![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
instagram.com/fatih.solaiman facebook.com/Fatihsolaimanofficial
নিম্নোল্লেখিত প্রশ্নোত্তরমূলক আলোচনায় যাকাত সম্পর্কে জানতে আগ্রহী প্রতিটি মুসলিম অমুসলিম সাধারন শিক্ষায় শিক্ষিত বিভীন্ন পেশায় নিযুক্ত ভাইবোনদের জিজ্ঞাসু হৃদয়ের মৌলিক চাহিদা মেটাবে! (ওয়া মা-ত্তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ)
প্রশ্ন ০১: ভাইয়া, যাকাত সম্পর্কে আমাকে কি আদৌ কিছু জানতে হবে?
উত্তর: হ্যা, যাকাত হচ্ছে ইসলামের তৃতীয় মৌলিক ভিত্তি আর প্রতিটি মুসলিমের এ সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান থাকা একান্ত আবশ্যক ।
বিশুদ্ধ হাদীসের মূলনীতি হচ্ছে [প্রতিটি মুসলিম নর-নারী'র জন্য জ্ঞান অর্জন করা ফরজ] ! আপনার উপর হয়ত এই মুহুর্তে যাকাত দেয়া ফরজ হয়নি কিন্তু আপনার পরিবারের কোন সদস্য অথবা আত্মীয়, কলিগ, পরিচিত প্রতিবেশী জনের উপর যাকাত দেয়া ফরজ হয়েছে, তারা অনেকেই ভালমত অবগত নন কতটুকু সম্পদের মালিক হলে জাকাত দেয়া ফরজ, কাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে, কাদেরকে দেয়া যাবে না, আবার তাদের মধ্যে অনেকেই যাকাত না দেয়ার শাস্তির ভয়াবহতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নন, বেখবর! আর একজন মুসলিম হিসেবে তাদেরকে এসম্পর্কে সচেতন করা আল্লাহ আপনার উপর অবশ্য কর্তব্য নির্দ্ধারন করেছেন! আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কালামে ইরশাদ করেছেন [ হে ঈমানদারগন, জাহান্নামের আগুন (শাস্তি) থেকে নিজেরা বেচে থাক ও পরিবার পরিজনদেরকেও সতর্ক কর]
প্রশ্ন ০২: কেউ যাকাত দিতে না চাইলে কি তাকে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে হবে?
উত্তর: শুধু জাহান্নামের শাস্তি ভোগ-ই নয় যাকাত অস্বীকার কারী সরাসরি কাফির হিসেবে সাব্যস্ত হবে। ইমামদের সর্বসম্মত মতামত এটাই যে, কোন প্রাপ্ত বয়স্ক, সুস্থ, মুসলিম (নরনারী) নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়েও যদি যাকাত দিতে (ইসলামের তৃতীয় মৌলিক ভিত্তি) অস্বীকার করে তবে সে মুরতাদ। সে আর মুসলিম থাকেনা!
*ইসলামের প্রথম খলিফা আবুবকর রাঃ যাকাত অস্বীকার কারীদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষনা করেছেন!
*আল্লাহ তা‘আলা সূরা তাওবার ৩৪-৩৫ নাম্বার আয়াতে ইরশাদ করেছেন [“এবং যারা সোনা ও রূপা (সম্পদ পরিমাপের স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে) পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। সেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, গলদেশে আর পিঠে সেঁক দেয়া হবে শাস্তিস্বরুপ। (আর বলা হবে) ‘এশাস্তি তা-ই যা তোমরা কেবল নিজদের জন্যেই জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে এখন শাস্তিস্বরুপ তার স্বাদ উপভোগ করতে থাক”।]
*সূরা শুআরা'র ২১৪ নাম্বার আয়াতে ইরশাদ করেছেন [আর আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দেরকে (জাহান্নামের আযাব) সম্পর্কে ভয় প্রদর্শন করুন]
*সহিহ মুসলিম শরীফে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যারা যাকাত দিতে ইচ্ছুক নয় তাদের সম্পর্কে বলেছেন: [(নিসাব পরিমান) স্বর্ণ ও রূপার যে মালিক এর হক (যাকাত) প্রদান করে না, তার জন্য কিয়ামতের দিন আগুনের পাত তৈরি করা হবে তা জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে তার গলদেশ, কপাল ও পৃষ্ঠদেশে সেক দেয়া হবে। এই শাস্তি ততক্ষন পর্যন্ত চলতেই থাকবে যতক্ষন না তার পাপপূণ্যের ব্যাপারে চূড়ান্ত ফয়সালা হয়]
প্রশ্ন ০৩: আমার / আমাদের কস্টার্জিত পরিশ্রমের সম্পদ থেকে আমি কেন যাকাত দেব?
