নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সুখী মানুষ, স্রষ্টার অপার ক্ষমা ও করুণাধন্য, তাই স্রষ্টার প্রতি শ্রদ্ধাবনত।

খায়রুল আহসান

অবসরে আছি। কিছু কিছু লেখালেখির মাধ্যমে অবসর জীবনটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করছি। কিছু সমাজকল্যানমূলক কর্মকান্ডেও জড়িত আছি। মাঝে মাঝে এদিক সেদিকে ভ্রমণেও বের হই। জীবনে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি, এখন তো করার প্রশ্নই আসে না। জীবন যা দিয়েছে, তার জন্য স্রষ্টার কাছে ভক্তিভরে কৃতজ্ঞতা জানাই। যা কিছু চেয়েও পাইনি, এখন বুঝি, তা পাবার কথা ছিলনা। তাই না পাওয়ার কোন বেদনা নেই।

খায়রুল আহসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতিময় পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫ (২)

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৩

প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ স্মৃতিময় পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫ (১)

চেক-ইন, ডাবল ইমিগ্রেশন ইত্যাদির ঝামেলা শেষ করে যখন প্লেনে বসেছিলাম, তখন বেশ ক্লান্ত বোধ করছিলাম। প্লেন আকাশে ওড়ার সাথে সাথে তাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হয়তো আরও আগেই ঘুমিয়ে পড়তাম, কিন্তু আমি অনেকটা জোর করেই ঘুম ঠেকিয়ে রেখেছিলাম, কারণ আমি প্লেনের টেক-অফ এবং টাচ-ডাউন দেখতে ভালোবাসি। কিছুক্ষণ পরেই একজন কেবিন ক্রুর ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙলো। উনি আমাকে ফুড চয়েসের কথা জিজ্ঞেস করলেন। আমি আমার পছন্দের কথা জানিয়ে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে গেলাম এটা দেখতে যে সেখানে ওযু করা সম্ভব হবে কিনা। কারণ, ততক্ষণে যোহরের সময় সমাগত। সেটা সম্ভব নয় দেখে ফিরে এসে, আমি তৈয়্ম্মুম করে নিয়ে নিজ আসনে বসে যোহরের নামায পড়ে নিলাম।

তারপরে লাঞ্চ করে মদীনায় অবতরণের পর কী কী কাজ ক্রমান্বয়ে করতে হবে, সে বিষয়ে মানসিকভাবে একটি পরিকল্পনার ছক তৈরি করে নিলাম। এটা ছিল আমার দ্বিতীয় হজ্জ্ব, কিন্তু আমার স্ত্রী ও পুত্রের জন্য প্রথম। করণীয় সম্পর্কে যা যা মনে আসছিল, তা ওদেরকেও বললাম। আমি প্রথম হজ্জ্ব করেছিলাম ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। তার ২০ বছর পর এবারে করছিলাম ২০২৫ সালের জুন মাসে। আর্থাৎ শীতকাল আর গ্রীষ্মকাল, এ দুটো ঋতুর সবচেয়ে এক্সট্রিম সময়ে আমার দু’বার হজ্জ্ব পালনের অভিজ্ঞতা হচ্ছিল। দেখতে দেখতে আমাদের অবতরণের সময় ঘনিয়ে এলো। পাইলট ঘোষণা দিলেন যে আর ২০ মিনিট পর প্লেন ডিসেন্ট (অবতরণের প্রস্তুতি) শুরু করবে। সীট-বেল্ট বাঁধার নির্দেশ মনিটরে ভেসে উঠলো।

