নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Don\'t be afraid to tell the truth. Because the victory of truth is inevitable.

কাওছার আজাদ

সত্য ন্যায়ে সন্ধানে, আকাশে উড়িয়ে শান্তির নিশান। মুক্তমনে উদার কণ্ঠে, গেয়ে যাবো সত্যের জয়গান।

কাওছার আজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'ব্রাজিল সাপোর্টারদের খুব বুদ্ধি\'

২৩ শে জুন, ২০১৮ রাত ১:০১

দ্রষ্টব্য, ব্রাজিল ভক্তরা এই পোস্ট পড়ার আগে হাই প্রেসারের ট্যাবলেট (ম্যাটোপ্রোলন) সাথে রাখুন। কেউ হার্ট এ্যাটাক করলে কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
.
আমার বউ ব্রাজিলের সাপোর্টার আর আমি প্রধানত স্পেনের সাপোর্টার। কিন্তু মেসির খেলা ভালো লাগে তাই আর্জেন্টাইনদের একটু একটু ভক্ত। তো যাহোক, কথাখান হচ্ছে- আর্জেন্টিনা যখন হারে তখন আমার বৌয়ের কাণ্ড-কাহিনী দেখলে ব্লু হোয়েল গেমের কথা মনে পড়ে যায়। কী তার আনন্দ মাইরী! আর আমাকে 'উস্কানি দেয়া, রাগানো ও মেসি কেলা পারে না' এসব বলে খুব ক্ষেপায়। আর ব্রাজিল জিতলে তো নাগিন ড্যান্স শুরু করে দিবে। এক কথায় ব্রাজিল+নেইমারের উগাণ্ডা ভক্ত।
তার এসব কীর্তি-কাণ্ড দেখে মাঝে-মধ্যে টিভির উপর রাগ ঝাড়তে ইচ্ছে করে। কী করব? স্ত্রী তো! তার সাথে সারা বছরে যত ঝগড়া হয় না, তার থেকে বেশী ঝগড়া হয় ফুটবল খেলা শুরু হলে।
মেয়ে মানুষ এত ফুটবল খেলা (ব্রাজিলের) ভক্ত তা আগে জানতাম না। বিয়ের পর তা অক্ষরে অক্ষরে টের পেলাম। কেন যে পাঁচ বছর আগে বিয়ে করি নাই? তাহলে হয়তো নব্য সেভেন আপের কথাটা বলে মুখ বন্ধ করে রাখতে পারতাম। শালার আমার একখান কপাল রে! মাঝে-মধ্যে আল্লাহকে কই- 'আল্লাহ্, ব্রাজিল ভক্ত একটা বউ দিয়েছ, কিন্তু পাঁচ বছর আগে দিলে কী হতো!'
আবার মনকে বলি- 'ব্রাজিল ভক্তদের কী হৃদয় বলতে কিচ্ছু নাই? তাদের মনে কী মায়া-দরদ নাই? যদি থাকে, তাহলে তারা কী করে এত ঝগড়া করতে পারে?'
যাহোক, নিজের স্ত্রীর নামে অত অপবাদ দেয়া ঠিক হচ্ছে না। এসব তথ্য ফাঁস হলে আবার বড় ধরনের অত্যাচার হলেও হতে পারে।
.
কালকে রাতের ঘূর্ণিঝড়ের বয়ান পেশ করেই আমি আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য সমাপ্তি করব। তো বয়ানখান হচ্ছে- আর্জেন্টাইন তিন গোল খাওয়া নিয়ে। কালকে যখন প্রতিপক্ষ তিন গোল দিয়ে জিতে গেল আর আর্জেন্টিনা হারল, তখন আমার স্ত্রীর আনন্দ চূড়ান্ত পর্যায়ে। আমাকে রাগানোর জন্য উঠে-পড়ে লাগল। এক সময় আমার কপালে হাত দিয়ে বলতে লাগল, 'ইহ্ মা, তোমার প্রচণ্ড জ্বর এসেছে! এই লও তিনটা প্যারাসিটামল। তিনটা তিন বেলা খেলেই জ্বর পালাবে।'
