![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-এই যে মহাপুরুষ কেমন আছেন?
-হুম ভাল আছি।আপনি?
-আমিও ভাল আছি।আপনার কি কোন কাজ
নাই?
-কেন বলুন তো?
-এই যে সারাদিন ফেইসবুকে দেখি।
ফেইসবুকে
এত কী করেন?
-সুন্দর সুন্দর মেয়েদের পিক দেখি।
- ও তাই ।তাহলে লেখালেখি কখন করেন?
-আপনি আমার লেখা পড়েন?
-হুম। আপনার মিসির আলীর গল্পটা খুব ভাল
ছিল।
-ধন্যিবাহাদক-ধন্যিবাহাদক।
-হা হা হা। এই প্রথম এইভাবে কেউ ধন্যবাদ
দিলো।
-ও।
.
-আপনাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
-"জ্ঞানহীন আবার মহাপুরুষ হয় কীভাবে?"
এইটা
বলবেন তো?
-হুম। কীভাবে বুঝলেন?
-আসলে এই প্রশ্নটাই সবাই করে।
-ও আচ্ছা।
.
এভাবেই রুহির সাথে আমার কথা শুরু হয়।
প্রতিদিন একটু
একটু করে কথা হত । অনেক কথাই শেয়ার হত
আমাদের মধ্যে। নাভিদ নামের একটা ছেলের
সাথে ওর রিলেশন ছিল। খুব ভালবাসত ও
নাভিদকে।
নাভিদের সাথে ওর দু'বছর রিলেশন ছিল।
মাসখানেক
আগে ওদের ব্রেক আপ হয়। আরো অনেক
ব্যক্তিগত কথাই শেয়ার হত রুহির সাথে।
ধীরে
ধীরে আমাদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক তৈরী হয়।
বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক।
কিন্তু হুমায়ূন স্যার বলেছিলেন একটা ছেলে
আর
একটা মেয়ের মধ্যে কখনো বন্ধুত্ব গড়ে
ওঠে না। তারা একসময় ঠিকই একে অপরের
প্রেমে পড়ে। কথাটা আসলেই সত্য। আমিও
একসময় রুহির প্রেমে পড়ে যাই। একদিন
ফেইসবুকে রুহিকে বললাম,
-আমি ধীরে ধীরে তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে
পড়তেছি। আমি মনে হয় তোমার প্রেমে পড়ে
গিয়েছি।
রুহি মেসেজ seen করল কিন্তু reply দিল না।
কিছুক্ষণ পরে কিছু না বলেই রুহি লগ আউট
করে
চলে গেল।
.
প্রায় সাত/আটদিন রুহির কোন খোঁজখবর নেই।
আমি টেনশনে পড়ে গেলাম। কি হল
মেয়েটার?
এ কয়দিনে একবারো ফেইসবুকে আসলো
কেন মেয়েটা? ওর ফোন নাম্বারও আমার
কাছে
ছিল না। আমরা সবসময় ফেইসবুকে কথা
বলতাম। তাই
ফোন নাম্বার নেয়ার কোন প্রয়োজন পড়েনি।
.
.
মাসখানেক পরের ঘটনা।
.
.
দুপুর ২ টা। আমি খাওয়া দাওয়া সেরে
বিশ্রাম করতেছি।
হঠাৎ মোবাইলটা বেজে উঠল। দেখলাম একটি
অপরিচিত নাম্বার। তাই কলটা রিসিভ করলাম
না। মিনিট
পাঁচেক পরে আবার ঐ নাম্বার থেকে কল
আসলো। এবার রিসিভ করলাম। ফোনের অপর
প্রান্ত থেকে একটি নারী কন্ঠ ভেসে
আসলো,
-আপনি কি নবি বলছেন?
-জ্বী বলছি। আপনি কে বলছেন?
-আমি রুহি।
নামটা শোনার সাথে সাথে বুকটা ধড়পড় করে
উঠলো। মনে হল হার্টবিট বেড়ে গেছে।
রুহিকে অস্থির কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম,
-এতদিন কোথায় ছিলে? ফেইসবুকে আসো নি
কেন?
-তোমার ভালবাসার পরীক্ষা নিচ্ছিলাম।
দেখি তুমি
আমাকে কতটুকু ভালবাসো।
-প্রতিটা মুহূর্ত আমি তোমার মেসেজের জন্য
অপেক্ষা করেছি। কতবার যে লগ ইন আর লগ
আউট করেছি তার ইয়ত্তা নেই। তোমার
নাম্বারটাও
আমার কাছে নাই। তুমি জানো আমি কত
টেনশনে
ছিলাম!