প্লেন নির্ঝঞ্ঝাট অবতরণ করলো। আগেই (ঢাকা বিমান বন্দরে) ইমিগ্রেশন করা থাকলেও আমাদেরকে লাউঞ্জে অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়েছিল। পরে জেনেছিলাম, এর কারণ ছিল ভিড়ের কারণে সৌদি মুয়াল্লেম কর্তৃক আমাদের বাসের লাইন-আপ করাতে বিলম্ব হচ্ছিল। এদিকে আসরের ওয়াক্ত ঘনিয়ে আসছিল। যাহোক, একসময় বাস আমাদেরকে নিয়ে যাত্রা শুরু করলো। মদীনা বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে বাসে ওঠা পর্যন্ত ঐটুকু সময়ের মধ্যে আগুনের ফুলকির মত হাওয়ার হলকা যেন আমাদের মুখাবয়ব পুড়িয়ে দিচ্ছিল। বিলাসবহুল এসি বাসে ওঠার পর দাবদাহ থেকে বাঁচলাম। এত গরম সত্ত্বেও বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকায় শরীরে তেমন ঘাম হচ্ছিল না বলে রক্ষা! বাসে ওঠার সাথে সাথে সবাইকে ঠাণ্ডা পানি, জুস ইত্যাদি দেয়া হলো। গরমজনিত তৃষ্ণা মেটানোর জন্য এটার খুব প্রয়োজন ছিল।

বাসে থাকাকালেই আমাদের হজ্জ্ব এজেন্ট জনাব শাহিন আমাদের সবার পাসপোর্টগুলো সংগ্রহ করে সৌদি মুয়াল্লেমের প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করলেন। ফেরার দিন পর্যন্ত ওগুলো তাদের কাছেই রক্ষিত ছিল। সেদিন মদীনা শরীফে আসরের আযানের ওয়াক্ত ছিল ১৫৪০ ঘটিকায়। আযানের ৫/৭ মিনিট পরেই জামাত শুরু হয়ে যায়। সেদিন যখন আমরা মদীনার হোটেলে পৌঁছেছিলাম, তখন আর ওযু করে পায়ে হেঁটে গিয়ে মাসজিদে নবুবীতে আসরের জামাতে সামিল হবার কোন উপায় ছিল না। ফলে আমরা হোটেলেই আসরের নামায পড়ে মাগরিবের ওয়াক্তের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অল্পের জন্য আসরের জামাত মিস হয়ে যাওয়াতে মনটা খচখচ করছিল। মাসজিদে নবুবীতে সম্ভব হলে একটানা ৪০ ওয়াক্ত নামায পড়া একটা রেওয়াজ, যদিও এটা কোন অবশ্যপালনীয় কর্তব্য নয়। ৮ দিন পর যখন মদীনা ছেড়ে আসি, সেটাও ছিল আসরের ওয়াক্তের পূর্বক্ষণেই। সেদিনও সৌদি মুয়াল্লেমের তাগাদার কারণে অল্প একটু সময়ের জন্য মাসজিদে নবুবীতে আমাদের একটানা ৪০তম জামাত পড়া সম্ভব হয় নাই। ফলে প্রথম দিনের বুকের খচখচানিটা স্থায়ীভাবেই বুকে রয়ে গেল!

আমরা একই পরিবার থেকে মোট তিনজন হজ্জ্বযাত্রী ছিলাম। মদীনার হোটেলে পৌঁছে দেখলাম যে আমাদের তিনজনের জন্য একটি চার বেডের কক্ষ বরাদ্দ হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে সেখানে দুটো বেড থাকে। তবে হজ্জ্বের সময় সবখানেই এরকম প্রায় লাগালাগি বেড-বিন্যাস থাকে। কেবলমাত্র উচ্চবিত্তদের জন্য উচ্চ ভাড়ার হোটেলগুলোর কথা আলাদা। ৮/৯ দিনের জন্য আমাদেরকে প্রতিদিন একটি আলাদা বেডের মাশুল গুণতে হয়েছিল। ঢাকায় থাকতে এটা আমাদের পরিকল্পিত খরচের মধ্যে আন্তর্ভুক্ত ছিল না। ফলে অন্য খরচ কাঁটছাট করে আমাদেরকে এ মাশুলের সাশ্রয় করতে হয়। ঢাকায় থাকতেই আমরা Nusuk Apps এর মাধ্যমে রিয়াজুল জান্নাত জিয়ারা করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম। একই সময়ে তিনজনের জন্য স্লট খালি পাওয়া যায় নাই বিধায় তিনজনের জন্য মধ্যরাতের তিনটে আলাদা স্লটে রেজিস্ট্রেশক্সন সম্পন্ন করেছিলাম। আমাদের তারিখটি ছিল ৩১ মে ২০২৫ তারিখে।