উত্তর: ইসলামী জীবনাদর্শের মূল দর্শনই হচ্ছে, আল্লাহ আপনাকে যে সম্পদ দিয়েছেন এটা আপনার প্রতি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ! *সূরা মুনাফিকুন আয়াত ১০-১১ তে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, [আমি অনুগ্রহ করে তোমাদের যে রিজিক (ধন সম্পদ) দিয়েছি তা থেকে (একটা অংশ) খরচ করো মৃত্যু আসার আগেই। অন্যথায় অনুতাপ করে বলতে হবে হে আল্লাহ আমাকে আরেকটাবার দুনিয়াতে ফিরে যাবার সুযোগ দাও আমি সাদাকা(যাকাত দান খয়রাত) করে নেককার লোকদের অন্তর্ভুক্ত হব]
* [আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ মান্য করাই হচ্ছে একজন মুসলিমের ঈমানের পরিচয়- (ইমরান, আয়াত ৩২, ১৩২; নিসা, আয়াত ৫৯; আনফাল, আয়াত ১, ২০, ৪৬; নুর, আয়াত ৫৪, ৫৬; মুহাম্মদ, আয়াত ৩৩; মুজাদালাহ, আয়াত ১৩; আততাগাবুন, আয়াত ১২)]
* কস্টার্জিত সম্পদ জমিয়ে রাখার প্রতি ভালবাসা তৈরি হওয়া মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি! কিন্তু [প্রকৃত ঈমানদারতো তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনে] (হুজরাত, আয়াত ১) [নামাজ কায়েম করে, যথাযথভাবে যাকাত আদায় করে আর আল্লাহ তায়ালার নির্দেষের কাছে (বিনাবাক্যে )মাথা নত করে] (মায়েদা – ৫৫) [তোমরা কিছুতেই কল্যানলাভ করতে পারবেনা যে পর্যন্ত না তোমরা তোমাদের কস্টার্জিত প্রিয় সম্পদ থেকে আল্লাহর তায়ালার নির্দেষিত পথে ব্যায় করবে] (আলে ইমরান -৯২)
*আল্লাহ তায়ালা আরো বলেছেন 'হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের বৈধ উপার্জন থেকে এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যে ফসল উৎপন্ন করি তা থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় (যাকাত প্রদান) কর।'[সূরা বাকারা ২৬৭]
*খরচ কর (যাকাত দাও) আল্লাহর পথে! (কৃপনতা করে) নিজ হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না! যারা কল্যানকাজে অগ্রগামী আল্লাহ তাদেরকে অনেক ভালবাসেন (সূরা বাকারা - ১৯৫)
*আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য তোমরা যাকাত দাও, যাকাত প্রদানকারী প্রকৃতপক্ষে তার সম্পদকে (চিরস্থায়ীরুপে) বর্ধিত করে (সূরা রুম-৩৯)
*তোমাদের কস্টার্জিত সম্পদ থেকে যা কিছু (যাকাত সাদাকাহ বাবদ) খরচ করলে আল্লাহ তার যথার্থ প্রতিদান দেবেন! প্রতিদানের ক্ষেত্রে আল্লাহ তোমাদের প্রতি সামান্যতম অবিচারও করবেন না (সূরা বাকারা-২৭২)
*যারা আল্লাহ নির্দেশিত পথে তার কস্টার্জিত সম্পদ ব্যায় করে, অতপর এ কারনে কাউকে (যাকে সম্পদ/যাকাত দেয়া হয়েছে) খোটা দেয়না এবং এজন্যে মনোকষ্ট নেয়না এজন্যে তাদের রবের নিকট রয়েছে উত্তম প্রতিদান! শেষ বিচারের দিন তাদের জন্য কোন চিন্তাও নেই আযাবের, ভয়ের ও কোন কারন নেই (বাকারা-২৬২)
প্রশ্ন ০৪ : অভাব অনাথ দুস্থ গরিবদেরকে যাকাত দিলে আল্লাহর কি লাভ?
