নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুলগুলো সব নষ্ট হোক।

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ

fb-www.facebook.com/nabi.mamun

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন পাপী ব্যক্তির গল্প

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৫


----পাপ----
.
.
একবার দু'বার নয় পরপর তিনবার কথাটা শুনলাম।
একেবারে কানের কাছে।অতি স্পষ্ট শুনতে পেলাম। গত
তিন সপ্তাহ থেকে একই কথা শুনতে পাচ্ছি। আমার ঘুম
কেড়ে নিয়েছে এই কথাটা। যখনই কোন কাজ মনোযোগ
দিয়ে করতে যাই ঠিক তখনই কথাটা শুনতে পাই। কথাটা
শোনার পর থেকে আর কাজে মন বসাতে পারি না।রাতে
ঘুমাতেও পারিনা ঠিকমত।ইদানিং অফিসে প্রায়ই
কাজে ভুল হচ্ছে। কোনদিন যে চাকরিটা চলে যায় তার
ঠিক নেই।এই তো সেদিন বস বললেন, রফিক কাজ করতে
না পারলে চাকরি ছেড়ে দাও। অযথা তোমার পিছনে
টাকা খরচ করতে পারব না।
আমি কিছু না বলে চলে এসেছিলাম।
কি বা বলার আছে আমার!
.
সুমি বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। কি নিষ্পাপ মুখ মেয়েটার। ঘুমন্ত
অবস্থায় এত সুন্দর লাগছে কেন ওকে! বুঝতে পারছি না।
শুনেছিলাম ঘুমন্ত অবস্থায় যে মেয়েকে সুন্দর দেখায়
সেই আসল সুন্দরী। এতে কোন খাদ নেই।
সুমির সাথে আমার বিয়ের দু'বছর হলো। বাচ্চা নেইনি
এখনো। তবে নেবো।শীঘ্রই নেবো।
.
লাইটের আলোতে সুমির ঘুম ভেংগে গেছে।ও বলল,
-কী হলো তোমার? এখনো ঘুমাওনি যে? রাত দুইটা
বাজে। এত দেরীতে ঘুমালে সকালে উঠবে কীভাবে।
অফিসে তো আবার দেরী হয়ে যাবে।
-ঘুম আসছে না সুমি। কি করব বলো!
-ঐ কথাটা আবার শুনেছ?
-হুম।
-আচ্ছা ঘুমাও এখন। এ নিয়ে কাল কথা বলব।
-ঘুম তো আসছে না।
-শুয়ে পড়। মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
.
.
সকাল দশটা। সুমি বসে আছে জনাব রহমত সাহেবের রুমে।
রহমত সাহেব একজন মনোবিজ্ঞানী।তবে তিনি
চিকিৎসা করেন কোন রকম ফি ছাড়াই। এর পেছনে অবশ্য
কারণ আছে। রহমত সাহেব বিরাট ধনী লোক। তার
ছেলেমেয়ে কেউ নেই।স্ত্রী মারা গেছেন প্রায় দশবছর
হলো। তাঁর দশ তলা একটা বাড়ি আছে। বাড়ি ভাড়া
থেকে যা আয় করেন তা দিয়ে বেশ ভালভাবেই চলে
যায়। তাছাড়া তার স্ত্রী মৃত্যুর সময়ে তাকে বলেছিলেন,
তিনি যেন টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা করা বাদ দেন।
তিনি তাঁর স্ত্রীর কথা মেনে চলতেছেন।
.
রহমত সাহেব সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললেন,
-তো আপনার স্বামীর নাম রফিক?
-জ্বী স্যার। স্যার আমি আপনার মেয়ের মতো। আমাকে
তুমি করেই বলবেন।
-ঠিক আছে মা ।এখন বলো তোমার স্বামীর কি সমস্যা?
-স্যার, ও প্রায়ই একটা কথা শুনতে পায়। কথাটা হলো
"আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছি রফিক।" এই
কথাটা শোনার পর থেকে ও কেমন যেন অস্থির হয়ে
থাকে। ঘুমাতে পারে না। দিন দিন কেমন যেন ও রোগা
হয়ে যাচ্ছে।
-হুম বুঝলাম। কিন্তু যার সমস্যা তার সাথে কথা বলাটা
জরুরি। তুমি একদিন রফিক সাহেবকে নিয়ে আসো। আমি
কথা বলি। তারপর দেখা যাবে।
-ঠিক আছে স্যার। আমি তাহলে ওকে কালকে নিয়ে
আসি।
-আচ্ছা এসো
.
.
আমার বাসায় কাজের মেয়ে নেই। কাজের জন্য একটা
মেয়ে রেখেছিলাম। সুমিকে নিয়ে একদিন ঘুরতে
গিয়েছি। এসে দেখি মেয়েটা পালিয়ে গেছে।সেই
সাথে সুমির কিছু গয়না আর কয়েকটা শাড়ি চুরি করেছে।
সেই থেকে সুমি বাসায় কাজের মেয়ে রাখতে দেয় না।
সব কাজ সে নিজেই করে।তাছাড়া বাসায় সে একা
থাকে। টুকটাক কাজ করে সময় কাটায়।
.
নাস্তার টেবিলে বসে সুমি আমাকে বলল,
-আজ তো ছুটির দিন। তোমার কি কোন কাজ আছে
আজকে?
-তেমন কোন কাজ নেই।কিন্তু কেন?
