নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দশে চক্রে ভগবান ভূত

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৫৪

[লেখাটি বিশাল। আপনার কোনো উপকার হবার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ।
ড্রাইভিং ও শপিং নিয়ে অপ্রচলিত কিছু অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা। পড়লে পস্তাতে পারেন।

“লেখাটা সিরিজ আকারে দিলে ভাল হত-এই উপদেশ অলরেডি ৮০ টা পেয়েছি। আর দিলে বদহজম হয়ে যাবে। আপনিই বরং সেভ করে রেখে সিরিজ ধরে ধরে পড়ুন না। তাহলেই তো হয়।]

---ওপরের শিরোনামের কথাটি নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন। আমিও শুনেছি অনেকবার। তবে সেটি বিশ্বাস করতে সময় লাগল ৪০ বছর। যখন, পাকে চক্রে আমি নিজেই ভূত হয়েছি।

নিকট অতীতের কিছু চাক্ষুস অভিজ্ঞতা নিয়ে আজ লিখছি। এই অভিজ্ঞতার পাঠ নেহায়েতই অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবার অভিপ্রায়ে। এর ভেতরে অন্য কোনো লুক্কায়িত বার্তা নেই।

কথাটা হল, একান্তই ঠেকায় পড়ে বছর দেড়েক আগে গাড়ি চালনা শিখতে হয়েছিল। ঠেকাটা লেখার শেষে আছে। যদিও শখ করে অনেক আগে একবার মটোরবাইক চালনা শিখতে শুরু করেছিলাম। তবে পরপর বেশ কিছু ভয়ানক রকম বাইক দুর্ঘটনার চিত্র দেখে ইচ্ছেটাকে কোরবানী দিলাম।
না, বাইক কেনার সখ হয়নি সেসময়। স্রেফ শেখার আগ্রহ হতে শুরু করেছিলাম। যেহেতু, আর চালাবই না, তাই শেখার ইচ্ছেও মরে গেল।
মটোরবাইক আমার আজীবনের আতঙ্ক। এখনও। বাসে চড়ি, তবু বাইকের পেছনে নয়। আর ঢাকার বাইকাররা আমার দুই চক্ষের বিষ। সে গল্প অনেক করেছি।

যাহোক, সখে নয়, ঠেকায় পড়ে অটোমোবাইল চালনা শিখতে নেমে কিছু ব্যক্তিগত ও বাস্তব অভিজ্ঞতা হল।

তার কয়েকটাই আজ এই লেখার প্রথম পর্বে বলি। আমার মনে হয়েছে, এই অভিজ্ঞতাগুলো লিখিত আকারে একসাথে কোথাও পাবেন না। তাই লেখা। যদি পাঠকদের কোনো কাজে লাগে।

মন আমার কলির সাইকেল:-
।।--।।
ক;
সবার আগে যে সত্যটা উপলব্ধি করলাম, তা হল, ভাল খেলোয়াড় মানেই ভাল প্রশিক্ষক নন। ঠিক যেমন, ভাল ছাত্র মানেই ভাল শিক্ষক নন; ভাল খেলোয়াড় মানেই ভাল ক্যাপ্টেন নন। ইউটিউব ও চালক-উভয়ের সাহায্য নিলাম চালনা শিখতে। বুঝতে পারলাম, শেখানো কিংবা প্রশিক্ষণ-সম্পূর্নই একটি আলাদা রকম শিল্প বা দক্ষতা। নিজে একটি কাজ ভাল পারলেও সেটি অন্যকে শেখানো-নিতান্তই সুনিপূণ একটি শিল্প।

সেই শিল্পের গুরু সবাই হতে পারে না। তাই ইউটিউব টিউটোরিয়াল এবং বিভিন্ন চালকের তালিম-উভয়ই আমাকে প্রাথমিক সাহায্য করল বটে, কিন্তু পুরো বিষয়টিতে আমি একজন সুযোগ্য প্রশিক্ষকের অভাব এই দেশে কতটা; আর সেটা যে একদম সবক্ষেত্রেই-তা নতুন করে উপলব্ধি করলাম।

যেহেতু উচ্চমানের প্রশিক্ষক নেই, তাই যেকোনো ব্যক্তির হতে প্রাথমিক ও মৌলিক জ্ঞানটি নিয়ে নিন, আর তারপর নিজের আগ্রহে ও চেষ্টায় হাত পাকান। যতই জটিল ও কঠিন পরিস্থিতিতে (কমপ্লেক্স রোড সেট আপ) চালাবেন, ততই দক্ষ হবেন।

খ;
গাড়ি চালনা শেখানোর জন্য প্রচুর ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠান পাড়া মহল্লায় পাবেন। সাবধান। এদের নিয়ম ও শর্ত খুব ভাল করে দশবার যাঁচাই ও যারা আগে এই সেবা নিয়েছেন-তাদের সাথে পরামর্শ করে নেবেন। কখনোই পুরো টাকা আগে কিংবা একবারে দেবেন না। দেবেন তো আপনি শেষ। অবশ্যই প্রশিক্ষণকালীন সময়ে মূল রাস্তায় বা জনচলাচল আছে-এমন স্থানে প্রশিক্ষণ নেবেন না। বিষয়টা বিপজ্জনক।

মনে রাখবেন, অটোমোবাইল দুর্ঘটনা মাত্রই ৩ সেকেন্ডের চকিত ভুুলের বিষয়। নিজে যেমন শেখার সময় সতর্ক হবেন, তেমনি, রাস্তায় যে কোনো প্রশিক্ষনার্থী গাড়ি হতে দশ হাত দূরে দিয়ে চলবেন।

রাস্তায় আজকাল প্রচুর নারীকে গাড়ি চালনা শিখতে দেখবেন। সেটা দেখে আপনার নারী বিদ্বেষ জ্বলে উঠলেও কিছু করার নেই। আপাতত গরমকে দমন করে শিখতে থাকুন।

গ;
লাইসেন্স বা অনুমোদনপত্র থাকা একটি নিয়মতান্ত্রীক বাস্তবতা। যদিও লাইসেন্সধারী যত চালক সারা দেশ দাপিয়ে বেড়ান, তাদের বড় অংশের থেকে আমি এখন ভাল চালাতে জানি, কিন্তু তবুও রাষ্ট্রীয় আইন আপনাকে মানতেই হবে। ইউটিউবে বিআরটিএ’র পরীক্ষার কিছু নমুনা প্রশ্ন ও চালনার টিউটোরিয়াল পাবেন। সেগুলো চর্চা করতে পারেন।

তবে, আমার মনে হয়েছে, বিআরটিএ’র পুরো ব্যবস্থা ও ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত পুরোনো, সেকেলে এবং অবাস্তব। ওদের সেই L-শেপের ট্রায়াল ট্র্যাকে এমনকি আমার সুহৃদ বাশশাহ ভাইয়ের ‘মোফাজ্জল’ও ব্যর্থ হবে। তবু...................