আমরা যেদিন মদীনার হোটেলে পৌঁছেছিলাম, সেদিনই সৌদি হজ্জ্ব মন্ত্রণালয়ের লোকজন এসে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদেরকে “NUSUK ID CARD” বিলি করে গেলেন। কি একটা যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য যেন মাত্র কয়েকজন সে রাতে এই কার্ডটি পেলেন না। তাদেরকে বলা হলো, পরেরদিন তারা কার্ডটি পাবেন। তাদের মধ্যে আমাদের পুত্রও ছিল। যারা কার্ডটি পেলেন, তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া হলো যে এই কার্ডটি বিনে তারা হজ্জ্ব আনুষ্ঠানিকতার কোন স্থানেই প্রবেশাধিকার পাবেন না। এ ছাড়াও পথে ঘাটে যে কোন স্থানে পুলিশ চেকের সময় এই কার্ডটি সাথে না থাকলে পুলিশ আর এক কদমও এগোতে দিবে না। এসব শুনে আমি রীতিমত শিউরে উঠেছিলাম। কারণ, আমি ভুলোমনের মানুষ। সবসময় এখানে সেখানে চশমা, ঘড়ি ইত্যাদি ফেলে রেখে অনর্থক খোঁজাখুজিতে সময় ব্যয় করে নিজের এবং অন্যদের জন্য বিরক্তি ও বিড়ম্বনা সৃষ্টি করতাম। তাই প্রথম কয়েকদিন ঘুমের মধ্যেও আমি কার্ডটি হারিয়ে ফেলেছি ভেবে চমকে উঠতাম।

আগেই বলেছি, প্রাক রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী আমাদের তিনজনের “রিয়াজুল জান্নাহ” এ উপস্থিত হবার সময় ছিল ৩০/৩১ তারিখের মধ্যরাতে, সামান্য কিছু সময়ের ব্যবধানে। এদিকে জনাব শাহিনও আমাদের সকল হজ্জ্বযাত্রীদের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন ২৭ মে ২০২৫ তারিখ পূর্বাহ্নে। তবে সেখানেও সময়ের একটু ব্যত্যয় ঘটেছিল। আমার স্ত্রী ও পুত্রসহ প্রায় সবাই জনাব শাহিনের নেতৃত্বে সেদিন পূর্বাহ্নেই রিয়াজুল জান্নাহ জিয়ারাহ করেছিলেন। শুধু বাদ পড়েছিলাম আমি এবং আমাদের সহযাত্রী জনাব নূরুজ্জামান। জনাব শাহিন আমাকে অভয় দিয়ে বললেন, “আংকেল, আপনি চিন্তা করবেন না। জনাব নূরুজ্জামান ইতোমধ্যে একবার জিয়ারাহ করেছেন। উনি সবকিছু জানেন। উনি বিকেল চারটায় আপনাকে নিয়ে যাবেন।“ এই বলে উনি জনাব নূরুজ্জামান এর সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। বয়সের দিক দিয়ে জনাব নূরুজ্জামান আমার বড়ছেলের সমবয়সী কিংবা তার চেয়ে সামান্য বড় হবেন। তিনিও আমাকে “আংকেল” সম্বোধন করে নিশ্চয়তা দিলেন।

