![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সহজ এবং তার চেয়েও বেশী সাধারন একজন মানুষ । আইটি প্রফেশনাল হিসেবে কাজ করছি। টুকটাক ছাইপাশ কিছু লেখালেখির অভ্যাস আছে। মানুষকে ভালবাসি। বই সঙ্গে থাকলে আমার আর কিছু না হলেও হয়। ভালো লাগে ঘুরে বেড়াতে। ভালবাসি প্রকৃতি; অবারিত সবুজ প্রান্তর। বর্ষায় থৈ থৈ পানিতে দুকুল উপচেপরা নদী আমাকে টানে খুব। আমার ব্লগে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো। শুভ ব্লগিং । ভালো থাকুন সবসময়।
এক
মেরি স্টোপসের পথ ধরে হাঁটতে থাকে রুম্পা । জ্যামে অতিষ্ঠ হয়ে রিক্সা থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেছে। শরীরটাও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। তলপেটের দিকে ব্যথা বেড়েই চলছে। অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছল। দায়িত্বরত ডাক্তারকে রিপোর্ট দেখায় সে। ডাক্তারের কথা শুনে তার মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। ডাক্তার তাকে জিজ্ঞেস করে তার বিয়ে হয়েছে কবে? রুম্পা অপ্রস্তুত হয়ে তথমত খেয়ে যায়। ডাক্তার এসব কি জিগায়- তার বিয়ে কবে হয়েছে? যারপরানায় বিরক্ত হয়ে সে না সূচক উত্তর দেয়। এ উত্তর শুনে ডাক্তারের চক্ষু ছানাবড় হয়ে উঠে- এই মেয়ে এসব বলে কী... সে না দুই মাসের গর্ভবতী! ডাক্তার তাকে আনুসাঙ্গিক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দেয়।
দুই
খোরশেদ কাঁপা কাঁপা গলায় ফার্র্মেসিতে গিয়ে কনডম কেনে। অনেক দূরের ফার্র্মেসিতে গিয়ে কেনে, যাতে তাকে চিনতে না পারে। সে ভাল ব্রান্ডের থেকেই কেনে- আবার না হয় ফুটো টুটো হয়ে যায়। রুম্পা ঠিক জায়গায় অপেক্ষা করছিল। খোরশেদও সময় সময় গিয়ে পৌছায়। তবে আজ অস্বাভাবিকভাবে চলছে সে। হার্ট বিট ক্রমেই বেড়ে চলছে। চট্টগ্রামের একটি মার্কেটের তৃতীয় তলার একটি সাইবার ক্যাফেতে ঢুকে তারা দুজন। হ্যাঁ, এ ক্যাফেগুলো এ ধরনের নির্জন আঁধার কর্মকাণ্ডের জন্য খুবই যুগোপযোগী। পুলিশের কোনও ভয় নেই, ভয় নেই ঠিকানা দেয়ারও, যেমনটি দিতে হয় আবাসিক হোটেলে। অতঃপর কামড়াকামড়ি শুরু হয়ে যায়। ক্রমেই নিম্নগামী হতে থাকে খোরশেদ। তার হাত-পা কাঁপতে থাকে তখনো। জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করে রাখতে চায় খোরশেদ। যত বেশি পারা যায়। স্তনে হাত রেখে সে অসম্ভব পুলক অনুভব করে। বৃন্ত দুটো অমৃতের মতন চুষতে থাকে। ঢিলে হতে হতে অবশেষে খুলে যায় সুতা। শুরুতে একটু নড়াচড়া করতে চায়লেও উত্তেজনার চরম সীমায় পৌঁছলে রুম্পার দ্বার খুলে যায়। খোরশেদ প্রথম বারের মতন কনডমের ব্যবহার করে। বেশীক্ষণ পারে না। রাগে কনডম ছুড়ে মারে ডাস্টবিনে।
তিন
