নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আগুনমুখার চোখে জল

ওই যে নদী যায়রে বইয়া...

মু. ইশরাত হোসেন লিপটন

মু. ইশরাত হোসেন লিপটন › বিস্তারিত পোস্টঃ

'বাকি শুধু এপিটাফ লাগানো'

২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৭



পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ গোলাম মাওলা রনি আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র চাননি। দলের একাধিক সূত্র জানাচ্ছে- রনি মনোনয়নপত্রের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তাঁর নামের বিপরীতে মনোনয়নের আবেদনপত্র দেওয়া হয়নি।

রনিকে দলীয় মনোনয়নপত্রের জন্য আবেদন করতে দেওয়া হয়নি নাকি তিনি নিজেই আবেদন করেননি এটা বড় কিছু নয়। বড় কথা হল আওয়ামী লীগে রনির জন্য আর কোনো সম্মানজনক জায়গা থাকলো না।

সাংসদ গোলাম মাওলা রনি অবশ্য দাবি করতে পারেন- তিনি নিজেইতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। হ্যাঁ, তিনি এ ধরণের দাবি করলে তা অনেকটা গ্রহণযোগ্য। কারণ এর আগে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আভাস দিয়েছিলেন গণমাধ্যমে।

তবে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন বারবার বিতর্কিত কর্মাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার কারণে দলের হাই কমান্ড একাধিকবার তাঁকে সতর্ক করার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে কোনো আসন থেকেই তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর ঘটনা যদি এমনই হয় তবে রনির স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও এক ধরণের ভণ্ডামি। কারণ দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত হজম করে নিয়ে নিজের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা করার জন্যই তিনি এমন ঘোষণা দিয়েছেন।

গত ২০ জুলাই (২০১৩) প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাধ্যমেও সরকারের উর্ধতন মহলে রনি জানান দিয়েছিলেন তিনি আগামী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন।



কেন রনি দল ছেড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিলেন?

গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার মো. শাহআলম বলেন, গত ২০ জুলাই সাংসদ রনি আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী না হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। আর ওই দিনই তিনি ঢাকায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট এর দুই সংবাদকর্মীকে নিজ হাতে মারধর করেন। ক্ষমতাশীন দলের একজন সাংসদের এ ধরণের কর্মকাণ্ড দলের ভাবমূর্তি চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাঁর এ কাজ পরিস্কারভাবেই প্রমাণ করে দলের ক্ষতি করার মিশন নিয়েই তিনি এমনটি করেছেন।

সাংস রনি আলোচনায় আসেন ২০০৯ সালে। তাঁর নির্বাচনী এলাকার গলাচিপা পৌরসভার আড়তপট্টি এলাকায় রামনাবাদ নদীর তীর ভরাট করে বিণীবিতান নির্মাণের উদ্যোগ নেন রনি। এ কাজে তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল এবং টিআর-কাবিখার অর্থ ব্যয় করা হচ্ছিল। এ নিয়ে পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে ক্ষুব্ধ হন রনি। ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর গলাচিপা প্রতিনিধি (এই লেখক) এবং তাঁর ছোট ভাই আমার দেশ পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধির বিরুদ্ধে পরপর চারটি সাজানো মামলা করেন রনির অনুসারীরা। রনির ক্যাডাররা হামলা করে আহত করে পটুয়াখালী ছয় জন সংবাদকর্মীকে।

এ সময় থেকেই শুরু হয় রনির অনুসারীদের (ভাইয়া বাহিনী) তাণ্ডব। সাংসদ রনির ভাইয়া বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা। এমনকি প্রতিমন্ত্রীর নির্ধারিত সভাস্থল-তোরণ ভাঙচুর করে আগুনে পুড়িয়ে দেয় ভাইয়া বাহিনী।

২০১০ সালে সাংসদ রনি বাদি হয়ে মামলা করেন বহুল প্রচারিত চারটি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশকসহ ১১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।