ঠিক সময়মত জনাব নূরুজ্জামান এবং আমি রওনা হ’লাম। মাথার উপরে তখন গনগনে সূর্য। ছাতাতেও তেমন কাজ হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, এক্ষুনি বোধহয় মগজ মাথা থেকে ঠিকরে বের হয়ে আসবে। হাতে ছাতা নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হলো। সৌদি পুলিশের ভাষা আমার বোধগম্য ছিল না, না ছিল আমারটা তাদের। জনাব নূরুজ্জামান সেদিন সাথে না থাকলে আমার একার পক্ষে রিয়াজুল জান্নাহ ভিজিট করা সম্ভব হতো না। উনি আমাকে আগলে রেখে তাকে অনুসরণ করতে বলেছিলেন। আমি তাই করেছিলাম। একসময় সংশ্লিষ্ট গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশাধিকার পেলাম। প্রথমে একটি ফিতা ঘেরা এলাকায় অবস্থান করতে হয়েছিল। সেখানে অবস্থানকালীন সময়ে একজন বাংলাদেশি ক্লীনার এর কাছ থেকে রিয়াজুল জান্নাতের আনুষ্ঠানিকতা সম্বন্ধে জেনে নিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর আমাদেরকে রিয়াজুল জান্নাতের দিকে অগ্রসর হবার জন্য পুলিশ নির্দেশ দিল।

রিয়াজুল জান্নাত থেকে বের হয়েই জনাব নূরুজ্জামান আমাকে নিয়ে ঠিক পাশের গেইট দিয়ে মাসজিদে নবুবীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করলেন। সেখানে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। কোনরকমে আমরা দুজন পাশাপাশি বসে যার যার সাধ্য ও ইচ্ছে অনুযায়ী দোয়া দরুদ পাঠ করতে করতে মাগরিবের আযানের অপেক্ষায় থাকলাম। একসময় জনাব নূরুজ্জামান এবং আমি আমাদের সেলফোন নাম্বার সেভ করে নিলাম। সেভ করার সময় উনি জানতে চাইলেন, আমার নাম্বারটা তিনি কী নামে সেভ করবেন। আমি আমার নামের বানানটা তাকে বলে জানালাম, আমি তার নাম্বারটা সেভ করেছি “Nuruzzaman Khan, Partner of Riyadhul Jannah” নামে। নামায শেষে উনি মাসজিদে আরও কিছুক্ষণ অবস্থান করতে চাইলেন। আমার একটু হোটেলে ফেরার তাড়া ছিল বলে আমি তার থেকে বিদায় নিলাম। উনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আংকেল, বের হবার পথ চিনতে পারবেন তো ঠিকমত?” আমি বললাম, “হ্যাঁ, পারবো।“ তবুও তিনি আমার সাথে বের হয়ে আসলেন। একটা জায়গায় এসে তিনি আমাকে অঙুলি নির্দেশ করে দেখালেন, “এই রাস্তা ধরে নাক বরাবর সোজা ৪০০ মিটারের মত গেলে আপনি ‘গেইট নং ৩১৬’ পাবেন। উনি নিশ্চিত ছিলেন, ‘গেইট নং ৩১৬’ পর্যন্ত যেতে পারলে আমার আর হোটেলে ফেরার বাকি পথটুকু চিনতে কোন অসুবিধে হবেনা। সেদিন উনি আমাকে যে সার্বক্ষণিক সৌজন্য প্রদর্শন করেছিলেন, তার জন্য আমি তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। আল্লাহ রাব্বুল ‘আ-লামীন তাকে এই সহৃদয়তার জন্য উত্তম বিনিময় দান করুন!


ঢাকা
০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শব্দসংখ্যাঃ ১১৫৬

তৃতীয় পর্বের লিঙ্কঃ স্মৃতিময় পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫ (৩)

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৭

করুণাধারা বলেছেন: অনেক প্রশ্নের জবাব মিলল এই পোস্টে। তাই শুধু লাইক দেবার জন্য লগইন করলাম।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রথম 'লাইক'টি দেবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। কোন কোন প্রশ্নের জবাব মিললো এই পোস্টে?

