নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুয়া মফিজ

ভুয়া মফিজের সাথে ভুয়ামি না করাই ভালো...

ভুয়া মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জোকার ব্যবচ্ছেদ!!!

১৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:০৩



মাঝে মাঝে দেখি কিছু লোকজন বিচিত্র ধরনের আলোচনা করে, যা মনে বেশ চিন্তার খোরাক জোগায়। চিন্তাগুলো সময়ে সময়ে এমন হয় যে, ভাবি.........আমাদের দেশের কিছু মানুষ কেন দেশের হয়ে উঠতে পারে না। কেন দলের বা ব্যক্তির উর্ধে উঠতে পারে না। কেনই বা ব্যক্তিস্বার্থের জন্য তারা দেশের স্বার্থকে জলান্জলি দেয়? আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা কি এতোটাই দূর্বল যে, আমাদের কতিপয় তথাকথিত শিক্ষিত লোককেও তাদের বিবেককে বন্ধক রাখতে হয়, আত্মসন্মানবোধকে বিক্রি করে দিতে হয় একটা দলের অনৈতিক কর্মকান্ডকে শর্তহীনভাবে সমর্থন করার জন্য? খুব চিন্তার বিষয়।

ক'দিন আগে এমনই একটা আলোচনার কথা জানলাম। জানতে পারলাম, সেখানে তিনজন ভিভিআইপি জোকারের বর্ণনা এসেছে। প্রথমজন প্রয়াত এরশাদ সাহেব। দ্বিতীয়জন প্রায়-প্রয়াত; আমার মতে বর্তমানে জিন্দালাশ, পতি..........থুক্কু, আমাদের প্রাণপ্রিয় আপা, জনদরদী শেখ হাসিনা। আর তৃতীয়জন ড. মুহম্মদ ইউনুস। ড. মুহম্মদ ইউনুস এই দুইজনের সাথে একই তালিকায়!!! সিরিয়াসলি!!! বোঝাই যাচ্ছে, এটা কোন অন্ধ দলভক্তের গোবর মস্তিস্কের উদ্ভট কল্পনা। তা বেশ। এমন কল্পনা যে কেউ করতেই পারে। তবে সমস্যা হলো, ডায়াবিটিক রোগীর মূত্রচাপের মতো অন্ধভক্তির চাপ এতোটাই প্রবল যে, আলোচকের বোধবুদ্ধিই একেবারে লোপ পেয়েছে।

আসেন, সেইসব ভিভিআইপি জোকারের কিন্চিৎ আলোচনা; আর এক্সক্লুশান-ইনক্লুশান নিয়ে খানিকটা কথা বলি।

এরশাদ সাহেব বহুকিছুই ছিলেন। একজন সেনাপ্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান, বিরোধী দলের প্রধান, কবি, বিশ্ব-বেহায়া ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে ''জোকার'' উনার টুপিতে লাগানো আরেকটা পালক হয়ে রইলো। ভালো দিক এটা যে, প্রয়াত হওয়ার পরেও উনার অর্জন থেমে নাই। বাংলাদেশের যথাযথ রাজনৈতিক ইতিহাসের পর্যালোচনা আর মুল্যায়নের জন্য উনাকে নিয়ে আলোচনা এড়ানো যায় না, তবে একজন প্রয়াত মানুষ নিয়ে খুব বেশী প্রয়োজন না হলে আমি আলোচনায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না........কারন, উনি এখন সব ধরনের ভূল-ত্রুটির উর্ধে।

এদিকে আমাদের প্রাণপ্রিয়, প্রায়-প্রয়াত আপা মাত্রই জম্বিতে রুপান্তরিত হয়েছেন। কাজেই উহা জোকার, স্মোকার নাকি এক্টর, সেসব নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা যাবে। সময় আছে। উহা বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর তেমন একটা প্রাসঙ্গিক না হলেও একেবারে ফেলে দেয়া যায় না। বিনোদনের জন্য ইহাকে বাংলাদেশের মানুষের খুবই প্রয়োজন। আর কিছু না হলেও এই জাতি বিভিন্ন সময়ে দেয়া রেসিপিগুলোর জন্য উহাকে আজীবন স্মরণ করবে।

এবার আসি এক্সক্লুশান-ইনক্লুশান বিষয়ে। ড. ইউনুসকে জোকার-বিষয়ক কোন আলোচনাতেই আমি রাখতে চাই না, কারন উনাকে শুধু বাংলাদেশ না, সমস্ত বিশ্বের মানুষই চিনে। কেউ এখন পর্যন্ত জোকার বলে নাই। কাজেই এই বিষয়ে আরো পর্যালোচনার প্রয়োজন আছে। তবে, একজনকে আমি অবশ্যই ইনক্লুড করতে চাই। সে হলো, তারেক জিয়া; শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বড় ছেলে এবং বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী হওয়ার কারনে আমি সব সময়েই তার প্রতি একটা আত্মার টান অনুভব করি। এখন যাকে আমি আত্মার আত্মীয় মনে করি, তাকে নিয়ে আমার উপলব্ধি বা পর্যবেক্ষণ মুল্যবান হওয়ারই কথা। নয় কি!!!!