প্রস্তুত হোন। পয়সা দিলে ঘরে বসেই লাইসেন্স পাবেন, একটি দিনও গাড়ির হুইলে হাত না দিয়েও-কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু নিজের কাছে নিজে সৎ থাকুন।

লাইসেন্স থাকা মানেই আপনি ভাল চালক নন, কিংবা লাইসেন্স নেই-মানেই আপনি চালক হিসেবে আনাড়ি ও জঘন্য-তা নয়। লাইসেন্স নেবার প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাওয়া এবং তারপরে লাইসেন্স পাওয়া মানে হল, আপনি নিজের কাছে নিজেই সন্তুষ্ট, যে, আপনি ভালভাবে প্রস্তুত হয়েছেন।

গাড়ি চালনার দক্ষতা একটি মানসিক বিষয়। সেই প্রস্তুতি আপনার নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য সবার আগে দরকার।

ঘ;
চালক বা গাড়িয়াল হিসেবে ভূমিকা পালনের সময়ে এই জিনিসগুলো মাথায় না রেখে বিশ্বাসে রাখলে উপকৃত হবেন-

১. আপনার ভিতর কোনো সংশয় (নার্ভাসনেস) না থাকা। যতই চালাবেন, ততই এই সংশয় কাটবে। রাস্তায় ড্রাইভিংয়ে কখনো দ্বিধান্বিত থাকবেন না। কোন রাস্তা ধরবেন, কোন টার্ন নেবেন, ডানে যাবেন, না বামে-রাস্তার মাঝে কখনোই তা নিয়ে দোলাচলে ভুগবেন না।

অটোমোবাইল চালনার সবথেকে বড় সাবধানতা হল-এক মুহূর্তের জন্যও অন্যমনষ্ক হবেন না। সিনেমা, নাটকে দেখা হিরোইক বা ক্যারিশম্যাটিক সীন ভুলে যান।

২. সুদক্ষ না হয়ে কখনোই মূল রাস্তায় নামবেন না। অন্তত ১০০ ম্যানআওয়ার ট্রায়াল রান না করে তো না ই। হুইল ঘোরাতে পারলেই চালক হয়ে যাননি। তিতলী আপুর মতো করে সিমুলেশন দেখে দেখে ড্রাইভার হওয়া সম্ভব না।

৩. সুদক্ষ চালক হবার জন্য আপনার চোখ, কান, হাত, পা ও মস্তিষ্ক-পাঁচটি অংশ একই সাথে টিউনড থাকতে হবে। ভাল রিফ্লেক্স আপনাকে ভাল চালক হতে সাহায্য করবে। আপনার ওই পাঁচটি ইন্দ্রীয় বা অঙ্গ স্বয়ংক্রীয়ভাবে একে অপরের সাথে সিংক্রোনাইজড হয়ে কাজ করার মতো অভ্যস্ত হতে হবে।
আমার কাছে মনে হয়েছে, আপনি মুখস্ত বা মেমোরাইজ করে করে গাড়ি চালাবেন ১০%। বাকি ৯০% ই আপনার ওই ৫ সেনা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করবে। ভয়-এই জিনিসটা কেবল নিয়ম ভাঙার ক্ষেত্রে পাবেন। গাড়ি চালনাতে ভয়ের স্থান দেবেন না।

৪. রাস্তায় কখনোই তাড়াহুড়া করবেন না। আপনার মাথা হতে তাড়া ও ব্যস্ততা জিনিসটা দূরে রাখতে হবে। ব্যস্ততা থাকলে হাতে সময় নিয়ে পথে নামুন।

রাতে দেরীতে ঘুমিয়ে, সকালে আয়েশ করে রেডি হয়ে রাস্তায় নেমে উড়ে গিয়ে সবটা পুষিয়ে নেবার চেষ্টা করবেন না। রাস্তায় হিরো সাজতে চাইলে আজরাইল না হোক, সার্জেন্টের মোলাকাত ঘন ঘন পাবেন।

সো, কোনো দরকার নেই।

৫. রাস্তায় আপনি যাতে কোনো ভুল পদক্ষেপ না নেন-সেটি যেমন খেয়াল রাখবেন, তেমনি, আপনি যদি ধরে নেন, রাস্তায় নামা চালকদের ১০০%ই অদক্ষ ও অযোগ্য তো বটেই, রীতিমতো খুনে স্বভাবের-তাহলে আপনি নিজেই আপনার করণীয় কী-তা বুঝতে পারবেন।

আমার অভিজ্ঞতা বলে, আমাদের রাস্তায় দেখা মেলা চালকেরা ৯৯%ই মারকুটে, খুনে স্বভাবের, অদক্ষ, বিশৃঙ্খল ও আইন ভাঙার সহজাত প্রবণতা সম্পন্ন।

আর বাংলাদেশের পথচারীরা ন্যুনতম কোনো রোড সেফটি আইন মেনে চলে না। তারা রাস্তায় চলার সময়ে নবার সিরাজের ভাতিজা বনে যান। তাই আকাশ হতে আপনার গাড়ির সামনে কেউ ঝাঁপ দিয়ে পড়লেও অবাক হবেন না।

যেই ভুল করুক, চাপা পড়ে মরলে আপনিই ফাঁসবেন। তাই, শুধু আপনার ভুলে অন্যের ক্ষতি যাতে না হয়-সেই খেয়াল রাখলে হবে না। অন্যের ভুলে যেন আপনি ক্ষতিগ্রস্থ না হন, তাও খেয়াল রাখুন। হোক সেটা অন্য উচক্কা চালক, হোক সেটা বেওকুফ ও উচক্কা কোনো পথচারী।

ভুল যারই হোক, ক্ষতি আপনারই। হর্ণ নামে একটা বস্তু গাড়িতে থাকে। ওটার যথোপযুক্ত ব্যবহার করুন। অতিরিক্তও না, আবার বোবাও থাকবেন না। উচক্কা চালক ও পথচারী-কেউই যাতে আপনার গাড়ির তলায় না পড়ে, সেজন্য আপনাকেই আপনার সামনে, পিছনে, ডানে, বামে চলতে থাকা গাড়ি ও মনুষ্যদের পরবর্তি মুভমেন্টের প্রবণতা মেপে মেপে সারাক্ষণ চলতে হবে।

৬.গতি সীমিত রাখুন। তাহলে ভুল যারই হোক, আপনি তা সামাল দেয়া বা ক্ষতি কমানোর জন্য যথেষ্ট সুযোগ পাবেন। আমি যখনই কোনো অটোমোবাইলে চড়ি, চালককে বলে দিই, ঢাকাতে দিনে ৪০ কিমি আর রাতে ৩৫ কিমি’র বেশি গতি নয়। কোনো রাস্তাতেই নয়, কোনো অবস্থাতেই নয়।

