![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উচ্চাকাঙ্ক্ষা মানুষকে ভাল থাকতে দেয় না। প্রতি মুহূর্তে যন্ত্রণা দেয়।অতিরিক্ত পাওয়ার আশা নিজেকে পুড়ে পুড়ে খায়।
.
আধুনিক যুগে মানুষের চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই।মেয়েদের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তুলনামূলকভাবে বেশি।এবং কিছু কিছু মেয়ের মধ্যে এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা এতটাই বেশি যে তারা নিজেকে বিকিয়ে দিতেও দ্বিধা করে না।
.
আমার বন্ধু বাবা মার অমতেই প্রেম করে বিয়ে করেছিল।মেয়েটাকে সে এতটাই ভালবাসত যে,ওর সাথে সংসার করার জন্য বাবা মা, ভাই বোনকে ছেড়ে ঢাকায় চলে এসেছিল ।তারপর অনেক কষ্টে একটা চাকরি যোগাড় করে।বেতন যা পেত তাতে দুজনের সংসার বেশ ভালই চলতো।কিন্তু মেয়েটি এতে সন্তুষ্ট ছিল না। তার চাওয়া পাওয়া অনেক বেশি ছিল।
.
আমার বন্ধু বেশ বড়লোক পরিবারের ছেলে। কিন্তু বাবা মার অবাধ্য হওয়ায় তাকে একরকম ত্যাজ্য করে তার বাবা।ফলে পরিবার থেকে সে কোন সাহায্য সহযোগীতা পেত না।যা উপার্জন করত তা দিয়েই সংসার চালাত।অনেক সময় বউয়ের সকল ইচ্ছা তার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হত না।এ নিয়ে বউয়ের সাথে ওর প্রায়ই ঝগড়া লাগত।
.
আমাকে একদিন ফোন দিয়ে বলল,
-দোস্ত আর পারছি না রে।বিয়ের আগে শীমু কেমন ছিল, আর এখন কেমন হয়েছে।আগে আমাকে বলত,আমার সাথে ও গাছ তলায়ও ঘুমাতে দ্বিধা করবে না।কখনও কোন আবদার নিয়ে আমার কাছে আসবে না।আমি যেভাবে রাখব সেভাবেই সে খুশী থাকবে।
কিন্তু এখন সেই মেয়ে পুরো পাল্টে গেছে।এ শীমু যেন আগের শীমু নয়।ওর জন্য ফ্ল্যাট বাসা নিয়েছি।টিভি,ফ্রীজ,এসি সব কিছু কিনে দিয়েছি।প্রতি সপ্তায় দুবার করে পার্লারে নিয়ে যাচ্ছি।কিন্তু তারপরো ওর চাহিদার শেষ হচ্ছে না।এখন আবার কার কেনার জন্য বায়না ধরেছে।নরম্যাল একটা গাড়ি কিনতে গেলে সাত/আট লাখ টাকা লাগবে।আমি যে বেতন পাই তাতে করে আমার পক্ষে গাড়ি কেনা অসম্ভব।
এখন আমি কী করব! তুই বল দোস্ত!
.
শুধু ভালবাসার মানুষটির সাথে সুখের সংসার করার জন্য সবকিছু ছেড়ে আসলাম।আর এখন ভালবাসার মানুষটি আছে কিন্তু ভালবাসাটা নেই।ভালবাসাহীন যন্ত্রের মত একটা মানুষ এভাবে আর কতদিন বাঁচতে পারবে,বলতে পারিস!আমি মনে হয় আর পারলাম না রে।এত পেইন আমি আর সহ্য করতে পারছি না ।মাঝে মাঝে মনে হয় সব কিছু ছেড়ে মা বাবার পায়ে এসে পড়ি।কিন্তু মা বাবার সামনে দাঁড়ানোর মুখও আমার নেই।আমি খুব ভুল করেছি রে।ভালবাসার মানুষটিকে চিনতে ভুল করেছি।এ ভুলের মাসুল দিতে দিতে আমি শেষ হয়ে যাব।
.
আমি খুব মনোযোগ দিয়ে বন্ধুর কথাগুলো শুনছিলাম। কিন্তু আমার বন্ধু যে সমস্যায় ভুগছে তার সমাধান আমার কাছে নেই।কাউকে বুঝিয়ে তার মন থেকে উচ্চাকাঙ্ক্ষা দূর করা সম্ভব নয়।যতক্ষণ না সে নিজে বুঝতে পারে।
আশা আকাঙ্ক্ষা থাকা ভাল।কারন আশাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।কিন্তু উচ্চাকাঙ্ক্ষা ভাল না।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছুই ভাল না।
উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে মানুষ অবৈধ পথে পা বাড়ায়।এই উচ্চাকাঙ্ক্ষা মানুষের বিবেক নষ্ট কর দেয়।
.
দুইমাস পরের ঘটনা। শীমু আমাকে ফোন দিয়েছে।কল রিসিভ করতেই কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম।সে কি কান্না!প্রায় পনের মিনিট ধরে কাঁদল। আমি অনেক কষ্টে ওর কান্না থামালাম।বললাম ঘটনা কি খুলে বলো।ও যা বলল তা হল,
রাজীবকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।রাজীব হলো আমার বন্ধু।এতক্ষণ যার কথা বলছি।
রাজীবের বস ওকে সাত লাখ টাকা দিয়েছিল।অফিসের ব্যাংক একাউন্টে জমা দেয়ার জন্য।কিন্তু পুরো টাকাটাই রাজীব চুরি করছে।এখন ধরা পড়ে বস ওকে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
.
আমি শীমুকে বললাম,রাজীব কিন্তু শুধু তোমার কারণেই আজ জেলে আছে।নাটক সিনেমায় এসব ঘটনা অনেক দেখেছি।কিন্তু তোমরা তো জীবনটাকেই নাটক সিনেমা বানিয়ে ফেলেছো।সময় এখনো হাতে আছে।এবং তুমি ভাল করেই জানো এখন তোমার কি করা উচিত।তাই দেরী না করে যা করার তাড়াতাড়ি করো।
একথা বলে আমি ফোনটা কাটলাম।
.
এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র নারীর কারণেই অনেক পুরুষ উন্নতি লাভ করেছে।আবার নারীর করণেই পুরুষের অধঃপতন হয়েছে।একজন নারীর কাছে পুরুষকে হাতের পুতুল বানিয়ে রাখাটা কোন ব্যাপারই না।
তাই নারীসমাজের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনাদের এই উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্যে কোন পুরুষকে অবৈধ পথে পা বাড়াতে দিয়েন না।মনে রাখবেন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী মানুষ কখনো সুখ নামক পাখিটার দেখা পায় না।সুখ পাখিটা তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।
২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৪৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আর এই সবে ইন্ধন দিচ্ছে ভৌগবাদী পূজিবাদী মিডিয়া!
সহজ সরল সত্য জীবনবোধে যে তাদের অর্থনীতিতে ভাটা পড়ে! তাই তাকে উস্কে দেয় ভোগ, উচ্ছাকঙ্খা আর স্বেচ্ছাচরিতার বাসনাকে!
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৬
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: এমন হাজারো ঘটনা আমাদের চারপাশে ঘটছে। মানুষ লোভে মোহে অন্ধ হয়ে গেলে বাকি সব মূল্যহীন হয়ে যায়, ভালবাসা তো তখন নাটক সিনেমার ডায়লগ, ক্ষেত মার্কা কথাবার্তা হয়ে যায়। আফসোস। মানুষ সব হারিয়ে তারপর বোঝে।