-তোমাকে নিয়ে রহমত সাহেবের কাছে যেতাম।
-রহমত সাহেব কে?
-ওনি একজন সাইকিয়াট্রিষ্ট।ওনাকে তোমার সমস্যার
কথাটা বলেছি। ওনি তোমাকে দেখতে চেয়েছেন।চলো
আজ ওনার সাথে দেখা করে আসি।
-সুমি, তুমি কি আমাকে পাগল ভাবা শুরু করেছ?আমি কি
পাগল না কি কোন মানসিক রোগী। আমাকে
সাইকিয়াট্রিষ্টের কাছে কেন যেতে হবে? আমি
কোথাও যেতে পারব না।
-রফিক,তুমি রেগে যাচ্ছ কেন? আমি তোমাকে খারাপ
কিছু বলিনি। তোমার সমস্যাটা নিয়ে আমিও চিন্তায়
আছি।দিনে দিনে তোমার চেহারা কি রকম হয়ে যাচ্ছে!
তুমি কি খেয়াল করেছো! তুমি অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছ। কিন্তু
তুমি সেটা বুঝতে পারছো না।
.
কিছু না বলে নাস্তার টেবিল থেকে উঠে আসলাম।সুমির
কথাগুলো মিথ্যা নয়।
আমি আসলেই অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বুঝতে
পারতেছি না রহমত সাহেবের কাছে যাওয়াটা উচিত
হবে কি না।
.
বিকাল পাঁচটা। রহমত সাহেবের রুমে বসে আছি। আমি
আর সুমি। রহমত সাহেব আমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন।
সুমিকে লক্ষ্য করে তিনি বললেন,
-সুমি তুমি একটু বাইরে গিয়ে বসো। আমি রফিকের সাথে
একা কিছুক্ষণ কথা বলব।
সুমি রুমের বাইরে গিয়ে বসলো।
রহমত সাহেব আমার সমস্যার কথা জানতে চাইলেন।
বললাম,
-স্যার, গত তিন সপ্তাহ থেকে আমি একটা মেয়েলি
কন্ঠের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি।কন্ঠটা বার বার একই কথা
বলছে, "আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছি রফিক।"
-এই কথাটা কি প্রতিদিন শুনতে পাও?
-জ্বী স্যার।
-ঠিক কোন সময়ে শুনতে পাও?
-ঠিক রাত ১টা ৩০ মিনিট। এর আগেও না পরেও না।
-দিনে কখনো শুনতে পেয়েছো?
-না স্যার।
-বাসার বাইরে কখনো শুনতে পেয়েছিলে?
-আমার শ্বশুরবাড়তে দুদিন ছিলাম। তখনো শুনতে
পেয়েছিলাম।
-একটা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি।বিয়ের আগে কি তোমার
কোন মেয়ের সাথে প্রেম ছিলো?
-হ্যাঁ। সুমির সাথেই রিলেশন ছিলো। আমরা প্রেম করে
বিয়ে করেছি।
-আচ্ছা ঠিক আছে। সুমিকে ডাক দাও। আর এই ঘুমের
ওষুধগুলো দিলাম। এগুলো নিয়মিত খাও। এক সপ্তাহ পরে
আবার আমার সাথে দেখা করবে।
-ঠিক আছে স্যার।
আজ তাহলে আমরা আসি।
-আচ্ছা এসো।ও হ্যাঁ তোমার বাসার ঠিকানাটা দাও।
তোমার গ্রামের বাসার ঠিকানাটাও দিও।
.
বাসার ঠিকানা দিয়ে চলে আসলাম।
কিন্তু এদিকে দিন দিন আমার সমস্যা বেড়েই চলছে।
আগে শুধু রাতে শুনতে পেতাম।এখন দিনেও শুনছি ঐ
কথাটা। ঘুমের মাঝেও কথাটা শুনতে পাচ্ছি। স্পষ্টভাবে
শুনছি।আগের চেয়েও অনেক বেশি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।
.
.
এক সপ্তাহ পরে।রহমত সাহেবের কাছে সুমি আমাকে
আবার নিয়ে গেলো।
রহমত সাহেব কঠিন চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
.
.
চায়ে চুমুক দিয়ে রহমত সাহেব সিগারেট ধরালেন। ধোঁয়া
ছাড়তে ছাড়তে সুমিকে বললেন,
-দেখ মা, আমি এমন কিছু কথা বলব যা শুনতে খারাপ
লাগতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা তো মানতেই হবে।
বাস্তবতা মেনে নিতে না পারলে জীবনে সুখী হওয়া
যায় না। তাছাড়া অতীতের অন্যায় কিছু বিষয় মেনে
নিতে হয়। এবং সেগুলো ক্ষমা করেও দিতে হয়। ক্ষমাও
মানব ধর্ম মা।
আমি যা বলি তোমরা দুজনেই সেগুলো মনোযোগ দিয়ে
শোনো।
.
-রফিক, তুমি একটা বিষয় আমার কাছে মিথ্যা বলেছ।
এবং অন্য একটা বিষয় গোপন করেছ। কেন করেছ সেটা
আমি বুঝতে পেরেছি।তুমি বলেছিলে, তোমরা প্রেম
করে বিয়ে করেছো। কিন্তু সুমি আমাকে বলেছে যে
তোমাদের বিয়ে পারিবারিকভাবে হয়।
বিয়ের আগে তোমাদের কোন রিলেশন ছিলো না। আর
