তানের দায়ীত্বের মধ্যে পড়ে যান। নিজেরা নিজেদের যৌথ দায়ীত্ব বুঝে নেবার, সমঝোতার স্থানটি গড়ে উঠবার আগেই একেকজন ভারবাহী গাধায় রুপান্তরিত হন-সামাজিক ও আর্থিক উভয় দিক হতে। ফলাফল, স্বামী-স্ত্রীর নাজুক ও নড়বড়ে সমঝোতা। যা মধ্যবয়সে গিয়ে বিদ্রোহ করে।
৮.পুরুষরা আমাকে গাল পাড়বেন, তবু বলি, অধিকাংশ বঙ্গসমাজে স্বামী প্রবরদের অতিরিক্ত কর্তৃত্বপরায়নতা, নারীকে আর্থিক স্বাধীনতা না দেয়া, নারীকে স্রেফ পণ্য বা ঘরের উপাচার করে রাখার মানসিকতা মিড এজ ক্রাইসিসের জন্ম দেয়। কিছু কিছু নারীও যে কম যান না, তাও ঠিক।
৯.বেড়ে চলা সোশ্যাল ন্যুইসেন্স, সোশ্যাল কাউন্সেলিং এর অভাব, দ্রূত পরিবর্তনশীল সমাজ ব্যবস্থা, টেকনোলজির অবাধ ও যথেচ্ছ অপব্যবহার, সোশ্যাল কমপিটিশন-এরা সবাই কোনো না কোনোভাবে দায়ী।
১০.মিডিয়া, যার কাজ ছিল সমাজ বিনির্মান, কিন্তু তার ১৮০ ডিগ্রী বিপরীতে গিয়ে বিশেষত ডিশ টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে মিড এজ ক্রাইসিসে ঘৃতাহুতি দিচ্ছে বহু সুখী সংসার। শুনতে খেলো মনে হলেও সত্যি, বিদেশী টিভি সিরিয়ালগুলো এদেশে মিড এজ ক্রাইসিসের অন্যতম হোতা।

কীভাবে মোকাবেলা করবেন এই হাহাকার? আমার নিজস্ব বিশ্বাস:
১.শিক্ষা বা সুশিক্ষাই হতে পারে এই সংকটের লাগসই সমাধান।
২.পারষ্পরিক সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ থাকাটা খুব জরুরী। এটা গড়ে ওঠে দু’জনের চেষ্টায়। স্রেফ স্বামী ও স্ত্রী হিসেবে মেকানাইজড জীবন কাটালে হবে না।
৩.দাম্পত্যেই শেষ সমাধান-এই বিশ্বাস ধারন করাটা জরুরী।
৪.সোশ্যাল কাউন্সেলিং খুব ভাল কাজ করে। বিশেষত প্রফেশনাল কাউন্সেলরদের ভূমিকা এখানে খুব গুরুত্বপূর্ন।
৫.পরিবার ও সমাজের দায়ীত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে।
৬.পরিবার ও সমাজে অসুস্থ্য প্রতিযোগীতার অবসান করতে হবে।
৭.দাম্পত্যে পারস্পরিক বিশ্বাস এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
৮.স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক সহযোগীতা ও সহমর্মিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৯.মুক্তমতের চর্চা এবং তথ্য ভাগাভাগি করতে হবে।
১০.ক্রাইসিসকে নর ও নারী যৌথভাবে মোকাবেলা করতে হয়। একক চেষ্টায় যা বেড়ে যাবে।
১১.সন্তানদের দায়ীত্বশীল ভূমিকাপালন হতে পারে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টের একটা বড় অনুসঙ্গ।
১২.আমাদের মিডিয়ারও দায় রয়েছে ভূমিকা পালনের। কারন ক্রাইসিস সৃষ্টির বড় কারন তারাই।
১৩.সর্বোপরি, ক্রাইসিস হয়ে পড়লে তাকে স্বীকার করে নেয়া উচিৎ। তার অস্তিত্ব নিয়ে লুকোচুরি নয়। তাকে একটি সমস্যা হিসেবে দেখা। পরস্পরের সাথে কোনো সুখে থাকার অভিনয় করা বা অসন্তোষ জোর করে অবদমন করে রাখা নয়, শেয়ারিং, আলোচনা আর উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে মোকাবেলা করা।