২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪২

বিজন রয় বলেছেন: প্রথম পর্ব পড়ে এসে দ্বিতীয় পর্ব পড়লাম। না হলে ধারাবাহিকতা থাকত না।

সমৃদ্ধ হলাম।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১১

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রথম পর্ব পড়ে এসে দ্বিতীয় পর্ব পড়লাম। না হলে ধারাবাহিকতা থাকত না - জ্বী, ঠিক কাজটিই করেছেন।
"সমৃদ্ধ হলাম" - আপনার উদারতা। কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৩| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:১২

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনার হজ্জ বৃত্তান্ত পড়ে সমৃদ্ধ হচ্ছি।
শুভকামনা জানবেন।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা।

৪| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৫

সুলাইমান হোসেন বলেছেন: মাশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আপণার হজ্জকে মকবুল করুন। আমিন

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪২

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমীন!
অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯

শেরজা তপন বলেছেন: দ্বিতীয় পর্বের অপেক্ষায় ছিলাম। আপনার কাছ থেকে খুঁটিনাটি অনেক বিষয় জানা যায়।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: মন্তব্যে প্রীত হ'লাম। ধন্যবাদ।

৬| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:০৯

করুণাধারা বলেছেন: আগের পর্বে আপনি একটা অ্যাপের উল্লেখ করেছিলেন, এই পর্বে সেটার নাম পাওয়া গেল। ভেবেছিলাম আপনাকে জিজ্ঞেস করবো এটা আপনার প্রথম হজ্ব কিনা! এই দুটোই প্রশ্ন ছিল। ঢাকা থেকে মদিনা পৌঁছেছেন জেদ্দা হয়ে, ইমিগ্রেশন ঢাকায় হয়ে গেছে বলেছেন, কিন্তু জেদ্দায় এয়ারপোর্টে কতক্ষন ছিলেন সেটা জানা গেল না!

আপনার লেখাটায় অনেক খুঁটিনাটি বর্ণনা আছে, সেজন্য পড়তে ভালো লাগছে । জানবার ইচ্ছা ছিল, খাওয়া নিয়ে সমস্যা হয়েছে কিনা। অনেকেই শুনেছি খাবার সমস্যায় পড়েছেন হজ্বে গিয়ে। আরাফার ময়দানে অবস্থানের এবং পাথর ছোঁড়ার অভিজ্ঞতা জানতে চাই। অপেক্ষায় থাকলাম।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: না, এই পর্বের এবং আগের পর্বের অ্যাপ দুটো এক নয়। আগের অ্যাপের নাম ছিল "লাব্বাইক", সেটা আমাদের ফোনে ডাউনলোড করে বসিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কিছু আইটি স্বেচ্ছাসেবক তরুণ তরুণী। আর এ পর্বের আগের নাম "নুসুক", এটা দিয়ে আইডি কার্ড বানিয়ে দিয়েছে সৌদি হজ্জ্ব ও উমরাহ মন্ত্রণালয়ের স্টাফ। আগের পর্বটি সম্পাদনে করে আগের নামটি উল্লেখ করে দিচ্ছি। ("অ্যাপ" বানানটি আপনারটা সঠিক, আমারটা ভুল ছিল। তাই আপনারটাই নিলাম। ধন্যবাদ)

আপনার মনযোগী পাঠ এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টির নিকট ধরা পড়া আমার অপর একটি ভুলও সম্পাদনে করে সংশোধন করে নিলাম। আমাদের প্রথম ফ্লাইটটি ছিল সরাসরি ঢাকা- মদীনা এবং ফেরারটি ছিল সরাসরি জেদ্দা-ঢাকা। প্রথমটি আমি ভুলক্রমে ঢাক- জেদ্দা উল্লেখ করেছিলাম। সেটা আপনার চোখে ঠিকই ধরা পড়েছে।