উত্তর: অভাব অনাথ দুস্থ গরিবদেরকে যাকাত দিলে সরাসরি আল্লাহ তায়ালার কোন লাভ নেই বরংপার্থিব সম্পদের প্রতি ভালবাসা আইমিন ফিতরাত (মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি) তৈরী করে দিয়ে আল্লাহ তায়ালা যাচাই করে নিতে চান ঈমানের (আনুগত্যের) দাবীতে কারা কারা সত্যি সত্যি সত্যবাদী, সৌভাগ্যবান মুমিন! প্রকৃতপক্ষে এটা (যাকাত প্রদান) হচ্ছে আপনাদের ঈমানের দাবীর ব্যাপারে একটা চমৎকার পরীক্ষা! আল্লাহ তায়ালা সূরা আলে ইমরানে ইরশাদ করেন : *মানুষের অন্তরকে লোভাতুর করে দেয়া হয়েছে পছন্দসই জিনিস(দামী দামী-আসবাব,)পত্র, নারী(নর), সন্তান সন্ততি, অঢেল স্বর্ণ-রৌপ্য, বাছাইকরা ঘোড়া (ব্রান্ডেড গাড়ী), গৃহপালিত পশু, (অনেক অনেক) জমি জমা'র প্রতি। কিন্তু জেনে রাখ এসব দুনিয়ার জীবনে খুবই ক্ষনস্থায়ী সামগ্রী মাত্র (আলে ইমরান-১৪) *যারা কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্যেই এসব কিছু (জান-মাল-অর্থসম্পদ) উৎসর্গ করে আল্লাহ তাদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল (বাকারা-২০৭))
*আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাহদেরকে পরীক্ষা করেন ভয়ভীতি ক্ষুধা সম্পদের ঘাটতি ফসলাদীর কমতি ইত্যাদি দিয়ে (বাকারা-১৫৫)
*মানুষেরা কি এই ধারনা নিয়েই বসে আছে যে, আমরা তো (বংশ পরম্পরায় পৈত্রিকভাবে) ঈমান এনেছিই কেবল এইটুকু (মৌখিক) দাবীর ভিত্তিতেই জান্নাতের পথে ছেড়ে দেয়া হবে, আর তাদের (ঈমানদার হবার) দাবীর ব্যাপারে আদৌ কোনরকম যাচাইবাছাই করা হবেনা? অথচ ঈমানের দাবীতে তাদের পূর্ববর্তী সকল জাতীকে (জান-মাল-ধন-সম্পদ দিয়ে কঠিনভাবে) পরীক্ষা করেছি ঈমানের দাবীতে কারা আসলেই সত্যবাদী আর কারা মিথ্যাবাদী? আল্লাহ অবশ্যই এভাবেই তোমাদেরকেও যাচাই করে নেবেন। (আনকাবুত-২-৩-বাকারা২১৪)
*আল্লাহ তায়ালা এভাবেই পরীক্ষা করে দেখবেন তার নির্দেশ যথাযথভাবে (আমল) পালনের ব্যাপারে কে সর্বোত্তম ব্যাক্তি (মূলক-২)
*আর এভাবেই যদি তোমরা ঠিকঠাকভাবে নামায আদায় কর, যথাযথভাবে যাকাত প্রদান কর, রাসূলের প্রতি ঈমান আন, সত্যবাদীদের সহযোগিতা কর আর আল্লাহকে কর্জে হাসানা (সাদাকাহ) দাও, তবে আমি স্বয়ং আল্লাহ তোমাদের (সমস্ত জীবনের) সঙ্গি হয়ে যাব, তোমাদের যাবতীয় দোষত্রুটি দূর করে দিব (মায়েদা-১২) আর এ সমস্ত কল্যান কাজের অতি উত্তম প্রতিফল আল্লাহর কাছেই পাবে (বাকারা-১১০)
প্রশ্ন ০৫ : ভাইয়া, বুঝলাম যাকাত প্রদানকারী আখেরাতে অনেক সৌভাগ্যবানদের একজন হবে! কিন্তু আমাদের সামাজিক জীবনে যাকাতের প্রভাব তো খুব বেশী দেখতে পাইনা! এর কারন কি?
