নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুলগুলো সব নষ্ট হোক।

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ

fb-www.facebook.com/nabi.mamun

জ্ঞানহীন মহাপুরুষ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাল্যবিবাহেরর মত সামাজিক ব্যাধি দূর করতে, আসুন দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৩০

ছোটবেলায় একবার প্রেমে পড়েছিলাম। তখন ক্লাস ফাইভে কি সিক্সে পড়ি।সঠিক মনে নেই।যে মেয়েটাকে পছন্দ করতাম সে আমার সাথেই পড়ত।ক্লাসে পিছনের বেন্ঞ্চে বসে মেয়েটাকে দেখতাম।মাঝে মাঝে চোখাচোখি হতো।তবে মেয়েটা আমার দিকে বেশি তাকাত না।
.
একদিন দেখি সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।চোখের পলকও ফেলছে না।আমি তো হেব্বি খুশি। প্রেম হতে চলছে।দুদিন পরে আরো অনেক কিছুই হবে।
ওকে নিয়ে কোথায় ঘুরতে যাব, ওর সামনে কিভাবে নিজেকে প্রেজেন্ট করব সেগুলোও মনে মনে ঠিক করে ফেললাম।
.
হঠাৎ মেয়েটা আমাকে ডাক দিল।আমি তো সেই খুশি।তবে বুকটা কেন জানি দুরু দুরু করতে লাগল।খুশি এবং ভয় মিলিয়ে তখন অদ্ভুত এক অনুভূতি কাজ করছে আমার মধ্যে।
গেলাম মেয়েটার কাছে। ও আমাকে একটা গাছের আড়ালে নিয়ে গেল।আমি ভাবলাম প্রথম দিনেই বুঝি কিছু একটা হবে। কিন্তু মেয়ে আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল,
--এই তোর তো প্যান্টের জিপার খোলা ক্যান রে?মানুষকে দেখিয়ে বেড়াস না কি!
আমি তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।কিন্তু পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,
--আরে এটা তো এখন স্টাইল।তুই তো দেখি কিছুই জানিস না।
মেয়েটা তখন বলল,
--স্টাইল করতে হবে না।প্যান্টের জিপারটা লাগা।আমার সামনে এরকম স্টাইল করে আর কখনো আসবি না।
একথা বলেই সে চলে গেল।
আমার প্রথম প্রেমের সমাপ্তি ঘটে সেখানেই।
.
আজ বহুদিন পরে মেয়েটার কথা খুব বেশি মনে পড়ছিল।তাই আমার এক বন্ধুকে ফোন দিয়ে ওর কথা জানতে চাইলাম।কিন্তু যা শুনলাম তাতে চোখে পানি এসে গেল।
.
আমরা যখন ইন্টারমেডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি, তখন ওর বিয়ে হয়ে যায়।আর আমিও কলেজে ভর্তির জন্য শহরে চলে আসি।আর ও চলে যায় শশুরবাড়ি। তখন থেকে ওর সাথে যোগাযোগ নেই বললেই চলে।
মেয়েটার বিয়ে হল ১৫বছর বয়সে।তার চোখের কোণে বোনা ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটার ইতি ঘটল সেখানেই। এই বাল্যবিবাহটা সে মেনে নিতে পারে নি।একজন শিক্ষিত মেয়ের পক্ষে বাল্যবিবাহ মেনে নেয়াটা খুবই কষ্টকর।বিবাহিত জীবনে সে কখনোই সুখী ছিল না।১৫ বছর বয়সের একটা মেয়ে ত্রিশ বছর বয়সের একজন ছেলেকে কখনোই স্বামীরুপে পেতে চায় না।একজন কিশোরীর মনের সাথে একজন মধ্যবয়স্ক লোকের মনের মিল ও খুব একটা হয় না। কিশোরীর চিন্তা ভাবনার জগতটা হয় একরকম,মধ্য বয়স্ক লোকের জগতটা আবার ভিন্ন রকম। দুজন দু প্রান্তের মানুষ।
.
মেয়েটার মধ্যে সংকোচ,ভয় এগুলো থেকেই যায়।মধ্যবয়স্ক অনেক স্বামীর পক্ষেই তার স্ত্রীর এই ভয় জয় করা সম্ভব হয় না।বিয়ের জন্য শারীরিক মিলন অপেক্ষা মনের মিলনটাই যে অধিক জরুরি সেটা অনেকে বুঝতেই চান না।ফলে দাম্পত্য জীবনটা সুখের হয় না।
.
আমার বান্ধবীটাও দাম্পত্য জীবনে সুখী ছিল না। সে অনেকবারই শ্বশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছিল।কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।প্রতিবারই তাকে ফেরত যেতে হয়েছে।পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে নির্মম নির্যাতন তাকে সহ্য করতে হয়েছে।
.
কিন্তু সে আর পারছিল না।মনের সাথে যুদ্ধ করে, শারীরিক মানসিক নির্যাতন সহ্য করে সংসার করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠেছিল।
সে জীবন থেকে ছুটি নেয়। ছুটি নেয় চিরদিনের জন্য।এই সুন্দর পৃথিবীর হৃদয়হীন মানুষগুলোর কাছ থেকে ছুটি নিয়ে সে পরপারে পাড়ি জমায়।
.
মাস ছয়েক আগে ফাঁসিতে ঝুলে সে আত্মহত্যা করে।
.
এভাবেই বাল্যবিবাহ নষ্ট করে দিচ্ছে অনেক মেয়ের জীবন।অকালেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অনেকের সোনালী ভবিষ্যত।অত্যাধু
নিক যুগে এসেও কি
বাল্যবিবাহকে আমরা মেনে নেব?যদি মেনে নেই তাহলে সেটা হবে কাপুরুষত্বের লক্ষন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩০

পাউডার বলেছেন: বি লজিক্যাল। ২০ বছর বয়সে বিয়ে হইলে ফাঁসি নিতো না? বাল্য বিবাহের জন্য ফাঁসি নিসে নাকি অত্যাচারের জন্য ফাঁসি নিসে?

২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০১

রিয়াজ সোহাগ বলেছেন: যখন কোন মেয়ে যৌবনে উপনীত হয় আর সে সঙ্গী চায় তখন আর তাকে বাল্য বলা যায়না। বয়স যাই হোকনা কেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.