আমি খাওয়া দাওয়া নিয়ে সারাজীবন সন্তুষ্ট এবং অভিযোগহীন থেকেছি। অনেকটা যা পাই, তাই খাই, তাতেই খুশি থাকি ধরণের। আমি নিশ্চিত, এ নিয়ে সাক্ষ্য দিতে বললে আমার মা এবং স্ত্রী নির্দ্বিধায় আমার এ বক্তব্যকে জোরালো সমর্থন দিবেন। তবে এই আমারও হজ্জ্বের সময় খাওয়া দাওয়া নিয়ে কিছুটা সমস্যা বা মৃদু অভিযোগ যে ছিল না, তা নয়। সে কথা যথাসময়ে বলার আশা রাখি।

"আরাফার ময়দানে অবস্থানের এবং পাথর ছোঁড়ার অভিজ্ঞতা" পবিত্র হজ্জ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ দুটো কর্ম সম্পাদন সম্পর্কে আপনার জানার আগ্রহ দেখে প্রীত হ'লাম। আশাকরি যথাযথ পর্বে এসে এ সম্পর্কে আপনাকে বিস্তারিত জানাতে পারবো, ইন শা আল্লাহ।

আমি কায়মনে প্রার্থনা করছি, আল্লাহতা'লা যেন শীঘ্রই হজ্জ্ব পালনের আপনার এই তীব্র বাসনাকে পূরণ করে দেন এবং এ কঠিন কাজটি আপনার জন্য সহজ করে দেন!





৭| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:২২

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর ঝরঝরে লেখা।
প্রথম পর্বের লিংকটা দ্বিতীয় পর্বের সাথে দিয়ে দিলে ভালো হতো।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৪৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রশংসায় প্রীত, সুপরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
লিঙ্ক জুড়ে দিয়েছি।

৮| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৮

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: আমাদের হজ্বের সময় আইডি কার্ডের কোনো বিষয় ছিলো না। আপনি আগে মদীনা গেছেন। আমরা আগে মক্কা, তারপর মদীনা হয়ে আবার মক্কায় হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা সেরে আবার জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছি। ভাষাগত সমস্যার কারণে সৌদি পুলিশের সাথে কথা বলা কঠিন। আমার মনে হয়েছে সৌদি পুলিশ হাজ্বীগণকে সমীহ করেন। তবে মাঝে মাঝে কর্কশ হতে হয় তাদের। কারণ অনেক হাজ্বীসাহেব শৃঙ্খলা রক্ষা করেন না। লাইন ভেঙে চলেন। তখন পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। আরেকটা জিনিস দেখেছি জামাতে নামাজ পড়ার বিষয়ে পুলিশ কঠোর ভূমিকা নেয়। আজানের সময় কাছে এলেই শপিং মলে ঢুকতে বাধা দেয়। দুই হাত প্রসারিত করে বলতে থাকে "বা'দ আসসালাত" (নামাজের পর আসুন)।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৩৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমাদের হজ্বের সময় আইডি কার্ডের কোনো বিষয় ছিলো না - এখন সৌদি হজ্জ্ব ও উমরাহ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃ্ত “NUSUK ID CARD" ব্যতীত আপনি কোথাও যেতে পারবেন না। কার্ডবিহীন অবস্থায় কোথাও ধরা পড়লে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা। এই নুসুক কার্ড ছিল আমাদের সঙ্গের সাথী। রুম থেকে বের হলেই গলায় ঝুলিয়ে নিতাম। তারপরেও দুই একদিন যে কার্ড নিতে ভুলিনি, তা অবশ্য নয়। তবে কার্ডবিহীন অবস্থায় কোথাও ধরা পড়িনি। :)

"আমার মনে হয়েছে সৌদি পুলিশ হাজ্বীগণকে সমীহ করেন" - জ্বী, অবশ্যই। তাদেরকে দেখেছি সর্বাত্মক চেষ্টা করতে, হাজ্জ্বীদের সাথে সম্মানের সাথে আচরণ করতে। শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে তারা অবশ্যই কিছু কিছু জায়গায় কঠোর হতেন। কেবলমাত্র ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলেই তারা মাঝে মাঝে কিছু কিছু হাজ্জ্বীদের সাথে অসম্মানজনক আচরণ করতেন। বিশেষ করে নিষেধ সত্ত্বেও তাওয়াফের সময় অনেক হাজ্জ্বীর সেলফি তোলা এবং সেলফোনে লাইভে যাওয়াটা সৌদি পুলিশের কাছে যেমন, অন্যান্য হাজ্জ্বীদের নিকটও তেমনি বিরক্তিকর ছিল।