’বেলাশেষে’ মূভিটি দেখেছেন? পড়ন্ত বয়সের সৌমিত্র একদিন দুম করে তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেন। কোনো বিরাগবশত নয়। স্রেফ এটা অনুভব করে যে, তাদের দীর্ঘ কয়েক দশকের দাম্পত্যে দায়, দায়ীত্ব, মনের টান থাকলেও ভালবাসা ছিল না (তার মতে)। তাই এই ভালবাসাহীন যুগ্ম জীবন তিনি আর চলমান রাখতে চাচ্ছিলেন না। তার মনে হয়েছে, দাম্পত্যে থাকতে হবে গাঢ়, ঘন, তীব্র ও প্রকাশ্য প্রেম, ভালবাসা। স্রেফ দায়বোধ, সামাজিক চাপ, প্রয়োজনের টানে দু’জন নরনারী যৌথবাস করাটা তার কাছে খেলো আর অযাচিত মনে হয়। কাহিনী বহুদূর গড়ায়। একটি সীনে সৌমিত্র’র প্রশ্ন “আমাদের মধ্যে কি কখনো ভালোবাসা ছিল?” এর জবাবে তার স্ত্রী তাকে এক ডায়লগে বলেন, “তুমি যখন বাথরুম করে আসো, আমি তোমার বাথরুম পরিষ্কার করি। বউমা করতে চায় না, গন্ধ আসে। আমি গিয়ে পরিষ্কার করি। বাথরুমের ওই কটূ গন্ধটাও আমার ভাল লাগে। আমার কাছে ওটাই ভালবাসা।” ”তুমি মাছের চামড়াগুলো না খেয়ে প্লেটে ফেলে রাখো আর আমি তোমার সেই এঁটো গুলো তুলে খাই, আমার কাছে ওটাই ভালোবাসা।” অর্থাৎ ভালবাসার সংজ্ঞা আর প্যাটার্ন একেকজনের কাছে একেকরকম। বয়স, সময় আর পরিস্থিতি ভেদে তার রকম বদলায়। বদলায় তার রং, রূপ, গাঢ়ত্ব। পরিবর্তিত সময় বাস্তবতাকে মাথায় রেখে স্বামী ও স্ত্রী প্রস্তুত থাকলে অনেক সমস্যাই আর সমস্যা থাকে না।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: মধ্যবিত্ত সমাজে বিয়ের পরও অবৈধ সম্পর্ক এতো বেশী ছিলো না।
ডিশ এ্যান্টেনা,ইন্টারনেট অার সানি লিওন অাসার পর মনে হচ্ছে নারী-পুরুষের বিয়েটা একটা ফাজলামি,সব কিছুই শারীরিক চাহিদা।কারণ বিয়ের আগেই প্রায় সবাই সব কিছু করে অভ্যস্ত।
বিয়ের পরের জন্য কিছু বাকী নাই।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

বেচারা বলেছেন: পরিবর্তন এক অবশ্যম্ভাবি সত্য। তাকে রুখে সাধ্য কার?

২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু মানুষ মিথ্যা বলতে- বলতে, সত্যটাই ভুলে যায়।
একবার মিথ্যার জালে জড়ালে তার থেকে বেড়িয়ে আসার জন্যও মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

বেচারা বলেছেন: তিক্ত সত্যি।

৩| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩৪

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আমরা বাঙালীরা প্রচন্ড জাজমেন্টাল। বিষয়ের খুব গভীরে না গিয়েই কাউকে মাটিতে নামিয়ে আনি মুহূর্তেই
বিবেক তবে কবে ফিরবে?

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

বেচারা বলেছেন: ফিরবে বলে মনে হয় না। এতদিনেই যেহেতু ফেরেনি।

৪| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫

সাাজ্জাাদ বলেছেন: চমৎকার বিষয় খুব সাবলীল ভাবে তুলে ধরেছেন।
ধন্যবাদ।

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২০

বেচারা বলেছেন: আপনাকেও বিশাল লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.