![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে বলার মত তেমন কোনো যোগ্যতা এখন পর্যন্ত অর্জন করতে পারি নি। যদি কখনো পারি তখন ভেবে দেখব।যেহেতু আমি কোন নিয়মিত লেখক নই কাজেই লেখায় ভুলত্রুটি থাকতেই পারে। সেক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কাম্য।
ক্লাস নাইন সময়টা আসলেই একটু অন্যরকম।এখন কেন অন্যরকম তা ব্যাখ্যা করতে গেলে ফলাফল আসবে গরু ঘাস খায়,মানুষ গরু খায় তার মানে মানুষ ঘাস খায় এই কিছিমের।আর সেটা দেখে মানুষের মনে "সারা রাত রামায়ণ পড়ে সীতা কার বাপ" টাইপ অদ্ভুত রকম প্রশ্ন উদয় হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু না।তাই এমন গাঁজাখুরি আলোচনায় আর গেলাম না।ছেলেটির নাম শুভ।বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে হওয়ার সুবাদে বেশ লুতুপুতু পরিবেশেই বেড়ে উঠেছে।অতি আদরে যা হয় আরকি!শুভর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।যার দরুন নামের সাথে আতেল উপাধিটা যোগ হতেও বেশি দিন সময় লাগে না।কিশোরগঞ্জ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম সারির ছাত্র হওয়ায় ইতোমধ্যেই আশেপাশের সংশ্লিষ্ট মহলের নজর কেড়েছে।নিজ নামের প্রতি সুবিচার করে ক্লাস এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি নিয়ে আতেল শুভ এইবার লাইনে থুক্কু নাইনে উঠেছে।বয়সের হাওয়াটা গায়ে লাগতে আরও কিছুদিন সময় লেগে যায়।ধীরে ধীরে স্কুলের সীমানা পেরিয়ে শুভর এরিয়াটাও বড় হতে থাকে।এখন তাকে খুব নিয়মিতভাবেই টিফিন আওয়ারে পাবলিক লাইব্রেরিতে যাওয়ার নাম করে বন্ধুদের সাথে গার্লস স্কুলের সামনে এক অন্যরকম মুডে পাওয়া যায়।যে শুভ আগে মেয়েদের সামনে পরলে লজ্জায় ঘাড় তুলে তাকাতে পারত না সে এখন প্রায়ই বন্ধুদের ডেকে বলে "দোস্ত মাইয়াটা জোস না!" তার এই হঠাৎ পরিবর্তন নিয়ে বন্ধুমহলেও গবেষণার শেষ নেই।কয়েকজন তো রিতিমত এর ওপর থিসিস করা শুরু করে দিয়েছে!কিন্তু আজ পর্যন্ত আঁতেলটা কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে পারে নি।সামনে পরলেই কেমন যেন নার্ভাস হয়ে যায়।একদিন তো এক হুলস্থুল কাণ্ডই বাঁধিয়ে বসল।স্কুল ছুটির পরে বাসায় যাওয়ার পথে ওই গার্লস্কুলের ইউনিফর্ম পড়া একটি মেয়ে এসে তার রাস্তা থামিয়ে দিয়ে বললঃ
- এইযে শোন, তুমি শুভ না?
- জী না মানেনেনে...
- কি ম্যা ম্যা করছ? তুমি আকিবদের ফ্রেন্ড না???
- বিশ্বাস করুন আমার কোন দোষ নেই।ওইদিন বাপ্পি পিছন থেকে ঢিল দিয়ে পালিয়েছিল।
- আরে তুমি দৌড়াচ্ছো কেন! আমার কথা শোন...আজব তো!
