নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরনামহীনা

বরফজল

একজন মানবী

বরফজল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি যখন গায়েব থাকি।।

২৫ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২২

আমার কিছু দিন পর পর গায়েব হয়ে যেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু মানুষ হয়ে জন্মানোর এই হল সমস্যা, আপনি যা চাইবেন তা করতে পারবেন না। মানুষ থেকে পালিয়ে বনে জঙ্গলে যেতে পারলে ভাল হতো, কিন্তু বন জঙ্গল পাওয়ার কোন রাস্তা আমার কেনো আপনাদের কারোর ই নাই আমি জানি। কিন্তু আমার এত বেশি ইচ্ছে করে যে আমি সত্যি গায়েব হয়ে যাই। আমার গায়েব হওয়ার উপায়টা খুবই ফালতু, তাই প্লীগ লাগে আমার সাথে এই কাজটা কেউ করবেন না, দোহায় লাগে আপনাদের. #:-S

আমি যে খারাপ কাজ টা করি তা হলো আমি সবার ফোন ধরা বন্ধ করে দেই, টেক্সট এর উত্তর দেইনা, আমি ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ করে, ঘর অন্ধকার করে বসে থাকি...এমন কি খাই ও না, ঘুমাই না, আরো কিছু আজিব কাজ করি, জংলী ভাব আনার জন্য। এমন হয়েছে যে আমি টানা দুদিন আমার রুম থেকে বের হয়নি। আমার বুয়া খুব চিন্তিত হয়ে দরজা ধাক্কাধাক্কি করে, তারপর আমার ইংরেজি আজীব ধরনের বকা খেয়ে বাকিটা সময় আর কাছে ঘেসে না। বাসায় কেউ কষ্ট করে চলে আসলে বুয়া সুন্দর শিখানো মিথ্যা আওড়ায়, আমগো আফা তো বাসায় নাইক্কা, আফনে ফোন দিয়ে আইসেন। সুবিধা হল আমার বাসায় সাধারনত কেউ আসেনা, সিংগেল ম্যান ইস নট allowed, বাট আপনি চাইলে দলেবলে আসতে পারেন। আর মহিলা/ নারী জাতি আমকে কিঞ্ছিত বেশি ভালবাসে তাই কেউই ফোন না করে হুট করে আমার সুন্দর চাঁদ মুখ দেখতে চলে আসেনা। আত্মীয় স্বজন অনাত্মীয় হয়ে গেছে সে বহুকাল আগে-ই। ঈদে পার্বণে কেউ আমাকে একটা ফোন দেয় না, আর গায়েব যে হয়েছি এইটা কেমন করে জানবে? আমার আত্মীয় স্বজন আমার মরার খবর জানবে খবরের কাগজে। যদি কেউ ছাপে আর কি। বন্ধু অপু হাসান​ মরার একটা নিউজ করে দিও কিন্তু। অগ্রিম পেমেন্ট নিয়ে রেখ। তো ঘটনাটা হলো গায়েব হওয়া ব্যাপারটা আমার কাছে অনেকটা দুধ ভাত।

আমাকে যে খুব একটা মানুষ খুঁজে তাও না। অফিস দিনে অনেক ফোন আসে, কিন্তু এমন হয় যে সপ্তাহন্তে সারাদিন কেউ আমাকে একটা ও ফোন করেনি।সে জন্য আমার কোন দুঃখ বা অনুতাপ নেই, আমি এরকম-ই চেয়েছি, এবং নিয়মের ভেতরে থাকতে আমার ভাল লাগে,অযথা প্যাচাল আমার ভাল লাগেনা। আমি একা থাকতে পছন্দ করি তা না, কিন্তু একাকিত্ত আমাকে নিঃসঙ্গ করেনি।আমি আমার সঙ্গ ভালবাসি। আমাকে ভালবাসি।

আমি ঐ সময় কি করি তার চাইতে জরুরী হল মানুষ আমাকে নিয়ে কি ভাবে যখন আমি জঙ্গল থেকে আবার লোকালয়ে ফিরে আসি, সবাইকে ফিরতি কল দেই, ইনবক্স এ জমে থাকা মেসেজের উত্তর দেই। সেই অভিজ্ঞতা খুব-ই ভয়াবহ :(

১-স্বল্প পরিচিত-“তোমাকে ফোন দিলাম, ধরলে না যে, কি বয়ফ্রেন্ডের সাথে ছিলে নাকি?”
-আমি মনে মনে বলি-গত ৬ বছর ধরে আমি পিওর সিংগেল, এবং আমি বয়ফ্রেন্ড সংস্কৃতিতে বিশ্বাস –ই করিনা। কিন্তু আপনাকে কেন বলব”? রাগে গজ গজ করতে থাকি। X((

২-“অধিক কথা হয় কিন্তু দেখা হয়না যাদের সাথে- “কোথায় গিয়েছিলে দেশের বাইরে? তোমরা ভাই বড়লোক মানুষ কখন দেশে থাকো আর কখন বিদেশ বোঝা-ই যায়না”।
-আমার উত্তর শোনার মোটেও তাদের সময় নেই। গত একবছর আমি ইন্ডিয়া বা বাংককে ও যাইনি।

৩-“সব চাইতে যারা স্মার্ট- খুব মাস্তি করেতো বেড়াচ্ছো আর আমার ফোন-ই ধরোনা। এতো ভাব না নিলেও পার”।
-আমি আর ভাব? B:-) ভাব কি জিনিস? কেমন করে তা দেখায়? মনে মনে আওড়াতে থাকি। আমি জানি, আমার অনেক কিছু আছে কিন্তু ভাব মোটেও নেই। last thing I will do in my life to show attitude to anyone, I will never do that !!

