![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে বলতে গেলে সবাই নিজের ভাল দিকগুলো তুলে ধরতেই ব্যস্ত থাকে। নিজের সীমাবদ্ধতাগুলো কেউ বলে না, বলতে চায় ও না। নিজেকে সবচে ভাল আর নির্ভুল প্রমাণ করার এই প্রতিযোগিতায় বোধকরি বেশ পিছিয়ে আছি। এ নিয়ে কোন আক্ষেপ নেই, কোন হতাশাও নেই... নিজেকে নিয়ে গর্ব করে বলার মত এখনো কিছুই করতে পারিনি! না পারি ভাল করে বলতে, না লিখতে। প্রতিবাদী নই, দুর্বার সাহসী নই, অসম্ভব মেধাবী বা কঠোর পরিশ্রমী...কোনটাই নই! সাদামাটা শহুরে জীবনে বেড়ে.উঠেছি..কিন্তু অভ্যস্ত হতে পারিনি। যখনই যান্ত্রিকতায় হাঁপিয়ে উঠি, চলে যাই পাহাড়, সমুদ্র বা অজানা কোন গ্রামে...অচেনা পথ ধরে হাঁটতে বেশ লাগে। প্রতিদিন নতুন করে শিখছি, নিজেকে আরও জানছি। ভাল আছি...
জাফলং এ শীতকাল পাথর উত্তোলনের জন্য সবচে ভাল সময়। পাথর উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ সময় হাজার হাজার পাথর শ্রমিক নিয়োগ করে। প্রায় দুইশতাধিক পাথর ভাঙা কারখানা প্রতিদিন বিপুল পরিমান পাথরচূর্ণ দেশের বিভিন্ন নির্মাণস্থলে সরবরাহ করে থাকে। পিয়াইন নদীর তীরে ব্যস্ত এই বল্লার ঘাটে গিয়েছিলাম সেই সব পাথর শ্রমিকদের সাথে পরিচিত হতে, জীবন্ত বল্লার ঘাটের সারাদিনের কর্মব্যস্ততা তুলে ধরতে।
দিনের শুরু খালি নৌকা দিয়ে। রহমান (২৫), একজন পাথর শ্রমিক,পাথর সংগ্রহ করেই তার সংসার চলে। পাথর বহনের জন্য বিশেষ
ভাবে তৈরি নিজের 'বুরকি' নৌকাকে পানি সেচের মধ্যে দিয়ে প্রস্তুত করাই তার প্রথম কাজ...
স্টোন মাইনে যাওয়া খুব সহজ নয়। নতুন ব্রিজ তৈরির জন্য দেয়া বাধ, পিয়াইন নদীর স্রোতকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুনে। মোটরচালিত নৌকা ছাড়া এ পথ পার হওয়া শক্ত। আব্দুল কাদির (৫৭) এর মত একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মাঝি ও পাথর শ্রমিক কে কয়েক মিনিটেই হাঁপিয়ে উঠতে দেখে এ ধরনা পাকা হয়।
স্টোন মাইনে যাওয়ার পথে আমি দেখেছি নারী- পুরুষকে পাশাপাশি কাজ করতে...
পরিচিত হয়েছি কাহারের (৫৩) পরিবারের সাথে। আমি তাকে দেখেছি তার ছেলে, বউকে নিয়ে একসাথে পাথর সংগ্রহ করতে। পুরো পরিবারের একটাই লক্ষ্য...যতটা সম্ভব পাথর সংগ্রহ করা!
স্টোন মাইন। ব্যস্ত, কোলাহলপূর্ণ। বয়স্ক শ্রমিকরা এ পর্যন্ত আসতে পারে না। এটাই বাংলাদেশ-ভারতের নদীপথের সীমান্ত। সবচে বড় আর বেশি পাথর কতটা তাড়াতাড়ি সংগ্রহ করা যায়, সে লক্ষ্যই সবার।
পিয়াইনের স্ফটিক স্বচ্ছ পানির নিচে পাথর খুঁজে পাওয়া খুব কথিন নয়। কিন্তু বড় পাথর গুলোর জন্য গভীরে ডুব দিতে হয় বৈকি !
পাথরে ভরে যাওয়ার সাথে সাথেই নৌকা গুলো দ্রুত ফেরত আসে বল্লার ঘাটে। যেখানে স্তুপ করা পাথরগুলো ট্রাকে করে পাথর ভাঙা কারখানায় নিয়ে আসা হয়।
অলিখিত এ প্রতিযোগিতা চলতে থাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত...
মহিলারা বড় পাথর সংগ্রহের সাথে জরিত না। তারা বালি পাথর সংগ্রহ করে। নুরি পাথর আলাদা করে..
