![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
" এই রিক্স চিপায় ঢুকাইছোস ক্যান ? সরা হারামজাদা !!!"
ড্রাইভারকে এরকম করতে দেখে অবাক হন না মালেক সাহেব । শান্ত শিষ্ট মেরুদন্ডহীন মানুষটাও হাতে স্টিয়ারিং হুইলটা পেয়ে গেলে ছোট কাউকে গোণায় ধরে না , বরং গালি দিতে পারলে মনে অদ্ভূত প্রশান্তি আসে । তবে এই মূহুর্তে নিজেই রিক্সঅলাকে বেশি গালি দিচ্ছেন মনে মনে । উত্তরার রাস্তায় এসব অনিয়ম ঠান্ডা মাথায়ই ফেস করতে অভ্যস্ত তিনি । কিন্ত আজ গতানুগতিক দিনগুলো থেকে আলাদা । প্রায় পাঁচ মাস আগে থেকেই বামরুংগ্রাদ হাসপাতালে নিয়মিত চেকাপে ছিল শৈলী । দেশের এইসব হাতুড়ে ডাক্তার কখনই আস্থা ছিল না তার , নিজেই অনেক কাছ থেকে দেখেছেন । ওখান থেকেই ডেলিভারীর সম্ভাব্য তারিখও জানিয়েছিল , সে হিসেবে অগ্রিম টিকেট করে রেখেছিলেন । ওর জামাই অবশ্য অনেক আগে থেকেই স্কয়ারে জানাশোনার কথা বলছিল , কিন্ত একমাত্র মেয়ে সন্তানের ক্ষেত্রে বাবাদের কথাই আসল । আজ সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই ব্যাথা উঠেছে ওর , শ্বশুরবাড়ির কাছেই এ্যাপোলোতে ভর্তি হয়েছে শেষে , ওখানে ডাক্তার নাকি বলেছে আজই সিজার করতে হবে , বেবি কোনভাবে ক্রিটিক্যাল পজিশনে চলে গিয়েছে । বাম্রুংগ্রাদের ডাক্তার মুন্ডুপাত করতে করতে জামালকে পাঠিয়েছেন থাইল্যান্ডের টিকিট করতে । ধুর , যেই মাউন্ট এলিজাবেথে হার্টের অপারেশন করে এত আরামে সেরে উঠলেন , সেখানে কিপটামি করে থাইল্যান্ডে যাওয়াটা মোটেও উচিত হয় নি । এখন অনাগত নাতির কথা চিন্তা করে ব্লাড প্রেসার বেশি উপরে উঠে গেছে মনে হচ্ছে , হাজার হোক মেয়ে তো একটাই !! মন্ত্রী থাকা অবস্থায় এসব হলে একটা ইমারজেন্সি হেলিকপ্টার যোগাড় কোন ব্যাপার ছিল না , কিন্ত মাঝখানে আজ পেরিয়ে গেছে দশটি বসন্ত ।
দেড় ঘণ্টা জ্যাম ঠেলে অবশেষে স্কয়ারের সামনে পৌছাল গাড়ি । জামাই রাসেলেকে বারবার ফোন দিচ্ছেন ,ধরছে না ,হয়ত অপারেশন শুরু করে দিয়েছে এতক্ষণে । আচ্ছা নিজেই না হয় গাইনি বিভাগ খুঁজে নিবেন , ওদিকে জামাল ও টিকেট পায় নি । আচ্ছা দেখা যাক আগে , এখানে কি হয় ।
হাসপাতালের বিশাল লবি দিয়ে ঢুকার সময় একবারে বামে রাসেলের দেখা পেলেন , তার দিকে পিঠ করে তাকিয়ে আছে দেয়ালের দিকে । ডাকও দিলেন , এত ভীড়ে শুনতে পারার কথা না । কাছে যেতেই চোখে পড়ল নিষ্পল্ক দৃষ্টি , কি যেন একটা গভীর চিন্তায় ডুবে আছে । " শৈলী কোথায় ? অপারেশন কতদূর ?"
এবারও কোন কথা নেই । খালি পশ্চিমের দিকে একটা সাদা কাপড় ঢাকা স্ট্রেচারের দিকে দেখাল সে । হঠাৎ করেই মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল একটা , সব রক্ত কোন আহবান ছাড়াই মাথার উপর উঠে এসেছে । রাগে পাগলের মত চিৎকার করতে শুরু করলেন , "ডাক্তার কোথায় !!! ডাক্তার ?? ও এভাবে পড়ে আছে কেন ?"