খোরশেদকে কল দেয় রুম্পা। ‘জান খোরশেদ, কী হয়েছে?’। হঠাত রুম্পার কণ্ঠে এমন উৎকণ্ঠা দেখে ভয় পেয়ে যায় খোরশেদ। কি হয়েছে জানতে চায়লে রুম্পা বলে, ‘আমি না তোমাকে বারণ করেছিলাম!’ ‘ভণিতা বাদ দিয়ে কি হয়েছে বলে ফেল’-রাগত স্বরে বলে উঠে খোরশেদ। তৎক্ষণাৎ বলে না রুম্পা। ক্লিনিকের সামনে আসতে বলে খোরশেদকে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা বাদ দিয়ে কিছুক্ষনের মধ্যেই সে চলে আসে। ঘটনা শোনার পর সে বিশ্বাসই করতে পারে না। ‘আমি না কনডম ইউস করেছিলাম, ভালো ব্রান্ডের! ফুটো হল কিভাবে?’ কোনও উত্তর দেয় না রুম্পা । কি উত্তরই-বা দিবে, সে তো কিছুই জানে না। হতে পারে অগ্রভাগ বায়ুপূর্ণ ছিল। হতে পারে উত্তেজনার চরম মুহূর্তে ফুটো হয়ে গেছে অজান্তে। দুজন কি করবে ভেবে পায় না। আবার ডাক্তারের কাছে যায় তারা। ডাক্তারের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে এবরশনের। ডাক্তার আরও কিছু টেস্ট দিয়ে পরের দিন দেখা করতে বলে। কিন্তু পরেরদিন ডাক্তার যখন বলে, ‘এবরশন করলে আপনাকে চিরতরে মাতৃত্বের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে হবে’। খোরশেদের দিকে তাকায় রুম্পা, আরেকবার ডাক্তারের দিকে। ডাক্তার পুনরায় বলে, ‘আপনার জরায়ুতে অনেক সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তাই কোনোমতে এবরশন করা যাবে না’। রাগত স্বর আর মলিন মুখ নিয়ে ডাক্তারের রুম থেকে প্রস্থান করে দুজন।
চার
রুম্পা তার পরিবারকে এসবের কিচ্ছু জানায় না। যদিওবা পিরিয়ড না হওয়া নিয়ে তার মা সন্দেহ করেছিল। সে বিয়ের কথা বলে, খোরশেদের কথা বলে। কিন্তু খোরশেদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়ার পর তার মা না করে দেয়। কে-বা তার মেয়েটিকে, অতি আদরের সন্তানকে এমন অকর্মা ছেলের কাছে সঁপে দিতে চায়! এমনকি তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদের জন্য চাপ দিতে থাকে। এদিকে পেট দিন দিন স্ফীত হতেই চলেছে। স্তনগুলোও বাড়াবাড়ি রকম বেড়ে যাচ্ছে। মানসিক অবস্থাও চরমে উঠে। কি করবে বুঝে পায় না। খোরশেদকেও আগের মত মনে হচ্ছে না। কেন জানি এড়িয়ে এড়িয়ে চলছে।
অবশেষে খোরশেদের সাথে চূড়ান্ত করে ফেলে যে, তারা পালাবে। কথামত রুম্পা ষ্টেশনে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। রুম্পা কলের পর কল করতে থাকে। কিন্তু কিছুতেই সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। ট্রেন ছাড়ার সময় ঘনিয়ে আসতে থাকে। খোরশেদের কোনও খোঁজখবর নেই। পাগলের মত ষ্টেশনের এ প্রান্ত থেকে অই প্রান্তে দৌড়াতে থাকে রুম্পা। একসময় ট্রেনও ছেড়ে যায় প্ল্যাটফর্ম।
কিছু বুঝতে পারে না রুম্পা। মাতালমত হয়ে যায়। খোরশেদ এমন প্রতারণা কেন করল কিছুতেই বুঝতে পারে না সে। বেঁচে থাকার স্বাদ তার কাছে বিস্বাদের মতন লাগে। দ্বিতীয়বার ভাবার আগেই রুম্পা ট্রেনের তলায় ঝাঁপ দেয়...
[পুনশ্চঃ যেদিন পালিয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেদিন ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরী হয়ে গেছিলো। রুম্পা অপেক্ষা করবে জেনে সে খুব দ্রুততার সাথেই আসতে চায়। কিন্তু...কিন্তু, পতিমধ্যে ঘাতক বাস পিষে ফেলে খোরশেদকে। দুদিন মৃত্যুর সাথে লড়ে হেরে যায় সে...]
©somewhere in net ltd.