![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশে আবারো নিলয় নীল নামে এক ব্লগারকে খুন করা হলো। প্রসংগ ক্রমে সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবোধক। এ প্রসংগে ধর্ষন মামলা সংক্রান্ত একটি কৌতুক মনে পড়ে গেলো। “এক আদীবাসী নারী ধর্ষিত হয়েছে। সে যথারীতি মামলা করলো। মামলায় শুনানীর দিন আদালতে ভিকটিমকে ঘটনার বর্ণনা দিতে বলা হলো। ওই নারী তার ভাষায় বলতে লাগলেন-হামি যখন লাকড়ি কুড়াতে গেলাম, তখন গ্রামের মোড়লের ছেলে সেই জঙ্গলে বসেছিল। সে হামাকে ডাকলো। হামি কাছে গেলাম। তারপর সে হামাকে জড়িয়ে ধরলো-হামি মোড়লের বেঠাকে বললাম-এমন ইয়ারকি করছিস কেন বাফু। তারপর ভাবলাম দেখি মোড়লের বেঠা কি করে। সে হামাকে শুইয়ে দিলো, হামার কাপড় খুললো, তখন হামি বললাম-এঠা ক্যামন ইয়ারকি বাফু। মোড়লের বেঠা বললো-তোর সাথে ইয়ারকি করতে ভালোই লাকবেক। তারপর মোড়লের বেঠা হামার উপর উঠিয়া আমার ইজ্জত নাড়িতে লাগিল। হামাক সুরসুরি লাগলো বঠে-তবে ভাবলাম দেখি মোড়লের বেঠা কি করে। তারপর সে হামার ইজ্জত লইয়া লিল। এতে হামাকে ভালো লাগছিল-কিন্তু এখন সমস্যা হইয়া গেছে যে, হামার পেট ফুলিয়া গেছে “
ধর্মনিরেপক্ষ বাংলাদেশে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয় নিয়ে সরকারের পথচলা। গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার হরণ হয়েছে বটে-তারপরেও সরকারের লোকজন বলছে-সুষ্ঠভাবে ভোট হয়েছে, আর রাজনীতির খেলাতে বিরোধীদলের পরাজয় ঘটেছে। খুন, গুম, কৃষকের হয়রানি, মানুষের ভোগান্তি থাকা সত্ত্বেও সরকারের জিডিপি বাড়ছে বলে অর্থমন্ত্রী মহোদয় সহাস্যে ঘোষনা দিয়ে যাচ্ছেন। আর নির্লজ্জ পাবলিক সেই ১৭৫৭ সাল থেকেই দেখে আসছে-সরকারগুলো এতো ইয়ারকি কেনহে করছে, দেখি এইবার মোড়লরা কি করে। অবশেষে বাংলার দামাল ছেলেরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন করলো। নিজেরাই নিজেদের ভূমি রক্ষা করবে এই প্রত্যাশায়। ১৯৭১ সালেও রাজাকার আলবদররা দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলো। দেশ স্বাধীনের পরে তাদের ক্ষমা করলেন মোড়ল সাহেব-দেখতে চাইলেন, দেখি এরা আর কি করে। তারপরে যুগে যুগে রাজাকার আলবদরের দোসররা গাড়ীতে পতাকা ব্যবহার করতে লাগলো। মোড়লরা আর পাবলিক ভাবলো-এরা এখনো ইয়ারকি করছে, দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি করে।
মৌলবাদের উত্থান ঘটছে দ্রুত। তারা অনেকবার তাদের অস্তীত্ব জানান দিয়ে সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। তারপরেও সরকার মনে করছেন-দেখি ওরা আর কি করে।
প্রগতিশীলদের একের পর এক হত্যা করা হচ্ছে। রাজীব, অভিজিত, অনন্ত নিলয় নীল সহ অসংখ্য মুক্তমনা ব্লগারকে খুন করছে ওরা নির্দ্বিধায়। সরকার চুপ রয়েছেন। মাত্র ৯ মাসে রাজাকার আলবদরের বাহীনি ৩০ লাখ মানুষকে খুন করেছে, ২ লাখ নারীর সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে-তারপরেও সরকারের শম্বুক গতি যুদ্ধাপরাধের বিচারকে তড়ান্বিত করতে পারেনি। বছরের পর বছর ঝুলে আছে বিচার। সবই যেন ক্ষমতায় টিকে থাকার অপকৌশল।
হুমায়ুন আজাদ সাহেবকে কুপিয়ে খুন করা হলো-ব্যাপক শোক বিবৃতি দিলেন সরকার পক্ষীয় লোকজন-কিন্তু খুনীরা কি ধরা পড়েছে ? সরকারের সদিচ্ছা আমাদের মর্মাহত করেছে।
অনন্ত হত্যাকান্ডের পরে কঠোর সমালোচনা করে লিখতে লাগলাম। আমার ভাগ্যেও জুটলো হুমকি আর মৌলানাদের অনুসরন। নাস্তিক বলতেও ছাড়লো না ওরা। অত:পর স্ত্রী-সন্তান-আমি তিনদিকে বসবাস করতে লাগলাম। আমাকে অনুসরন করা ওরা ছাড়েনি। গ্রামে এসে আশ্রয় নিলাম-ওরা ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে গেলো। ল্যাপটপে এসব উগ্রপন্থী সম্পর্কে যতরকম তথ্য ছিল-তা ভিওআইপি ফোন নম্বর থেকে আমাকে একেকজন জানান দিয়েছে। সোজা কথায় বলে দিয়েছে-আমার অবস্থানের কথা তারা জানে। এর চেয়ে বেশি লেখালেখি করার চেষ্টা করলে, চাপাতি আমার গর্দানেও আঘাত হানবে।
সরকারের উচ্চ মহলে বিষয়টি জানেন। নিরাপত্তার কথা নাইবা বললাম। পালিয়ে বেচে আছি। আর যারা পালাচ্ছেন না, তারা খুন হচ্ছেন একের পর এক। সরকার শুধুই দেখছেন-আর ভাবছেন, দেখি আর কি হয়?
বাংলাদেশে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, সম্প্রতি আইএসআইএস, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম সহ শত শত মৌলবাদ সংগঠন প্রতিষ্ঠা পেয়েছেও। কওমী মাদ্রাসা সম্পর্কে সরকার জানলেও ততটা সজাগ নন। জঙ্গী আর উগ্রবাদ দমনের পরিবর্তে প্রগতিশীল নিধন আর দমনে সরকার সংশ্লিষ্টরা বেশ মনযোগি হয়েছেন। বংশ পরস্পরায় রাজনীতিবীদরা নিজেদের পরিবার পরিজনদের কথাই ভাবছেন। দেশ নিয়ে ভাবনার কিছু রয়েছে এটা আওয়ামীলীগ বিএনপি কেউ ভাবছেন না। নিষ্পেষিত মানুষ, ধর্মীয় গোড়ামী, কু-সংষ্কারের বিরুদ্ধে একদল প্রগতিশীল দিনরাত এক করে ফেলছেন-কারন দেশ স্বাধীন হলেও এখনো আমরা পরাধীন। মৌলবাদের অস্তীত্ব দেশকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
আর কত প্রাণ গেলে সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। নাকি সরকার মৌলবাদের সাথে আতাত করেছে ?
দেশের ব্লগাররা তো দেশকে ভালোবেসে মানুষকে সচেতন করছে মাত্র। দেশে এত মৌলবাদী আর জঙ্গীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত রয়েছে, সেখানে সরকার কি পারেন না-ব্লগারদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভাবতে ?
©somewhere in net ltd.