নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুলগুলো সব নষ্ট হোক।

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ

fb-www.facebook.com/nabi.mamun

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি রহস্যের গল্প। হুমায়ূন আহমেদের "মিসির আলী" এবং আমি ।

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬

.
ঘরটায় চোখে পড়ার মত তেমন কিছুই নেই।
একপাশে একটা খাট। সামনে একটা টেবিল
আর দুটি
চেয়ার। টেবিলে কয়েকটা বই পড়ে
আছে।
তার
পাশে একটা স্ট্রেচার। ওটা সিগারেটের
ছাইয়ে
ভর্তি হয়ে গেছে। এখনো পরিষ্কার করা
হয়নি।
আমি যে ঘরটায় বসে আছি তার পরের ঘরটা
বইয়ে
ভর্তি।মনে হয় পৃথিবীর সব বই এই ঘরে জমা
করে
রাখা হয়েছে।
.
আমি প্রায় দেড় ঘণ্টা যাবত অপেক্ষা করছি।
কিন্তু
মিসির আলী সাহেবের কোন পাত্তা নেই।
আমাকে চা খেতে দিয়ে উনি বাথরুমে
গেলেন ।
সেই যে গেলেন ।এরপর তাঁর আর দেখা
নেই।
ভাবছি অযথা অপেক্ষা না করে চলে যাই।
অপেক্ষা
ব্যাপারটা খুবই বিরুক্তকর।
.
কিন্তু মিসির আলী সাহেবের সাথে কথা
বলা আমার
জরুরী দরকার ।আমার বন্ধু আবিরের কাছে
শুনেছি
মিসির আলী সাহেব সবকিছু যুক্তি দিয়ে
ব্যাখ্যা
করেন। সব সমস্যারই যৌক্তিক বিশ্লেষণ
করেন তিনি।
তবে লোকটাকে দেখে তেমন মনে
হল না।
তবে তাঁর একটা জিনিস চোখে পড়ার মত।
সেটা হল
তাঁর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি।
আমি যখন এখানে আসলাম, উনি আমাকে
আপাদমস্তক
খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন।
মিসির আলী সাহেব ফিরে আসলেন।
সিগারেট
ধরাতে ধরাতে বললেন ,কিছু মনে করবেন
না।
আপনাকে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখলাম।আসলে
আমার একটু আলসারের সমস্যা আছে। হঠাৎ
করেই
ব্যাথা শুরু হল।তাই বাথরুম থেকে এসে একটু
শুয়েছিলাম।
আমি বললাম
- স্যার, আমাকে তুমি করে বলবেন।
_আচ্ছা।
_স্যার সিগারেট খেলে তো আলসার
বেড়ে
যায়।
_জানি।কিন্তু তারপরও খাই।জেনেশুনে ভুল
করাটাই
মানুষের স্বভাব। এখন তোমার নামটা বল।আর
সমস্যার
কথাটাবল।
.
আমি বলা শুরু করলাম।
,
-স্যার, আমার নাম রুদ্র চৌধুরী। আমার
গ্রামের বাড়ি
রংপুরের মিঠাপুকুরে। এখানে আমি উত্তরায়
একটা
মেসে থাকি। অনেক ছোটবেলায় আমার মা
মারা
যায়।মায়ের চেহারা কেমন ছিল আমি
জানিনা। আমার বাবা
ব্যবসায়ী মানুষ।তিনি আমাকে খুব বেশি সময়
দিতে
পারতেন না। আমি রহিমা খালার কাছে বড়
হয়েছি।ওনি
আমাদের বাড়িতে কাজ করতেন। ওনার একটা
মেয়ে ছিল নীলুফা নাম। আমি নীলু বলে
ডাকতাম।
নীলু আমার সমবয়সী। ও ছাড়া অন্য কোন
খেলার
সাথি ছিল না আমার। আমরা সবসময় একসাথে
খেলতাম
একসাথে স্কুলে যাওয়া-আসা করতাম।এমনকি
ঘুমাতামও
একসাথে। নীলুর সাথে আমার খুব ভাব ছিল।
আমরা যখন ক্লাস নাইনে উঠি তখন একদিন
'নীলুর মা
বলল এখন থেকে আমাদেরকে আলাদা ঘরে
ঘুমাতে হবে।
আমরা একসাথে থাকলে লোকে না কি
খারাপ
ভাববে। ততদিনে আমারও মনে হয়েছিল যে
আমাদের একসাথে থাকা উচিত হচ্ছে না ।
কিন্তু
তারপরও দুজনে আলাদা থাকব এটা মেনে
নিতে কষ্ট
হচ্ছিল। কিন্তু উপায় নেই।বাবাও ঠিক একই
কথা
বললেন। অগত্যা আমরা আলাদা থাকা শুরু
করলাম।
.
