![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
বিয়ের শপথে আমরা বলি সুখে-দুঃখে পাশে থাকব। কিন্তু সেই শপথ টুনি নামের এক নারী যেভাবে পালন করেছেন, তা আজকের সমাজে অলৌকিক বললেও কম বলা হয়। ১৬-১৭ বছরের এক তরুণী, বিয়ের পর খুব স্বাভাবিকভাবেই নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। সংসার, সন্তান আর ভালোবাসার ভরপুর এক জগৎ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সন্তানও এসেছিল নাম রাখা হয়েছিল আজমাইন দিব্য। কিন্তু সুখ বেশিদিন থাকল না।
দাম্পত্য জীবনের ঠিক শুরুতে এক খবর যেন সবকিছু এলোমেলো করে দিল। জানা গেল, তারেকের দুটি কিডনিই প্রায় বিকল। নিয়মিত ডায়ালাইসিস না করালে সে বাঁচবে না। যেকোনো সাধারণ মানুষ হয়তো ভেঙে পড়ত, স্বামীকে ছেড়ে চলে যাওয়াটাই হয়তো “বাস্তবতা” মনে করত। কিন্তু টুনি ছিলেন অন্যরকম। তিনি হাত ধরলেন, চোখের পানি মুছলেন আর বললেন: "তুমি একা নও, আমি আছি।"
স্বামীর চিকিৎসার খরচ, সন্তান, সংসার— সব কাঁধে তুলে নিলেন টুনি। ঢাকায় ফিরে বিউটি পার্লার খুললেন, বুটিকস শুরু করলেন। ৪০-৫০ হাজার টাকা উপার্জন করতেন প্রতি মাসে। সব টাকা খরচ করতেন তারেকের চিকিৎসায়। বিয়ের গয়না, জমানো টাকা, এমনকি মায়ের পেনশনের অর্থ সব ব্যয় হলো স্বামীকে বাঁচাতে। বছরে ৮-১০ লাখ টাকা, এক যুগ ধরে ভারতে চিকিৎসা… কে করে এতটা ? কেবল একজন ভালোবাসার মানুষ।
২০১৯ সালে যখন ডাক্তাররা জানালেন এবার কিডনি না দিলে কিছুই করার থাকবে না, তখন পরিবারের কেউ রাজি হলো না। তখন টুনি বললেন "সে আমার স্বামী, আমার সন্তানের বাবা, আমি তাকে মরতে দেব না।" নিজের শরীর থেকে কিডনি দিলেন। ২৬ অক্টোবর, দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হলো। টুনি সাত দিন আইসিইউতে কাটালেন ব্যথা, রক্ত, দুর্বলতা সব সয়ে হাসলেন, কারণ তারেক সুস্থ হচ্ছেন। এতটাই ভালোবাসতেন।
আইসিইউ থেকে কেবিনে এসেই যেন পাল্টে গেল মানুষটা। যিনি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন স্ত্রীর কারণে, সেই লোকটা স্ত্রীকে বকাবকি, চিৎকার, অপমান করতে শুরু করল! অপারেশনের জন্য টাকা দিতে এক খালা দেরি করেছিলেন সেই কারণে স্ত্রীকে হেনস্তা করলেন হাসপাতালের ভেতরেই। চিকিৎসকেরাও স্তম্ভিত। অপারেশনকারী ডাক্তার বলেছিলেন : “তোমার জন্মদাতা যদি মা হয়, তবে এই নারী তোমার জীবনদাতা। তুমি কি মানুষ?” কিন্তু ততদিনে তারেকের ভেতরের পিশাচ জেগে উঠেছে।
বাংলাদেশে ফিরেই সে যেন টুনির সব স্বপ্ন ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লাগল। উপার্জনের সব টাকা চাইত নিজের হাতে, শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা আনতে চাপ দিত। পরে শুরু করল অনলাইন জুয়া আর পরকীয়া। আর যে নারী তাকে নতুন জীবন দিয়েছে, তাকেই মারধর শুরু করল। হ্যাঁ, টুনির গায়ে হাত তুলত, এমনকি পেটের অপারেশনের দাগে লাথি মারত যেন শুধু কিডনি না, আত্মাটাও কেড়ে নিতে চায়।
পরকীয়া চলছিল এক ডিভোর্সি নারীর সঙ্গে। মোবাইল ঘেঁটে সব প্রমাণ পান টুনি। প্রশ্ন করলে মারধরের পরিমাণ বাড়ে। একসময় বাড়ি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। থানায় অভিযোগ দিলে, পরে নাটক করে সেটাও তুলে নেয়। শেষ পর্যন্ত যখন মামলা করে, তারেক গ্রেপ্তার হয় কিন্তু জামিনে বের হয়েই ফের প্রেমিকার বাড়িতে গিয়ে ওঠে। এবং সেখান থেকেই আবার হুমকি “ডিভোর্স দাও, বাড়িটা আমার নামে লিখে দাও।”
আজ টুনি জানেন, তার শরীর আর আগের মতো নেই। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন হয়তো বেশিদিন বাঁচবেন না। তবু কষ্টটা মৃত্যুর ভয় নয়, কষ্টটা এই : যাকে প্রাণ দিলেন, সেই প্রাণটাই তাকে কুঁড়ে খাচ্ছে। টুনি বললেন , "আমি চাই না আমার মতো কোনো মেয়ের জীবন এভাবে শেষ হোক। আমি যেন শেষ সতর্কবার্তা হই অন্য নারীদের জন্য।"