এতে আমাকে ভীড়ু ও কাপুরুষ মনে হতে পারে। তবে আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তার চেয়ে আমি ‘ম্যানলী’ হওয়াকে বেশি গুরুত্বপূর্ন মনে করি না। পেশাদার চালকেরা এটা শুনলে চাকরি করতে চাইবে না।

তবে তাদেরকে চাকরি দিতে বেশি সখ হলে আজরাইলের স্থানীয় প্রতিনিধিকেও আপনি হায়ারে আনছেন-মনে রাখবেন।

৭. ওভারটেক প্রবণতা, উড়ে যাবার প্রবণতা, দেখিয়ে দেবার প্রবণতা-দুর্ঘটনার বড় কারন। রাস্তায় পুরুষ সাজতে যাবার কোনো দরকার নেই। রাস্তার বাস ও ট্রাক-সারাক্ষণ তাদের আশপাশে চলতে থাকা ‘পেলাসটিক’ দেখলেই তাকে ইভ টিজিং করতে চেষ্টা করে।

দূরে থাকুন। বিশেষ করে আপনি যদি আপনার গাড়ির দুই পাশের চাপা ভাঙা দেখতে না চান।

আপনি নিজে বিশ্ববিদ্যালয় বা বোটানিক্যালের চিপায় যতই গিয়ে থাকুন, গাড়িকে চিপায় যেতে দেবেন না। মনে রাখবেন, চোরের দশদিন গেরস্তের একদিন। ভদ্দরলোকের মতো অন্যকে সাইড বা একসেস দিলে আপনার ডেন্টিং পেন্টিং খরচ বাঁচবে।

৮. দীর্ঘ দিন ধরে একটি কাজ করলে মানুষ অভ্যস্ততাজনিত ভুল আত্মবিশ্বাসে পড়ে যায়। গাড়ি চালনার ক্ষেত্রে এই ভুল করবেন না। গাড়ি ‘স্টার্ট’ হতে শুরু করে আবার বন্ধ করা পর্যন্ত কিছু মৌলিক করণীয় আছে।

যেগুলো যতদিন গাড়ি চালাবেন, ছক ধরে ধরে অনুসরন করবেন। কারন, ওই যে বললাম, একটি অটোমোবাইল দুর্ঘটনা স্রেফ ৩ সেকেন্ডের বিষয়।

৯. গাড়ি চালনার সময়ে একমাত্র ট্রাফিক সার্জেন্ট ব্যতিত কারো ডাকে সাড়া না দিলে নিরাপদ থাকবেন। সার্জেন্টের সেই সাড়া আবার আজকাল ডিজিটালও হয়েছে। কনস্টেবলের হাতের ডান্ডার ইশারা ভাল করে বুঝে চালান।

আমি একবার তার ডান্ডা নাড়াকে ’গো’ সিগনাল ধরে এগিয়ে গিয়ে বিপদে পড়েছিলাম। ব্যাটা বলে, আমি তো আপনাকে ‘নো’ বলেছিলাম। অপরিচীত কাউকে গাড়িতে তুলবার আগে ১০ বার ভাবুন।

গাড়ি ছিনতাই হওয়া কোনো ব্যপারই না। রাস্তার পাশে কেউ বিপদে পড়েছে-এমন লক্ষণ দেখেই হরিবোল বলে নেমে পড়বেন না। ফাঁদ পাতার এত এত ধরন আছে-তা লিখতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে।

১০. গাড়ির চালকের আসনের কাছাকাছি পানির বোতল বা এরকম কিছু না রাখতে চেষ্টা করুন। পানির বোতলে ব্রেক প্যাডাল আটকে দুর্ঘটনা ঘটার অনেক নজির আছে। আবার ড্রাইভারের ভুলে একসিলারেটরে চাপ পড়ে গাড়ির মালিক ভর্তা হয়ে গেছে-এমনও দেখেছি।

জীবন্ত, মানে স্টার্টে থাকা গাড়ি র‌্যাম্পে ওঠা বা নামার সময়ে তার সামনে বা পেছনে না থেকে সাইডে দাড়িয়ে থাকুন।

১১. সামনের গাড়ি হতে যথেষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে গাড়ি চালান। ‘মামা একশো একশো’ কিংবা ‘মামা, বাম্পারে বাম্পারে যান’ এইসব হাবিজাবি বিদ্যা ভুলে যান।

আর আপনি বা আপনার গাড়ি যদি হোমোসেক্সূয়াল হয়, তাহলে সামনের গাড়ির বাম্পার ছুঁয়ে চালাতে থাকুন।

১২. রাস্তার বাইকার, রিক্সা ও সিএনজি চালকদের কোনো বিশ্বাস নেই। এদের থেকে অতি অতি সতর্ক থাকবেন।

বাইক চালকরা কখনোই বিশ্বাস করতে চাইবে না, যে, একটি অটোমোবাইলের ড্রাইভিং সীটে বসলে ভিজুয়ালিটি বাইক চালকের মতো ১৮০ ডিগ্রী নয়, বরং বড়জোর ৪৫-৫০ ডিগ্রীতে নেমে যায়।

আর অটোমোবাইল তাদের মতো জিগজ্যাগ করে যে চলতে পারে না, সেটাও তারা বুঝবে না। রিক্সার হুডের বিস্তার দেখে চালালেই হবে না। ওর হুডের দুই পাশে আরও অন্তত বিঘত খানেক দূরত্ব রাখতে হবে। কারন, ওনাদের তলদেশে ’একছেল’ নামে দুটি বাড়তি দন্ড বের হয়ে থাকে।

আপনার গাড়ির তলদেশে ওনাদের সামান্য আলতো ছোঁয়া আপনার ১০ হাজার টাকার ডেন্টিং খরচ সৃষ্টি করবে। দূরে থাকুন। সিএনজি অটোর কিন্তু কোনো সাইড লুকিং গ্লাস নেই। সুতরাং ওই বাবাজিরা ডান বাম দেখে চালানোতে বিশ্বাস করেন না। আপনি সচেতন হোন।

১৩. ঘন ঘন সাইড মিরর বা লুকিং গ্লাসের সাহায্য ‍নিন, মানে দেখে নিন। যেকোনো টার্ন, ইউ টার্ন ও ইন্টারসেকশনে পৌছালে বা পাড় হতে হলে আপনার ডান ও বামের গাড়ির প্রবণতা আগে হতেই দেখে নিন।

এই দেশে সাইড নেয়া বা টার্ন নেবার জন্য ইন্ডিকেটর দেয়া বা অপেক্ষা করাকে দুর্বলতা ভাবা হয়। দেখতে পাবেন, আপনার বামের পিছনের গাড়িটি কোনো সতর্কতা ছাড়াই দুম করে আপনার সামনে এসে পড়েছে ডানে টার্ন নিতে। ফলাফল-আপনার নাক আর ওনার পেট-ঢিচ্চা।