৪-যারা শুধু ফেসবুকে-ই বন্ধু- “কই ছিলেন? নিশ্চয় পার্টি করছিলেন? আপনার-ই তো জীবন,মজা-ই মজা। আমরা ভাই খাটতে খাটতে শেষ”। (ফেসবুক-ইনবক্স )
- এরা এদের মেসেজের উত্তর না পেলে-ই আমাকে পাটি করতে পাঠায় এবং সেটা অফিসের কর্মবিহুল দিনে ও। লাস্ট কবে পার্টি করছি কেউ প্লিজ আমাকে মনে করাও।

৫-“প্রেমিক গ্রুপ যাদের সাথে আমি কোনদিন দেখা করিনাই এবং এ জীবনে করিব বলে মনে হয়না- “ফোন দিলে-ই ভেবনা না যে দেখা করতে চাই, প্রেম করতে চাই, কি ভেবেছিলে বাসায় চলে আসতে পারি? বলে-ই হা হা করে ফোন স্পিকার ফাটিয়ে হাসি। কোন দিনতো বললে না যে বাসায় আস/ আসেন। কোথায় থাক যেন তুমি”? কোন কারনে রাগ টাগ করোনাইতো?...কথা চলে...অনন্তকাল ধরে।...
-আমি-আপনাকে কেন বাসায় আসতে বলব? কোন খুশীতে? প্রেম কিভাবে করবেন? আমার তো আপনাকে দেখলে সব প্রেম লাফায় লাফায় পালিয়ে যায়। আমি তো নিজে-ই শুধু ঘুমাতে বাসায় আসি, ঘুমানোর জায়গা না থাকলে হোটেলে যান, আমার বাসায় কি? বিড়ালের সাথে প্রেম করবেন নাকি? ঘ্রররররররররর

৬-“অভিমানি গ্রুপ- তোমাকে ফোন দিয়েছিলাম, তুমি ধরলে না, তোমার কাছে আমার কোন দাম-ই নাই, যাও আর জালাব না তোমাকে”। টাস করে লাইন কেটে যায়।
-আমি-কথা না বললে অভিমান কেমতে ভাঙ্গাই? কি মুস্কিল।

৭-“কাছের বন্ধু, আমি মানি তারা মানে না- বুঝছি তোর অনেক নতুন বন্ধু হইছে, আমাকে আর তোর লাগবেনা। বলে মুখের উপর লাইন কেটে দেয়”। আর কল দিলে ধরে না, খাইতে গেলে ডাকেনা, খাইতে ডাকলে আসেনা। নতুন নতুন বন্ধুদের সাথে পিক তুলে ট্যাগিং করতে ভুলে না”।
-আমি কি করব আমি জানিনা, কবি নিরব।

৮-“কাছের বন্ধুরা চরম গালি দেয়, যা আমার চান্দি গরম করার জন্য যথেষ্ট। তারপর কথা চলে কোনরকম ফিরিস্তি ছাড়া-ই”।

যারা আমাকে চিনে তারা জানে আমি এরকম, কারন ছাড়া –ই আমার মনের বারটা বেজে যায় প্রায়শই। এবং আমি সব কিছু থেকে দূরে সরে যাই।আমার কিছু ভাল না লাগার অসুখ একটু বেশী হয়। ইদানিং সেটা আরও বেড়েছে। যারা জানেনা তারা আজকে জানবে।
আমার আরও একটা ঝামেলা আছে, এই যুগে যেটা না করলে সবাই খেত বলে ! আমি মহা খেত এটা আমি জানি :( সেটা হলো
আমি ফোনে কথা বলা খুব একটা পছন্দ করিনা। ফেসবুক চ্যাটিং আমার মোটে সহ্য হয়না। আমার আঙ্গুল ব্যথা করে। মানুষ ভাবে আমি মিথ্যা বলছি, কিন্তু বিশ্বাস করেন ঘটনা সত্যি। সামনে বসে কথা বলতে আমার সবচাইতে ভাল লাগে। মোট কথা চেহারা দেখা যায়না এরকম কোনকিছু আমাকে টানে না,আমার ভাল লাগেনা। আমি এক্সপ্রেশন দেখতে ভালবাসি, হাসি দেখতে ভালবাসি, রাগ দেখতে ভালবাসি। ঝগড়া দেখতে ভালবাসি। কিন্তু সমস্যা টা অন্য জায়গায়, আমি যখন গায়েব থাকি তখন আমার কিছু-ই ভাল লাগেনা।

প্লীজ আমার এই গায়েবী সময়টাতে আপনারা সবাই আমার জংলী মনটা বুঝতে চেষ্টা করবেন। আজকের এতো বড় একটা কাহিনী লেখার এটাই উদ্দেশ্য ছিল। যেওনা সাথি ... টাইপ একটা গান বাজলে খারাপ হতোনা মনে হয়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:২১

এহসান সাবির বলেছেন: তাই প্লীগ লাগে আমার সাথে.......

লেখা লিখি চলুক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.