টুনির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন অনেক আইনজীবী। তারা বলছেন : কেবল নারী নির্যাতনের মামলা নয়, মানবদেহের অঙ্গ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগেও মামলা হতে পারে। টুনি ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন, এবং নিরাপত্তা আদেশ নিতে পারেন। তবে প্রশ্ন একটাই এই সমাজ কি টুনিদের পাশে দাঁড়ায় ? নাকি এমন ঘটনা ভুলে যায় ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে ?
যে নারী তারেককে নতুন জীবন দিয়েছে, সে নারীকেই সে লাঞ্ছিত করেছে এ ঘটনা কেবল আইন ভাঙেনি, বিশ্বাস ও ভালোবাসাকেও ভেঙে চূর্ণ করেছে। তারেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই এখন একমাত্র উপায়, যেন আর কোনো পুরুষ প্রেমের মুখোশ পরে নারীর জীবন চুরি করতে না পারে। এই লেখা কোনো গল্প নয়। এটা একজন মা, এক স্ত্রীর, এক নারীর আর্তি — একটি প্রশ্ন: “ভালোবাসা কি আজকের সমাজে পাপ হয়ে গেছে?” আমরা যদি আজ টুনির পাশে না দাঁড়াই, কাল হয়তো কেউ আমাদের বোন, মেয়ে বা মা হয়ে এমন জীবন দেবে, আর ফিরে পাবে প্রতারণা।
ইত্তেফাক/এনটিএম/এমএএম
০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৬
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: খুব অস্বস্তিদায়ক খবর। রাষ্ট্রের কী ব্যর্থতা আছে ?
২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:০৮
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
আমার দেখা মতে, আফগান, পাকিস্তানী ও বাংগালী মেয়েরা দুখী মেয়ে; এসব দেশের পুরুষদের বড় অংশ স্বামী হওয়ার মতো দায়িত্বশীল নয়।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:১৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন:
৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:১০
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
টুনীর মা-বাবাও কি এই দানবকে দেখে চেনেনি? ইহাকে ১ নজর দেখলেই বুঝতে পারের কথা; মেয়ে বিয়ে দিতে ভেবেচিন্তে দিতে হয়।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:১৯
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বিদেশি দেখে দিয়েছে ।
৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫০
কামাল১৮ বলেছেন: ছবি দেখে আমি ভাবলাম আমাদের কালা পাহাড় কুমিল্লার।কি যেন নাম।দুঃখ জনক।আরেক ইউনুস।বিচারে জেল হওয়ার পরও বাইরে থাকতে দিয়েছিলো।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ১০:২১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আরেক ইউনুস।বিচারে জেল হওয়ার পরও বাইরে থাকতে দিয়েছিলো।
সব জায়গায় খালি ইউনুসের ছবি ভেসে উঠে । মাইর টা কড়া হয়েছে।
৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৫৩
কামাল১৮ বলেছেন: মাইরের চোটে দিন রাত সুরা ইউনুস পড়ছি।
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৫১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: এটাই ইউনুস সাবের সাকসেস। একজন সংশয়বাদি সুরা কালাম পড়ছে।
৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ রাত ১১:৫৬
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- ফেসবুক ছেয়ে গেছে।
০৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৫০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: জি । খুব অস্বস্তিদায়ক বিষয় হওয়ায় শেয়ার দিয়েছি।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫০
ওমর খাইয়াম বলেছেন:
টুনী অন্ধ ছিলেন, এই ছেলের চোখের দিকে তাকালে ( উপরের ২য় ছবি ) একটা শিশুও বুঝতে পারতো যে, ইহা দৈত্য ছাড়া অন্য কিছু নয়।