![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফুটবল খেলার প্রতি মনোযোগ আসে কিভাবে?? নিশ্চয় তা এমনি এমনি এসে পড়েনা। মানুষ ফুটবল খেলাটাকে নিজের জীবনের সবচাইতে কাছের করে নিয়েছে, তবে অবশ্যই তার পিছনে কোন কারণ আছে। পৃথিবীর জনপ্রিয়তম খেলা ফুটবলের প্রতি আকর্ষণ এনে দিয়েছে আসলে খেলোয়াড়রাই। শতাব্দি আগে থেকে তারা আবিষ্কার করে আসছে খেলার ধরণ। খেলায় এনেছে নতুনত্ব। তারাই মানুষকে বশে এনেছে, মানুষের মনে করে নিয়েছে নিজের আবাস। প্রিয় খেলোয়াড়দের মধ্যে নিজের জায়গা করে সারা বিশ্বে হয়েছে খ্যাত।
আমি ফুটবল খেলা দেখি ও বুঝতে শুরু করি ২০০৬ সাল থেকে। মূলত '০৬ বিশ্বকাপই আমাকে ফুটবলের দিকে টেনে নেয়। প্রতিটি খেলাই আসলে পুরো আকর্ষণ এনে দেয়। সেটা জার্মানি বনাম কোষ্টারিকা'র উদ্বোধনী খেলাই হোক, অথবা হোক চেক রিপাবলিক বনাম ইকুয়েডর এর ম্যাচ। এসব খেলাই আমাকে আমার ফুটবল আদর্শ খুজে বের করতে সাহায্য করে। আমি আমার আদর্শকে খুজে পাই ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়া'র ম্যাচে। ম্যাচটা লাইভ না দেখলেও পরে হাইলাইটস দেখেই আমার আদর্শ নির্ধারণ করি। ম্যাচের ৪৩ মিনিটে হলুদ-নীল জার্সির ব্রাজিল মধ্যমাঠের ঠিক সামনে বল পায়। ২-৩ টি পাসের পর একজনের গোলে শট। ধারাভাষ্যকার বলে উঠলেন,"It's Kakaaaaaa"। প্রায় ৩০ মিটার দূর থেকে নেওয়া সেই শট জালে আটকে এবং ব্রাজিল বিশ্বকাপের প্রথম গোল পায়। সেলিব্রেশনের সময় লোকটাকে দেখতে পাই। চমৎকার একজন মানুষ। দুই হাত উপরে তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে কি যেন বলছেন। সামনে ফিরতেই তার কোলে লাফিয়ে উঠলো রবার্তো কার্লোস, পরে তাকে জড়িয়ে ধরলো রোনালদিনহো। সাথে সাথে ৪৫২৮ মাইল দূরে থেকে আমিও উচ্ছ্বাসে মেতে উঠলাম। তখনই সম্মান জন্মালো সেই কাকা'র প্রতি।
কাকা'র পুরো নাম 'রিকার্ডো আইজ্যাকসন ডস সান্তোস লিয়েতে কাকা'। জন্ম ২২ এপ্রিল ১৯৮২। নামের মতই তার আকৃতিও ছিলো বিশাল। ৬ ফুট ১ ইঞ্চি লম্বা কাকা'র ওজন প্রায় ৮২ কেজি। কাকা ব্রাজিলের 'গামা' অঞ্চলে জন্ম গ্রহণ করেন। ৭ বছর বয়সে তার পরিবার 'সাও পাওলো' তে স্থানান্তরিত হলে কাকা'র ফুটবল জীবনের দুয়ার খুলে যায়।
৮ বছর বয়সে কাকা সাও পাওলো ফুটবল ক্লাবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৫ বছর বয়সে তিনি সাও পাওলো'র সাথে যুব দলের সাথে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এবং সাও পাওলোকে Copa de Juvenil এনে দেন। ১ ফেব্রুয়ারী ২০০১ এ তিনি অগ্রজ দলে যোগ দেন। সেখানে তার অসাধারণ কৃতিত্ব ইঊরোপিয়ান ক্লাবগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ২০০৩ সালে ইতালীয়ান ক্লাব এসি মিলান তাকে কিনে নেয়।
সেখানেই কাকা বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচিত হতে পারেন। গাত্তুসো, ইনযাঘি, সিডোর্ফ, মালদিনি, রুই কস্তা, পিরলো, আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো'র মতো তারকাদের সাথে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেন এসি মিলানেই। অসাধারণ ড্রিবলিং, পাসিং, বুলেট গতির শটের কারণে তার নাম বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়। শেভচেঙ্কো চেলসিতে চলে যাওয়ার পর তাকে এটাকিং মিডফিল্ড পজিশনে খেলানো হয় এবং এতেই তার প্রতিভা আরো বিকশিত হয়। গোলে শট নেওয়ার আরো চান্স পান বলে তিনি শুটিংটাকেও নিজের অধীনে এনে ফেলেন। এই সুযোগ গুলো কাজে লাগিয়ে বস্বে আলোড়ন সৃষ্টি করতে সফল হন এবং ২০০৭ সালে জিতে নেন ব্যালন ডি অর। ২০০৯ সালে রিয়াল মাদ্রিদ তাকে কিনে নিলে সুযোগ গুলো আরো বৃদ্ধি পায়। তবে তৎকালীন কোচ হোসে মোরিনহো তাকে যথাযথ ভাবে পরিচালনা না করায় এবং খেলার যথেষ্ট সুযোগ না দেওয়ায় সব কিছুই কেমন যেন স্তিমিত হয়ে যায়। ২০১০ বিশ্বকাপে জাতীয় দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন। কোন গোল না পেলেও অসাধারণ কয়েকটি এসিস্ট দেন দলকে। অনাকাঙ্খিত লাল কার্ড ছাড়া ওই বিশ্বকাপে তিনি তার সর্বোচ্চটাই ব্রাজিলকে উপহার দেন। রিয়াল মাদ্রিদে আর কোন সুযোগ নাই দেখে তিনি আবার তার প্রিয় ক্লাব মিলানে ফিরে যান এবং এখনো পর্যন্ত সেখানেই খেলছেন।২০০২,২০০৬,২০১০ বিশ্বকাপ খেলা কাকা বর্তমানে ব্রাজিল জাতীয় দলের সিনিওরদের একজন। অভিজ্ঞতা সবসময়ই তার পক্ষপাতী। তাই ২০১৪ বিশ্বকাপে তার স্কোয়াডে না থাকা যান সবার কাছে চমক। যাই হোক, আদর্শ হিসেবে কাকাকে সবসময় নিজের মাঝে ধরে রাখবো। তার প্রতি চিরজীবনই থেকে যাবে সম্মান ও শ্রদ্ধা। খেলোয়াড় হিসেবে যাই হই, মানুষ হিসেবে অনুসরণ করব তাকেই। তিনি..............
#রিকার্ডো_আইজেকসন_ডস_সান্তোস_লিয়েতে_কাকা।
#Legend
#Respect
©somewhere in net ltd.