৯| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০০

নীল-দর্পণ বলেছেন: লেখায় আপনার খুঁটিনাটি বর্ননা এত সুন্দর হয় মনে হয় যেন আমি ঠিক ঐখানে উপস্থিত আছি। অনেক দিন পর আপনার লেখা তাও ভ্রমন কথা পড়ে খুব ভালো লাগছে। অপেক্ষায় থাকবো পরের পর্বের।
আপনাদের মত এমন আচমকাই আল্লাহ যেন আমাদের ও হজ্জ পালনের আমন্ত্রণ জানান সেই দোয়া করি মনেপ্রাণে।

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:২৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: "লেখায় আপনার খুঁটিনাটি বর্ননা এত সুন্দর হয় মনে হয় যেন আমি ঠিক ঐখানে উপস্থিত আছি। অনেক দিন পর আপনার লেখা তাও ভ্রমন কথা পড়ে খুব ভালো লাগছে। অপেক্ষায় থাকবো পরের পর্বের" - অনেক ধন্যবাদ, এতটা উদার প্রশংসা এবং ইতিবাচক মূল্যায়নের জন্য। পরের পর্ব ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে।

আল্লাহতা'লা আপনাদের মনের একান্ত বাসনা দ্রুত পূরণ করে দিন! আপনার দোয়ার সাথে আমিও শামিল হলাম।

১০| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৯

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার ধারাবাহিক হজ্জ্বের বর্ণনা পড়তে পড়তে আমার নিজের হজ্জ্বের স্মৃতি বারবার চোখের সামনে জেগে উঠছে। আমি ২০১৭ সালে হজ্জ্ব পালন করি এবং সেই সময় রওজা মোবারক ও রিয়াজুল জান্নাহ জিয়ারতের সুযোগ পেয়েছিলাম। তখন অবশ্য রিয়াজুল জান্নাহ যিয়ারতে এখনকার মত রেজিস্ট্রেশনসহ এত এত নিয়ম কানূন এবং কড়াকড়ি ছিল না। সুযোগ ছিল বিধায় তখন আমাদের একাধিক বার রওজা মোবারক যিয়ারত করার সৌভাগ্য হয়েছে। সেই মুহূর্তের অনুভূতি আজও হৃদয়ের গভীরে অম্লান—প্রবল ভিড়, প্রচন্ড গরম আর তীব্র কষ্টের মাঝেও যখন আল্লাহর প্রিয় হাবিব ﷺ–এর রওজা মোবারকের এত কাছাকাছি দাঁড়িয়ে দোয়া করার সুযোগ পেলাম, মনে হয়েছিল যেন দুনিয়া-আখিরাতের সমস্ত চাওয়া-পাওয়া এক মুহূর্তে পূর্ণ হয়ে গেছে।

আপনার বর্ণনায় আমি সেই একই পবিত্র আবেগ ও তৃষ্ণা খুঁজে পেয়েছি। ভিড়, গরম, আনুষ্ঠানিকতার সব ঝক্কি–ঝামেলার মধ্যেও আপনার ধৈর্য, সতর্কতা ও আন্তরিকতা সত্যিই হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। এটি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি ছিল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার নৈকট্য অনুভব করার এক অমুল্য অভিজ্ঞতা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আপনার হজ্জ্ব কবুল করুন এবং আপনাদের পরিবারকে রওজা মোবারকের বিশেষ বারাকাহ দান করুন।

