![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গাজী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ক্রমশ অস্থির থেকে অস্থির হয়ে উঠছে। দিন যতই যাচ্ছে পরিস্থিতি ততটাই ঘোলাটে রূপ নিচ্ছে।
সাধারণ জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার ও বিরোধী দলের পরস্পর বিরোধী অবস্থানের কারণেই অস্থিরতার তিব্রতা ক্ষনেক্ষনে সহিংসতায় রুপ নিয়েছে।
বিশেষ করে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ইস্যুতে সম্প্রতি দেশজুড়ে ঘটে যাওয়া নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
একদিকে দণ্ডাদেশে অসন্তুষ্ট হয়ে নতুন প্রজন্মের উদ্যোগে শাহবাগে চলছে গণজাগরণ মঞ্চের নানান কর্মসূচি।
অন্যদিকে রায় প্রত্যাখ্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাতিলের দাবিতে দেশজুড়ে জামাত-শিবিরের সহিংসতায় দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন।
তাদের একের পর এক হরতাল, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় অগ্নিমূর্তি ধারণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঘটেছে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডও। এরই মাঝে আগমন ঘটে বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা ভিত্তিক ইসলামী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের।
ফলে নতুন করে শুরু হয় অস্থির বাংলাদেশে নাস্তিক-আস্তিক বিতর্ক । এমন পরিস্থিতিতে চরম আতংকিত হয়ে পড়ে দেশেরসাধারন মানুষ।
সুসংবাদের অপেক্ষায় দেশবাসী যখন চাতক পাখির মত চেয়ে আছে সে সময় আবার ঢাকার অদূরের সাভারে একটি বহুতল ভবন ধসে স্মরণকালের ভয়াবহ মানববিপর্যয় ঘটে।
অনেকে অবশ্য মনে করে ৪২ বছরের দুষ্টু রাজনীতির কারণে রানা প্লাজা ধসে পড়েছে এবং প্রান হারাতে হয়েছে হাজার খানেক খেটে খাওয়া নিরীহ মানুষকে।
মানুষের এমন বীভৎস ও করুণ মৃত্যু হতে পারে, তা ভেবে সমগ্র দেশের মানুষ স্তম্ভিত ও হতবাক।
মর্মস্পর্শী ও হৃদয়বিদারক এই ঘটনায় গভীর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই দেশের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকায় হেফাজতে ইসলামের অবরোধ ও তান্ডবলীলা।
আবারও প্রানহানির ঘটনা। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে আবার আন্তজার্তিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে উঠে বাংলাদেশ।
দেশের বর্তমান অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনায় কেবল দেশের মানুষই নয় উদ্বিগ্ন বিদেশীরাও।
এছাড়াও বড় একটি সমস্যা তৈরি হয়ে আছে তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে।
অনেকেই মনে করেন , বর্তমান মহাজোট সরকার যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল না করত তাহলে বিরোধী জোটের আন্দোলন এত সহিংস হত না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বাংলাদেশ আবার অনিশ্চিয়তার মাঝে ডুবতে বসেছে। হরতালের সংস্কৃতি থেকে প্রায় বেরিয়ে আসা বাংলাদেশের গণতন্ত্র আবারো সহিংস রূপ ধারণ করছে।
বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া কোন সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। কেননা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরকে বিশ্বাস করতে চায় না। আর এ কারনেই দীর্ঘ আন্দোলন, ১৭৩ দিনের হরতাল আর অসংখ্য মায়ের বুক খালি করে অর্জিত হয়েছিল নির্দলীয় নিরপেক্ষ (?) তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি । সেই ইস্যুতে আজ আবার সহিংসতা, বাস-ট্রেনে আগুন, ভাঙচুর, হত্যা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য এক অন্ধকারাচ্ছন্ন সময় অপেক্ষা করছে।
তাই সবাই চলমান এই পরিস্থিতির পরিবর্তন চায়। কিন্তু কি ভাবে? আমার মনে হয়,সবার আগে যে পরিবর্তন প্রয়োজন তা হল আমাদের নিজেদের চিন্তা-ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গীতে পরিবর্তন আনা। বিবেকবান, সত্যপ্রিয় ও শান্তিবাদী হওয়া এবং মানবতা বোধ জাগ্রত করা।
সাথে সাথে রাজনৈতিক সহিংসতা নিরসন এবং গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন প্রতিহিংসা, অহঙ্কার , রাজনৈতিক অপকৌশল, ক্ষমতার মোহ, ষড়যন্ত্র, অতি মুনাফার লোভ পরিহার করে দেশ প্রেম নিয়ে সকল রাজনৈতিক দলের এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের শর্তহীন কার্যকর সংলাপ ও রাজনৈতিক সমঝোতা। চলমান সমস্যা সমাধানে সফল সংলাপের কোন বিকল্প নাই।
আর সফল সংলাপের জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠে দুইটি কাজ সম্পাদন করতে হবে। প্রথমত সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে দ্বিতীয়ত এর জন্য দলগুলোকে একে অপরের প্রতি আক্রমণাত্মক বক্তব্য কমাতে হবে। যদি এমনটা করা সম্ভব হয় তবেই মুক্তি মিলবে আমাদের। উন্নয়ন- অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাবে আমাদের লাল সবুজের বাংলাদেশ।
এমনটাই বলেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা। মোজেনা বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারলে বাংলাদেশ পরবর্তী এশিয়ান টাইগার হিসেকে প্রতিষ্ঠিত হবে।
[email protected]
©somewhere in net ltd.