ছোটরা নুরি পাথর ভর্তি নৌকা ঘাটে নিয়ে আসে, স্তূপ করে রাখে। আমিন (১৪) আর রাজিব (১৭) তিন বছর ধরে পাথর শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। দুজনেই তাদের মা বাবার সাথে কাজে সাহায্য করে
যতক্ষণে ঘাটে পাথরের স্তুপ জমা হতে থাকে, ততক্ষণে বড় আর ভারী পাথরগুলো ট্রাকে করে পাথর ভাঙা কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সারাদিন চক্রাকারে এ কাজই হতে থাকে।
পিয়াইন নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহমান। শুধু পানিই নয়, নদীপথে স্রোতের সাথে সাথে পাথর ও আসে। সারাদিন শত শত নৌকা এ নদী থেকে পাথর উত্তোলন করে, সংগ্রহ করে। তাই, এ নদীর অর্থনৈতিক গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। হাজার হাজার শ্রমিক এ নদী আর পাথরের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে।
এখানে রাত নেমে আসে খুব তাড়াতাড়ি। সব নৌকা এখনো ঘাটে এসে পৌছায়নি। মোহাম্মাদ আসাদ (৪২) নৌকাগুলোর জন্য অপেক্ষা করে। সারাদিনের পরিশ্রমের পর এ সময় তা একটু জিরিয়ে নেয়ার
এভাবেই বল্লার ঘাটে আরেকটা ব্যস্ত দিন কেটে যায়। বাকি থাকা নৌকা গুলো আরও কিছু নুরি পাথর নিয়ে ঘাটের দিকে ফিরতে থাকে...
______________________________________
আশাকরি সবার প্রাসঙ্গিক এবং গঠনমূলক মন্তব্য আমাকে আরও পোস্ট দিতে উৎসাহিত করবে।
[অনুমতি ছাড়া ছবিগুলো অন্য কোথাও ব্যাবহার না করার জন্য অনুরোধ করছি]
০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:১৪
কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন: ধন্যবাদ এবং ধন্যবাদ!
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:০১
অদম্য১২৩৪ বলেছেন: +++++
০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:১৭
কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন: ব্লগে ++++++ জিনিশটা এতদিন দেখেছি।
এবার পেলাম। ধন্যবাদ
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:০১
শান্তা273 বলেছেন: ছবি গুলো সুন্দর হয়েছে।
ভালো লাগল............
০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:২১
কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন: ধন্যবাদ। সময় করে আসছে শীতে জায়গাটা ঘুরে আসবেন। তাড়াহুড়ো করে নয়....সময় নিয়ে। শীতের ওই সময়টা মেঘালয়ের পাহাড়, মেঘ, কুয়াশা আর পিয়াইন নদীর বরফ ঠাণ্ডা পানি মিলেমিশে একাকার অবস্থা!
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:২৪
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: কিভাবে যেতে হবে, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা কেমন, খরচপাতি কেমন হবে এগুলো নিয়ে একটা নোট থাকতে পারতো!
০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:৪৪
কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন: আমি আসলে কখনই ভ্রমন বিষয়ক লেখালেখিতে আগ্রহী নই। সে কাজটা অনেক ব্লগারই সার্থকতার সাথে করে আসছে। আমার ছবিব্লগ গুলোর মূল উদ্দেশ্য বাংলেদেশের বিভিন্ন পজেটিভ দিক সবার সামনে তুলে ধরা, বিভিন্ন এলাকার ভিন্ন ভিন্ন পেশার, ধর্মের, আচার-অনুষ্ঠানের সাথে সবাইকে পরিচিত করানোর। আমার অধিকাংশ ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য সেই এলাকার মানুষদের জানা, এবং তাদের জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিক ছবিতে ধরে রাখা। আমি ভ্রমণের সময় আরামের দিকগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে সবচে কম খরচে বেশি জায়গা কভার করার লক্ষ্যে থাকি।
তবে সামনের লেখাগুলতে আমি যে ভাবে এবং যে পথে ভ্রমণ করেছি, তার ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১২:৫৯
তিথির অনুভূতি বলেছেন: ++ ছবিতে
০৭ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১:৪০
কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
এরপর জাফলং গেলে বল্লার ঘাট ঘুরে আসবেন।
শুধু দেখে বা ছবি তুলে না, মানুষগুলোর সাথে পরিচিত হবেন। পুরোপুরি আনন্দটা তখনই পাওয়া যাবে।
৬| ৩০ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:৫৪
িনদাল বলেছেন: +++++++++
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১:০৫
কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন: ধন্যবাদ িনদাল কে। অনেকগুলো প্লাস !!
৭| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ৮:৩৪
ৈহমনতী বলেছেন: পিলাচ।
আহারে কই সুন্দর। আমি যাইতেও পারুম না।তুলতেও পারুম না
০৬ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:৩৩
কুমার বিশ্বজিৎ বলেছেন: ধন্যবাদ ৈহমনতী।
জায়গাটা খুব দুর্গম নয়।
এক দিনেও কিন্তু এই লোকেশন টা ঘুরে আসা সম্ভব ।
বন্ধু বা পরিবার - সবাই মিলে প্ল্যান করে ফেলুন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:৫৭
জীবনানন্দদাশের ছায়া বলেছেন: চমৎকার এবং চমৎকার!