উত্তর: এটা সত্যিই খুব দুঃখের ব্যাপার যে আমরা সামাজিকভাবে এখনো যাকাতের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে পাইনি! কারন আমরা যাকাতের আর্থসামাজিক সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে আদৌ সচেস্ট নই!আপনি জেনে নিশ্চয়ই খুশি হবেন ইসলামী জীবনাদর্শের মৌলিক শক্তিই হল * ‘সমগ্র মুসলিম জাতি তাওহিদের ‘তোমাদের ইলাহ এক’ (বাকারা-১৬৩) গ্রথিত সূত্রে পরস্পর আত্মীকভাবে সম্পর্কিত এক উম্মাহ (সূরা আত-তাওবা-৭১)! তারা আদি পিতা আদম আঃ জাতির পিতা ইবরাহীম আঃ এর পরিচয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের একে অন্যের ভাই ভাই *‘মুমিনরা তো পরস্পরের ভাই’ (হুজরাত-১০) * আল্লাহ তায়ালা নিজের সাহায্যাদ্বারা এবং মুমিনদের পারস্পরিক (অর্থনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য) সহায়তার মাধ্যমে তোমাদের অন্তরকে পরস্পরে (আত্মীয়তার বাঁধনে) জুড়ে দিয়েছেন (আনফাল-৬২-৬৩)
*আল্লাহ তায়ালার কোনভাবেই এটা পছন্দ নয় যে 'অঢেল সম্পদ কেবল তোমাদের ধনীদের মাঝেই চক্রাকারে ঘুরবে' ‘হে ধনীরা জেনে রাখ তোমাদের অর্জিত সম্পদে অধিকার রয়েছে (সমাজের) অসহায় সাহায্যপ্রত্যাশী আর বঞ্চিত মানুষজনের’
এখন আপনিই বলুন কোন সমাজে বসবাসকারী ধনী ও দরিদ্রদের আত্মীক সম্পর্ক যদি এমন মধুর হয়, পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব যদি এতটা উদারনৈতিক হয়, অর্থনৈতিক দানশীলতা যদি কেবল মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে হয় সেই সমাজে কি অভাব, অনটন, অর্থনৈতিক দৈন্যতাসৃষ্ট অশান্তি কিছুতেই বিরাজ করতে পারে?
প্রশ্ন ০৬ : আল্লাহু আকবার ভাইয়া, যাকাত নিয়ে এত চমৎকার কথা কখনো তো শুনি নি? আপনি কি আমাকে যাকাত সম্পর্কে আরো বিস্তারিত কিছু বলবেন? এই যেমন আল্লাহ তায়ালা কার কার উপর যাকাত দেয়া ফরজ করে দিয়েছেন?
উত্তর: ইসলামী আইন শাস্ত্র (শরীয়াহ) বিশেষজ্ঞগনের মতে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিরই উপর যাকাত আদায় করা ফরজ, যাদের মধ্যে নিম্নোক্ত শর্তাবলী পাওয়া যায়- ১. মুসলিম ২. স্বাধীন ৩. আকেল হওয়া ৪. বালেগ হওয়া ৫. নিসাব পরিমান সম্পদ থাকা ৬. পূর্ণাঙ্গ মালিকানা থাকা ৭. সম্পদের মালিকানা পূর্ণ একবছর অতিবাহিত হওয়া ।
(সুতরাং অমুসলিম, পরাধীন ক্রিতদাস, উন্মাদ (পাগল), অপ্রাপ্তবয়স্ক নাবালেগ, নিসাবের চেয়ে কম পরিমানে সম্পদের অধিকারী, যৌথসম্পত্তিতে এককভাবে নিসাব পরিমানে সম্পদের মালিক না হওয়া, নিসাব পরিমান সম্পদ পূর্ন একবছর মালিকানায় না থাকলে তার উপর যাকাত প্রদান ফরজ নয়) আল্লাহ তায়াল সূরা বাক্বারাতে ২৬৭ নং আয়াতে ইরশাদ করেছেন * 'হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের বৈধ উপার্জন এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যে শস্য উৎপন্ন করি তা থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় কর।' * সূরা বাইয়্যিনাহ আয়াত - ৫ তে আল্লাহ তায়াল ঈমানদারদেরকে উদ্যেশ্য করে ইরশাদ করেন 'তাদের এ মর্মে আদেশ করা হয়েছে যে, তারা নিবিষ্ট মনে একান্তভাবে শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালা'র এবাদত করবে, যথাযথভাবে সালাত আদায় করবে, জাকাত প্রদান করবে, আর এটাই হলো সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন।'
প্রশ্ন ০৭ : আপনি বললেন কোন স্বাধীন, জ্ঞানবান, প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ব্যাক্তির মালিকানায় পূর্ণ একবছর নিসাব পরিমান সম্পদ থাকতে তবেই তার উপর যাকাত দেয়া ফরজ হয়! সবই তো বুঝলাম কিন্তু নিসাব পরিমান সম্পদ এর মালিকানা বলতে আমাদের সমাজের প্রচলিত পরিমাপে ঠিক কতটুকু সম্পদের মালিকানা কে বুঝায় একটু বুঝিয়ে বলবেন কি?