১৪. হার্ড ব্রেক করার ক্ষেত্রে খুব সাবধান। আপনার পেছনের গাড়ি আপনাকে ভর্তা বানিয়ে দিতে পারে। এটা এড়াতে হলে হ্যাঁচকা টানে চলা বা একই পন্থায় থামা বন্ধ করুন। ইন্ডিকেটর না দিয়ে এমনকি রাত ৩ টার সময়ও গাড়ি টার্ন, লেন বদল না করতে অভ্যস্ত হোন।

১৫. ট্রাফিক বাবাজিদের প্রলোভনে ভুলবেন না। ট্রাফিক ও অন্য ড্রাইভার প্রায়শই রং সাইড দিয়ে যাবার জন্য আপনাকে প্ররোচিত করবে। আমি নিজে দেখেছি, ট্রাফিক পুলিশ ওইভাবে ট্র্যাপড করে টাকা আদায় করে। ওই অপকর্ম করলে বড়জোর ৩০ দিনে ৩০ মিনিট বাঁচবে। না করলে টাকা বাঁচবে।

১৬. সবসময় সবার ডানের লেনটি দিয়ে চালাতে চেষ্টা করুন। তাতে, আপনার একটি সাইড সবসময় সুরক্ষিত থাকবে, মনোযোগও কম দরকার হবে। তবে টার্ন বা ইউটার্নের কাছে আসার আগে আগে কিছুটা বামে সরে যান। তা না হলে সামনের গাড়িগুলো যদি ডানে যেতে চায়, আপনি তার পেছনে পোঁ পোঁ করেও সাইড পাবেন না।

১৭. ১ মিনিটের জন্যও যদি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামেন, তবুও সীট বেল্ট বাঁধুন আর গাড়ির সব কাগজ (লাইসেন্সসহ) সাথে রাখুন। বন্ধ থাকা গাড়ি প্রথম স্টার্ট করে তার একটু পরে এসি ছেড়ে জানালা কিছুক্ষণ খুলে রেখে তারপর গ্লাস তুলুন। বিষাক্ত গ্যাস হতে বাঁচবেন।

১৮. গাড়িতে কখনো মূল্যবান জিনিস রেখে লকের ওপর ভরসা করে কোথাও যাবেন না। গাড়ি হতে জিনিস চুরি করা ১.৫ মিনিটের ব্যাপার। ঢাকাতে গাড়ি হতে ২২ লাখ টাকা চুরি যাবার ঘটনা ঘটেছিল। ধোলাইখালে ও ইস্কাটনে কিছু খাতিরদারী কনটাক্ট রাখুন। যাতে বিপদে পড়লে তাদের অনানুষ্ঠানিক সহায়তা পান।

গাড়ি চালনার সময় যেকোনো ইমার্জেন্সী হলে কী করবেন-তার কিছু মানসিক প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রাখবেন। ধরুন, চলন্ত গাড়ি ব্রেক ফেল হলে কী করতে হয়, রাস্তায় স্টার্ট না নিলে কী করতে হবে, ঝুঁকিপূর্ন রাস্তায় উইন্ডশীল্ডে কেউ ডিম ছুড়ে মারার মাজেজা কী, কতটা ঢুশা খেলে আপনি অন্য গাড়িয়ালকে থাপ্পর মারার অধিকার রাখেন-এমনি হাজারটা ঝামেলার জন্য প্রস্তুত থাকবেন। বাংলাদেশের রাস্তা গাড়ি চালনা ও চালকদের জন্য এক জলন্ত জাহান্নাম।

১৯. অচেনা রাস্তায় বা অপ্রচলিত রাস্তায় না পারতে যাবেন না। একবার আমার চালক পূর্বাচলে অচেনা পথে সাঁই সাঁই করে যেতে গিয়ে আরেকটু হলে ঝিলের পানিতে লং জাম্প দিচ্ছিল।

২০. গাড়ির ইঞ্জিন ও ছোটখাটো রক্ষনাবেক্ষনসহ মেরামতি দ্রূত শিখে নিন। গাড়ি সারাবার টুলস গাড়িতে রাখুন। রাস্তায় কখন, কোথায় আপনি আটকা পড়বেন-কেউ জানে না। সেটা হতে পারে বছরে একবার আর তাও আবার মেরিন ড্রাইভের মাঝখানে, যেখানে প্রদীপ বাবুরা আছে।

২১. আপনার মোবাইলে বিকাশ ও রকেটে সবসময় কিছু টাকা রাখুন। অন্যথায় ট্রাফিকের জরিমানার টাকা পরে দিয়ে দেবেন-এই ভরসায় থাকলে কাগজ ফেরত পেতে জেরবার হয়ে যাবেন। আমি একবার ব্লু বুক ৫ মাস পরে ফেরত তুলতে পেরেছি।

২২. রাস্তায় চলার সময়ে গাড়ি লকড রাখতে চেষ্টা করুন। ভীড়ের মধ্যে পেছনের দরোজা খুলে ল্যাপটপ নিয়ে দৌড় দিলে আপনার বাপও ক্ষতিপূরন দেবেন না।

লকড আপ গাড়ি হতে বের হবার সবশেষ রাস্তা হল সীটের হেড রেস্ট খুলে নিয়ে তার সূঁচালো স্টীল স্ট্যান্ড’র মাথা দিয়ে কাঁচে আঘাত ও তা ভেঙে বেরোনো-জেনে রাখুন। এক হাতে গাড়ি চালানো বা মোবাইলে প্রেম করতে করতে গাড়ি চালাবেন না।

জরিমানা তো হবেই। সেই সাথে এক্সিডেন্ট করার সম্ভাবনাও।

২৩. চালক হিসেবে কাউকে নেবার আগে তার ট্রায়াল রান অবশ্যই নেবেন। তার আগের অন্তত ২ জন নিয়োগকর্তা আর তার বাড়ির মানুষের কনটাক্ট নিন, কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিন। প্রচুর ভোগার অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। কেমন?

গাঁজাখোর, ভূয়া ড্রাইভার, জেএমবি, উশৃঙ্খল, উড়ন্ত ফেসবুকিয়ান, পেলেনের পাইলট-কয়টা বলব আপনাদের? আমি চালক সন্ধান ও বাঁছাই করার জন্য রীতিমতো চেকলিস্ট বানিয়ে নিয়েছি।

আপনি চাইলে দিতে পারি।

অতি বয়স্ক চালক ধীর স্থীর হবে, তবে খুব মেজাজী ও মুডি হবে। লয়াল হবে কম। আপনি যদি তাকে বলেন, এরকম করে চালান-সে মুখ ঝামটা দিয়ে বলবে, “আমারে শিহান লাগদো না।” অতি বাচ্চা চালক আপনাকে নিয়ে আগুনে ঝাপ দেবে না-এমন গ্যারান্টি কম।

তাই মাঝামাঝি (৫-৭ বছর) পছন্দ করুন। চালকেরা গাড়ি চালানোর সময়ে নজর রাখুন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আরোহী গাড়িয়ালগন গাড়িতে উঠে মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সেই সুযোগে তাদের চালকরা রাস্তায় মাস্তানী করে গাড়ি চালান। এটা বন্ধ করুন।