২০১৭ সালের আমার অভিজ্ঞতা থেকে জানি—রিয়াজুল জান্নাহয় শুধু কয়েক মুহূর্ত অবস্থান করাটুকুই অমূল্য নিয়ামত। আপনার লেখা পড়তে পড়তে সেই পবিত্র মুহূর্তগুলো যেন পুনরায় জীবন্ত হয়ে উঠলো। আলহামদুলিল্লাহ, সত্যি এটি অবর্ণনীয় এক আনন্দের উপলক্ষ্য, অনির্বচনীয় এক সৌভাগ্যের বিষয়। প্রিয়তম নবীজী ﷺ–এর রওজা মোবারকের পাশে আবার কখন উপস্থিত হতে পারবো, অনন্য স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ রিয়াজুল জান্নাহর উষ্ণ পরশে আবার কখন সিক্ত হতে পারবো—সেই দিনটির জন্য আজও অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান। প্রতিটি মুহূর্ত যেন সেই দিনটির আনন্দ ও পবিত্রতার আগাম ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নিকট আপনার সুস্থতা এবং দীর্ঘ নেক হায়াত প্রার্থনা করছি।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১১

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আপনার ধারাবাহিক হজ্জ্বের বর্ণনা পড়তে পড়তে আমার নিজের হজ্জ্বের স্মৃতি বারবার চোখের সামনে জেগে উঠছে" আমিও এটাই চেয়েছিলাম। যারা ইতোমধ্যে পবিত্র হজ্জ্ব পালন করে ফেলেছেন, তারা যেন আমার এ স্মৃতিকথা পড়ে তাদের স্মৃতিগুলোকে মিলিয়ে নিতে পারেন এবং নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে চিত্তসুখ লাভ করেন। কারণ, বাহ্যিকভাবে ও শারীরিকভাবে পবিত্র হজ্জ্বপালনকে যতই কষ্টকর ও চ্যালেঞ্জিং মনে হোক না কেন (বিশেষ করে বয়স্ক লোকজনের জন্য), অভ্যন্তরীণ অনুভবে এবং অন্তর্দৃষ্টিতে হজ্জ্বের স্মৃতি সবসময়ের জন্যই চিত্তসুখ জাগরিত করে। আর যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও এখনো হজ্জ্ব পালন করেন নাই, তারা যেন এ পোস্ট পড়ে হজ্জ্বপালনে উদ্বুদ্ধ হন এবং আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে নোটে রাখতে পারেন। (আমিতো হজ্জ্ব কিভাবে পালন করতে হয়, তা কাউকে শেখানোর প্রয়াস পাচ্ছি না।)

"তখন অবশ্য রিয়াজুল জান্নাহ যিয়ারতে এখনকার মত রেজিস্ট্রেশনসহ এত এত নিয়ম কানূন এবং কড়াকড়ি ছিল না" জ্বী, এসব নিয়ম কানুন সম্ভবতঃ ২/৩ বছর আগে থেকে চালু করা হয়েছে, নিয়ম শৃঙ্খলা কঠোরভাবে রক্ষার জন্য।

পোস্ট পড়ে আপনার আবেগ ও অভিজ্ঞতার কথা এখানে অল্প কথায় হলেও, স্পষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার প্রেরণাদায়ক মন্তব্য ও উদার প্রশংসা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আন্তরিক দুআ, শুভকামনা এবং সুস্থতা কামনা আমাকে স্পর্শ করেছে, এজন্য অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

আমি সম্প্রতি ঘনঘন চক্ষুপীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছি। এজন্য ডাক্তারের পরামর্শে লেখালেখি বন্ধ রেখেছি, তাই ব্লগেও আর আসা হয় না। তাই আপনার এ মন্তব্যটির উত্তরদানে অনভিপ্রেত বিলম্ব ঘটে গেল! অন্য আরও কয়েকজন পাঠকের মূল্যবান মন্তব্যও জবাবহীন রয়ে গেছে। আপনার এবং তাদের কাছে এ বিলম্বটুকুর জন্য আমি আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.