নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একা থাকা ভালো,\nএকা থাকা বোরিং!

ইমতি্য়াজ আনাম মাহমুদ

undefined

ইমতি্য়াজ আনাম মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

The tale of an invisible person...... (NOT a superhero story!)

১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৮:৫৯

রাস্তার ওইপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটা। আমি দেখছি।
বিকেলের শেষ সূর্যের আলো তার চুলে লালচে সোনালি আগুন জ্বেলে দিয়েছে যেন। ফর্সা ত্বকে প্রতিফলিত হচ্ছে তার আলো। চোখে-মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে রাস্তার ওইপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে মেয়েটা।

আর রাস্তার এই পাড়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি। আমাকে দেখতে কেমন লাগছে সে সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই আমার।

আচ্ছা, রাস্তার ওইপাড় থেকে মেয়েটাও কি আমাকে দেখে? বা আমারই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ব্রিফকেস হাতে লোকটা, সে কি আমাকে দেখে? কিংবা টং-এর দোকানে চা বানাতে থাকা বুড়োটা, তার বানানো চা খেতে থাকা ব্যস্ত কাস্টোমারের ভীড়, কেউ কি আমাকে দেখে?

যে দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে নয়'শর বেশি লোকের বসবাস, সে দেশে অন্যের দিকে না তাকিয়ে চলাটা তো কঠিনই বৈকি।
আবার যে দেশে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে নয়'শর বেশি লোকের বসবাস, সে দেশে নিজেরটা গুছিয়ে নিয়ে অন্যের দিকে তাকানোর সময় কোথায়?

কখনও এমন হয়েছে আপনার?
দূর থেকে আপনি দেখলেন কাউকে। দেখতে হুবুহু আপনার বান্ধবীর মত! একই চুলের স্টাইল, একই উচ্চতা, শাড়ি পড়ার ভঙ্গীটাও তো সেইম। কি জানি বান্ধবীর নাম, "শীলা" না? আপনি হাত নেড়ে ডাকতে যাবেন, "অ্যাই শীলা আ আ আ"
সেই মুহূর্তেই মেয়েটা মুখ ঘোরাবে, আপনিও একবার ব্রেক কষবেন, "অ্যাইইইই, এটা তো শীলা না!" নাড়াতে থাকা হাতটাকে লুকাবেন কি করে? ঝট করে নামিয়ে নেবেন, অথবা হয়ত একটা রিকশাই ডেকে বসবেন হাত নেড়ে। দশ মিনিটের রাস্তা দশ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে যাবেন।

অথবা, কেবল আস্তে করে হাত নামানোটাই যথেষ্ট। কে এমন দেখে ফেলবে? দেখলেও বা সে কেয়ার করবে কেন? দিন শেষে কারোরই কিচ্ছু এসে যায় না।

আমার বাস এসে গেছে, আমি উঠে পড়ি। ওইপাশের মেয়েটা এখনও বাস পায়নি। আমার দেখে খারাপ লাগে। দেখি বলেই হয়ত খারাপ লাগে।

আমি সবকিছুই দেখি। ভালোটা দেখি, খারাপটা দেখি। মানুষ দেখি, অমানুষও দেখি। আমার এক বাসের চারপাশ ঘিড়ে রঙ বেরঙ-এর প্রাইভেট গাড়ি (ওরফে "প্লাস্টিক") চলে। আমি সেগুলোও দেখি। গাড়ির ভেতরের মানুষও দেখি। তাদের নাকে হয়ত এখন এয়ার ফ্রেশনারের মিষ্টি গন্ধ। বাসে মানুষের ঘামের গন্ধ নিতে নিতে আমার গন্ধের সেন্সটাই বিলুপ্তপ্রায়। তাদের হয়ত পছন্দমত তাপমাত্রা মেপে নেবার ব্যাবস্থা আছে। আমি প্রাকৃতিক ঋতুর সুবিধাটাও পাই না কখনো। সিরিয়াসলি, লোকাল বাসে শীতকাল বলতে কিছু নাই, ঘামতে হয়ই। শীতকালে বেশি ঘামাই; গরমকালে ঘামাই অনেক বেশি!

বাসে ঝুলে সারাবছর ঘামতে ঘামতেই আমি স্বপ্ন দেখি। সাধারন মধ্যবিত্তের চিরকালের স্বপ্ন। "একদিন ওইরকম একটা গাড়ি আমারও হবে, থাকার একটা বাড়ি হবে।" বয়স বাড়লে স্বপ্ন আরো ডালপালা ছড়ায়, "বাড়িটাকে সাজিয়ে জীবনটাকে গুছিয়ে নেবার জন্য এক যোগ্য সঙ্গী আসবে জীবনে। তাকে নিয়ে ওই গাড়িটাতেই লং ড্রাইভে যাব!"

আমার নিজের সেই প্রিয় মানুষটার কথা মনে পড়ে।

মনে কিছুটা আবেগ নিয়ে সেও তো কোনোদিন তাকায়নি আমার দিকে........

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:২৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ইনভিজিবল ম্যান কোথায়! এতো সকল ভিজিবল ম্যানের বাস্তবতাকে স্বপ্নের মতো করে বল্লেন;)

১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৬

ইমতি্য়াজ আনাম মাহমুদ বলেছেন: আমার চোখে সবাই পড়ে; আমিই ইনভিসিবল রয়ে যাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.