নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চিলেকোঠার ঘুলঘুলি

ভয়ংকর নেশা লেগেছে,তোমার ঠোঁটের সেই লাল রক্তের নেশা।

কাব্বিক্য

আমি মদ এর বোতলে কোক ঢুকিয়ে পান করে/ সবার সম্মুখে মাতলামি করি/ আর কিছু উল্টা পাল্টা শব্দমালা ব্যবহার করে কবিতা লিখে/ নিজেকে নিয়ে আতলামি করি...

কাব্বিক্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প-কাঠের মূর্তি

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৬

রাতের ঢাকার নীরবতায় অন্য রকম এক মাদকতা আছে। সবাই কর্ম ব্যস্ত দিনের শেষে বাড়ী ফিরে যায় কান্ত ঘাম মাখা শরীর নিয়ে। আর তখনি অন্য একটি দল বের হয় নিজের জীবিকার তাগিদে। অভুক্ত পেটে একটি দানা ফেলার জন্যলজ্জা ভুলে নিজেকে উন্মুক্ত করে বিছানায়! সিগন্যালের বাতির সামনে নিজের গাড়ীতে বসে আছে রাজীব। জানালার দিকে তাকিয়ে আছে উগ্র সাজের রমণীদের দিকে। হঠাত্ এক কোণে দাড়িয়ে থাকা একটা কিশোরীর দিকে চোখ গেল তার।হাতের ইশারায় কাছে আসতে বললো।



:যাবেন?

-যাওনের লাইগাই তো খাড়াইয়া আছি।

:আচ্ছা তাহলে চলেন।

-যামু আগে কন কত সময়ের লাইগা?

:সম্পূর্ণ রাতের জন্য।

-তাহলে কিন্তু ৬,০০০ টাকা দেওন লাগব। অর্ধেক এখন দিতে হইব। কামের পরে সহজে কেউ টাকা দিতে চায় না। রাজী থাকলে কন।



কোন কথা না বলে রাজীব ৬,০০০টাকা মেয়েটির হাতে তোলে দেয়। এত টাকা মেয়েটি একসাথে প্রথম দেখেছে তা তার চোখ দেখেই রাজীব বুঝতেপারলো। মেয়েটি টাকা নিয়ে একটা দোকানে গিয়ে রেখে এসে গাড়ীতে উঠলো। রাজীব কোন কথা না বলে গাড়ী চাবি ঘুরিয়ে স্টার্ট করে দিলো।



-স্যার কি মরা-মরা গান শুনেন! হিন্দী গান নাই? ওলা-লা-ওলা-লা বাজান না স্যার!!

বলেই মেয়েটা হেসে ওঠে। আড় চোখে রাজীব মেয়েটার মুক্তর মতন সাদা দাঁতের রিনিঝিনি শব্দ মাখা হাসি উপভোগ করতে থাকে গাড়ী চালাতে চালাতে।

গাড়ী একটা অন্ধকার বাড়ীর সামনে এসে দাড়ালো। হঠাত্ অন্ধকার হতে দারোয়ান গেইট খোলে দিয়ে যেখান থেকে এসেছিলো সেখানে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। গাড়ী বন্ধ করেরাজীব মেয়েটাকে দাড়াতে বলে বাড়ীর বাতি জ্বালাতে এগিয়ে গেল। রাজীব চলে যাওয়াতে মেয়েটা অন্ধকারে প্রচন্ড ভয় পেতে লাগলো। হঠাত্ একটা অস্পষ্ট কাতর নারী কন্ঠ তার কানে আসলো। যে তাকে বলছে "পালাও, পালাও এখান থেকে"!! ঘাড় ঘুরানোর সাথে সাথে বাড়ীর বাতি জ্বলে উঠলো। আর সে দেখতে পেল রাজীব তার পিছনেদাড়িয়ে আছে!!