এটুকু বলে আমি থামলাম। লক্ষ্য করলাম
মিসির আলী
সাহেব খুব মনোযোগ দিয়ে আমার
কথাগুলো
শুনছেন।তিনি বললেন পানি খাবে?
আমি মাথা নাড়ালাম। তিনি নিজে এক গ্লাস
পানি এনে
দিলেন।আমি পানি খেয়ে আবার বলা শুরু
করলাম।
.
আমরা শুধু আলাদা ঘরে ঘুমাতাম।তবে
পড়াশুনা,খাওয়া-দ
াওয়া, খেলাধুলা সব একসাথেই করতাম।
ধীরে
ধীরে আমি অনুভব করতে লাগলাম নীলুর
প্রতি
আমার একধরনের দুর্বলতা তৈরী হচ্ছে। এ
দুর্বলতা
একসময় ভালবাসায় রুপ নেয়। আমি একদিন
নীলুকে
আমার মনের কথা জানালাম।
আমি জানতাম না যে নীলুও আমাকে
ভালবাসত।
,
ভালবাসার কথা না কি গোপন থাকে না।
আমাদেরটাও
থাকল না। কীভাবে যেন বাবা জেনে
গেলেন।
তিনি কিছুতেই বিষয়টা সহজ ভাবে নিলেন
না। তিনি
নীলুকে আর ওর মাকে বাড়ি থেকে বের
করে
দিলেন। যাবার সময় রহিমা খালাকে বাবা
আড়ালে
ডেকে নিয়ে কি যেন বললেন।
নীলু সেদিন খুব কেঁদেছিল ।ওর কান্না
দেখে
আমি নিজেও কেঁদেছিলাম।
বাবাকে অনেকবার বললাম ওদেরকে বাড়ি
থেকে
যেন বের করে না দেয়।কিন্তু বাবা শুনলেন
না।
,
মিসির আলী সাহেব এবার বললেন
- তোমার বাবা কি দ্বিতীয়বার বিয়ে
করেছিলেন?
আমি বললাম, না। তার ধারণা ছিল সৎ মায়ের
কাছে আমি
মানুষ হতে পারব না।
-আচ্ছা। এবার বল।
.
স্যার , নীলুরা চলে যাওয়ার পর থেকেই
আমার
সমস্যাটা শুরু হয়।
,
গতবছর আমি এম. এ. পাশ করেছি।এখন একটা
প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকুরি করছি।কিন্তু
এখন
পর্যন্ত ঐ সমস্যাটা আমার পিছু ছাড়েনি।
আমি মেয়েদের অতীত সম্পর্কে
বলতে পারি।
তবে তার চরিত্রের শুধু খারাপ দিকটা বলতে
পারি এবং যা
বলি সেটার একবিন্দুও মিথ্যা হয় না। এই
একটা সমস্যার
কারণে ছাত্রজীবনে আমি কখনো প্রেম
করতে পারিনি। সবসময় মেয়েদের সম্পর্কে
আমার খারাপ
ধারণা থাকে।যে মেয়ের সাথে আমার
বিয়ের কথা
হয়, খোঁজ নিয়ে দেখা যায়
সেই মেয়েটাই রেপড।এবং এই বিষয়টা আমি
আগে
থেকেই জানতে পারি।মেয়েদের প্রতি
আমার
কোন বিশ্বাস নেই।
,
মিসির আলী চিন্তিত মুখে আমার দিকে
তাকালেন।
বুঝতে পারলাম আমার ব্যাপারটা নিয়ে তিনি
গভীরভাবে
চিন্তা করবেন।
মিসির আলী সাহেব বললেন, তুমি কি এখন
পর্যন্ত
কোন ভাল মেয়ে খুঁজে পাওনি।
-পেয়েছি।কিন্তু তাদের আমাকে পছন্দ হয়নি।
আবার যারা আমাকে পছন্দ করে দেখা
যাচ্ছে
তাদের চরিত্র খুবই খারাপ।
-তুমি মেয়েদের অতীত সম্পর্কে
কীভাবে
বল? তাদের মুখের দিকে তাকালেই বুঝতে
পারো?