বর্তমান বিএনপিতে স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ানের সংখ্যা এতোটাই বেড়েছে যে, কাকে রেখে কাকে নিয়ে বলবো সেটাই মাঝে মধ্যে বুঝে উঠতে পারি না। থুতু বিশেষজ্ঞ, মূত্র বিশেষজ্ঞ, অজু বিশেষজ্ঞ, ভারতীয় দালাল বিশেষজ্ঞ..........কতো রকমের বিশেষজ্ঞের সমাহার!!! এরা সবাই তাদের কথার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত জাতিকে বিনোদিত করে চলেছে। এই বিনোদনকারীদের সর্দার সম্পর্কে দুই চাইরটা কথা বলার জন্যই এতো প্রসঙ্গের অবতারণা।

তারেক জিয়া বাংলাদেশের ভবিষ্যত বিবেচনায় এখন সবচাইতে আলোচিত চরিত্র। সুতরাং তার আমলনামা বা অতীত কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনাও খুবই প্রাসঙ্গিক।

বিএনপি'র প্রথম মেয়াদকালে (১৯৯১-১৯৯৬) দুর্নীতি তেমন একটা চর্চিত বিষয় ছিল না। একটা সফল স্বৈরাচারবিরোধী গণ-আন্দোলনের পর অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ক্ষমতায় এসে সরকার কল্যানমুখী কাজ করারই চেষ্টা করেছিল। তবে সামগ্রিকভাবে বেশ কিছু ভুল তো অবশ্যই ছিল, যার কারনে তাদের পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতা হারাতে হয়। তাছাড়া তারেক জিয়ার সেসময়ে বয়স কম থাকায় তার পক্ষে সংঘবদ্ধ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া সম্ভব হয় নাই। আমেরিকার পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের শিক্ষক ড. সাঈদ ইফতেখার আহমেদ যথার্থই বলেছেন, খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামলে দুর্নীতি তেমন একটা বিস্তার লাভ করেনি।

কিন্তু বিএনপি'র দ্বিতীয় মেয়াদকালে (২০০১-২০০৬) হাওয়া ভবন থেকে তারেক যেই পরিমান দুর্নীতির কর্মকান্ড চালিয়েছিল, সেটা সেই সময়ের হিসাবে অভূতপূর্ব। সেই সময়ে টানা তিন বছর দুর্নীতিতে শীর্ষস্থানে ছিল বাংলাদেশ। কিছু উদাহরন দেই........গিয়াসউদ্দিন মামুনের সাথে ''খাম্বা সিন্ডিকেট'' করে রাষ্ট্রের প্রায় ১২০০ কোটি টাকা লোপাট করা হয়। এছাড়াও বিদ্যুৎ খাতের ১২টা প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় দেখিয়ে প্রায় ২৭৩ কোটি টাকা লোপাট করা হয়। টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকায় ৮০ মেগাওয়াটের একটা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নামে লুটপাট করে ২১ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করা হয়, যার থেকে বিশ কোটি টাকা পরবর্তীতে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এছাড়াও গ্যাটকো, সিমেন্স নিয়ে দুর্নীতি ছিল তখনকার হট নিউজ। সেসবে অবশ্য ছোটভাই কোকোও জড়িত ছিল, তবে তার দায় তারেক জিয়া বা তার বিএনপি নিশ্চয়ই এড়াতে পারে না!!! এসব পরবর্তীতে আম্রিকাতে এফবিআই এর তদন্তেও প্রমাণীত হয়। এছাড়াও ফোর স্ট্রোক সিএনজি আমদানী, বিমান বাংলাদেশ, স্বাস্থ্যখাতসহ বিভিন্ন খাতে তারেক জিয়ার বিরাট আশির্বাদ ছিল। রুপগন্জের তারাবো আর কক্সবাজারে শত শত একর ফসলী জমি দখল করে গড়ে তোলা হয় বিএনপি পল্লী। বলতে থাকলে তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে। হতেই থাকবে। এফবিআই আর উইকিলিকসের পুরানো খবর ঘাটাঘাটি করলেই এসব সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

এমনকি তারেক জিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না দিতে ওয়াশিংটনে গোপন তারবার্তা পাঠিয়েছিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাবশালী নেতা তারেক জিয়া ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে উল্লেখ করে ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর ওই তারবার্তা পাঠানো হয়েছিল। তারবার্তায় বলা হয়, দূতাবাস মনে করে, রাজনৈতিকভাবে সংঘটিত ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতির জন্য তারেকই দায়ী।

তারেকের ব্যাপারে ঢাকায় কাজ করা সবশেষ মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি তার দেশকে লিখেছিলেন , ‘বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান জিয়াউর রহমানের কুখ্যাত বড় ছেলে এবং মায়ের উত্তরসূরি, ''ভয়ঙ্কর রাজনীতিক এবং দুর্নীতি ও চুরির মানসিকতাসম্পন্ন সরকারের প্রতীক'' উল্লেখ করে তাকে বাংলাদেশে মার্কিন স্বার্থের প্রতি হুমকি হিসেবেও দেখানো হয়। সূ্ত্র।