(২)

-দুঃখিত। বাসার বৈদ্যুতিকমেইন বোর্ডে একটু সমস্যা ছিলো।

:ও আইচ্ছা স্যার।

-আপনি মনে হয় ক্ষুধার্ত। চলেন কিছু খাবেন।

:না স্যার কিছু খামু না।

-আচ্ছা আপনি না খান। আমি খাব। আপনি দেখবেন বসে বসে।

রাজীব হেসে উঠে। মেয়েটার চোখে সে স্পষ্ট ভয় দেখতে পেয়েছে। মেয়েটি নিশ্চই ভাবছে একজন পতিতাকে এত সম্মান দিচ্ছে কেন ছেলেটা!খাবার টেবিলে আর কোন কথা হল না।

খাবার পর রাজীব মেয়েটাকে নিয়ে নিজের রুমে চলে আসে। প্রায় অন্ধকার রুম। ছোট ছোট হলুদ বাতি দুটি ঝুলছে দুই কোণায়। যা সম্পূর্ণ রুমটাকে আলোকিত করতে পারেনি। অন্ধকারে হাটতে গিয়ে একটা বস্তুর সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় মেয়েটা। ওঠতে গিয়ে ঠান্ডা একটা বস্তুতে স্পর্শ করে ভয় পেয়ে যায় সে। আধ আলোতে বুঝতে পারে এটা একটা কাঠেরনারী মূতি!! অসাধারণ দক্ষতাদিয়ে তৈরী করা হয়েছে। প্রথম দেখাতে যে কেউ ভাববেএটা জীবন্ত! হঠাত্ সে একটা গম্ভীর কন্ঠ স্বর শুনতে পেল "কাপড় খোলে ঐ চিয়ারটায় বসো"! অনিচ্ছ্বা সত্ত্বেও কাপড় খোলে সে। ছেলেটার ব্যবহারে মনে হয়েছিলো ছেলেটা অন্যরকম। কিন্তু না ঐ একি আদিম খেলা সে ও খেলতে চায়। শুধু প্রথমে কিছু ভদ্রতা দেখিয়েছে এই যা। কিছু করার নেই টাকা নিয়েছে সে। এখন যা বলবে তাই করতে হবে। চেয়ারে বসারপর হাত দুইটা হাতলে রাখে সে। হঠাত্ করে বুঝতে পারে তার কব্জি শক্ত কিছু দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোখ ধাঁধানো আলোতে রুমটা ভরে যায়। আলো চোখ সওয়ার পর সে দেখতে পায় ছেলেটা বড় একটা কাঠের খন্ডের মধ্যে করাত,হাতুড়ী আর ছেনি দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ভয় পেয়ে যায় সে। চিত্কার করতে থাকেতাকে মুক্ত করার জন্য। কিন্তু ছেলেটার ঐ সবে কোন কান নেই। সে এক মনে তার কাজকরে যাচ্ছে। হঠাত্ একবার কি দু'বার চোখ তুলে চাচ্ছে তার দিকে। তারপর আবার কাজে ডুব দিচ্ছে। আর থাকতে না পেরে সে অশাব্য-অশ্লীল ভাষায় গালি দিতে থাকে ছেলেটিকে। এতে কাজ হয়েছে সে ভাবলো। ছেলেটা এগিয়ে আসছে তার দিকে। কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুলতে যাচ্ছিল কিন্তু তার আগেই ঘাড়ের পিছনে কুট্টুস করে পিপড়া কামড় দেয়। জড়িয়ে পড়াকথা কন্ঠে নিয়েই জ্ঞান হারায় সে!