-জ্বী।কোন মেয়ের চোখের দিকে
তাকালেই আমি ওর অতীতে খারাপ
ঘটনাগুলো
বলতে পারি।
-ছেলেদের সম্পর্কে কিছু বলতে পার না?
-না। স্যার ।
-ও আচ্ছা। নীলুরা কোথায় থাকে তুমি কি
জান?
একদম সত্যি কথা বলবে।
মাথা নিচু করে বললাম,
-জ্বী জানি।
-নীলুর সাথে তোমার নিশ্চয়ই যোগাযোগ
আছে?
-জ্বী আছে।
-আচ্ছা ঠিক আছে। নীলুর ঠিকানাটা কাগজে
লিখে
আমাকে দিয়ে যাও। আর পরশুদিন একবার
এসো।
আমি ঠিকানাটা কাগজে লিখে দিয়ে চলে
আসলাম।
.
.
,
পুরান ঢাকা একটা ঘিন্জি এলাকা। ছোট
ছোট গলি দিয়ে
ভর্তি ।সবগুলো গলিই দেখতে একইরকম।
মিসির
আলী একটা গলির মধ্যে ঢুকে পড়েছেন।
কিন্তু
এখান থেকে বের হতে পারছেন না। ঘুরে
ঘুরে
বারবার একই জায়গায় আসতেছেন।
মিসির আলী ক্লান্ত হয়ে গেলেন। একটা
দোকানে বসে সিগারেট ধরালেন।
দোকানদারকে
হাতের কাগজটা এগিয়ে দিয়ে বললেন ,ভাই
এই বাড়িটা
কোন দিকে ?
দোকানদার কাগজটার উপর একবার চোখ
ঘুরিয়েই
বলল ,
এখান থেকে সোজা চৌরাস্তার মোড়ে
যাবেন।
সেখানে গিয়ে বামের রাস্তায় না গিয়ে
ডান দিকের
রাস্তায় যাবেন।
কিছুদূর গিয়ে একটা মসজিদ দেখতে পাবেন।
মসজিদের ঐখানে আবার তিনটা গলি আছে।
পশ্চিমের গলিটা দিয়ে সোজা বড় রাস্তায়
গিয়ে
উঠবেন। রাস্তার পার হয়ে হাতের ডান পাশে
একটা
তিনতলা বাড়ি আছে। তিনতলা বাড়িটার
তিনটা বাড়ির পরেই
একটা হলুদ রঙের বাড়ি দেখতে পাবেন। ঐ
বাড়িটায়
গিয়ে যে কোন একজনকে এই কাগজটা
দিবেন।
ওরা আপনাকে ঠিকানামত পৌঁছে দেবে।
মিসির আলী দোকানদারে কথায় খুবই বিরক্ত
হলেন। কিন্তু মুখে কিছু বললেন না। শহরের
দোকানদারগুলোকে ঠিকানা জিজ্ঞাসা
করাটাই
বোকামী। এরা তো জানেই না ।কিন্তু মুখ
ফুটে
বলবেও না যে জানি না। সবসময় সবজান্তার
ভান
ধরবে।
,
তিনি দোকান থেকে বের হয়ে এলেন।
এমন
ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুল
থেকে
বের হয়ে আসতে দেখলেন। যে
কোন বাড়ির
ঠিকানা এই পিচ্চিগুলো সবচেয়ে ভাল বলতে
পারবে
।কারণ প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের সময়
এরা রাস্তার
দুধারের বাড়িগলোর নাম এবং নম্বর খুব
আগ্রহসহকারে মুখস্থ করে রাখে।
মিসির আলী একটা ছোট মেয়েকে
ঠিকানাটা
জিজ্ঞাসা করলেন। কাগজটা দেখামাত্রই
মেয়েটা
বাড়িটা দেখিয়ে দিল।
.