এসবকিছুর পাশাপাশি রনির ভাইয়া বাহিনীর তাণ্ডব চলতে থাকে দশমিনা-গলাচিপায়। অন্যের জমি দখল, সরকারি খাসজমি দখল ও ভরাট করে প্লট হিসাবে বিক্রি করাসহ নান অভিযোগ এই ভাইয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে।

গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া বন্দরে সাংসদ রনি যে দোতলা বাসভবন নির্মাণ করেছেন সেটিও সরকারি খাসজমি দল করে। সেখানে এক তিল পরিমাণও রেকর্ডি জমি নেই সাংসদ রনির।

দলীয় সূত্র জানায়, গত ২০ জুলাই ঢাকায় দুই সংবাদ কর্মীকে পেটানোর ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার হন রনি। এর পরাপরই তাঁর এবং তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে গলাচিপা থানায় আরো দুটি মামলা হয়। এ তিনটি মামলায় প্রায় ৫০ দিন কারাভোগ করেন সাংসদ রনি। রনির এসব কর্মকাণ্ড ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনও তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। সবকিছু মিলিয়ে স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিকভাবে নিজ দল আওয়ামী লীগের কাছে চরমভাবে বিতর্কিত হয়ে পরেন রনি। এ অবস্থায় দলের মনোনয়ন চাওয়াতো দূরের কথা নিজের বিপদ সামলানোই রনির জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।

স্থানীয় পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা- দল থেকে কোনো সবুজ সংকেত না পাওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পরেন তরুন এ সাংসদ। শেষ পর্যন্ত নিজেকে পটুয়াখালী-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণা করাটাও তাঁর হতাশারই বহিপ্রকাশ। পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা- রনি আর কোনো নির্বাচনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কেন না, গলাচিপা-দশমিনা সংসদীয় এলাকায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মত জনবল, নৈতিক সাহস কোনোটাই আর তাঁর নেই।

আবার কেউ কেউ মনে করছেন রনি নতুন কোনো ফন্দি-ফিকিরির ধান্দায় আছেন। আগামী নির্বাচন পরিস্থিতি কী হয় তা সঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না। নির্বাচনকে সামনে রেখে যদি কোনো তাল-বেতাল পরিস্থিতি হয়ে পরে তাহলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপেক্ষায় ঘাপটি মেরে বসে আছেন এমপি রনি। এ মহলটির ধারণা রাজনীতির নামে ফটকাবাজিই রনির মত লোকদের মূল পুঁজি।

তবে গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বহী কমিটির তরুণ একজন সদস্য বলেন, ‌'কোনো কৌশলেই আর কাজ হবে না। আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে রনি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে। স্থানীয় রাজনীতিতে রনি এখন ইতিহাস ছাড়া আর কিছুই নন। স্থানীয় রাজনীতিতে রনি এখন মৃত। তাঁর রাজনৈতিক সমাধি তৈরি হয়ে গেছে। বাকি আছে শুধু সমাধিতে এপিটাফ লাগানো।'

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৫

মদন বলেছেন: রনির কারনে আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি ভেংগে খানখান।

আওয়ামীলীগের মুখ উজ্জল করেছে জয়নাল হাজারী
আওয়ামীলীগের মুখ উজ্জল করেছে শওকত ওসমান
আওয়ামীলীগের মুখ উজ্জল করেছে আল মুহিত
আওয়ামীলীগের মুখ উজ্জল করেছে সাহারা
আওয়ামীলীগের মুখ উজ্জল করেছে মখা আলমগীর

জয়বাংলা, ভাবমুর্তি সামলা।

২| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২২

রাজীব বলেছেন: ২০১০ সালে সাংসদ রনি বাদি হয়ে মামলা করেন বহুল প্রচারিত চারটি দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশকসহ ১১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।
এসবকিছুর পাশাপাশি রনির ভাইয়া বাহিনীর তাণ্ডব চলতে থাকে দশমিনা-গলাচিপায়। অন্যের জমি দখল, সরকারি খাসজমি দখল ও ভরাট করে প্লট হিসাবে বিক্রি করাসহ নান অভিযোগ এই ভাইয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে।
গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া বন্দরে সাংসদ রনি যে দোতলা বাসভবন নির্মাণ করেছেন সেটিও সরকারি খাসজমি দল করে। সেখানে এক তিল পরিমাণও রেকর্ডি জমি নেই সাংসদ রনির।



