![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একটা সিনেমা উপভোগ্য হওয়ার কিছু উপাদান আছে । আমার মতে একটা ব্যবসাসফল সিনেমা বা উপভোগয গল্পের প্রধান সুত্র একটা মানুষ যা চাই তা নিয়ে যদি গল্প বা সিনেমা বানানো । যেমন আমরা যদি আরব্য রজনীর গল্পগুলোর দিকে লক্ষ্য করি , আলাদ্দিনে দেখানো হয়ছে একটা জ্বীন এসে তার ইচ্ছাগুলো পূরণ করে দিয়ে যাচ্ছে । এ টাইপ গল্পগুলো সবসময় টিকবে কারণ সব মানুষেই অবচেতন মনে চিন্তা করে সে যদি কোনভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হত । কোনভাবে যদি সেরকম সুন্দরী কোন মেয়ের সাথে বিয়ে হত । যার যা অভাব সে ওই বিষয়ে ভরপুর কোন কাহিনী পছন্দ করবে । যেমন যাদের পিতা-মাতা নাই ,তার সবসময় কল্পনা করবে , ইশ ... আমার যদি বাবা-মা , পরিবার থাকতো সে আমাকে কত আদর করত । তাদের কাছে হাম সাথ সাথ হ্যায় টাইপ মুভিগুলা অনেক ভাল লাগবে । ইমোশনাল রিলেশনশিপ বিশয়ক মুভিগুলা সবসময়ে জনপ্রিয়তা পায় ।
দাবাং , ওয়ান্টেড , সিঙ্ঘাম এসব ব্লকবাস্টার সিনেমায় অনেক সৎ, সাহসী একজন পুলিশ অফিসার দেখান হয়ছে যে বড় বড় সন্ত্রাসীদের মেরে শহরবাসীকে মুক্তি দেই । নায়ক সিনেমায় অনিল কাপুর একদিনের জন্য সরকারপ্রধান হয়ে প্রদেশের দুর্নীতি দূর করে । সাধারণ জনগনের সারাজীবনের স্বপ্ন সুশাসন বাস্তবায়িত হয় ।
হলিউডে গুড লাক চাকস নামে একটা মুভি আছে । সেখানে গল্পের নায়কের সাথে যার সম্পর্ক হত সে মেয়ে অনেক ভাল একটা হাসবেন্ড পাইত । এ কারণে সব মেয়েরা তার কাছে আসত শারীরিক সম্পর্কের জন্য । এখানে স্ক্রিপ্টরাইটারের অবচেতন মনের একটা বাসনা কাজ করছে যে ,সব মেয়েরা যদি কোন কারণে তার কাছে আসত ।
আলিবাবাতে লেখক চিন্তা করছিলেন যদি এমন একটা জায়গা থাকত যা সোনারূপা দিয়ে ভরপুর । তার যখন ইচ্ছে হবে সেখান থেকে সম্পদ নিয়ে আসবেন ।
এ গল্পে আবার লেখক এর পিছনে একটা বাস্তব ব্যাখ্যাও দিয়েছেন যে সে জায়গাটি আসলে ডাকাতরা তাদের লুট করা সম্পদ দিয়ে গড়ে তুলেছিল । এই জিনিষটা অনেক গুরুত্বপূর্ন । গল্পে বাস্তবতার সংস্পর্শ যত থাকবে মানুষ তত মজা পাবে । তবে অনেক সময় অবাস্তব জিনিষ বাস্তব ভাবে ফুটায় তুলতে পারলে তা অনেক উপভোগ্য হয় । এ কারণে বাংলা,তামিল সিনেমায় একসাথে ১০-২০ জন কে পিটাচ্ছে এ দৃশ্যগুলো বিরক্তকর লাগলেও চাইনিজ সিনেমায় একসাথে ১০০ জনের সাথে লড়তেছে এগুলা অনেক ভাল লাগে । তার উপর আমরা তাদের দ্রুত মুভমেন্ট, অসাধারণ স্কিল , অবিশ্বাস্য রিফ্লেক্স একশন ও প্রায় অসম্ভব কিছু মুভস এর ভক্ত হয়ে যায় ।
কাহিনী নির্ভরতাও একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিষ । মানুষ মাত্রই কাহিনী শুনতে চাই । একজন মানুষের সাথে আরেকজন মানুষের দেখা হইলে সে পড়ালেখা কেমন চলে , ব্যবসা কেমন চলে , কে কি করছে না করছে ইত্যাদি কাহিনী শুনতে বা বলতে চাই । এ কারনেই কাহিনী নির্ভর গল্প বা রূপকথার গল্পগুলো এত জনপ্রিয়তা পায় । ছোট থাকতে রূপকথার গল্পগুলো অনেক ভাল লাগলেও বড় হওয়ার পর তা আমাদের খুব বিরক্ত লাগে । কারণ ছোটদের বাস্তবতার জ্ঞান অনেক কম এবং তারা এ সময় কল্পনার রাজ্যে বসবাস করে । কিন্তু সে যখন বড় হয়ে আশেপাশের দুনিয়া বুঝতে শিখে তখন তার কাছে এই ভুত-প্রেত দের গল্প বিরক্ত লাগে । শুধুমাত্র কাহিনী নির্ভরতার জন্য এরোর মত বাংলা সিনেমা টাইপ সিরিয়াল ও তুমুল জনপ্রিয়তা পায় ।
আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউসিকের গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। সুন্দর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউসিক সিনেমাকে বোরিং হতে দেই না। তাছাড়া সিনেমাতে বিভিন্ন দৃশ্য থাকে যেখানে কোন ডায়লগ থাকে না। বিশেষ করে হরর সিনেমাগুলো তে অনেক সিন থাকে যেখানে কোন ডায়লগ থাকে না । বিভিন্ন ধরণের সাউন্ড ইফেক্ট থাকার কারণে সেসব সিনগুলো বোর লাগে না।
তবে একটা উপভোগ্য গল্পের পিছনে কাহিনী নির্ভরতা , বাস্তবসম্মত হওয়া অনেক বিষয় কাজ করলেও আমার মতে একটা উপভোগ্য গল্পের প্রধান যে শর্ত তা হচ্ছে মানুষের অবচেতন মনের ইচ্ছাগুলার প্রকাশ করতে হবে ।
©somewhere in net ltd.