.
মিসির আলী একটা পুরনো দোতলা বাড়ির
সামনে
দাঁড়িয়ে দরজায় কয়েকবার টোকা দিলেন।
প্রায় আধা
ঘণ্টা পর এক সুন্দরী মেয়ে দরজা খুলে দিল।
মেয়েটা পরীর মত সুন্দর।
এরকম সুন্দরী মেয়ে সচরাচর চোখে
পড়ে না।
মিসির আলী মেয়েটিকে দশে দশ দিলেন।
.
মিসির আলী বললেন এটা কি নীলুদের বাসা।
মেয়েটি বলল, হ্যাঁ । আমিই নীলু। আপনি
নিশ্চয়ই
মিসির আলী।
-হ্যাঁ ।কিন্তু আমাকে কীভাবে চিনলেন?
-রুদ্র আপনার কথা আমাকে বলেছে।
-ও আচ্ছা।
-আমাকে তুমি করেই বলবেন।
-ঠিক আছে।
নীলু মিসির আলীকে বসার ঘরে নিয়ে
গেল।
মিসির আলী নীলুর সাথে এবং ওর মায়ের
সাথে
কথা বললেন। এক পর্যায়ে তিনি জানতে
পারলেন
যে এই পুরনো বাড়িটা রুদ্রর বাবা ওদের
কিনে
দিয়েছেন। মিসির আলীর বিষয়টা একটু খটকা
লাগল।
তিনি আরও ভাল করে খোঁজ খবর নিতে
লাগলেন।
.
.
.বুধবার। সকাল দশটা। আমি মিসির আলী
সাহেবের
বসার ঘরে বসে চা খাচ্ছি। ওনার কাজের
ছেলেটা
হঠাৎ পালিয়ে গিয়েছে।তাই মিসির আলী
নিজেই চা
বানিয়েছেন। মিসির আলী সিগারেট
ধরালেন। তারপর
আমার দিকে চেয়ে বললেন
-তুমি কি এখনও মেয়েদের অতীত
সম্পর্কে
বলতে পার?
আমি বললাম, জ্বী স্যার।মিসির আলী সাহেব
বললেন তোমার সমস্যাটা নিয়ে আমি
অনেকে
চিন্তা-ভাবনা করেছি
এবং খোঁজ-খবরও নিয়েছি। আমি মোটামোটি
একটা
সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। এখন সে সম্পর্কে
তোমাকে বলছি। তোমার বাবা সম্পর্কে আমি
একটা
তথ্য পেয়েছি।
তথ্যটা আমার কাছে নির্ভুল মনে হয়েছে।
আমার
ধারণা সেই তথ্যটা তুমিও জান।কিন্তু আমার
কাছে
গোপন করেছ। তোমার মা জীবিত
থাকাকালীন
সময়েই তোমার বাবার সাথে তোমার রহিমা
খালার
অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মিসির আলী সাহেবের কথায় আমি চমকে
উঠলাম।
কিন্তু কিছু বললাম না।
.