যে বিষয়টা গোপন করেছিলে সেটা হলো বিয়ের আগে
অন্য একটি মেয়ের সাথে তোমার প্রেম ছিলো।
মেয়েটার নাম মিমি।মিমির সাথে তোমার শারিরীক
সম্পর্কও হয়েছিল। ঐ অবৈধ সম্পর্কে মিমির গর্ভে
তোমার সন্তান আসে।মিমি তখন তোমাকে বিয়ে করতে
বলে। কিন্তু তুমি রাজী হওনি এবং মিমিকে ওর
বাচ্চাটা নষ্ট করতে বলেছিলে। কোন মেয়েই তার প্রথম
সন্তানকে নষ্ট করতে চায় না। মিমিও চায়নি। তখন তুমি
মিমিকে হত্যার চেষ্টা করেছিলে। তখন মিমি তোমার
কাছ থেকে দূরে কোথাও পালিয়ে যায়।
.
এটুকু বলে রহমত সাহেব থামলেন। এক কাপ চা খেয়ে
আবার বলা শুরু করলেন।
-দীর্ঘ দিন পরে হঠাৎ একদিন মিমির সাথে তোমার
দেখা হয়। তখন মিমির সাথে ওর পাঁচ বছরের মেয়ে ছিল।
ঐ মেয়েটা তোমারই ছিলো। মিমি আবারো তোমাকে
বিয়ের কথা বলে। কিন্তু এবার তুমি মিমিকে সরাসরি
প্রত্যাখান না করে মিমির কাছে সময় নাও। এবং
মিমির মেয়ে টাকে তোমার বাসায় নিয়ে এসে কাজের
মেয়ে হিসেবে রেখে দাও। কিন্তু একসময় তুমি মিমি
এবং তার মেয়েকে তোমার পথের কাঁটা মনে কর। তাই
মা মেয়ে দুজনকেই একসাথে মেরে ফেলো। মিমির
মেয়েটা আসলে তোমার বাড়ি থেকে পালায় নি। তুমি
ওকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিয়েছিলে।
সুমি যাতে বুঝতে না পারে তাই সুমির কিছু গয়না আর
কাপড়ও সরিয়েছিলে।
.
রহমত সাহেব থামলেন। এবং বললেন, এ পর্যন্ত যা বলেছি
সব কি ঠিক বলেছি রফিক?
আমার অজান্তেই আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গেল, এর এক
বিন্দুও মিথ্যে নয়।তবে আপনি এতকিছু জানলেন
কীভাবে?
-আমি তোমার গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। তোমার
পরিবার,বন্ধু-বান্ধব সবার সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছি।
মিমির সম্পর্কেও খোঁজ নিয়েছি।
রহমত সাহেব থামলেন।এবং ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে আমার দিকে
তাকিয়ে বললেন,
-ওদেরকে কেন হত্যা করলে রফিক! ওরা তো তোমার
কাছে অন্যায় কিছু দাবী করেনি।শুধু অধিকারটুকু
চেয়েছিলো। ন্যায্য অধিকার।
.
আমি কিছু বললাম না। চুপচাপ সুমির দিকে তাকিয়ে
থাকলাম। সুমি তাকিয়ে আছে আমার দিকে।ওর চোখে
ফুটে উঠেছে তীব্র ঘৃণা।
.
.
----¤¤¤----

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: গল্প মোটেও ভাল হয় নাই| সাইকিয়াট্রিস্ট ডিটেকটিভ হয়ে গেল কেমনে? আজ লেখা আপনার

২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৬

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ বলেছেন: জানি ভাল লিখি না।তবুও লিখতে চেষ্টা করি। গল্পটি পড়েছেন এজন্য ধন্যবাদ।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৭

মোঃ-আনারুল ইসলাম বলেছেন: লিখা ভালো বা মন্দ হয়েছে বলব না তবে অনেকটা আহাত নামক নাটকের মত হয়েছে।

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: কেমন যেন। পরে খুব একটা ভাল লাগলো না। যুক্তিগুলো অদ্ভুত ভাবে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে মনে হল। মিল নেই কোন।

৫| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২০

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ বলেছেন: আনারুল ইসলাম, জানি না কোন নাটকের সাথে মিল আছে কি না। তবে পুরো গল্পটাই মাথা খাটিয়ে লিখেছি।

৬| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:২২

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ বলেছেন: রক্তিম দিগন্ত, আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যিবাহাদক। নেক্সট টাইম ভাল লেখার চেষ্টা করব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.