আর পায় কই? এক দৌড়ে শুভ বাসায়।পরে জানা যায় রিয়া আকিবেরই গার্লফ্রেন্ড ছিল।আকিবের ফোন বন্ধ থাকায় ও আজ স্কুলে এসেছে কিনা তাই শুভর কাছ থেকে জানতে চেয়েছিল।এই ঘটনার জন্য অহরহই বেচারাকে পচানী হজম করতে হচ্ছে।যার জন্য শুভ হারানো প্রেস্টিজ ফিরে পাবার মিশনে লেগে গেল।কিন্তু তার জন্য যেভাবেই হোক প্রথমে তাকে মেয়েদের সাথে মিউচুয়াল হতে হবে।যেহেতু সামনাসামনি কথা বললে তার ঠ্যাং কাপাকাপি শুরু হয়ে যায় তাই সে মুঠোফোনকেই সহজ উপায় হিসেবে বেছে নেয়।এবার নাম্বার কোথা থেকে পাওয়া যায় তা নিয়ে শুভ বিশেষ চিন্তিত। একবার ভাবে রাকিবের কাছ থেকে চেয়ে নিবে।কিন্তু পরক্ষনেই এরকম চিন্তা থেকে আবার সরে আসে।কারণ জেনেশুনে অবশিষ্ট ইজ্জতের ফালুদা বানাতে সে এবার মোটেও রাজি নয়।অবশেষে ভেবেচিন্তে মীরজাফরি থিউরিটাই কাজে লাগাল।পরদিন স্কুলে গিয়েই কৌশলে আকিবের ফোনটা নিয়ে নিল।তারপর ঝটপট নিশি নামে একটা মেয়ের নাম্বার তার ফোনে বিজনেস কার্ড করে পাঠিয়ে দিল।এরপর তিনদিন কেটে গেল।কিন্তু কিভাবে শুরু করবে শুভ কিছুতেই ভেবে পাচ্ছে না।এভাবে আর না এবার বুকে সাহস সঞ্চয় করে দিয়েই ফেলল।নাহ আপনারা যা ভাবছেন একদমই তা না।আঁতেলদের বুকের পাঠা কখনই এত বড় হয় না।শুভও আঁতেলতত্ত্বের সত্যতা প্রমাণ করে কল না দিয়ে মেসেজ পাঠাল “পড়ন্ত বিকেলের অলস সময়ে,,,,মাতবো চল বেসুরো গানে”এবার শুভর মাঝে টান টান উত্তেজনা।হঠাৎ করেই তার গরম অনুভূত হতে লাগল।সাথে সাথেই গায়ে দেয়া সোয়েটার আর মাংকি টুপিটা ছুঁড়ে ফেলে দিল।কিন্তু তার এ উত্তেজনাকে কম্বলের নিচে লুকাতেও বেশি সময় লাগল না।কোন কল বা রিপ্লাই মেসেজ কিছুই আসছে না।
রাত যত গভীর হয় শুভর হতাশা তত নিকটে আসে।সকালে ঘুম থেকে উঠেই ফোনটা চেক করে।ফলাফল শুন্য।কিন্তু এইবার সে সহজে হাল ছাড়তে মোটেও রাজি নয়।একবার না পারিলে দেখ শতবার ব্রত নিয়ে আবারও লেগে যায়।চলতে থাকে তার ছন্দহীন বাক্যের মাতাল খেলা।এভাবে প্রায় বেশ কিছুদিন চলার পর শুভর পাঠানো এক মেসেজের উত্তরে ওই নাম্বার থেকে সাথে সাথেই কল আসে!মেসেজটা ছিল এরকমঃ
ফুল পরে পাতা ঝরে...
পাতায় পাতায় হিয়া...
বন্ধু হব দুজনায়...
যত বাধাই আসুক গিয়া...
যাই হোক শুভর হার্টবিট তখন চরমে।পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে।ফোনটা ধরবে কি ধরবে না ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না।নিজেকে স্বাভাবিক রাখার জন্য টেবিল থেকে পানিভরতি গ্লাসটা নিয়ে ডক ডক করে গিলতে লাগল।নাহ এই সুযোগ হাতছাড়া করা কিছুতেই ঠিক হবে না ভেবে চোখ বন্ধ করে ফোনটা রিসিভ করল।সাথে সাথেই ওপাশ থেকে পুরুষ কণ্ঠের হুংকার “হারামজাদা বেশি সেনা হইয়া গেছস!তোরে হাত পা ভাইঙ্গা পকেটে ধরাই দিমু...ট্যাট ট্যাট ট্যাট(গালিগালাজ)”।শুভ থতমত খেয়ে লাইন কেটে দিয়ে ফোনটা অফ করে দিল।নিজের উপরই প্রচন্ড রাগ উঠছে।এই প্রথম তার নিজেকেই নিজের কাছে আঁতেল মনে হচ্ছে।আজ আর স্কুলে যেতেও ইচ্ছা করছে না।মা জিজ্ঞাস করলে বলে শরীর খারাপ লাগছে।বিকেলে খেলতেও যায় নি।
