![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবন অনেক কঠিন সত্যিই জীবনের চলার পথে অনেক বাধা বিপত্তি আসবেই এটাই স্বাভাবিক তাই বলেই কি হাল ছেড়ে দিতেই হবে? মোটেই না সব বাধা দূর করে সামনে এগিয়ে যাওয়াটাই হচ্ছে এইম ইন লাইফ মূল কথাই চলে যাই-
আমাদের পরিবারে আমরা চার বোন দুই ভাই শুনেছি এবং আমার যতটুকু মনে আছে আমার আব্বুর নাকি অনেক টাকা ছিল বলা যাই এক প্রকার বড় লোক ছোট বেলা থেকে কত সুখেই না বড় হলাম কোন কিছুর অভাব নাই আমার আম্মু আব্বু থেকে যা চাই তা পাই এভাবে চলতে চলতে যখন আমি ক্লাস পাইভ এ পড়ি তখন থেকেই মূলত চন্দপতন শুনলাম মার থেকে আমার আব্বুর ব্যবসার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হইল বাবার পক্ষে আর ব্যবসা করা সম্ভব নই তাই বলে কী হাল ছেড়ে দিবে? হে আমার বাবা সত্যি সত্যি ব্যবসার হাল ছেড়ে দিল কী আর করা কষ্টের জীবন শুরু হল শত কষ্টের মধ্যে ও আমাদের পড়া লেখা থেমে তাকে নি আমার আম্মু নানুর বাড়ি থেকে টাকা এনে আমাদের সংসার চালাতেন মানুষের কাচ থেকে টাকা ধার নিয়ে চলতেই হইত আমাদের অনেক সময় তিন বেলা ভাত টুকু যোগাড় করা সম্ভব হই নাই আমার মা-বাবার পক্ষে এত কষ্টের মাঝে ও ষ্টাডি বাদ দি নাই আমি যখন ২০০৩ সালে ক্লাস সেভেন এ উঠি তখন ভর্তী হবার টাকা নাই আমার আমার আব্বুর ও টাকা নাই কার থেকে টাকা নিয়ে আমাকে ভর্তী করাবে সবাই তো আমাদের কাছ থেকে টাকা পাই কোন উপায় না দেখে আমার আব্বু আমাকে নিয়ে আমাদের স্কুলে গিয়ে ছিল(স্কুলেন নাম না বললেই নয়-চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়) আব্বু হেড স্যার এর সাথে দেখা করল কিন্তু ভর্তী করানোর ব্যাপারে কিছুই বলতে পারল না, কারন স্যারদের কাছে তো আমার আব্বুর একটা আলাদা সুনাম আছে কোন সুরহা করতে না পারে আমার বাবা আমাকে নিয়ে স্কুল থেকে বাহির হয়েই হাটতে হাটতে আমাকে বলতে লাগল এখন কী করবি? আমি নিশ্চুপ আমার পক্ষে তো আর কিছু করা সম্ভব না তাই একটু পরে আবার বলল দেখ তোর ছোট আব্বুকে বল(আমার ছোট আব্বুর নাম আবু নাছের, উনি সেনাবাহিনীতে চাকরী করেন) তখন ছোট আব্বু বাড়ীতেই ছিল মারবেল খেলতেছিল আমাদের রিলেটিভদের সাথে অবশ্যই আমি ও খেলতাম আমি আমার ছোট আব্বুকে বললাম, ছোট আব্বু আমিতো ক্লাস সেভেনে ভর্তি হতে পারতেছি না টাকার জন্য? আমাকে ভর্তি হবার টাকা দিবেন? ছোট আব্বু আমাকে বলল দেখ মিজান আমার তো টাকা নাই ? বিশ্বাস আমি তো প্রাই সেন্স লেন্স হইয়ে গিয়েছিলাম আল্লাহর অশেষ রহমত আমি ক্লাস সেভেন এ ভর্তি হয় আমার পক্ষে আর পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হই নায় কারণ, অনেক বছর বেকার তাকার পর ২০০৩ সালে আমার আব্বু একটা ছোট মুদির দোকান দে চিরিঙ্গা হাসপাতাল পাড়া তখর আমাদের পরিবারের অভাব একটু একটু কমতে লাগল(তার জন্যে ধন্যবাদ দেওয়া যায় আমার ফুফি কে উনি না হলে আমাদের পক্ষে দোকান দেওয়া কোনদিনও সম্ভব হত না) দোকান করতে করতে আসতে আসতে নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয় হল