-হুম।এ কয়দিনে ফেইসবুকে তোমার
মেসেজগুলো দেখেই বুঝতে পারছি।
-আমার নাম্বার তুমি কোথায় পেলে?
-ফেইসবুক থেকে নিয়েছি। আচ্ছা নবি ,
আমরা কি
দেখা করতে পারি।
-হ্যাঁ অবশ্যই। কখন, কোথায় দেখা করতে হবে?
-চলো আজই দেখা করি।তুমি পৌরবাজারে
আসো।
তারপর দুজনে চিড়িয়াখানা,সুরভী উদ্যান এ
জায়গাগুলো
ঘুরে বেড়াবো।
-আচ্ছা ঠিক আছে ।আমি আসতেছি।
.
সেদিন টিউশনির তিন হাজার টাকা
পেয়েছিলাম। সেই
টাকা নিয়ে গেলাম রুহির সাথে দেখা
করতে।
সেদিনই প্রথম দেখা। অনেক সুন্দর একটি
মেয়ে। জলন্ত মোমবাতি যেমন চারপাশ
আলোকিত করে রাখে তেমনি মেয়েটার রুপ
যেন চারপাশে আলো ছড়াচ্ছে। তবে সেই
সৌন্দর্যে কেমন যেন রুক্ষতার ছায়া। প্রথম
দর্শনে তা সবার চোখে পড়ার কথা নয়।
যাইহোক, রুহির সাথে সারাটা বিকেল
ঘুরলাম। শেষে
একটা রেষ্টুরেন্টে গিয়ে খেতে বসলাম।
খাওয়া
শেষে ওয়েটার আমার হাতে এক হাজার
টাকার বিল
ধরিয়ে দিল। বিল দেখে তো আমার চক্ষু
চড়কগাছ!
কি খেলাম! তেমন কিছুই তো খাইনি।তাতেই
এত টাকা!
কী আর করা। সাথে সুন্দরী মেয়ে। উচ্চবাচ্য
করাটাই লজ্জার ব্যাপার।তাই চুপচাপ বিল
পরিশোধ করে
রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হলাম। দেখি রুহি
পাশে
নেই।
.
রাস্তার পাশে একটা কাপড়ের সোরুম।
দেখলাম রুহি
সোরুমে ঢুকে জামা দেখছে। আমাকে হাত
ঈশারায় ডাকলো। সোরুমের ভেতরে ঢুকলাম।
রুহি
বললো,
-দেখছো কত সুন্দর জামা!
জামাটা দেখার আগে প্রাইজটা দেখলাম।
২৫০০ টাকা।
আমার কাছে আছে ১৭০০ টাকা। তাই কিছু
বলছি না
চুপচাপ অন্য দিকে তাকিয়ে আছি। রুহি ওর
ভ্যানিটি ব্যাগ
খুঁজে ৫০০ টাকা পেল। আমাকে বললো , কিছু
টাকা
ধার দাওতো আমি কাল তোমাকে দিয়ে দিব।
কী
বলব বুঝতে পারছি না। মেয়েটাকে ভালবেসে
ফেলেছি। ওর মুখের উপর না করতেও পারছি
না।
এদিকে এই টাকাটা দিলে সারাটা মাস
আমাকে কষ্ট
করে চলতে হবে। রুহি মন খারাপ করে বলল,
_আমাকে বিশ্বাস করতে পারছো না তো!
আমাকে
কেমন ভালবাসো! সামান্য কিছু টাকাই দিতে
পারছো
না! আমি তো একেবারে চাচ্ছি না। আমি
ধার নিচ্ছি
কালকেই তোমাকে দিব।
.
কিছু বললাম না। চুপচাপ টাকাটা বের করে
দিলাম। তিনশ
টাকা বাকী রেখে রুহি জামাটা কিনলো।
আমি রুহিকে
বললাম,
-সোরুমে তো বাকীতে বিক্রি হয় না।
তোমাকে বাকীতে দিল যে।
-আসলে এই সোরুমটা আমার পরিচিত তো। তাই
বাকীতে দিল। আমি প্রতি সপ্তাহে এখানে
জামা
কিনতে আসি।
কথাটা বলেই ও জিহ্বায় কামড় দিল।
.
রুহিকে নিয়ে সোরুম থেকে বের হলাম। দেখি
পাঁচটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেগুলো
কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে। ওদের একজন
বললো, মহাপুরুষ ভাই কেমন আছেন? আমি একটু
অবাক হলাম। এরা আমাকে ফেইসবুকের নামে
ডাকছে কেন? ঘটনা কি?
আমি কিছু বলার আগেই ওরা পরিচয় দিল। বলল
,ভাই
ফেইসবুকে আমরা আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে
আছি।
আপনার সাথে আমার কথা হয়েছিল। আমার
ফেইসবুক
নাম # উন্মাদ_বুদ্ধিজীবী । এবার চিনতে
পারছেন?