খাওয়া দাওয়া সেরে আজ একটু আগেভাগেই শুয়ে পড়েছে শুভ।কিন্তু কিছুতেই তার ঘুম আসছে না।কোন ভাবেই সে ব্যাপারটা মাথা থেকে নামাতে পারছে না।এপাশ ওপাশ করতে করতেই রাত ২ টা বেজে যায়।মনের খচখচানিটা দূর করার জন্য ফোনটা অন করে একটা মেসেজ লিখে “সত্যি আমি দুঃখিত,তবে আপনি একবার নিষেধ করে দেখতে পারতেন..তাহলে আর কখনই মেসেজ পাঠাতাম না...ভাল থাকবেন”।এর বেশি কিছু মাথায় আসছে না তার।এটুকু লিখেই শেষবারের মত সেন্ড বাটন চাপে শুভ।পরের দিন থেকে সে সবকিছু ভুলে পড়াশুনায় মন দিতে চেষ্টা করে।তারপর বেশ কতগুলো দিন কেটে যায়।এখন শুভ অনেকটাই স্বাভাবিক।হুট করেই পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয় ।শুভ দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেনি এমন একটা কিছু ঘটতে যাচ্ছে।প্রতি রাতের মতই কানে হেডফোন লাগিয়ে সফট্ ভলিয়মে গান শুনছে আর ঘুমানোর চেষ্টা করছে।ঠিক তখনি মস্তিষ্কে কাঁপন ধরায় তার বলদা মার্কা মেসেজ এলার্ট।শুভ হকচকিয়ে উঠে ফোনটা চোখের সামনে ধরতেই অষ্টাশ্চর্য দেখার মত চমকে উঠে।নিশির নাম্বার থেকে মেসেজ এসেছে!!!সাথে সাথে চোখ ধুয়ে এসে মেসেজটা ওপেন করল “সেদিনের ঘটনার জন্য সত্যি লজ্জিত...ফোনটা তখন ভাইয়ার হাতেই ছিল”।শুভ আনমনেই মুচকি হেসে উঠল।হঠাৎই অন্যরকম এক ভাললাগায় তার মন ভরে গেল।তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই রাতেই ২/৪টা মেসেজ চালাচালি হত।ইতোমধ্যেই শুভ জানতে পারে নিশির আলাদা কোন ফোন নেই, ওইটার মালিকানা নিশির ভাইয়েরই।শুধুমাত্র রাতের বেলা তার কাছে থাকে।আরও জানতে পারে তারা সেইম এইজ এবং এক ক্লাসেই পড়ে।তবে নিশি কোন সময়ই শুভর মত এত তুখোড় টাইপের স্টুডেন্ট ছিল না।তাই শুভ ওকে পড়াশুনার সকল টিপস ইনবক্সে সাপ্লাই দিত।ফলাফল পেতেও দেরি হয়নি।বার্ষিক পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান অর্জন করে সে রীতিমত ক্লাসের অন্য মেয়েদের ঈর্ষার কারণ হয়ে উঠেছে।যার জন্য পুরষ্কার হিসেবে নিশি তার মায়ের কাছ থেকে বহুল আবদারকৃত মোবাইল ফোন জিতে নেয়।স্বাভাবিকভাবেই তাদের মেসেজিং এর পরিমাণ বেড়ে যায়।এদিকে শুভও নিজেকে প্রমাণ করার দৌড়ে পিছিয়ে নেই।
রোমাঞ্চকর ছুটির দিনগুলো দেখতে দেখতেই শেষ হয়ে যায়।ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকে তাদের ক্ষুদেবার্তা বিনিময়।এদিকে নিশির জন্মদিন চলে আসে।তারিখটা যেন শুভর মাথায় এলার্ম টোনের মত সেভ হয়ে গিয়েছিল।কিন্তু কি গিফট দেয়া যায় তা নিয়ে সে বেশ দ্বিধাদন্ধে পড়ে যায়।অনেক ভেবেও কোন লাভ হল না যেহেতু মেয়েদের জিনিস সম্পর্কে তার কোনই আইডিয়া ছিল না।তাই অবশেষে ঠিক করল রিয়ার কাছ থেকেই জেনে নিবে।যেই কথা সেই কাজ।স্কুল ছুটির পর রিয়ার সাথে আতলামির এক পর্যায়ে জানতে পারে মেয়েরা ফুল ভালবাসে।সেদিনের মত রিয়াকে থ্যাংকস জানিয়ে আঁতেল মশাই প্রস্তান করল।