এই যে এতো বছর ধরে তারেক লন্ডনের অভিজাত এলাকায় বাড়ি কিনে থাকছে, দামী গাড়িতে চড়ছে, মেয়েকে ব্যারিস্টারী পড়িয়েছে, শান্তিতে নিরবচ্ছিন্ন জীবন-যাপন করছে, সেটা কিভাবে? সে কি কোন চাকুরী বা ব্যবসা করে? এই বিপুল পরিমান টাকার উৎস কি? যুক্তরাজ্যভিত্তিক মাসিক পত্রিকা এশিয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজের ২০১৮ সালের শীর্ষ ১০ জন বাংলাদেশী ধনীর মধ্যে তারেক জিয়ার অবস্থান ছিল ৩ নাম্বারে। আর হাসিনাপুত্র জয় ছিল ৪ নাম্বারে (একটা ইন্টারেস্টিং বিষয় জানিয়ে রাখি........পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯এ তারেক নেমে যায় ১০ এ কিন্তু জয় ৩ এ উঠে আসে!!! কি বুঝলেন?)। যাই হোক, দেশবাসীকে এসবের একটা পরিস্কার ব্যাখ্যা দেয়ার সময় এসেছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী তারেক জিয়ার সমস্যা এখন প্রধানতঃ দুইটা। প্রথমতঃ খাম্বা তারেক বা মিস্টার ১০% হিসাবে তারেক যেই খ্যাতি অর্জন করেছিলো, সেই ব্যাপারগুলো মোকাবেলা করা। দ্বিতীয়তঃ ভারতের কোলে চড়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার ব্লু-প্রিন্ট সম্পর্কে দেশবাসীর সতর্ক থাকার বিষয়ে দৃষ্টি রাখা।

আপাততঃ দুর্নীতি নিয়েই লিখলাম, ভারতের কোলে চড়ে বসা নিয়ে আরেকদিন লিখবো বা অন্য কোন বিজ্ঞ ব্লগার লিখতে পারেন। এখন আপনারাই বলেন, এমন একজন দুর্নীতিবাজ মানুষ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের কি অবস্থা হবে। তদুপরি, আমাদের মনে রাখতে হবে, তার সরকারের মন্ত্রী কারা হবে। মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদের মতো প্রমাণীত দুর্নীতিবাজ, মূত্র এবং অজু বিশেষজ্ঞ দুদু আর বুলু, ভারতীয় দালাল বিশেষজ্ঞ মির্যা ফখরুল ও সালাহউদ্দিন............এরাই তো!!!! তাছাড়া তারেক জিয়ার শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক উপদেষ্টা মাহদী আমীন তো একজন বিশিষ্ট ভারতীয় দালাল। সে গবেষণা করে তারেক জিয়াকে আর কি শিক্ষা বা উপদেশ দিবে, আরেকজন লেন্দুপ দর্জি হওয়া ছাড়া!!! এদের দ্বারা দেশ ও জাতি কিভাবে লাভবান হবে?

এই যে বাংলাদেশের সাধারন জনগনের টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে কব্জা করে যুক্তরাজ্যে ল্যাভিশ জীবন-যাপন করছে একজন ব্যক্তি; শুধুমাত্র জিয়া দম্পতির সন্তান হওয়ার কারনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে, এটাকে আপনি কিভাবে দেখেন? বুকে হাত দিয়ে বলেন দেখি, বর্তমানের হাইপারসনিক যুগে বাংলাদেশের মতো একটা উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে সঠিক নেতৃত্ব দেয়ার মতো কি কি যোগ্যতা আছে তারেক জিয়ার? অথচ এই একই ব্যক্তি এখন দেশকে দুর্নীতি আর চাদাবাজীমুক্ত করার ছবক দিচ্ছে; একদল অথর্ব, অযোগ্য, অকর্মণ্য কিন্তু দুর্নীতিবাজ আর দালালশ্রেণীর গ্রুপকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, এটা কি সেরা জোক না? এই জোক পরিবেশন করা ব্যক্তিই হলো এখনকার সমসাময়িক বাংলাদেশের সবচাইতে বড় ভিভিআইপি জোকার। আর এর সমর্থনে এগিয়ে এসেছে হালুয়া-রুটির লোভে থাকা দীর্ঘদিনের অভুক্ত একদল লোভী, নির্লজ্জ এবং বিবেক বর্জিত তথাকথিত সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত মানুষ!!!!!!

আফসোস!!! বড়ই আফসোস!!!!


ছবিঃ উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৯

আরোগ্য বলেছেন: সময় কইরা আমু। হাজিরা দিয়া গেলাম।

১৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: হাজিরা দেওনের লাইগা ধন্যবাদ। সময় কইরাই আহেন..........অপেক্ষায় থাকলাম!!!! :)

২| ১৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:৪০

যাযাবর চখা বলেছেন: জাতির শ্রদ্ধার পাত্রদের যথাযথ সন্মান করা উচিত।

১৮ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:৫৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সঠিকই বলেছেন। অনেক ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.