নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সামান্য সামাজিক জীব :)

মোশারফ মামুন

একজন সামাজিক জীব আমি।

মোশারফ মামুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগ্রাসনের সঙ্গা আমরা আর কবে শিখিব ভুপেন ?

১৪ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৮:২৯

আমাদের মিডিয়া একটি সোনালী সময় পার করে এসেছে। পার করে এসেছে মানে এখন আর সেই সোনালী সময়টি নেই। ভারতীয় সিনেমার নকল, ভারতের সাথে চলচ্চিত্র আদান-প্রদান, ভারতীয় আগ্রাসন, নগ্নতা, অদক্ষ কলাকুশলী সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সিনেমা ও নাটক দুটিই তার জৌলুস হারিয়েছে। তার ওপর উন্মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির কারণে আমাদের বাজার পুরোপুরি ভারতীয়দের দখলে। সিনেমা নিয়েই প্রথমে কিছু কথা বলি নাটকের ব্যাপারে অন্যদিন-

বাংলাদেশ ভারত যৌথ প্রযোজনার ''অঙ্গার" সিনেমাটি দেখতে হলে গিয়েছিলাম আমরা চার বন্ধু। টিকিট নেয়ার লাইনে আমাদের সাথে বেশ কজন লোক ছিল যাদের সাথে তাদের স্ত্রী সন্তানও এসেছিল। টিকিটের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় অন্তত ১২-১৩ জন লোক আসল পাশের আবাসিক হোটেলের কার্ড নিয়ে। আসলে এরা ছিল পতিতাদের দালাল আর বোঝাই যাচ্ছে এখানে কেন এসেছে ! খদ্দের হিসেবে ইয়াং ছেলেরা থাকে এদের টার্গেটে।

তাই আমাদের কার্ড দেয়ার পর আমরা তাদেরকে বলে দিলাম এখানে সিনেমা দেখতে আসছি কোন বাজে কাজ করার জন্য আসিনি। আমরা রিজেক্ট করে দেয়ার পর লোকটি আমার সামনে দাঁড়ানো বিবাহিত লোকটিকে কার্ড দিয়ে বলল,"মামা আসেন আপনার জন্য ছাড় আছে।" পাশে উনার স্ত্রীকে দাড়ানো দেখে দালালদের একজন বলল, "মামারে কার্ড দিয়া লাভ নাই দেখস না মামায় অলরেডি লগে মাল আনছে"। লোকটি কোন কথা না বলে জাষ্ট তার স্ত্রী আর বাচ্চাকে নিয়ে সোজা হেটে বেরিয়ে গেল। এরকম পরিস্থিতিতে কে আর সেখানে থাকতে চাইবে ? আর তাছাড়া যেখানে বাড়িতে গিয়ে টিভি অন করলেই এর থেকেও সুন্দর ভারতীয় ছবি দেখা যাবে সেখানে এরকম ছবি দেখার জন্য তার বৈয়েই গেল ! এমন ফালতু চিত্র প্রায় প্রতিটি হলের সামনে। এতো গেল হলের বাইরের বিড়ম্বনা।

টিকেট নিয়ে হলে ঢোকার পর দেখলাম ভেতরের অবস্থা আরও বিশ্রী। প্রায় সব সিটই ভাঙ্গা, বসার কোন ভাল ব্যবস্থা নেই, কোণায় বসে সিগারেট খাচ্ছে কেউ, আলো যেখানে ইকটু কম সেখানে চলছে কপোত-কপোতীর লীলা খেলা। এসব দেখে আরও পাঁচ -ছজন হলের ভেতরেই টিকেট ছিড়ে বেরিয়ে গেল। আমরা যারা গিয়েছিলাম তাদের মোটামুটি নাক চেপে ধরেই ছবিটা শেষ করতে হয়েছে দুর্গন্ধের কারণে। এটা ছিল হলের ভেতরের বিড়ম্বনা।

এতশত বিড়ম্বনা মাথায় নিয়ে কে আসবে হলে সিনেমা দেখতে ? তবুও হয়ত বিনোদনের জন্য অনেকে আসে কিন্তু ভাল গল্প না হলে, সিনেমার টাকায় টেলিফিল্ম কে দেখতে চাইবে ? শুনেছি সরকার চলচ্চিত্রকে শিল্পের মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু এমন বেহাল দশার কারণে অনেককেই বলতে শুনি বাংলা সিনেমা কেবল রিক্সাওয়ালা আর চাষা-ভুষাদের জন্যই প্রযোজ্য। এটা শুনেও মন খারাপ হয়। মোটামুটি বলতে গেলে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পটি এখন মৃতপ্রায়।