এতে রিয়াও বেশ অবাক হল।এমনিতেই বন্ধুরা তাকে নিয়ে এতদিন সন্ধিহান ছিল আর রিয়ার কাছ থেকে এ খবর জানার পর তাদের সন্দেহ আরও ঘনীভূত হল।আজ ১৭ই জানুয়ারি।হ্যাঁ আজই নিশির জন্মদিন।শুভ ইচ্ছা করেই রাতে উইশ করেনি।নিশি ব্যাপারটা নিয়ে মনে মনে খুব শকড।কিন্তু সে শুভকে কিছুতেই এ কথা বলতে রাজি নয়।সে জানে না তার এই হঠাৎ খারাপ লাগার রহস্য।আজ কেন যেন নিজের কাছেইনিজেকে বড্ড অচেনা লাগছে!তবে কি...নাহ আর কিছু ভাবতে পাছে না নিশি।আনমনে বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে নীল আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছে।এদিকে অনেক রিহার্সাল সেরে নিশিকে সারপ্রাইস দেয়ার জন্য তার পছন্দের বেলীফুল নিয়ে ১৩২/১ বাড়িটার দিকে হাটা দিল।আঁতেলটা বারান্দার দিকে না তাকিয়েই বাইরের গেটটা খোলা মাত্র একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে করতে তার দিকে তেড়ে আসছে!!!কি করবে বুঝতে না পেরে ফুলগুলো দেয়ালের ওপর রেখেই জান বাঁচানো দৌড়!!!কুকুরটাও পিছন পিছন ধাওয়া করছে।এ দৃশ্য দেখে বারান্দায় দাঁড়ানো নিশি হাসতে হাসতে কুটি কুটি।তার আর আঁতেলটাকে চিনতে বাকি রইল না।মুহূর্তেই মনটা ফ্রেশ হয়ে গেল।
আর নিজেকে ধরে রাখতে না পেরে রাতেই শুভকে কল দেয় নিশি।কিন্তু কিছুই বলতে পারছে না।পাগলের মত শুধু হেসেই যাচ্ছে।নিশির হাসির কারণটা বুঝতেও শুভর বেশি সময় লাগে না।কিছুটা লজ্জা পেলেও তার মোটেও খারাপ লাগছে না।এক মুহূর্তেই নিজেকে হারিয়ে ফেলে অন্যরকম এক ভাললাগার আবেশে।কথা বলার শুরুটা এভাবেই।তারপরের ব্যাপারগুলো আর আট দশটা কাহিনীর মতই খুব দ্রুত ঘটে যায়।সময়ের ব্যবধানে পরস্পরের কাছেই উন্মোচিত হতে থাকে তাদের একে অন্যের প্রতি দুর্বলতা, নির্ভরশীলতা।বৈচিত্রময় জীবনের প্রতিটা ধাপেই অনুভব করতে থাকে নতুন এক অনুভূতির ছোঁয়া।দুজনের কাছেই এই অনুভুতিটার সারমর্ম পরিষ্কার।কিন্তু ভয় একটাই...যদি হিতের বিপরীত হয়!সে ধাক্কা সামলানোর ক্ষমতা তাদের কারোরই নেই।তাই অপূর্ণতার মাঝেই তারা প্রাপ্তির হিসেব কষে।এভাবেই যখন সবকিছু চলছিল তার মাঝেই একদিন স্কুল ছুটির পর নিশি শুভর সাথে দেখা করতে চায়।শুভ বেশ উত্তেজিত।এই প্রথম সে তার নিশির সাথে একান্তে কিছুটা সময় কাটাবে আর তাকে প্রাণ ভরে দেখবে।ভাবতেই মনে কেমন একটা শিহরন বয়ে যাচ্ছে।কি বলে কথা শুরু করা যায়, কিভাবে নিশির হাতটা একটু ধরা যায় এসব ভাবতে ভাবতেই শুভর রাতের ঘুম হারাম।অবশেষে প্রতিক্ষার প্রহর শেষ হতে চলল।স্কুল ছুটি হতে আর মাত্র কিছু সময় বাকি।কিন্তু তার আর ত্বর সইছে না।গার্লস্কুল ইতোমধ্যেই ছুটি হয়ে গেছে।দপ্তরির উদ্দেশ্যে মনে মনে সে তার সমৃদ্ধ গালি ভাণ্ডার চর্চা করতে করতেই ছুটির ঘন্টা শোনা যায়।তাড়াহুড়ো করে কলেজের মাঠে গিয়ে দেখে নিশি স্কুলড্রেসে ব্যাগ কাঁধে দাঁড়িয়ে আছে।
- সস্যরি...একটু লেলেট হয়ে গেল।
- কি ব্যাপার!তোতলাচ্ছ কেন?ফোনে তো কখনও এমন হয় না!