(৩)

চোখ খুলে তাকায় সে। মাথা ধপ ধপ করছে। শরীরের কোন অস্তিত্ব বুঝতে পারছে না সে! চেয়ে দেখে ছেলেটা এখনো কাজ করে যাচ্ছে কাঠের খন্ডটার মাঝে। কিন্তু এখন আর সেটাকে শুধু কাঠের খন্ডবলে মনে হচ্ছে না। সেটা এখন একটা নারীতে রূপ নিয়েছে। অসাধারণ লাগছে দেখতে কাঠের নারীকে। কেমন যেন জীবন্ত মনে হচ্ছে। স্তন, হাত, পা সব কিছু বাস্তবিক লাগছে। মুখের দিকে তাকায় সে। খুব পরিচিত মনে হচ্ছে চেহারাটা। চোখ এখনো দেওয়া হয়নি। তাই চোখের দিকটায় কালো গর্ত। হঠাত্ চিত্কার দিতে চায় সে। কিন্তু কোন আওয়াজ বের হয় না তার গলা দিয়ে। কারণ তার রিনিঝিনি কন্ঠের মূল যন্ত্র জিহ্বাটা এখন শুভা পাচ্ছে কাঠের নারীর মুখে!! ছেলেটা উঠে দাড়িয়েছে। আবার এগিয়ে আসছে তার দিকে।

হাপিয়ে উঠেছে রাজীব। রক্ত মাখা হাত দিয়ে কপালের ঘাম মুছে সে। আর অল্প কাজ বাকী। এগিয়ে গেল মেয়েটার দিকে। শেষবারের মত নগ্ন চোখ বিহীন, চুল বিহীন, স্তনবিহীন মৃত রক্তাক্ত মেয়েটার দিকে তাকালো। বাইরে আলো ফুটে যাচ্ছে। আরঅল্প সময় আছে হাতে। ফ্রেশ হয়ে কাঠের মূর্তি নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে সে। গাড়ী দিয়ে বেড়িয়ে যাবার পূর্বে দারোয়ানকে লাশের ঠিকানা লাগাতে বলে যায়!!









(৪)

-দেখেছেন তারেক সাহেব। রাজীব আসলেই একটা জিনিয়াস। এইবার ও তার তৈরীমূর্তিটা শ্রেষ্ঠ হয়ে গেল।

:নাহ! রাজীব সত্যি অনেক গুনী শিল্পী। ওর কাঠের মূর্তিগুলি দেখলে মনে হয় একদম বাস্তব। যেন এখনি কথাবল উঠবে!! এই যে বলতে না বলতে রাজীব চলে এসেছে।



তারেক সাহেব রাজীবের সাথে তার মেয়ের লাবণীর পরিচয় করিয়ে দিলেন। লাবণী উচ্ছ্বাসের সাথে রাজীবের হাত ধরে তার একটা মূর্তি বানিয়ে দেবার বায়না ধরলো। এটা ও বললো যত টাকা দরকার তার বাপী দিবেন। রাজীব কোনকথা না বলে শুধু একবার আপাদমস্তক সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া মেয়েটাকে দেখে নিলো। আর গুপ্তধন প্রাপ্ত দস্যুর চকচক করে উঠা চোখ নিয়ে নিরবে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো!!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:১৭

মর্গের লাশ বলেছেন: ভালো লিখেছেন। থিম টা মারাত্মক। সাইকথ্রিলার টাইপ। তবে লেখা টা আরও একটু শক্তিশালী হওয়া উচিৎ ছিল। অভারল ++++++++++++

২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৫৯

রোজেল০০৭ বলেছেন: ভালো লাগা জানবেন।

থিমটা আসলেই চমৎকার।

৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০১

মোমেরমানুষ৭১ বলেছেন: কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম

৪| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:০৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: দ্রুত শেষ হয়ে গেল গল্পটা। আমার মনে হয় আরও একটু ঘসামাজা করা দরকার, তাহলে লেখাটা ভালো হবে আরও । এরকম থীমের আরও কয়েকটা গল্প পড়েছিলাম।

শুভকামনা আপনার জন্য।

৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫০

এম ই জাভেদ বলেছেন: আরেক্তু টেনে লম্বা করা গেলে গল্পটি আরও জমে উঠত। মনে হল শুরু না হতেই হঠাৎ শেষ .........।

৬| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনুসরণে নিলাম আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.