উত্তর: নিসাব হচ্ছে তৎকালীন মদীনা রাস্ট্রে কোন খাদ্য দ্রব্য, সোনা-রুপা, পন্য ইত্যাদি পরিমাপের প্রচলিত ওজন পদ্ধতি, যা রাসূল (সঃ) এর সময়কালীন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে খোলাফায়ে রাশেদা সহ আরো অনেক বছর প্রচলিত ছিল।
বর্তমানে আমাদের সমাজে যেমন তরল কিছু মাপার জন্য লিটার পদ্ধতি, কঠিন দ্রব্য, পন্য ফসলাদি ইত্যাদি পরিমাপের জন্য কেজি / সের ইত্যাদি একেকধরনের বস্তুতে একেকরকম পরিমাপ একক ধরা হয় ঠিক তেমনি করে ইসলামী শরীয়াতে যাকাতযোগ্য একেকধরনের বস্তুর উপর একেকরকম পরিমাপ হিসেবে নিসাব ধর্তব্য হয়।
*প্রথমত: যেমন ভূমি থেকে উৎপন্য ফসলাদিতে নিসাবের পরিমান হল: আল্লাহ তায়ালা সূরা বাক্বারার ২৬৭ আয়াতে বলেছেন 'আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যে শস্য উৎপন্ন করি তা থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় (যাকাত প্রদান) কর।' * হাদীসে এসেছে ‘বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত শস্য ও ফল-ফলাদিতে পাঁচ ওসক পরিমাণ সম্পদ নিসাব হিসেবে ধর্তব্য । ইসলামি শরীয়া আইনে,
এক ওসক = ৬০ 'সা' সুতরাং ৫ ওসক = ৩০০ সা'
আমাদের সমাজে বর্তমানে প্রচলিত পরিমাপ পদ্ধতিতে হিসাব করলে এক 'সা' = ২০৪০ গ্রাম সুতরাং ৩০০ সা' = ৬১২০০০ গ্রাম = ৬১২ কেজি / ১৫.৩ মন
* সুতরাং যদি কারো জমিতে আকাশ থেকে পতিত বৃষ্টিপাত ও আল্লাহ তায়ালা'র দয়ায় ৬১২ কেজি / ১৫.৩ মন কৃষিপন্য (ধান, গম প্রধান খাদ্যদ্রব্য ইত্যাদি) উৎপাদিত হয় তবে তা নিসাব পরিমান সম্পদ বলে গন্য হবে । তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালার বিধান হল" 'ফসল কাটার সময় তার হক (জাকাত) আদায় কর।' সূরা আনআম-১৪১* এ ধরনের সম্পদে যাকাত দিতে হবে বিনাশ্রমে প্রাপ্ত মোট উৎপাদিত ফসলের জাকাতের পরিমাণ হল এক দশমাংশ আর শ্রম ব্যয়ে প্রাপ্ত ফসলে জাকাতের পরিমাণ হল এক বিশমাংশ। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : 'বৃষ্টির পানিতে উৎপন্ন ফসল ও উশরী জমিতে উৎপন্ন ফসলের জাকাত বিশ ভাগের একভাগ।
*দ্বিতীয়ত: যদি কারো মালিকানায় সায়িমা সংখ্যক তারমানে আলাদাআলাদা ন্যুনতম ৫টি উট অথবা ৩০টি গরু-মহিষ অথবা ৪০ টি ছাগল-ভেরা-দুম্বা অথবা একত্রে নিসাব পরিমাণ প্রানীর মালিকানা বিদ্যমান থাকে তবে তাকে এগুলোর মূল্য নির্ধারন করে ২.৫% হারে যাকাত দিতে হবে।