চালকের মানসিক অবস্থার দিকে নজর রাখলে ভাল করবেন। আমার অভিজ্ঞতা বলে, ড্রাইভার শ্রেনীর মানুষদের সাংসারিক ও সামাজিক জটিলতার হার তুলনামুলক বেশি। সেই চাপ তাদের ড্রাইভিংয়ে আছর করবেই। গাড়িয়াল, বা গাড়ির মালিক নিজে ড্রাইভিং জানলে ড্রাইভাররা চাপে থাকে।

আপনার ঘাড় চেপে ধরার শক্তি কমে যায়। তাই ড্রাইভার থাকলেও নিজে ড্রাইভিং শিখুন। আর মাঝে মধ্যেই নিজে চালান। ড্রাইভারকে পাশে রেখেই। ব্যাটার তেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ড্রাইভার গাড়িতে থাকলে আপনার গোপন প্রেম আর গোপন মিশন-দুই নিয়ে বাতচিৎ করার ক্ষেত্রে দু’বার ভেবে নেবেন।

ড্রাইভার শ্রেনী বিবিসি হিসেবে পপুলার। ঘরওয়ালীকে একা গাড়িতে কোথাও পাঠালে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করুন। অটোমোবাইল একটি শয়তানের কুন্ড-এর বেশি কিছু বললাম না। বুঝলে বুঝপাতা। না বুঝলে তাহেরীর ক্যাঁথা।

২৪. রোড সাইন বা ট্রাফিক সাইন চিনে রাখার চেষ্টা করুন। সেটা গাড়ি চালনার জন্য যদি না ও হয়, অন্তত জরিমানা ও পুলিশি ঝামেলা এড়াতে হলেও করুন। আর একজন সৎ ও নিয়মতান্ত্রীক চালক হোন। রাত ১ টায়ও যদি রাস্তায় নামেন, সিগন্যাল বাতি অনুসরন করুন।

সাহারা মরুভূমিতে চালালেও অবৈধ টার্ন নেবেন না। রাস্তায় রাস্তায় কেবল ট্রাফিক সার্জেন্টই থাকে না।
আজরাইলের সাঙ্গপাঙ্গরাও থাকে। অবৈধভাবে টার্ন নিতে গিয়ে আজরাইলের মেহমান হবার নজির প্রচুর আছে।

ঢাকার ফ্লাইওভারগুলোর সাইড রেইল অত্যন্ত অবৈজ্ঞানিকভাবে রচিত। উহাদের থেকে দূরত্ব রেখে গাড়ি চালান। ফ্লাইওভারে উঠলে ৩০০% সতর্কতা বাড়ান।

আর যখন ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাবেন, ওপর হতে তালের মতো টুপ করে আপনার ওপর বারোমাসি তালের বদলে আস্ত একখান গাড়ি পড়লেও অবাক হবেন না। সেটা জেনে কী করতে হবে-নিজেই ঠিক করুন।

আমি একজনকে চিনি, যার সামনের গাড়িতে আস্ত গাড়ি আকাশ হতে নাজিল হয়েছিল।

২৫. রাস্তায় পার্কিং, বিশেষত ভীড়ের রাস্তায় পার্কিং করা কোনো বীরপুরুষের কাজ নয়। ব্যস্ত স্থানে কাজে গেলে গাড়িটি একটু দূরে (পারলে গলিতে) নিরিবিলি স্থানে রেখে ওটুকু রাস্তা হেঁটে যান। ঢাকার রাস্তায় পাহারাদার কিংবা চালকের হাতে না রেখে একাকী রেখে গেলে গাড়ির নাক, কান চুরি যাওয়া অস্বাভাবিক না।

২৬. রাস্তা চেনা না থাকলে অথেনটিক কারো হতে পথনির্দেশনা নিন। বাংলাদেশের স্বাভাবিক প্রবণতা হল, নিজে না চিনলেও বলে দেয়া, “ওই তো, ওই যে, দেহা যায়।” গুগল ম্যাপের ওপর একশোভাগ ভরসা করলে পুকুর বা নদীর মধ্যে ল্যান্ড করতে হবে। হাসবেন না বস। আমি নিজের অভিজ্ঞতা হতে বলছি।

২৭. চালক চালিত গাড়ি হলে, তাকে একা একা কোথাও পাঠানোর কাজ খুব হিসেব করে করুন। ফাঁকা গাড়িতে কিংবা অফিসে বসে থাকার সময়টাতে ‘ফাউ টিরিপ’ দেবার ঘটনা আকছাড় ঘটে। তায় যদি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে, তাহলে ড্রাইভার ও গাড়ি-দুটোই হাওয়া।

২৮. গাড়ির ডেকোরেশন বা মেরামতির দোকানে গেলে সীমারের মতো হয়ে যাবেন। বেটা যতই বোঝাক, একজন এক্সপার্টের সহায়তা ছাড়া কোনো বস্তুই কিনবেন না, বা লাগাবেন না। ডেকোরেশনের দোকানদাররা সেলুনের মতো। গেলেই বলে, ‘সার, চুলে কলপটা করে দেব? সব চুলতো সাদা অই গ্যাচে।”

২৯. ধরুন, আপনি একটি চৌরাস্তায় সিগন্যালে দাড়িয়ে আছেন। ডানের বা বিপরীতের ক্রসিংয়ের সিগন্যাল আপ। আপনি চাতকের মতো করে ট্রাফিক পুলিশের হাতের ডান্ডার দিকে তাকিয়ে। বহুক্ষণ পরে তার হাতের ডান্ডা ডাউন হল। মানে-আপনার জন্য গো সিগন্যাল।

দাড়ান দাড়ান দাদা। বলাই বলাই বলে এক্সিলেটরে চাপ বাড়িয়ে দুই লাফে সামনে বাড়লে বিপদে পড়বেন। সিগন্যাল আপ হলেও একটু অপেক্ষা করুন।

প্রায়ই দেখি, ওপাশের সিগন্যাল ডাউন হবার পরেও দুয়েকটা উচক্কা বাইকার বা গাড়িয়াল সাঁই করে শেষ মুহূর্তে মথুরা পাড় হয়ে যাবার ধান্দায় হাঁকিয়ে দেন। ফলাফল হতে পারে-আপনি ওনার পেটে বা বা উনি আপনার গতরে নাক গলিয়ে বসবেন, মানে ঢিঁশকাও-ঢিঁশকাও।

বদ্দা, এত দ্রূত কই যাবেন? আপনি তো আর বাসায় নববিবাহিত বধু রেখে আসেন নাই। একটু পরেই না হয় যান।

৩০. গাড়িয়াল হোন বা গাড়ি চালক, গাড়ির কাঁচ নামিয়ে রাস্তায় টিস্যু ফেলা বা থুথু ছোড়া হতে বিরত থাকুন। কেন? সবচেয়ে বেশি যে উপকার পাবেন, তা হল, এতে আপনি যখুনি কাঁচ নামাবেন, ঠিক তখুনি পাশের একটা বাসের জানালায় মাথা গলিয়ে কেউ হয়তো বমি করছে।