তিনি আবার বলতে শুরু করলেন।
সেই অবৈধ সম্পর্কের ফসল হল নীলু। কিন্তু
যখন
তোমার বাবা জানতে পারলেন তুমি নীলুকে
ভালবাস
তখন তিনি খুবই বিচলিত হলেন। এবং নীলুকে
তোমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য ওদের
মা
মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে
দিলেন।
তবে তিনি ওদেরকে বাড়ি থেকে বের
করে
দিলেও মন থেকে বের করে দিতে
পারেন
নি।
তাই তোমার নাগালের বাইরে পুরনো ঢাকায়
ওদের
বাড়ি কিনে দেন। তার ধারনা ছিল নীলুর
সাথে
কখনো তোমার দেখা হবে না। কিন্তু তুমি যখন
পড়শুনার জন্য ঢাকায় আসো তখন কোন
একভাবে
নীলুর সাথে তোমার দেখা হয়ে যায়।
তোমার
হৃদয়ের সুপ্ত ভালবাসাটা আবার মাথা চাড়া
দিয়ে ওঠে।তুমি
নীলুকে এতটাই ভালবাস
যে সবসময় অন্য মেয়ের সাথে নীলুর
তুলনা
করতে থাকো। কিন্তু নীলুর চেয়ে ভাল
এবং
সুন্দরী মেয়ে তুমি খুঁজে পাওনি বা
পেলেও
তাকে মনে জায়গা দিতে পারোনি। তাই
ছাত্রজীবনে তুমি কোন মেয়ের সাথে
প্রেম
করতে পারোনি।
মিসির আলী কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার
বললেন,
তুমি দাবী করছ যে তুমি মেয়েদের
অতীত
সম্পর্কে বলতে পার। তাও আবার শুধু খারাপ
অতীতটা বলতে পার। আসলে তুমি
মেয়েদের
অতীত সম্পর্কে কিছুই বলতে পারো না ।
পুরো
ব্যাপারটাই তোমার অবচেতন মনের কল্পনা।
আসলে রহিমা খালা সম্পর্কে তোমার মনে
একটা
বাজে ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। যা পুরোপুরি
সত্যি।
সেই ধারণা থেকেই তুমি অন্য সব
মেয়েদের
খারাপ চরিত্র খুঁজতে থাকো। ইতিমধ্যে
তোমার বাবা
জেনে গেছেন যে নীলুর সাথে
তোমার
যোগাযোগ আছে।তাই তিনি তোমার বিয়ে
দিয়ে
তোমাকে নীলুর কাছে থেকে দূরে
সরিয়ে
রাখতে চাইছেন। কিন্তু যে মেয়েটা
তোমাকে
পছন্দ করছে তুমি সেই মেয়েটা সম্পর্কেই
খারাপ
কিছু ধারণা করছ। যাতে বিয়েটা না হয়।
.
বললাম ,আমি খারাপ কিছু ধারণা করি না ।
কিন্তু আমার
মস্তিষ্কে আপনা আপনি মেয়ে সম্পর্কে
খারাপ
তথ্য চলে আসে। আমি খোঁজ নিয়ে
দেখেছি
যে প্রত্যেকটা মেয়েরই অতীত আমার
মস্তিষ্কের তথ্যগুলোর সাথে মিলে যায়।
মিসির আলী বললেন,
তোমার অবচেতন মন ঐ খারাপ ধারণা গুলো
তোমার মাথায় সাজিয়ে দেয়। আর সেজন্যই
তুমি
যখনই কোন মেয়ের সম্পর্কে জানতে চাও
তখনই ঐ বাজে ধারণাগুলো তোমার সামনে
আসে
এবং তুমি সেগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য করে
তোলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা কর। তোমার
সাথে
যে মেয়ের বিয়ের কথা ছিল সেই
মেয়েটাকে
তুমি নিজেই রেফ করেছিলে আর অতি সুক্ষ্ম
ভাবে দোষটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়েছিলে।
,
মিসির আলী সাহেব আরেকটা সিগারেট
ধরালেন এবং
আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে
বললেন
,এভাবে নিষ্পাপ মেয়েগুলোর জীবন
নিয়ে
খেলা বন্ধ কর।আমি খোঁজ নিয়েছি, যেই
মেয়ের সাথে তোমার বাবা বিয়ে দিতে
চেয়েছিলেন সেই মেয়েকেই তুমি
অতি
কৌশলে রেফ করেছ ।যাতে বিয়েটা বন্ধ
হয়ে
যায়।
আমি নিশ্চিত, তুমি শুধু নীলুকেই তোমার
স্ত্রী
হিসেবে পেতে চাও। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়।
নীলু অবৈধ হলেও সে তোমার বাবার সন্তান
এবং
তোমার বোন।
,
মিসির আলী সাহেব একটু থেমে গিয়ে
বললেন
,আশা করি তুমি সমস্যার ব্যাখ্যা পেয়ে
গেছো।
.
.
আমি কিছু বললাম না। শুধু বললাম, স্যার,
আসি।মিসির
আলী সাহেবের ঘর থেকে বের
হয়ে এলাম।
তাঁর কথাগুলো আমার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
আসলে
কি তাঁর কথাগুলোই সত্যি? না কি অন্য কিছু।
.
।সমাপ্ত।
[হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্টি এক আশ্চর্য চরিত্র
মিসির
আলী চরিত্রের অবলম্বনে]

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.