হঠাৎ হন্তদন্ত হয়ে টাক মাথার চল্লিশোর্ধব একজন ডাক্তার ছুটে এল তার দিকে । চেহারায় প্রশান্তি আর আতঙ্কের মিশ্রণে জেকিল অ্যান্ড হাইডের দ্বৈতসত্তার প্রতিমূর্তি।
" সরি মালেক সাহেব । পেশেণ্টকে এরকম অপারেশনের আগে ফুল এনেসথেসিয়া করতে হয় । উনার ডোজটা একটু বেশি দিয়েছিল আমাদের এ্যানেস্থোলজিস্ট , ওয়েটটা আন্দাজ করতে গিয়ে ভুল করেছে । আর সাথে বেনজিন রিলেটেড ড্রাগসে এমন সাইড ইফেক্ট দিবে আগে বুঝে নি , প্রবাবলি মেডিকেল হিস্টোরিটা ভালো মত চেক করে নি । ঘামতে ঘামতে হঠাৎ হিটস্ট্রোক আর তারপর সব শেষ । এই কেস খুবই রেয়ার কেস আমাদের জন্য , কিন্ত দূর্ভাগ্যজনকভাবে আপনার ক্ষেত্রেই -"
" কে এই এ্যানেস্থোলজিস্ট ? কে জেনেশুনে আমার মেয়েকে শেষ করে দিল ? কে এই স্ক্রাউন্ডেল,বাস্টার্ড,শুয়োরের বাচ্চা-- "
"স্যার মাফ করে দেন । ২০১৫ র ডিএমসি ব্যাচ তো । আবার এবারের প্রতিমন্ত্রী সাহেবের তদবিরে ঢুকেছে । স্যার একে আমি ইমারজেন্সিতে পাঠিয়ে দিব , আর কারো ভাগ্যে যেন এমনটা আর না ঘটে, আর তো কিছু করার নেই -"
কথা শেষ হওয়ার আগেই পাশের কাচের টেবিলের ওপর প্রচন্ড শব্দে আছড়ে পড়লেন মালেক সাহেব । এই দূর্বল হৃদয় আর কতক্ষণ অত্যাচার সইতে পারে । ২০১৫ তে তারই করা নীল নকশায় সবচেয়ে অযোগ্য কিছু স্টুডেন্টকে এ্যপ্রোন পড়ার সুযোগ দিয়েছিলেন । তাতে পকেট ভারী হলেও , ২০২৫ এসে প্রায়শ্চিত্ত এভাবে হবে কে জানত !!
(এই ব্যাক্তির সকল লেখা কাল্পনিক , জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে মিল পাওয়া গেলে তা সম্পুর্ন কাকতালীয়, যদি লেখা জীবিত অথবা মৃত কারো সাথে মিলে যায় তার দায় এই আইডির মালিক কোনক্রমেই বহন করবেন না। এই ব্যক্তির সকল লেখা পাগলের প্রলাপের ন্যায় এই লেখা কোন প্রকার মতপ্রকাশ অথবা রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। - বিখ্যাত ৫৭ ধারার প্রতি সম্মান দেখিয়ে !!)
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৩
বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: বুমেরাং ফিরে আসতে বড্ড বেশী সময় নিচ্ছে, ২০ বছর !!! এতো স্লো বুমেরাং দিয়ে হবে না, মরাকে মেরে কি লাভ।
৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:২৯
আমি আবুলের বাপ বলেছেন: আমার শুধু ইচ্ছা, তখন এই জনৈক জাহিদ মালিক সাহেবের টিভিতে প্রতিক্রিয়া।
৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৩
শামীম আরেফীন বলেছেন: মন্ত্রীদের কিছুই হবে না, সাধারণ মানুষই মরবে।
সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে গল্পটা সুন্দর
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৪
সিসোর১ বলেছেন: এটাইতো সমস্যা । কিন্ত নিজের বোনের চান্স না পাওয়ার কান্না আর সহ্য হয় না । তাই কল্পলোকে স্বপ্ন গাঁথাই সান্তনা
৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০০
বিপরীত বাক বলেছেন: মরার এই দেশে কিছুই হবে না।।।। বরং ২০১৫ ব্যাচের পোলাপান রা মাইয়া রা বিদেশে চিকিৎসা করাবে।।
আর যারা অ্যাডমিশন টেস্টে চান্স পায় নাই তারা রাস্তায় দাড়াই ভিক্ষা করবে আর তাদের ছেলেমেয়েরা এইসব ২০১৫ ব্যাচের কাছে চিকিৎসার জন্যে লাইন ধরবে।।।। এটাই বাস্তবতা।
আর তখন আল্লাহ বলবে, " আল্লাহ ধৈর্যশীল দের পছন্দ করে।। এবং আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমাশীল"""""
৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১৩
সিসোর১ বলেছেন: মেডিকেলে পাশ করা এত সহজ হলে হয়ে যেত । আমি ২০১০ ব্যাচের , আমার ব্যাচের ডিএমসির ছেলেপুলে এখনো ফার্স্ট প্রফই পাস করতে পারে নি যেখানে ফাইনাল ইয়ারে থাকার কথা
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:

আরতো মাত্র বছর দশেক ঠাকুর মূখ তোল
দশ বছর পরে হবে দুইহাজার পচিশ
গল্পের এই প্লটটা ছোট মেসেজ অনেক বেশ
তাই যেন হয় সত্যি সবাই চায় মনে মনে
সেই সু!দিনের আশায় তারে বাঁচিয়ে রাখো টেনে!!!
@ বৃদ্ধাশ্রমের অংশ বিশেষের ষ্টাইলে
++++++++++++++