- না...মানে...ইয়েয়েয়ে।
- হয়েছে আর বলতে হবে না।চল ওইখানটায় বসি।
- ওকে...চল।
শুরু হয় তাদের কথোপকোতন।পড়াশুনার ব্যাপার থেকে শুরু করলেও কথা আর তার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। মাথায় যখনি যা আসছে তা নিয়েই একটানা কথা বলে যাচ্ছে।বাসায় ফেরার কোন পূর্বাভাসই বোঝা যাচ্ছে না।এই যখন অবস্থা তখন হঠাৎই দুজনের মাঝে নীরবতা।আর কি বলবে কেউই কিছু খুজে পাচ্ছে না।সব কথা যেন নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে!একজন অন্যজনের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে আছে।নিরবতা ভাঙ্গে শুভর ফোনটা বেজে উঠলে।শুভ থতমত খেয়ে ফোনটা পকেট থেকে বের করতে করতেই বাজতে থাকেঃ "আই লাভ ইউ,,,আই লাভ ইউ সো মাচ নিশি,,,উইল ইউ ম্যারি মি?" আকিব ফোন দিয়েছে!!!রিসিভ করার আগেই ততক্ষনে লাইন কেটে গেছে।শুভ ফোনটা হাতে নিয়েই মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে।সে কিছুতেই ভেবে পাচ্ছে না কিভাবে কি হয়ে গেল!পুরাই গোলক ধাঁধায় ঘুরপাক খাচ্ছে।ঘাড় তুলে সরি বলতে যাওয়া মাত্র নিশিকে আবিষ্কার করে তার বুকে।পাগলীটা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে থাকে।ভাঙ্গা গলায় শুভর কানে ভেসে আসে "আই লাভ ইয় টু,,,এই কথাটা বলতে এতদিন লাগে!!!বুদ্ধু একটা।" আঁতেলটাও ততক্ষনে নিশিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করেছে।তখনি পিছন থেকে একগুচ্ছ সাদা দাঁতের ক্লোজআপ মার্কা হাসির শব্দে হকচকিয়ে উঠে দুজনই নিজেকে সামলে নেয়।তাকিয়ে দেখে আকিব,রিয়া,সীমান্ত,রাকিব ওরা সবাই!!!ঘটনা আর বুঝতে আর কিছু বাকি রইল না।আতেলের ডেটিংয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা আগেই বন্ধুমহলে পাস হয়ে গিয়েছিল যেহেতু তারা আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে ছিল।শুভর ও মনে পড়ে যায় আজ সকালেই তো রিয়াকে একটা কল করবে বলে আকিব তার ফোনটা নিয়েছিল!তারপর ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ায় শুভ ক্লাসে চলে যায় আর সবাই মিলে কখন যে এটা রেকর্ড করে রিংটোন সেট করে দেয় তা আঁতেলটা টেরই পায়নি।এসবের মাঝে সবার সামনে হুট করেই শুভ বলে উঠেঃ
- দোস্ত আমি আসলেই একটা আতেল!!!
- কেন?কেন???(সম্মিলিত জিজ্ঞাসা)
- আরে ওইদিন আকিবের ফোন থেকে নিশিরে মেসেজ করে সেন্ড আইটেম থেইকা ডিলিট করি নাই।
- হা হা হা...যাক শালা শেষ পর্যন্ত নিজেরে চিনতে পারছস।
সেখানেই শুরু...হাটিহাটি পা পা করে তাদের রিলেশানের ১ বছর পূর্ণ হতে চলল।এখন কেবলই ভালবাসার রঙ্গিন সুতায় বোনা স্বপ্নগুলোকে পূর্ণতা দেয়ার প্রতিক্ষায় আতেল দম্পতি।শুভ এখনো আতলামি করে আর বলে বেড়ায়*আতলামি থেকে যদি হয় দারুন কিছু তো...হয়ে যাক!*
বিঃদ্রঃগল্পের ঘটনা পুরোপুরি লেখকের কল্পনা।রিয়েল লাইফ স্টোরির বাইরে একটু ডিফ্রেন্ট প্রচেষ্টা বলতে পারেন।তাই বলে নাক সিটকানোর কিছু নেই।সত্যি বলতে বাস্তবতাই হচ্ছে কল্পনার রেসিপি।আপনি সবসময় যা করবেন স্বপ্নে তারই প্রতিবিম্ব দেখবেন এটাই স্বাভাবিক।আশাবাদী হোন আর নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন আপনি যে কল্পনার রুপকার হবেন না সে নিশ্চয়তা কি?ভাল থাকবেন সবাই।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১০
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে...ঃ)
২| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
মাক্স বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
৩| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১২
হৃদয় রিয়াজ বলেছেন: ধন্যবাদ...
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৫
চির জিবী বলেছেন: ুগ্ধ হলাম গল্প পাঠ করে--