বললাম,
হ্যাঁ চিনেছি।
কিন্তু কী ব্যাপার বলেনতো!
.
রুহিকে দেখিয়ে বুদ্ধিজীবী বলল,
-আনিকার সাথে নিশ্চয়ই আপনার আজই প্রথম
দেখা
হল? রেস্টুরেন্টে ১০০০ টাকা বিল হয়েছে না
কি
আরো বেশি? আর এই সোরুম থেকে নিশ্চয়ই
জামাও কিনে নিয়েছে আপনার কাছ থেকে?
আমি বললাম,
-বুদ্ধিজীবী ভাই, আপনার কথা তো কিছুই
বুঝতে
পারছি না। আর এর নাম তো রুহি। এ কে
আনিকা
বলছেন কেন? ঘটনা কি?
একটু ক্লিয়ার করে বলেন তো! বুদ্ধিজীবী
বললো,
- মহাপুরুষ ভাই,এই আনিকা পুরা বেয়াদব একটা
মেয়ে ।
এ ফোর টুয়েন্টি করে বেড়ায়। প্রতি সপ্তাহে
একটা করে ছেলের সাথে ডেটিং করে। আর
ছেলেদের পকেট থেকে টাকা খসায়।
রেস্টুরেন্ট আর এই সোরুমের সাথে এর
কনট্রাক্ট করা আছে। তিন ভাগের দু'ভাগ
টাকা এ
নিজে নেয়। আর এক ভাগ টাকা রেস্টুরেন্টের
ওয়েটার এবং এই সোরুমের কর্মচারি পায়।
.
আমাদের পাঁচজনের সাথেই সেইম ঘটনা
ঘটছে।
আমাদের একেক জনের কাছে একেক নাম
বলছে। এর ফেইসবুক আইডি, সিম অনেকগুলো।
আমাদের সাথে যে আইডি এবং সিম দিয়ে
কথা
বলছে সেগুলো এখন ডিএক্টিভ। একে আমরা
অনেক খুঁজেছি। কিন্তু পাইনি। আজ হাতের
কাছে
পেয়েছি একে আমরা পুলিশে দেব। আপনি
আমাদেরকে হেল্প করেন।
.
বুদ্ধিজীবীর কথা শুনে আমার মাথা খারাপ
হওয়ার
মতো অবস্থা। জীবনে প্রথম প্রেমে পড়লাম
এরকম একটা মেয়ের। নিজের চোখকেই
বিশ্বাস
করতে কষ্ট হচ্ছিল। কঠিন চোখে রুহির দিকে
তাকালাম। বললাম,
-এরা যা বলছে সবই সত্যি?
রুহি মাথা নিচু করে বললো, আমি এই কাজটা
কেন করি,
সেটা তো একবার শুনবে ।
কিন্তু আমার আর কোন কিছু শুনার মত
মানসিক অবস্থা
ছিল না। নিজেকে সামলাতে না পেরে
রুহিকে
সজোরে একটা থাপ্পড় দিয়েছিলাম।
তারপর সেখান থেকে চলে আসি। পরে কী
হয়েছিল আর শুনিনি। হয়ত বুদ্ধিজীবী আর
ওনার
বন্ধুরা মিলে ওকে পুলিশে দিয়েছিল। আবার
পুলিশে নাও দিতে পারে।
.
.
(পরিশিষ্ট: বছর দু'য়েক পরে রুহির মত হুবহু
চেহারার একটি মেয়েকে আমার পরিচিত এক
পুলিশের সাথে দেখেছিলাম।তখন মেয়েটির
কোলে খুব সুন্দর একটি বাচ
২| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৪০
জ্ঞানহীন মহাপুরুষ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
৩| ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৯
আলভী রহমান শোভন বলেছেন: ভাল লাগলো ।
৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ ভোর ৫:৩৯
জ্ঞানহীন মহাপুরুষ বলেছেন: ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ।
৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:১৯
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: আহা,ভায়া ভাগ্য তোমার
লাগলো বড় আফসোস;
তাও ভালো চড় মেরেছো
এটিই ভেবে হও খোশ।
৬| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৪৩
জ্ঞানহীন মহাপুরুষ বলেছেন: হ্যাঁ এছাড়া আর উপায় কি!
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৪৮
রহস্যময় ডিটেকটিভ ঈশান বলেছেন: হুম.... আপনার ফেসবুক ওয়ালে অনেক আগেই পড়ছি।ভালো লাগা রইলো।অনেক সুন্দর হয়ছে। চালিয়ে যান।