সাংবাদিক পেটানোর আগে কিন্তু এসব কেউ বলেনি। ২০১০ থেকে এত অপকর্ম করলো আর ২০১৩তে এসে প্রকাশ পেল। মাননীয় সাংবাদিক ভাইয়েরা আর কোন কোন এম পি এসব করে বেড়াচ্ছে একটু খোজ নিয়ে দেখবেন কি?? নাকি মার না খেলে মাথা খুলে না??

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১২

মু. ইশরাত হোসেন লিপটন বলেছেন: আপনার ধারণা পুরোপুরি সঠিক না। ২০০৯ সালের ২১ আগস্ট রনির অপকীর্তি নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে। এর পর প্রায় তিন মাস (৯০ দিন) সাংসদ রনির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে পত্র-পত্রিকা এবং টেলিভিশন চ্যানেলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরই এক পর্যায় ১১ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রনি। ২০০৯ সালের আগস্ট থেকে শুরু করে ২০১৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এমন একটি মাস নেই যে মাসে রনিকে নিয়ে অন্তত দুটি প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশিত না হয়েছে। টেলিভিশন চ্যানেলের কথা বাদই দিলাম।
*************************************************** লক্ষণীয় : রনির ভাইয় বাহিনী সাংবাদিক পেটানো শুরু করে ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। আর রনির অপকর্ম নিয়ে প্রতিবেদন শুরু হয় ২০০৯ সালের ২১ আগস্ট। মি. রাজীব, আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন তো?

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৭

রগ েতরা বলেছেন: জয়বাংলা, ভাবমুর্তি সামলা.....। :-/

৪| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬

রাজীব বলেছেন: তার মানে আপনি বলতে চান বর্তমান এমপিদের মধ্যে এই একজনই খারাপ লোক ছিল। আর নেই?

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

মু. ইশরাত হোসেন লিপটন বলেছেন: আসলে ব্যক্তি রনিকে খারাপ বলার কোনো যুক্তি নেই। রনি কোনো কালেই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বারবার গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন। গত নির্বাচনে হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান রনি। আর হঠাৎ করেই এমপি বনে যান তিনি।
পটুয়াখালী-৩ আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্ভেদ্য ঘাটি। এ হিসাবে তরুণ সাংসদ গোলাম মাওলা রনির সামনে 'সোনার থালায় বাড়া ভাত' বলতে হবে। আমি মনে করি ১০০% গাধা না হলে 'সোনার থালা' কেউ পায়ে ঠেলে সরিয়ে দেয় না।
ধন্যবাদ রাজীব।

৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪

রাজীব বলেছেন: রাজীব বলেছেন: তার মানে আপনি বলতে চান বর্তমান এমপিদের মধ্যে এই একজনই খারাপ লোক ছিল। আর নেই?

আপনি কেন ধরে নিলেন যে, আমি শুধু আওয়ামী লীগের এমপিদের কথাই বলেছি???

৬| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫

রাজীব বলেছেন: আর একটা প্রশ্ন, আপনার জবাব দেখে বুঝলাম যে, আওয়ামী লীগ যথেষ্ঠ না জেনেই রনিকে মনোনয়ন দিয়েছিল। এরকম আর কাউকে কি না জেনে মনোনয়ন দেয় নি?

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৭

মু. ইশরাত হোসেন লিপটন বলেছেন: মি. রাজীব, আমার লেখার প্রতিপাদ্য হল একজন 'হঠাৎ সাংসদ এবং তাঁর অস্তগামিতা'। এ ক্ষেত্রে সাংসদ রনি একজন ‌'প্রতীক' মাত্র। এমন আরো অসংখ্য রনি রাজনীতির মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকতেইতো পারে! আর এসব 'হঠাৎ রাজনীতিক', 'হঠাৎ সাংসদ' পুরো দেশ এবং সমাজের জন্য ভয়ানক হয়ে উঠতেই পারে।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.