নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র। সব কিছুই আল্লাহর।

ডাঃ মারজান

একজন মানুষ

ডাঃ মারজান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্ব৩ এভারেস্টঃ হারিয়ে যাওয়া যোদ্ধাঃ ফ্রান্সিস ও সেরগেই আরসেন্তিভ।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫১

পর্ব-২ এভারেস্টঃ হারিয়ে যাওয়া যোদ্ধা- মিক বারকি


ফ্রান্সিস

‘আমাকে মরার জন্য এখানে ফেলে যেওনা’ এটি ছিল ফ্রান্সিসের শেষ কথা।
ফ্রান্সিস ও সেরগেই আরসেন্তিভ- হারিয়ে যাওয়ার ভীড়ে আর দুটি নাম। পর্বতারোহণ কাছে নিয়ে এসেছিল একে অপরকে। ভালোবেসে বিয়ে করে ছিলেন অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় দুটি মানুষ। চলেও গেলেন এক সাথে।


ফ্রান্সিস ও সেরগেই আরসেন্তিভ

ফ্রান্সিসের স্বপ্ন ছিল অক্সিজেন ছাড়াই প্রথম আমেরিকান মেয়ে হিসেবে এভারেস্ট জয় করার। এই দম্পতি রাশিয়ায় অনেক গুলা উচু চুড়ো জয় করেন এর মধ্যে আছে “পিক গুড উইল” যা তারাই প্রথম জয় করেন।
১৭ই মে ১৯৯৮ স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা শুরু করলেন ফ্রান্সিস, সঙ্গী হলেন ভালবাসার মানুষটি। ১৯৯৮ সালে তারা কয়েকবার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য তাতে সফলতা আসেনি। অবশেষে ২২ই মে ফ্রান্সিস প্রথম অ্যামেরিকান মেয়ে হিসেবে অক্সিজেন ছাড়াই এভারেস্ট জয় করলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই দম্পত্তির ততোক্ষণে রাত হয়ে গেছে, তারা বাধ্য হলেন “ ডেথ জোনে” রাত কাটাতে এবং তাদের কাছে ছিলনা অক্সিজেনের বোতল। সকালে ঘুম থেকে উঠে সেরগেই দেখলেন ফ্রান্সিস পাশে নেই। সেরগেই বেস ক্যাম্পে নেমে আসলেন কিন্তু প্রিয়তমা স্ত্রী কে খুঁজে পেলেন না।সেরগেই বেস ক্যাম্প থেকে কিছু অক্সিজেন বোতল সংগ্রহ করে ডেথ জোনের পথে আবার যাত্রা করলেন। পথি মধ্যে সেরগেইর দেখা হল একদল উজবেক অভিযাত্রীর সাথে যারা এভারেস্ট জয় করে নেমে আসছেন। তারা জানালেন ফ্রান্সিস কে তারা খুঁজে পেয়েছেন, প্রায় প্রাণহীন, আহত এবং অক্সিজেন স্বল্পতায় ভুগছেন তারা কিছু অক্সিজেন বোতল ওর জন্যে রেখে এসেছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু তাদের করার ছিলনা, ডেথ জোন থেকে কাউকে নামিয়ে নেয়ে আসা প্রায় অসম্ভব। এ অসম্ভব কাজটি করতেই রওনা দিলেন সেরগেই।


ফ্রান্সিসের দেহাবশেষ

২৪-ই মে ভোর ব্রিটিশ অভিযাত্রী ওডেল ও সাউথ আফ্রিকান অভিযাত্রী ক্যাথি খুঁজে পেলেন ফ্রান্সিসকে।ফ্রান্সিসের পাশে ছিল রাশিয়ার তৈরি কিছু অক্সিজেন বোতল, সেরগেইর কুঠার ও ক্লাইম্বিং রোপ, কিন্তু সেরগেইকে কোথাউ খুঁজে পাওয়া গেলনা।
ওডেল ও ক্যাথি তাদের সামিট অভিযান বাতিল করলেন। ফ্রান্সিসের পাশে বসলেন।
“ আমি একজন অ্যামেরিকান, ‘আমাকে মরার জন্য এখানে ফেলে যেওনা’ বিড় বিড় করছেন ফ্রান্সিস। ফ্রান্সিসের সারা শরীর ফ্রস্ট বাইটের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত,স্পাইন ভাঙ্গা।ওডেল-ক্যাথির আসলে কিছু করার ছিলনা।তারা তাকে আশ্বস্ত করলেন তারা ফিরে আসবেন, নিজেদের অক্সিজেনও ফুঁড়িয়ে আসছিল। ঠাণ্ডা আর অক্সিজেন স্বল্পতায় ধীরে ধীরে একাকি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন ফ্রান্সিস।

১৯৯৯, জ্যাক নরটন, ম্যালরি-অরভিন এক্সপিডিশন টিমের একজন সদস্য- খুঁজে পেলেন হতভাগ্য সেরগেইকে প্রিয়তমা স্ত্রী থেকে একটু দূরে, কয়েক শত গজ নিচে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন। ধারণা করা হয় ফ্রান্সিসকে নামাতে গিয়ে নিজেই উঁচু থেকে পড়ে যান।


২০০৭, ওডেল ও ক্যাথি। ফ্রান্সিসের দেহাবশেষ খুঁজে বের করেন। সমাধিস্থ করেন(ডেথ জোন বিউরিয়াল)। ফ্রান্সিসের ছেলের চিঠিটি রেখে আসেন তার সমাধিতে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এডভ্যাঞ্চারপ্রিয় দম্পতির রোমাঞ্চকর করুন কাহিনী!

তবু অদম্য বিজয়ের নেশা!
মৃত্যুকে এবাবে পাশে রেখেই মানুষ ছুটছে অজেয়কে জয় করতে।

তাদের বি-দেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা ।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৫

ডাঃ মারজান বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: দুঃসাহসিকতার কি করুন এক কাহিনী
ভালবাসার অপূর্ব নিদর্শন রেখে গেলেন তারা।

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫১

ডাঃ মারজান বলেছেন: দুঃসাহসিকতা, এডভেঞ্চারের নেশা অপ্রতিরোধ্য। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: অনেক দুঃখ পেলাম। :(

তাদের জন্য রইলো হৃদয় নিঃসৃত শ্রদ্ধা.....

৪| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৬

প্রামানিক বলেছেন: কষ্টের কাহিনী। ধন্যবাদ

৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৮

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: কষ্ট লাগলো অদম্য মানুষটির করুণ পরিণতির ঘটনায়। তবুও মানুষ দূর্দম ....।


৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৪৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: হৃদয়স্পর্শী কাহিনী। +
ফ্রান্সিস এর শেষ কথাটা হয়তো আজও ইথারের কোন স্তরে ভেসে বেড়াচ্ছে। অকুতোভয় দম্পতি পরলোকেও একসাথে থাক!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.