* তৃতীয়ত: সোনা-রুপা: স্বর্ণের নিসাব হল ২০ দিনার। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ‘'সোনা বিশ দিনার পরিমাণ হলে তাতে জাকাত ফরজ হবে।’ রাসূলুল্লাহ (সঃ) প্রবর্তীত ইসলামী পরিমাপ পদ্ধতিতে এক দিনার সমান এক মিছকাল।
* ১ দিনার = ১ মিছকাল = ৪.২৫ গ্রাম
* সুতরাং ২০ দিনার = ২০ মিছকাল = ৮৫ গ্রাম।
* যা এ দেশীয় মাপে ৭.৫ ভরি হয়। এখন ২২ ক্যারটে ভরি ধর্তব্য হলে আর প্রতিগ্রাম স্বর্ণের বর্তমান বাজারমূল্য ৪১৭০ টাকা হিসেবে গনণা করলে ৮৫গ্রাম /৭.৫ ভরি স্বর্ণের দাম আসে ৪১৭০*৮৫=৩৬৪৭৮৫ টাকা। ২.৫ % হারে আপনাকে যাকাতের টাকা পরিশোধ করতে হবে ।
* ঠিক এমনিভাবে রূপার নিসাব হলো পাঁচ আওকিয়া। এক আওকিয়া = ৪০ ইসলামী দিরহাম। সে মতে রূপার নিসাব হল পাঁচ আওকিয়া = ২০০ দিরহাম। আর এক দিরহাম হল এক মিছকালের সাত দশমাংশ, এর মোট ওজন ১৪০ মিছকাল, যার বর্তমান প্রচলিত ওজন হল, ৫৯৫ গ্রাম। যা এ দেশীয় মাপে ৫২.৫ ভরি, তা থেকে ৪০ ভাগের ১ ভাগ জাকাত দেয়া ফরজ।
* মনে রাখবেন, কাগজের তৈরি নোটের ওপরও জাকাত ওয়াজিব। কারণ এ নোটগুলো রূপার বদলেই চলমান, সুতরাং এগুলো রূপার স্থলাভিষিক্ত হবে এবং এর মূল্য রূপার নিসাবের সমপরিমাণ হলে, তাতে জাকাত ওয়াজিব হবে।
* চতুর্থতঃ স্থাবর-অস্থাবর সকল প্রকার ব্যবসায়ী পণ্যের ওপর জাকাত ওয়াজিব। সেগুলোর সর্বশেষ বাজার মূল্য নির্ধারণ করে ২.৫% হারে যাকাত প্রদান করতে হবে। বিভীন্ন ফ্যাক্টরিতে মেশিনারিজ বা খুচরা যন্ত্রাংশ ও এ জাতীয় ক্ষুদ্র পণ্যের ব্যবসায়ীদের কর্তব্য হল, ছোট-বড় সকল অংশের মূল্য নিধারণ করে নিবে, যাতে কোন কিছু বাদ না পড়ে। পরিমাণ নির্ণয়ে যদি জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে সতর্কতামূলক বেশী দাম ধরে জাকাত আদায় করবে, যাতে সে সম্পূর্ণ দায়িত্ত্ব থেকে মুক্ত হতে পারে।
* মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যাবহার্য বস্তু যথা খাবার, পানীয়, আসবাবপত্র, বাহন, পোষাক, (সোনা-রূপা ছাড়া) অলংকারসহ ব্যবহার্য পণ্যের ওপর জাকাত আবশ্যক নয়। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'মুসলিমদের গোলাম, বাদী, ঘোড়া এগুলোর ওপর জাকাত নেই।' ১) ওমর রা.বলেন, নিজের খাবারে জন্য উৎপাদিত 'শাক-সব্জিতে জাকাত নেই।' ২) আলী রা. বলেন, আপেল ও এ জাতীয় ফলের ওপর জাকাত ওয়াজিব নয়।'
প্রশ্ন ০৮ : আপনি তো বললেন, মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যাবহার্য বস্তুতে যাকাত দিতে হবে না। তবে মেয়েরা তাদের ব্যাবহার্য গহনা অলংকার এসবে যাকাত দিতে হবে কেন?