শ্বশুরের বেটির কথা শুনে মন মেজাজ তেরো-চৌদ্দতে উঠে গেল। বোঝার বাকি রইল না যে, কত্তবড় উন্মাদ হয়েছে। ঠাণ্ডা রাগে তেড়ে হয়ে বললাম- "সোনা পাখি, তোমরা ভুলেই গিয়েছ সেভেন আপের কথা! সমস্যা নাই, আবার স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে। তখন 'নাপা এক্সট্রা' কিংবা 'সিপ্রো এস' দিয়েও কাজ হবে না! আর এক ডজন 'ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার' পিল সাথে রাখিও অলওয়েজ।"
আমার এসব কথা শুনে আমার বৌ হিন্দি ভাষায় কি যেন কী সব বলল, আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না।
.
আচ্ছা যাইহোক, ওটা তো কালকের খেলা। এখন আজকের 'Brazil Vs Costa Rica' ম্যাচ নিয়ে কিছু বলা যাক। পুরো নব্বই মিনিটের খেলা শেষ। ইতোমধ্যে কেউ কাউকে গোল দিতে পারেনি। তবে যখন ২৬ মিনিটের মাথায় ব্রাজিল গোল করল, তখন আমার বৌ বলে উঠলো, 'ইয়া...' কিন্তু দুঃখের বিষয়- অফসাইটের কারণে গোলটি হলো না। তারপর খেলা হার্ডভাবেই চলছে। তখনও বৌয়ের মুখে কোনো হাসির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। সময় শেষ হয়ে গেল। অতিরিক্ত মিনিট বেড়ে দেয়া হলো। ব্যস, এতেই নেইমারের শট থেকে গোল আসল। কিছুক্ষণ পর কওতিনহোর থেকে একটা গোল। এবার ব্রাজিলের ভক্ত ওরফে আমার স্ত্রীর নাগিন ড্যান্স দেখে কে!!
.
আমি মনে মনে খেলার আগেই ভেবে রেখেছিলাম- 'এর আগে ৯ বার ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়েছিল কোস্টারিকা। যার মধ্যে মাত্র একবারই জিতেছিল তারা। সেটিও প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা। এ ছাড়াও দলীয় শক্তি, ঐতিহ্য, চিটারী বুদ্ধি, ফাউল খেলা ও বুদ্ধিমত্তা কোনো দিক দিয়েই ব্রাজিলের ধারে কাছে নেই কোস্টারিকা। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর দল হলো ব্রাজিল। অপর দিকে কোস্টারিকা আছে ২৩ নম্বরে। সেই হিসেবে কোস্টারিকার কাছে ব্রাজিল হার মানবে; প্রশ্নই আসে না।' তাই আগে থেকেই চোখ বন্ধ করে ভেবে নিয়েছি বৌয়ের প্রিয় দল ব্রাজিল জিতবে। সাথে বৌয়ের ইতরস্বভাবী আনন্দ দেখার জন্যও মানসিকতা তৈরি করে রেখেছি। অবশেষে তাই হলো।
.
এবার বৌ আমাকে বলতেছে- 'ব্রাজিল ইজ্রিয়েল! নেইমার ইজ বস! আর্জেন্টিনা কেলা পারে না! মেসির জন্যই তারা (আর্জেন্টিনা) পেনাল্টিতে জিততে পেরেছে।'
তার এসব উস্কানীমূলক কথা শুনে ইচ্ছে করছিল- তার পিঠে পাঁচ কেজি ওজনের থাপ্পড় দেই। কিন্তু নাহ্, স্ত্রী হিসেবে সে আমার কাছে শ্রেষ্ঠ। তাকে দেখলে খুব মায়া লাগে। তাই জোর গলায় কিছু বলতেও পারি না।
তবে চুপ থাকলে আরো বেশি মাথায় উঠবে। তাই অট্ট হাসি দিয়ে বলতে লাগলাম, 'Today... Neymar slams the ball to the deck in frustration and the referee pulls out the yellow card.'
বৌ মিনমিন করে বলতে লাগল, 'ফাউল করে হলুদ কার্ড খাইছে তো কী হইছে? ম্যাচ তো হারিনি।'
আমি মনে মনে ভাবলাম- 'সত্যিই ব্রাজিল ও ব্রাজিলের ভক্তরা অনেক বুদ্ধিমান!'
.
'ব্রাজিলের ভক্তরা খুব বুদ্ধিমান'/কাওছার আজাদ (কচু)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.