এবার মরার ওপর খাড়ার ঘা হল ভারতের সাথে চলচ্চিত্র আদান-প্রদান। শুধু "অঙ্গার" সিনেমাটির কথাই যদি বলি তাহলে বলতে হয় বাংলাদেশি কলাকুশলীদের অভিনয়ের ক্ষেত্রটি ছিল একদম ছোট। ভারতীয়রা ছিল পুরো কাহিনী জুড়ে। এভাবে একপেশে ভাবেই চলছে যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলো। এদেশীয় শিল্পীরা অল্প সময় পাচ্ছে নিজেকে তুলে ধরতে। ওদিকে নায়ক থেকে শুরু করে ছবির আসল ভিলেনগুলোও ভারতীয়। তাই তারা তাদেরকে সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারছে। এ কথাটি বিবেচনা করলে দেখা যাবে তাদের অভিনয়ের জায়গা থেকে তারা পুরোটা দিয়ে এপারে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করছেন। আর আমরা নায়ক, গায়ক সংকটে এমনিতেই পিছিয়ে আছি এবং এসব ভারতীয় আগ্রাসনে আরও পিছিয়ে যাচ্ছি।

হলের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন তাদের ছবিগুলো একসাথে ৪-৫ হাজার হলে মুক্তি দেয় আর আমাদের ছবি মাত্র ১০০-১২০ টি হলে মুক্তি পায়। এখন আমাদের মানসিকতার বলয়ের কথা চিন্তা করলে দেখা যায় বাঙালি নিজেদের ছবি ছেড়ে ভারতীয় ছবিই বেশি দেখবে। কারণ ভারতীয় চ্যানেল গুলো যেভাবে এদেশে চলছে তাতে বাঙালির ব্রেন অলরেডি ওয়াশড। তাহলে স্পষ্টতই এই দেশের হল গুলোতেও ভারতীয়দের বাজার রমরমা। কারণ হল মালিকরা যেটা দেখিয়ে দুপয়সা আয় করতে পারবে তারা সেটাই হলে দেখাবে। আমাদের কোন চ্যানেল ভারতে চলেনা কিন্তু তাদের প্রায় প্রতিটি চ্যানেল এখানে চলছে। আমাদের ছবির মান নিম্ন বলে ভারতেও তা চলবেনা। কারণ আমরা তাদের চ্যানেল আর ছবি দেখতে দেখতে এতটাই ওয়াকিবহাল হয়ে গেছি যে নিজের মানদন্ড পরিমাপ করার নূন্যতম যোগ্যাতাটিও হারিয়ে ফেলেছি। এজন্যেই আমরা গর্ব করে বলি বাংলা ছবি পঁচা তাই আমরা বাংলা ছবি দেখি না। যেদেশের মানুষরাই তাদের চলচ্চিত্রকে ভাল বলে না তাহলে অন্য দেশের মানুষরা সে দেশের ছবি দেখবে কেন ? আবার দেশটাও যেখানে "ভারত"... সেখানে ভেবে দেখার বিকল্প নেই।

তাই ইকটু জোর দিয়েই বলি,এই স্পষ্ট আগ্রাসনটি কি কেউ দেখতে পাচ্ছেন ?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:১০

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আগ্রাসন চলছে ,চলবে। এবারের ঈদের খবর জানেন? যৌথ প্রযোজনার নামে কয়টা ছবি মুক্তি পাবে? আহা!
বছরখানেক আগে এসে নায়করা বলে গেছিলেন মুক্ত করে দাও আকাশ!
আমরা তারপর আকাশের সাথে পশ্চাৎদেশও মুক্ত করে দিয়েছি।

১৪ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:১০

মোশারফ মামুন বলেছেন: "আমরা তারপর আকাশের সাথে পশ্চাৎদেশও মুক্ত করে দিয়েছি" পশ্চাৎদেশ শুধু মুক্ত করেই ক্ষান্ত হইনি "এসো ভাই ভরে দাও এঙ্গেলে শুয়ে আছি" :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.