উত্তর: চমৎকার প্রশ্নের জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন আলোচনার প্রথম পর্বে আমি উল্লেখ করেছি ইসলামী সমাজের আদর্শিক সৌন্দর্য এটাই যে এখানে মহান আল্লাহ তায়ালা ঈমানদার মুসলিম মানবগোষ্ঠিকে প্রকৃত পক্ষে দুনিয়াতে পার্থিব সম্পদমুখি, ভোগবাদী, লোভাতুর একজন বিত্তবান হিসেবে গড়ে উঠতে কোনভাবেই পছন্দ করেনা! সমন্বিতভাবে এই মুসলিম সমাজের সকলকে প্রয়োজনীয়তা মিটিয়ে দুনিয়াতে একমাত্র তাঁর ইলাহিয়্যাত প্রচার, সাম্যভিত্তিক সুখী সমাজ বিনির্মান আর আধ্যাত্মিক (তাক্বওয়ার) উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে পরম সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত (জান্নাতি)হবার উদাত্ত আহ্বান জানায়। কল্পিত এমন সুন্দরতম সমাজ বিনির্মানে যাকাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঠিক এভাবেই যে, আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, *'তোমাদের অর্জিত সম্পদ যেন কেবমাত্র তোমাদের ধনীদের মাঝেই আবর্তিত না হয়',
* “হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের বৈধ উপার্জন এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যে শস্য উৎপন্ন করি তা থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় কর।“ সূরা বাক্বারা-২৬৭
* “আর আল্লাহ যাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করেতারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্যঅকল্যাণকর” সূরা আলে-ইমরান: (১৮০)
* “এবং যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমিতাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটাতা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলেতার স্বাদ উপভোগ কর”। সূরা আত-তওবা: (৩৪-৩৫)
* সহিহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“স্বর্ণ ও রূপার এমন কোন মালিক নেই, যে এর হক প্রদান করে না, যার জন্য কিয়ামতের দিনআগুনের পাত তৈরি করা হবে না, যা জাহান্নামের আগুনে তাপ দিয়ে অতঃপর তার পার্শ্ব, কপাল ও পৃষ্ঠদেশ সেক দেয়া হবে। যখন তা ঠাণ্ডা হবে গরম করা হবে, সে দিনের পরিমাণহবে পঞ্চাশ হাজার বছর, যতক্ষণ না বান্দাদের ফয়সালা সমাপ্ত হয়”। মুসলিম: (৯৮৭)
* আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, 'একদা একজন মহিলা তার মেয়েকে সাথে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল, ঐ মেয়ের হাতে স্বর্ণের দু'টি ভারি ও মোটা বালা ছিল, তা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি এগুলোর জাকাত দাও? মেয়ে বলল, না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি এটা পছন্দ কর যে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ এগুলোর দ্বারা দু'টি আগুনের চুড়ি বানিয়ে তোমার হাতে পড়িয়ে দিবেন? মেয়েটি এ কথা শুনে বালা দু'টি খুলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দিয়ে বলল : এগুলো আল্লাহর রাস্তায় দান করলাম।
* আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন তখন আমার হাতে কয়েকটি রূপার আংটি ছিল, তখন তিনি বললেন, এগুলো কি? আমি বললাম, আপনার সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য এগুলো তৈরি করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি এগুলোর জাকাত প্রদান কর? আমি বললাম না, তিনি বললেন, তোমার জাহান্নামে যাওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট।
এখন আপনিই বলুন, ব্যবহৃত অলংকার নিয়ে এই যদি হয় আল্লাহ তায়ালা এবং স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সঃ এর নির্দেশনা তবে কোন মুসলিম নারী পুরুষ তাদের ব্যবহৃত স্বর্ন রুপার অলংকারের উপর যাকাত না দেয়ার কল্পনাও কি করতে পারে?