তার ওই তরল গরল আপনার মুখশ্রীতে মাখাবে না, যদি কাঁচটা না নামান। রাস্তায় হিসূ যেমন করবেন না, তেমনি টিস্যুও ফেলবেন না।

ফেলবার জায়গা না পেলে গিলে ফেলুন। পরের দিন টাট্টির সাথে নির্গত হয়ে যাবে। তবুও না।

আপনার ভান্ডারে যদি আরও কোনো সদুপদেশ থাকে, মন্তব্য হিসেবে দিন। লেখার শুরুতে যেই ঠেকার কথা বলেছিলাম, সেটা এবার বলি। বিগত ২৪ মাসের অভিজ্ঞতা আমাকে বলেছে, ড্রাইভার শ্রেনী হল অতিথী পাখি।

তবে এরা ৭ টা কলিজা নিয়ে জন্ম নেয়। তাই এদেরকে যখন তখন হারাতে হতে পারে। আর এরা জগত সংসার উল্টে গেলেও নিজেদের অভ্যাস বদলাবে না। সুতরাং, আমাকে যাতে তারা নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাতে না পারে, তাই নিজেই ড্রাইভিং শিখতে হয়েছিল।

বিশেষত, সেদিন, যেদিন আমার ১০৪ ডিগ্রী জ্বরের সময়ে ড্রাইভার বাবাজি সকালে এসে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। আর আরেকজন আগের রাতে ডিউটি করে পরের দিন সকাল হতে ফোন বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায়।

দ্বিতীয় পর্ব:-আদার ব্যাপারী ও জাহাজের মার্চেন্ট:
।।--।।
আমার অভিজ্ঞতার দ্বিতীয় পর্ব বাংলাদেশের বিভিন্ন শপ, মার্কেট, ব্র্যান্ড আউটলেট এর অপেশাদারীত্ব, দূর্নীতি, অতি লোভ এবং প্রতারনা নিয়ে।

অভিজ্ঞতাটা ধরতে গেলে গত ২০ বছরের। মূলত ঢাকায় বসবাস শুরুর পর হতে। কারন, উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যন্ত বাবার হোটেলের বাসিন্দা হওয়ায় দুই টাকার ম্যাচ হতে শুরু করে ২০০ টাকার মাছ-কোনোটাই বাজার হতে কেনার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য কখনো ওই বয়সের আগে হয়নি।

আমাদের বাবা-মায়েরা মনে করতেন, বাচ্চাদের কাজ শুধু পড়াশোনা করা। বাজারে গেলে কিংবা তাদের হাতে টাকা দিলে তারা ‘নষ্ট’ হয়ে যাবে।

তো, পেটের দায়ে ঢাকা আসার পর হতে কেনাকাটায় হাতেখড়ি। আমরা যারা ঢাকায় বহিরাগত মানে যারা ঢাকা শহরে হাঁটুতে কাদা নিয়ে ঢুকেছি, তাদের জন্য এই গল্প। ঢাকায় পা রাখার পর ভাইয়া বলল, ঢাকা শহরে কেউ ১৭ বার ধরা না খেলে ঢাকার বাসিন্দা হতে শেখে না। তবে তার সেই মহান বাণী কোনো কাজে আসেনি।

গুলিস্তানের ২০০ টাকার নাইকীর কেডস দেখলে কার মাথা ঠিক থাকে। কিনেছি এবং যথারীতি ২ পা হাঁটার আগে সেই জুতার তলা খুলে যাওয়ায় সেলাই মামার দারস্থ। এমনি করে একে একে গুলিস্তানের পশ ব্রান্ডের সস্তা পারফিউম, লী বা ব্লু জীনস সস্তায় কিনে, ব্রান্ডের ওয়াকম্যান, ঘড়ি সস্তায় পেয়ে কিনে ধরা খেয়ে শিখেছি।

কিন্তু ওই যে, চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী। ১৭ কেন, ১৭০ বার ধরা খাওয়ার সীমাও ছাড়িয়েছে। কিনছি আর ধরা খাচ্ছি।

একটা কথা আছে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, শিল্পোদ্যক্তা ও বিনিয়োগকারীগণ আর তাদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসমূহ কেন যেন কখনোই একটি ‘কোম্পানী’ বা ‘অরগানাইজেশন’ হয়ে উঠতে পারে না।

ওগুলো আজীবনই ‘দোকান’, ’ব্যপসা’, ’ফেকটুরি’ হয়েই রয়ে যায়। তার মূলে রয়েছে অনেক কারন। এক কথায় বলতে গেলে-নৈতিক ব্যবসার মূলনীতিগুলোকে উপেক্ষা, অতি লোভ বা মুনাফাখোরী, টেকসই উন্নয়ন ও বানিজ্য বর্ধনে অবিশ্বাস, দূর্নীতি ও প্রতারনার মনোভাব-এগুলোর কারনেই সেটা হয়ে থাকে।

ঘটনার শুরু অবশ্য বহু আগে। আমি আর আমার পার্টনার নিটোল বিয়ের পর হতেই জিনিসপত্র কিনে ধরা খেলে বা প্রতারিত হয়েছি বুঝতে পারলে সেটা নিয়ে ফেরত যাওয়া আর বিক্রেতার কাছে জবাবদিহী চাওয়ার কাজটি করি। সবসময় না হলেও মাথা বেশি গরম হলেই করি। একবার ৪টি কাঁচা ও পঁচা বেলকে ‘অস্থির’ ভাল বলে বিক্রী করা বিক্রেতাকে পরের দিন গিয়ে সেগুলো ফেরত নিতে ও রিফান্ড করতে বাধ্য করারও নজির আছে।

অয়েল ক্লথ কিনতে গিয়ে ‘গজ কত’ জিজ্ঞেস করায় ‘দিয়েন সত্তুর কইরা’ বলে সেই ক্লথ কেটে প্যাকেট করে দাম নেবার সময় ‘একশো সততুর’ করে ফেলে তারপর মারামারি করার ঘটনাও ঘটেছে।

আপনাদের কাছে মনে হতে পারে, ব্যাটা ও বেটি অত্যন্ত ছোটলোক ও কৃপণ। তাই দুই টাকার জিনিস নিয়ে এই ঠ্যাটামো করে। না, বিষয়টা ঠ্যাটামো নয়। বিষয়টা প্রতারিত হবার অপমান। আমরা মানুষরা কখনোই প্রতারিত হতে চাই না। হলে তা আঁতে ঘাঁ দেয়।