বিশেষ করে আমার সমবয়সি, আমার সিনিয়র এবং জুনিয়র সবাই শিক্ষিত তবুও না ওরা আমাকে আপন কর নিতো কিন্তু আমার লজ্জ্বা লাগত ওরা সবাই আমাকে অনেক বেশি উৎসাহ দিত আমি যেন আবার ষ্টাডি করি ওরা আমার আব্বুকে ও বলতো ওদের সাথে খেলতাম, আড্ডা দিতাম, আমার অনেক মজা লাগত কিন্তু আমি ওদের থেকে একটু ভিন্ন ছিলাম আর তা হলো ওরা স্টুডেন্ট আর আমি স্টুডেন্ট না মাঝখানে দু’ বছর গ্যাপ দিয়ে আমি আবার সবার সহযোগিতায় ২০০৬ সালে ৮ম শ্রেণীতে ভর্তি হয় চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে(যার সহযোগিতা না পাইলেই হয়ত আমার আদো ষ্টাডি করা সম্ভব হতো না শ্রদ্ধেয় স্যার জনাব মোর্শেদ, স্যার আপনাকে আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, জানি ধন্যবাদ দিয়ে আপনার সহযোগিতা শেষ করা যাবে না) সত্যি করে বলতে কি দোকান করে ষ্টাডি করা অনেক কষ্টের তার পরও চেষ্টা করে গেছি হাল ছাড়তেছিনা এভাবে চলতে চলতে ৮ম শেণির বার্ষিক পরিক্ষা দিলাম কিন্তু পরিক্ষায় ভাল করতে পারলাম না মোর্শেদ স্যার থেকে কবর নিলাম ৩-৪ টা সাবজেক্ট খারাপ হল তাই ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারবো না কী আর করা স্যার এ অনেক শেষ্টা করল স্যার এর পরামর্শে আবার সেই চকরিয়া কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় সেখানে আমার এক মামা সাহায্যে না করলে আমি কোনদিন ও ট্রাই করে ভর্তি হতে পারতাম না(পরে হেডস্যার আমাকে ডেকে নিয়ে বলল তমি যে এই স্কুলের সাবেক ছাত্র চিলে এবং এখান থেকে চলে যাবার সময় কী তুমি টিসি নিয়ে গিয়েছিলা আমি বললাম না স্যার পরে স্যার রাজি হলো এবং আমাকে ভর্তি করালো কিন্তু একটি কথা বললো, দেখো যদি পরিক্ষায় খারাপ করো তাহলে ফাইনাল পরিক্ষা দিতে পারবে না। তখন আমি স্যার কে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ইন-শা-আল্লাহ ভালো করব । যে কথা সেই কাছ । ২০০৮ সালে এস এস সি পরিক্ষায় বিজনেস ষ্টাডি থেকে ৪,২৫ নিয়ে পাস করে কক্সবাজার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট -এ কম্পিউটার টেকনোলজি ডিপার্টমেন্ট এ ভর্তি হয় । ও হে মাঝকানে আবার দোকান ছেড়ে দিত হলো ২০০৭ সালের দিকে । অনেক কষ্টের মাঝে জীবন পার করতে ছিলাম । পরিবারের কথা চিন্তা না করে আমি ষ্টাডি করার জন্যে ২০০৮ সালে বাড়ি থেকে চলে যাই। সেকানে অনেক সংগ্রাম করে ৪ টা বছর পার করে ২০১২ সালে কম্পিউটার টেকনোলজি থেকে ৩,৭৩(৪ এর মধ্যে) পয়েন্ট নিয়ে উর্ত্তীন হয়। ও হে আমার একটা স্বপ্ন আছে আর তা হলো যেন আমি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি। বর্তমানে একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে ০৮/১১/২০১২ থেকে অদ্যবদি আইটি অফিসার হিসাবে কর্মরত আছি । সকলে আমার জন্যে দুআ করবেন যেন আমার যে স্বপ্নটা আছে তা যেন পূরণ করে আমার মা-বাবা এবং রিলেটিভদেরকে এবং প্রতিবেশিদেরকে সাহায্য করিতে পারি। আল্লাহ হাফেজ।
©somewhere in net ltd.