নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কারো কেউ নয়তো আমি,কেউ আমার নয়...

ডিজিটাল যাযাবর

প্রযুক্তিবিদ এবং প্রযুক্তি-উদ্যোক্তা ।মূলত কাজ করি অনলাইনে,পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও অনলাইনভিত্তিক উদ্যোক্তা হিসেবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।চাইলেই ইঞ্জিনিয়ারিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন পার করে দিতে পারতাম। কিন্তু যাযাবরের জীবন আমাকে টানে খুব। তাই সব ছেড়ে যাযাবরের মতো চষে বেড়াচিছ এক দেশ থেকে আরেক দেশ। আমি যখন যেদেশে আমার স্যুটকেস রাখি সেটাই তখন আমার দেশ,আমার ঘর-বাড়ি।আমি একজন বিশ্ব নাগরিক।এবং কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বেশিদিন থাকি না।।

ডিজিটাল যাযাবর › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবা বলে ছেলে নাম করবে..

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৫



'বাবা বলে ছেলে নাম করবে/ সারা পৃথিবী তাকে মনে রাখবে...' এই গানটি গাইতে গাইতেই এক চিরসবুজ বৃক্ষের জন্ম হয় বাংলা সিনেমায়।গানটি যেন সিনেমার কথা নয়,এই চিরসবুজ বৃক্ষের জীবনের বাস্তব কথা হয়ে যায়। আসলেন, দেখলেন, জয় করলেন, চলে গেলেন। তিনি আর কেউ নন। আমাদের সালমান শাহ।মাত্র ছাব্বিস বছর বয়সে স্মার্ট , সুদর্শন এই নায়ক মাত্র ২৭টি চলচিত্র দিয়ে হয়ে উঠেছিলেন সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে “ স্বপ্নের নায়ক “ । সালমান মানে এক উন্মাদনা, এক অবিনশ্বর তারুন্য।বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তী তারকা তিনি। অনবদ্য অভিনয় আর মিডিয়া উপস্থিতি দিয়ে তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন তা আর কেউ পারেননি।

দিন গুনতে গুনতে ১৯ বছর পার হয়ে গেল।তবু বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একসময়ের রোমান্টিক যুবরাজ আজও বেঁচে আছেন দর্শকের মনোজগতে।জীবনকাল যতই সংক্ষিপ্ত হউক না কেন,এই ক্ষণজন্মা তারকা তার কর্ম দিয়ে আজও বেঁচে আছেন ভক্তদের মনে। জেগে আছেন তরুণ-তরুণীর তর্কে, স্মৃতিচারণায়: ‘সালমান শাহর মতো আর কেউ এল না।’ আবার কেউ কেউ মনে করেন, সালমান নেই বলেই দেশীয় চলচ্চিত্রের দুরবস্থা। এরই মধ্যে অনেকে সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতেই ব্লগে, ফেইসবুকে নিজেদের প্রোফাইলে সালমানের ছবি তুলেছেন। ঘণ্টায় ঘণ্টায় সালমানকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে হাহাকার ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সালমানকে নিয়ে কারো কোনো নেতিবাচক মত্মব্য বা অ্যালার্জি চোখে পড়ে না। আজ অবধি সিনেমা প্রেমীদের অন্তরে দীর্ঘশ্বাসের সঙ্গে উচ্চারিত হয় তার নাম। নায়ক সালমান শাহর বড় সাফল্য বোধ হয় এটাই।

যে দেশের চলচিত্র শিল্প নিয়ে দিস্তা দিস্তা হতাশা , সেই দেশের এক নায়ক মাত্র সাড়ে তিন বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় ১৯ বছর পর আমাদের লেখায় , আমাদের স্মৃতিতে , ব্লগে, ফেইসবুকের প্রোফাইল বা কভার ফটোতে । তাকে নিয়ে এখনো হয় কল্পনা । বেঁচে থাকলে তিনি কি করতেন তা নিয়ে হয় হিসাব । নায়ক ! সত্যিকার অর্থে একেই বলে মহা – নায়ক।সালমান ছিল বাংলাদেশের চলচিত্রের একজন মহানায়ক। সত্যিকারের সুপারস্টার। বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান- সালমান শাহ্ প্রসঙেগ বলছিলেন,সালমান একাই বাংলা চলচিত্রকে টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্যে যথেষঠ ছিলেন। আমাদের একসাথে একটা ছবি করার ইচছা ছিল। সেটা অর্পুণই রয়ে গেল তার অকাল মৃত্যুতে ।

৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ , খুব সম্ভবত শুক্রবার বিকাল ৫টায় বিটিভির সংবাদে বলা হল চিত্রনায়ক সালমান শাহ্ আর নেই। আচমকা তাঁর মৃত্যুর সংবাদে স্তম্ভিত হয়ে পড়লো সবাই। সালমান শাহ্ মারা গেছেন এই কথা শুনার সাথে সাথে ভক্ত অনুরাগীদের হাহাকার শুরু হয়ে গেল । মনে হল তাদের অতি আপনজন কেউ মারা গেছেন । ভক্ত অনুরাগীরা এদিক ওদিক দৌড়াতে শুরু করলো খবর শুনতে। একজন অন্যজনকে জিজ্ঞাসা করে “এই ঠিক শুনেছিস তো”? তখন ব্রেকিং নিউজ এর যুগ ছিল না যে একনিউজ বারবার ঝিরঝির করবে চোখের ডগায় ; তারপরও সবাই অধির আগ্রহে দাড়িয়ে ছিল টিভির সামনে খবরটা যেন মিথ্যে হয় ! না , বিটিভি মাঝে মাঝে সত্য বলে । সালমান শাহ সত্যিই আর নেই।সালমান শাহ তার কোটি কোটি ভক্ত অনুরাগীদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। পরের কয়েকদিন পত্রিকা কেনার ধুম , ম্যাগাজিন এর পিছনে সবার হুমড়ি খেয়ে পড়া ।সালমান শাহ‘র মৃত্যুর খবরে চার জনের সুইসাইড করা।অনেকের তার জন্য সারারাত জেগে নফল নামায পড়া । নীরবে ,নিভৃতে কাদা।এমন অনেক কিছুই ঘটেছিল সেসময়। অনেক ধরণের অনেক কথা শুনা যেত তখন। বেশ কিছুদিন পত্রিকায় খবর আসলো ,সালমান শাহকে খুন করা হয়েছে ! বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও কথা শুনা যাচ্ছিল । খুনের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম প্রমানসহ ভেসে বেড়ালো বেশ কয়েকদিন । তারপর ? তারপর সব ঝিমিয়ে গেল। মানুষ আজও জানতে পারলো না সালমান শাহ্'র মৃত্যু খুন ছিল নাকি ছিল সুইসাইড! এই রহস্য আজও অজানা ! হয়তো চিরকাল অজানাই থেকে যাবে ! সালমান শাহ চেয়েছিলেন অনেক অনেক দিন এই পৃথিবীতে বাঁচতে। পৃথিবীর আলো, বাতাস, রূপ, রস,গন্ধকে আপন করে নিতে। তারই জবানীতে এ কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছিল মৃত্যুর মাত্র ক’দিন আগে। একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রকাশ পেয়েছিল তার সেই অনুভূতির কথা। বেঁচে থাকার জন্য যার আকুতি ছিল এমন, তিনি কী করে আত্মাভিমানে নিজেকে এমন সংহার করলেন,এটা অবিশ্বাস্য হওয়াই স্বাভাবিক।

সালমান শাহ‘র মৃত্যু তার ভক্ত অনুরাগী, সাধারণ দর্শক সহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেই সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি।তার মৃত্যু নিয়ে অনেক বিতর্ক,বিভ্রান্তি থাকলেও তার অকাল প্রয়ানে বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাষ্টির যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে,এ বিষয়ে কারো কোন দ্বিমত নেই।তার মা ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আজও কাদছেন,কাদছেন তার ভক্তরা। সালমান শাহ‘কে যদি সত্যিই হত্যা করা হয়ে থাকে তাহলে,যে বা যারা বাংলা চলচ্চিত্রের এতো বড় ক্ষতি করল, তাদের প্রত্যেকের বিচার হওয়া উচিত।

(পুরনো লেখা থেকে-Edited)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.