বিষয়টা যে টাকার মামলা নয়, তা বোঝাতে একটা ঘটনা বলি।

একবার দু’জনে মিরপুর-২ হতে দুটি মাটির টব কিনেছি। বিক্রী করবার সময় বিক্রেতা অস্বাভাবিক রকম কম দাম রাখল।
মনে প্রশ্ন জাগলেও বিষয়টা ধরতে পারলাম না। ঘরে এনে দেখা গেল, একটা টব পুরোপুরি ফাটা। কম দামের সেটাই রহস্য। পরের দিন নিয়ে গেলাম।

বিক্রেতাকে যখুনি বললাম, বদলে দিতে বা রিফান্ড দিতে, তার চেহারা বদলে গেল। অপমানকর আচরন ও কথা বলা শুরু করল। ঠান্ডা মাথার আমার অনেকটা পরে ধৈর্যচ্যুতি ঘটায় রীতিমতো বাদানুবাদ ও ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে গেল।

পথচারীরা এগিয়ে আসায় সে যাত্রা বিক্রেতা ‘সামান্য দেশশো টেকার লাইগা এমুন করে ক্যা’-এই চরম বাক্যবান হেনে আপাতত রেহাই পেতে চাইল।
আমি তাকে তার ফাটা টব দিলাম, টাকাটা নিলাম। নিয়ে আবার তার হাতে দিয়ে দিলাম। তার হাত হতে টব দুটো নিয়ে তৎক্ষণাৎ আছাড় মেরে ভেঙে ফেলে বললাম,

‘নে, তোর টাকা দিয়ে দিলাম, আমার টব আমি ভাঙলাম।’ হল?”
[স্যরি, টেমপার ল্যুজ হয়ে তুই তোকারীতেও চলে যায়, পরে এই ভুল উপলব্ধি করি।]

সুতরাং, বিষয়টা টাকা নয়, বিষয়টা প্রতারনা সহ্য না হওয়া।

আসল গল্পে আসি।

দীর্ঘ ৭-৮ মাস নিটোলকে করোনাজনিত গৃহবন্দী রাখবার পরে কিছুদিন হল গুহা হতে বের হওয়া শুরু করি দু’জনে।

সম্প্রতি মিরপুরের ৩টি বড় ব্র্যান্ড দোকান হতে কিছু কসমেটিকস কিনলাম। বেশ বড় অঙ্কের টাকার। ঘুরে ঘুরে সময় নষ্ট করে তিন চারদিন ধরে দেখেশুনে কেনাকাটা শেষ হবার পরে যখন নিটোল সেগুলো বাসায় নিয়ে মিলাতে বসল,

দেখা গেল, প্রায় ৫০% পণ্যেই প্রতারনা হয়েছে। কীভাবে? ব্যান্ডেড কাজল কেনা হয়েছে। তার প্রায় সবগুলোই দোকানের পুরোনো ট্রায়াল দেয়া ও ইউজড প্রোডাক্ট। অর্থাৎ, পরিমাণে কম এবং ইনট্যাক্ট নয়।

ইউজড প্রোডাক্ট শারপেন/রিপ্যাক করে আবার সেল করছে। যদিও বিক্রেতা সেলস গার্লদের অসংখ্যবার বলে নিয়েছি, “ইনট্যাক্ট দেবেন।”

[যদিও ইনট্যাক্ট নামে যেটা এনে দেয়, সেগুলোরও একটি বড় অংশ রি-প্যাকড ও টেমপারড।]

অতঃপর সেই পণ্য নিয়ে আবার দোকানে হামলা। প্রথমে অম্লানবদনে অস্বীকার করলেও, যখুনি পুলিশ ও ভোক্তা অধিকারের ভয় দেখালাম, সুড়সুড় করে করজোরে ক্ষমা প্রার্থনা আর রিফান্ড।

সেই সাথে পেপসি ও কফি মাগনা। একটি নয়, তিন তিনটি ব্র্যান্ডেড শপে একই ঘটনা। তাও মাত্র ৭ দিনের রেঞ্জে।

আর সবচেয়ে ভয়ানক যে ঘটনা সবশেষ হয়েছে, যার প্রেক্ষিতে এই লেখা, সেটা হল, ভুয়া ও মানহীন পণ্য গছিয়ে দেবার চেষ্টা করার সময় হাতেনাতে ধরেছিল একটি ব্র্যান্ড শপের সেলসগার্লকে।

তখন তা নিয়ে বাদানুবাদ, ক্ষমাপ্রার্থনার মুহূর্তে সৃষ্ট জটলার সুযোগে দোকানের অন্য তিন সেলসগার্ল তার ব্যাগ হতে ৫ হাজার টাকা মূল্যের পণ্য সরিয়ে ফেলে।
পরবর্তিতে সেটা যখন ধরা পড়ল, তা নিয়ে আবার আউটলেটে গেলাম, সিসিটিভির সাহায্য নিলাম এবং বিশাল গ্যাঞ্জাম করার পরে ক্ষমা প্রার্থনা ও কমপেনসেশন দিতে বাধ্য হয়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা ক্রেতাগণ ‘মানসম্মান’ হারানোর মতো কল্পিত ও অহেতুক আতঙ্কে ‘প্রতারিত হয়েছি’-বুঝেও আর তা নিয়ে প্রতিবাদ করি না। লোকে কী ভাববে-সেই ভয়ে।
এতে করে ওই অসৎ মুনাফাখোরা আরও সুযোগ পায়। এই লোকলজ্জার ভয়ের কারনেই ২৫ টাকার পেঁয়াজ ৩০০ টাকা হয়, ১.৫ টাকার মাস্ক ৯০ টাকা হয়ে যায়। বিগত ২১ টি বছর, ঢাকায় থাকার সুবাদে নানা স্তরের বড় বড় ব্র্যান্ড (একদম চূড়ায় থাকা ব্র্যান্ডসহ) এর নানামুখি শঠতা, প্রতারনা, অসততা, অপেশাদার মনোভাব এবং কাস্টমারশীপের ভয়ানক অনুপস্থিতি প্রত্যক্ষ ও হজম করেছি।

এখানকার সেলস পিপলদের সিংহভাগই ন্যুনতম পেশাদারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না। আমার মনে হয়েছে, এদের ৯৯%ই অসহিষ্ণু, ফ্রাস্ট্রেটেড, ক্ষিপ্ত, বঞ্চনাজনিত ক্ষুদ্ধ, অপেশাদার।

অবশ্য আউটলেট ও ব্র্যান্ড এসবের জন্য ৯০ ভাগ দায়ী-প্রধানত খুবই নিম্নহারে মজুরী, উচ্চ কর্মঘন্টা এবং প্রশিক্ষণের অভাব।

কাস্টমারশীপ ও প্রোফেশনালজিম তো বহুত দূর কি বাত। ব্যবসা ধরে রাখতে হলেও যে কাস্টমারকে কীভাবে ট্রিট করতে হয়-সেটুকু শিখিয়ে পড়িয়ে নেবার দরকারও বোধ করেন না বড় বড় দোকানদার তথা শপাররা। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সেলস্যম্যানরা একা নারী ক্রেতাকে দেখলে বেশি ডেসপারেট হয়ে যায়।