ইসলামের এসকল মৌলিক বিধান পালনকারীদের নিয়ে আল্লাহ তায়াল ইরশাদ করেন, 'যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করবে সে ঐ সব
লোকেদের সংগী হতে যাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা নেয়ামত
দান করেছেন (সূরা নিসা-৬৯)' যে নেয়ামত প্রাপ্তদের সাথী হবার জন্য আমরা প্রতিদিন নামাজে সূরা ফাতিহায় আল্লাহ তায়ালার কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি এভাবে 'ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাক্বিম, সিরাতাল্লাজিনা আন-আমতা
আলাইহিম' অর্থাৎ আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। সূরা ফাতিহা-৬-৭
প্রশ্ন ৯:-কোনো বাক্তির সাড়ে সাত ভরির উপর গহনা আছে অথবা সেই পরিমান সম্পদআছে, কিন্তু তার কাছে যাকাত দেয়ার মত পর্যাপ্ত নগদ
অর্থ নেই, সেক্ষেত্রে তার জন্য হিসাব কিহবে ?
উত্তর: যদি কোন ব্যাক্তির মালিকানায় (স্বর্ণ দিয়ে বানানো) ৭.৫ ভরি ওজনের গহনা থাকে কিন্তু ঐ মুহুর্তে আইমিন, ঈদুল ফিতর কিংবা যাকাত দেয়ার জন্য মনস্থির করা বছরের যে কোন নির্দিষ্ট সময় তার কাছে ২.৫% হারে যাকাত দেয়ার মত পর্যাপ্ত নগদ অর্থ না থাকে তাহলে দুটো বিষয় বিবেচনা করতে হবে।
১) যদি তা (ঈদুল ফিতর কিংবা যাকাত দেয়ার জন্য মনস্থির করা বছরের কোন এক নির্দিষ্ট সময়) বিগত বছরে দেয়া যাকাতের সর্বশেষ সপ্তাহ না হয় তবে চলতি বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নগদ অর্থ যোগানের অপেক্ষায় সচেষ্ট থাকবেন। হাতে টাকা আসামাত্রই যাকাত প্রদান করে দেবেন।
২) যদি এটাই চলতি বছরের সর্বশেষ সপ্তাহ হয় এবং সপ্তাহান্তে যাকাত দেয়ার সমপরিমান নগদ অর্থ প্রাপ্তির (কারো কাছ থেকে হাওলাত করে হলেও আদায় হয়ে যাবে) কোন সম্ভাবনা অবশিষ্ট না থাকে তবে এমতাবস্থায় গহনা/অলংকার থেকেই কোন একটা অংশ দিয়ে যাকাত পরিশোধ করা তাক্বওয়ার (প্রকৃতই আল্লাহভীরুতার) নীতি।
* মূলনীতি হচ্ছে, মা আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত এক হাদীসে তিনি বর্ণনা করেন:- 'একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন তখন আমার হাতে কয়েকটি রূপার আংটি ছিল, তখন তিনি বললেন, এগুলো কি? আমি বললাম, আপনার সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য এগুলো তৈরি করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি এগুলোর জাকাত প্রদান কর? আমি বললাম না, তিনি বললেন, তোমার জাহান্নামে যাওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। -- আবু দাউদ শরীফ।
* পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে:- তোমরা কিছুতেই কল্যান লাভ করতে পারবেনা যতক্ষন না তোমরা তোমাদের প্রিয় বস্তুসমূহ আল্লাহর নির্দেশিত পথে (যাকাত) ব্যয় করবে। সূরা আলে ইমরান-৯২।
* যারা আল্লাহ নির্দেশিত বিধানমতে খরচ করে ------ আল্লাহ তাকে বহুগুনে বৃদ্ধি করে দেন। সূরা বাকারা-২৬১।
[ প্রিয় পাঠক: যাকাত সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকলে আপনিও জিজ্ঞাসা করতে পারেন, শুধুমাত্র পবিত্র কোরআন ও হাদীসের রেফারেন্সের ভিত্তিতে উত্তর দেয়ার চেষ্টা থাকবে ইনশাআল্লাহ]
©somewhere in net ltd.