নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুই হয়নি মর্মে জানা/ \"জানি জানি\"--তবুও চড়াই গলা/ আমি কত বড় তালকানা!

মাস্টারদা

মানুষ হয়ে জন্মানোর মর্যাদাবোধের খোঁজে,,,,,

মাস্টারদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফাগুনী শুভেচ্ছা

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১২




রাতের এই শহুরে আলোর মৃত্যু হোক আজ।
মৃত্যু হোক ধূলি ঢাকা ফুল পাতা আর
এ রাস্তা ঢাকা জ্যামের।
চাইনে রাতের এ ভঙ-রঙ দেখতে!
চাইনে...!
মুছে যাক যত সব কৃত্রিমতার কলি
আঁধারের চাদর মুড়ে পড়ে থাকুক পুরো শহর।
ঝিল্লি ডাকুক, জোনাই জ্বলুক।
পাতায় পাতায় খেলা পেতে বসুক জোছনারা
দূরে কোথাও ডাক দিয়ে যাক প্রিয়াহারা পাপিয়া।
দু-একটা শেয়াল উঁকি দিক্ এদিক-সেদিক।
হারু আর ওর পোয়াতি বউ মিলে তিনজনের সংসার হো'ক আজ
রাতের নির্জনা ভাঙুক মুষ্টিবদ্ধ হাতের সুতীব্র শিশু চিৎকারে।
আমি আরেকবার অনাক্তিয়া আজান শুনতে চাই।

ন'দাদা দাওয়ায় বসে "দীনবন্ধুর দেখা না পাবার" বিরহে সজল চোখে গান ধরুক--
পাশের বাড়ির উঠোন থেকে ভেসে আসুক.."আরে..হাট্ হাট্" শব্দ
আর কয়েকটা পাক দিলেই ধান শিশ ছাড়া হবে যে মলনে।
এই সৃষ্টিছাড়া শহরে আঁখির অগোচরে আমি সেই গামা ধানের গন্ধ নিতে চাই!
ধানের এ পালায় ওপালায় লুকিয়ে লুকোচুরি খেলতে চাই।
মস্ত কার্পেটে মুড়ে দাও পুরো এই শহুরে হিংসা গ্রাস
গাঁয়ের সেই মিল এসে ধ্বংসযজ্ঞে গড়ে নিক নতুন আবাস!

পিঠা বানানোর লোভ দেখিয়ে বিকেল থেকে
দু-তিন ঘরের নামতা পড়াক, মা।
দাদির পানের কৌটায় দাবা পায়ে হামলা চলুক আবার
কোথায় গেলি ভাই বোনের সব সৈন্যরা!
আয়..। চুপিচুপি! জলদি আয়
দাদি যে বসে জায় নামাজে, পশ্চিম মুখো দাওয়ায়!
আয় আয় জলদি আয়!

আবু চাচা আরেকটা "কৈফুল মাছেরে গল্প" শোনাক--
জীবনটা যার আটকে গেছে "মিনিজ গাঙে"র বাঁধে।
ভেঙে দাও ওই নদী বাঁধা বাঁধ
চলার গতি রুখে দিয়েছে যার উন্নয়নের কড়া কড়চা।
ভেঙে দাও সব..। ভেঙে দাও
মুক্ত মুখে শ্বাস ফেলে নদী ছুটে যাক ও সাগরে।
ছোট পুঁটি শোলে টেংরা বোলে একটু ঘুরতে তো দেবে
তোমায় সারা বছর বন্দি জীবন ভালো লাগবে?

মা এসে পড়ার ছলে "খুকি" বলে আলতো আদর বোলে
কাজলা দিদির করুণ কথা বলুক দরদ ঢেলে।
কিংবা বিদ‍্যাসাগর, ক্ষুদিদা, নেতাজী..যারই কথা বলে বলুক না
পাড়ার পড়ুয়া মেয়েটার কথাও বলতে পারে
বিশ্বাস করো, আজ আমি কিচ্ছুটি মনে করবো না..
আরেকবার শুধু শৈশবের সেই সময়ে ফিরতে চাই।
শুধু আর একটি বার..

বন্ধ করো, এই জেট বিমানের শব্দ
আমি পেছন জুড়ে ধোঁয়ায় মুড়ো সেই লম্বা রকেট দেখতে চাই।
খেজুর পাতার ফনফনি উড়ুক কিংবা নাটাই ঘুড়ি
বিকেল হলে সব পাড়ার ছেলে মিলে খেলুক 'গেদন, মার্বেল, দাণ্ডা-গুলি'-
এই সিসে পোঁড়া শব্দসহ সারা শহর বিলীন হয়ে যাক--
শুধু দূর থেকে ভেসে আসুক পান পিঠের মিষ্টি মধুর সুবাস
খেজুর রসের মৌ সুবাসে অপার্থিব হোক চারপাশ!

বারবার শত চেষ্টায় গড়া পতুলের ঘর ওই দস‍্যি ভাইয়ে এসে পুনঃ ভাঙুক
আমি আরেকবার ওর পিছে ছুটতে চাই।
আমার ভাগেরটা নিতে হাপুশ হুপুশ করে খেয়ে নিক নিজের ভাগের কলাটা
আমি রাগতে গিয়ে হেসে আমারটাও ওকে দিয়ে দিতে চাই।
অনেকদিন যে ঝগড়াটাও হয় না আগের মতো!

ফুফুকে জাগাও চির নিদ্রা থেকে--
গল্প শোনাক সে রাজকুমারীর।
নিরব সঙ্গী হয়ে আকাশ গালে লেপ্টে থাকে যে...
ইন্দুবালা!

অনেক হাসি বৃথা গেছে তার!
আর না...
অষ্টমী এ চাঁদের হাসি দেখুক সারা শহরবাসী।
ফাল্গুনী সাজ আজ তার পূর্ণতা পাক।
বেঁচে যাক একটা শৈশব, আর একটা চাঁদ।


মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১২

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

অজ্ঞ বালক বলেছেন: অসাধারণ একটা কবিতা লিখেছেন। তবে কয়েক জায়গায় শব্দচয়ন একটু পাল্টালে কবিতাটা মাস্টারক্লাস হয়ে যেত।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:৪১

মাস্টারদা বলেছেন: ধন‍্যবাদ।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মোহিত হলাম কাব্য চয়নে।

৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২৫

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ছবি দুটি অসাধরণ কবিতাটাও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.