নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সম্পর্কে তেমন কিছু বলার নেই। আট দশটা মানুষের মতো আমিও তো একজন মানুষ।

প্রতিচিকীর্ষু লৌকিক

শ্রদ্ধা, ভক্তি, আবেগ, অনুভূতি, সহানুভূতি এবং সুষ্ঠু আচারনিষ্ঠা যে সম্পর্কে নেই সে সম্পর্কে ভালবাসা কিংবা বন্ধুত্ব নামক শব্দেরও কোন মূল্য নেই।

প্রতিচিকীর্ষু লৌকিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বোন হারানোর অনুভূতি (প্রথম পর্ব)

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৩

ফেবুতে ইসঠাটিস (স্ট্যাটাস) ছাড়িয়া ঘুমাতে গেলাম। ফোনটা পাশে রেখেই ঘুমিয়ে পড়লাম। সাথে আমার চার বছরের কিউট বোনটা শুয়ে আছে।

হঠাৎ মিসকলে ফোনের কাঁপুনিতে চমকে উঠে বসে গেলাম। এ দেখি সেতুর ফোন!!

সেতুর সেলনাম্বারের জন্য ছোটবোনটাকে প্রায় প্রতিটাদিন জ্বালিয়েছি। আজ অবশেষে আশার প্রতিক্ষার প্রহরগুনা শেষ হলো। ফোন ব্যাক করে দেখি ফিসফিসানি!! ফিসফিস করে ওপাশ থেকে কেউ যেন জানিয়ে দিচ্ছে - এই আমি সেতু!!

থাকনা আজ সেই অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী!! নিজের জীবনটাই যে এক রহস্যে ঘেরা অচিন কাহিনী। ৪ বছরের বোনটাকে যতটা না জ্বালাই, তার চাইতেও দ্বিগুণ দহনে জ্বলে পুড়ে ছাই ছাই হয়ে যাই আমি।

কিউট বোনটাকে কতনা চকলেট কিনে দিতাম সেতুর সেলনাম্বার এনে দিতে। নাম্বার নিতে গিয়েও বোনটা আমার চকলেটের বদলে সেতুর আব্বুর ধমক খেয়ে আসতো।

ধমক খেয়ে আমার পাশে এসে চুপটি মেরে বসে থাকে মিনিট খানেক। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলতো, ভাইয়া ভাইয়া সেতুর আব্বু এত্তগুলা পঁচা!! আমাকে শুধু শুধু বকা দেয়। তুমি সেতু কুত্তীটাকেও খুব করে বকা দিও!!

বোনের কথা শুনে হো হো করে হাসতাম আর বলে যেতাম, ওলে আমাল আপুলে কুতুকুতু!! আজ সেতুর একদিন কি আমার চার-পাঁচদিন।

আমার বোন সে আমার ছোট বোন। স্কুলের সময় হলে দাঁড়িয়ে থাকবে ভাইয়া আমার চকলেটের টাকা দাও। টাকা পেয়ে বোনটা আমার উজ্জ্বল হাসিতে একাকার। দৌড়ে এসে হাতে নাকে মুখে চুমু দিত। বলতো ভাইয়া আমাকে আজ মুচু দিবানা?? (চুমুকে প্রায় মুচু বলতো)

হুউউউম এত লক্ষ্মী কিউট বোনটাকে কেউ মুচু না দিয়ে থাকতে পারে!! দিতাম তিন চারটা মুচু (বোনের ভাষায়)। চুমু খেয়ে বোনটা আমার খুশীতে গদগদ হয়ে ছুঁটে চলে যেত স্কুলের দিকে।

বাড়ি এসে পড়তে বসলে বকবক করতে থাকে। শুধু তার সেতু ভাবীর গল্প শুনাবে আমায়। পাশে বসে বসে আদর ভঙ্গিমায় পড়াতাম বোনকে।

দীর্ঘপথ পাড়ি দিলাম আমি। খুব ব্যস্ততম জীবন কাটাচ্ছি। কিউট দুষ্টু বোনকে ছাড়া কাটিয়ে দিচ্ছি অথৈ বেদনাময় দিন। কষ্টের মুহূর্তে এসে যদি বোনের কথা রিপ্লাই করে নিজের মনকে বুঝাতাম তখন নীলকষ্টগুলো সাদা হয়ে যেত।

রিয়্যালিটি বড়ই নির্মম, সম্পর্ক ছিন্নমূলের মহারাজা। বোনের ভালবাসা আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভালবাসা। যে ভালবাসা সেতু আমায় দিতে পারেনি।

শুধু অদ্ভুতভাবে স্রোতা হয়ে মিন করে যাচ্ছি বোনের মধুর বাক্যটুকু 'ভাইয়া আজ মুচু দেবেনা'

লক্ষ্মী বোনটি আমার অনেকদিন হলো তোকে আর মুচু দেইনা। কিভাবে থাকিস তুই ভাইয়ার মিষ্টি মুচু ছাড়া!!

বোন খুব ভালবাসি তোকে। হৃদয়ের গভীরে তোর জন্য অনেক বড় জায়গা করে রেখেছি ভাইয়া। ভাইয়ার ছোট্ট হৃদয়ে তোর ভালবাসার জায়গা দিতে পারবোনা জানি তবু ব্যাকুলতা গ্রাস করে যাচ্ছে আমায়। তোর পাগল করা মিষ্টি হাসির ঝলকানিতে আর মুগ্ধ হতে পারিনা, পারিনা তোর চুমু খেতে খেতে রাতে ঘুমের রাজ্যে চলে যেতে। আজ আমি অনেকদূর!!

বহুদূর থেকেও যে এখনো তোর ডাক শুনতে পাই -
ভাইয়া ভালবাঁচি তোমায় আজ মুচু দেবেনা আমায়!! (লক্ষ্মী বোনটি 'ভালবাসি' শব্দটা আজও উচ্চারণ করতে শিখেনি)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.