সাথে পুরুষ থাকলে অবশ্য তারা নিজেদের পুরুষসুলভ কেনাইন নখদন্তগুলো একটু গুটিয়ে রাখেন। তবে বাংলাদেশের যেই দোকানেই যান না কেন, দুটোর স্থলে তিনটা জিনিস দেখাতে বললেই সেলসম্যান বা গার্লরা আগ্রহ ও ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন।

আর তার পরে যদি আপনি ওই পণ্য যেকোনো কারনে একটাও না নেন, আপনাকে ন্যুনতম একটা মুখ ঝামটা দেবে না-এমন মহামানব আমি সবচেয়ে দামী দোকানেও দেখিনি। আর যদি সেটা হয় রাস্তার, ফুটপাথের কোনো দোকান, আপনি শেষ। আপনার চৌদ্দগুষ্টি ধরে গালাগাল শোনাও বিচিত্র নয়।

এলিফ্যান্ট রোড, নীলক্ষেত, গাউছিয়া বা নিউমার্কেটের দোকানীদের সাথে কাস্টমারের মারামারি (আসলে বেশিরভাগ সময়ে দোকানীরা জোট বেঁধে কাস্টমারকে পিটুনী) করার ঘটনা তো মশহুর।

সবচেয়ে মজার বিষয় হল, সেলসম্যানদের চেয়ে সেলস গার্লরা বেশি এগ্রেসিভ। কোনো এক অদ্ভূৎ কারনে, তারা নারী কাস্টমারের সাথে বেশি রাফ থাকেন।

সম্ভবত এক ধরনের স্বজাত্য প্রতিযোগীতা, জাত্যাভিমান ও হিংসা থেকে এটা করেন।

পণ্যের সাইজ, লেবেল, কোয়ালিটি, স্পেসিফিকেশন, রেট অব প্রাইস, টোটাল প্রাইস-এগুলো সেলসম্যান বা গার্ল, বারকোড রিডার ও কম্পিউটারের ওপর ভরসা না করে নিজেও চেক করুন। আমি অসংখ্যবার দেখেছি, বারকোড এরর, সেলসপারসনদের হিসাবে এরর।

তার ওপরে, সেল বা ডিসকাউন্ট বা এটার সাথে সেটা ফ্রি-চলার সময় নানা কায়দা করে আপনাকে ঠকানো হয়। তাই দোকানে গিয়ে মোবাইল না গুতিয়ে একটু হিসেবে ব্যস্ত হোন। ক্যাশমেমোর ছাপ্পা যতদিন ধুয়ে মুছে না যায়, সংরক্ষণ করুন।

এই আজকেও ‘ভড়ঙের’ একটা কামিজ আমার গিন্নী প্রথমবার পরবার পরেই ছিড়ে গেল। এখন সেটা নিয়ে আউটলেটে দরবারে যাব। ক্যাশমেমো ৪ মাস আগের। ভাবুন অবস্থা?

আমাদের এখানে পণ্য বিক্রেতা, তা সে হোক ৫০ লাখ টাকা দামের গাড়ি, হোক তা ১০ টাকার ঝালমুড়ি, ক্রেতাকে পণ্যের গুনাগুন ও টাকায় ঠাকানো খুবই প্রচলিত। অবশ্য আমরা ক্রেতারাও তথৈবচ।

আমরা জানি যে, মিরপুর ১ নম্বর হতে ফুলকপি কিনলে তাজাও পাবো, দামও পড়বে ১৫ টাকা পিস। আমরা আলগা টাকার গরমে সেটাই কিনব বড় রাস্তার পাশের ঝাঁ চকচকে সুপার শপে চেকিন করে, দাম পড়বে ২৫ টাকা, জিনিসও বাসি। আমাদের ছোটবেলায় দুধে পানি মেশানো হত। এখন হয় পানিতে দুধ মিশিয়ে বিক্রী করা।

তফাত এখানেই।

আমাদের শৈশবে আমি বিরল কোনো মুহূর্তে বাবার সাথে বাজারে যাবার অনুমতি পেলে দেখতাম, বাজারে মাছ পঁচা হবে কিনা, মাংসটা মহিষের দেবে কিনা, কাপড়টা গজে কম দিয়ে দেয় কিনা-এই দুশ্চিন্তা তাকে কখনোই করতে হত না। বিক্রেতারা মানুষ ঠকিয়ে মুনাফা করতেন না। হ্যা, ১% বদলোক সব যুগেই থাকত।

অথচ আজ?

প্রতিটা মুহূর্তে আপনি সতর্ক এবং কেনাকাটায় ভয়ানক রকম দক্ষ ও অভিজ্ঞ না হলে আপনি স্রেফ লুট হয়ে যাবেন।

আমার এই লেখা যদি কোনো আপ্পি, সিস, খালাম্মা, পিসীমনি, পি-মনি, ম্যাডাম পড়ে থাকেন, তাহলে একটা অনুরোধ।

দয়া করে “আমার কি কিছু কেনার দরকার ছিল” কিংবা “দেখি গিয়ে, কিছু কিনতে হত কিনা”-স্রেফ এটা যাঁচাই করতে শপিংয়ে যাবার মানসিক রোগ যদি আপনার প্রবল হয়ে থাকে, তাহলে..............................

না, শপিংয়ে যেতে নিষেধ করছি না। যান। আরও যান।

দয়া করে আপনাদের পতিদেবকে একটু রেহাই দিন। আপনাদের শপিংয়ের ব্যাগ বইতে বইতে তাদের স্থায়ী ব্যাকপেইন হয়ে যাচ্ছে।

আর আপামর জনসাধারন, নিজে অভিজ্ঞ ও সতর্ক হোন, আর না হয় অভিজ্ঞ লোকের সহায়তা নিন।

আর তাও না পারলে নিজেকে মহামতি হাতেম তাই হিসেবে গড়ে নিন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৬

গফুর ভাই বলেছেন: ভালো লিখেছেন কিন্তু এপিসোড আকারে দিলে তা মানুষের মাথায় থাকত যাই হোক ।আমার মনে হয় তাড়াহুরা করতে গিয়ে এপিসোদ আকারে দিতে পারেন নাই।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৮

বেচারা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। হ্যা, বিশাল হয়ে যাবে-সেটা জানতাম। তাড়াহুড়ো, হ্যা, তা বটেই। লেখার পেছনে সময় দেয়া আর লেখার প্রচার, প্রকাশে সময় দেবার দিকটা ভিন্ন। দ্বিতীয় দিকটাকে সময় দিই কম। তাছাড়া আমার লেখালিখি অনেকটা নিজের মনের খোরাক হিসেবে করি। বিধায় কীভাবে দিলে পাঠক খাবে-সেই চিন্তাটা কম করি।

২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: গাড়ি চালানো শেখা কঠিন কিছু না। কিন্তু লাইসেন্স পাওয়া অনেক কঠিন।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৮

বেচারা বলেছেন: তা টের পাচ্ছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.