নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসুন, "ধর্মান্ধতা পরিহার করে ধর্মিষ্ঠ হই" "বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম" [আল-কোরআন-৯৬. সূরা আল-আলাক] ০১. পাঠ কর (এবং ঘোষনা / প্রচার কর) তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন- ০২. সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে। ০৩. পাঠ কর, আর (ঘোষনা / প্রচার কর) তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত। ০৪. যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন- ০৫, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।] পবিত্র কোরআনের ৯৬ নম্বর সূরা 'আলাক'-এর প্রথম এই পাঁচটি আয়াত অত্যন্ত মূল্যবান এবং যা মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে ফেরেশতা জিবরীল (আঃ)-এর মাধ্যমে সর্বশেষ নবী রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর নাযিলকৃত সর্বপ্রথম ওহি অর্থাৎ ঐশীবাণী। মহামহিমান্বিত প্রতিপালকের নামে শিক্ষা লাভের জন্য পাঠ করা ( Study ) অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় থেকে জ্ঞানার্জন করা এবং জ্ঞানের প্রচার ও প্রসারে কলমের ব্যবহার অর্থাৎ 'লিখন' যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে তা সর্বজনবিদিত। মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালা তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকে খাঁটি মানুষ রূপে গড়ে তোলার জন্য যে সর্বপ্রথমে এই ধরণের চমৎকার ও কার্যকর ঐশীবাণী প্রদান করে অনুপ্রাণিত করবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে পার্থিব জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও আল-কোরআন ও বিজ্ঞানের বিষয়ে জ্ঞান চর্চার তাগিদে সময় বের করে নিতে হয়েছে। যে জ্ঞানের কোন সীমা পরিসীমা নেই, যে জ্ঞানের কথা লিখতে বসলে মহাসাগরের এমনকি আকাশ ও পাতালের সকল জলরাশিকে কালি বানালেও তা ফুরিয়ে যাবে- তার জন্য এই সময়টুকু অতি নগন্য। তথাপি আমার এই ছোট্ট প্রয়াসের জন্য দয়াময় আল্লাহতায়ালা যে আমাকে সুযোগ ও তৌফিক দিয়েছেন সেজন্য আমি অবনত মস্তকে সর্বশক্তিমান স্রষ্টার কাছে প্রতি মূহুর্তে শুকরিয়া আদায় করছি। সত্যের স্বরূপ উদঘাটনে যতটুকু সফলতা অর্জন করতে পেরেছি তার সবটুকুই আল-কোরআনের ঐশীবাণীসমূহের মর্ম সঠিকভাবে অনুধাবনের ফলেই সম্ভব হয়েছে। আর ব্যর্থতার জন্য একজন অতি সাধারন মানুষ হিসেবে আমার অযোগ্যতা ও অজ্ঞতাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী। হে বিশ্ববিধাতা করুণাময় মহান আল্লাহ , সর্বপ্রকার অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তির জন্য সর্বদা অবনত মস্তকে ক্ষমাভিক্ষা চাই। আর সরল ও সত্যের পথ যতটুকু অর্জন করতে পেরেছি তার উছিলায় একজন হতভাগা পাপী বান্দা হিসেবে তোমার জ্যোতির্ময় আরশের ছায়াতলে চিরকালের জন্য একটুখানি ঠাঁই চাই। আশাকরি ছোটখাট ভুলত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। চিন্তাশীল সুধীজনদের সুচিন্তিত পরামর্শ ও সমালোচনা সাদরে গ্রহণ করা হবে।
আমি চার্লস ডারউইনের ফ্যান কিংবা অন্ধ অনুসারী নই। কিন্তু তারপরও এই প্রশ্নটি করতে বাধ্য হলাম। আমার এই অনুসন্ধিৎসা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হলেও সত্যের খোঁজে এর মূল্য আমার কাছে কম নয়। এ সম্পর্কে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য জানা থাকলে বা কোন বক্তব্য থাকলে তা সেয়ার করার জন্য আমন্ত্রণ রইল।
…………………………………………….
ঐশী কিতাব হিসেবে বাইবেল এবং স্রষ্টা বা ইশ্বরের পুত্র হিসেবে যিশুখ্রিষ্ট অর্থাৎ ঈশা নবী সম্পর্কিত ডারউইনের মন্তব্য-
"I am sorry to have to inform you that I do not believe in the Bible as a divine revelation, & therefore not in Jesus Christ as the Son of God."
তার এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায় যে বাইবেলে বিদ্যমান নানান অসঙ্গতি তার চোখে ধরা পরেছিল। তাই তিনি বর্তমানের এই বাইবেলকে ঐশী কিতাব হিসেবে মেনে নিতে পারেন নাই। সঙ্গত কারণেই বাইবেলের ত্রিত্ববাদ মেনে নিতে না পারায় যিশূখ্রিষ্টকেও তিনি ইশ্বরের পুত্র হিসেবে স্বীকার করতেন না। আর সে কারণেই সে সময়কার খৃষ্টধর্মের অনুসারী ধর্মান্ধরা তাকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করতে কুণ্ঠাবোধ করে নাই। পরবর্তীতে ইশ্বরে অবিশ্বাসী ও প্রকৃতিবাদী নাস্তিকরা নাস্তিকতা বিস্তারের কুটকৌশল হিসেবে তার এই একপেশে অবস্থাকে কাজে লাগায় এবং খানিকটা সফলকামও হয়।
চার্লস ডারউইন নাস্তিক নয়, বরং অজ্ঞেয়বাদী আস্তিক (Agnostic theism- The view of those who do not claim to know of the existence of any deity, but still believe in such an existence.) ছিলেন। চিন্তা-চেতনায় তিনি একজন পরম স্রষ্টায় বিশ্বাস করতেন এবং একই সাথে স্রষ্টার অস্তিত্ব অর্থাৎ বিদ্যমানতা সম্পর্কে প্রত্যক্ষভাবে কিছুই জানা সম্ভব নয় বলেও তিনি বিশ্বাস করতেন। এ সম্পর্কে তার বক্তব্য-
"I am with you in thought, but I should prefer the word Agnostic to the word Atheist."
১৮৭৯ সালে John Fordyce কে লেখা এক পত্রে ডারউইনের বক্তব্য থেকে বিষয়টি আরও পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে। তিনি বিবর্তন ও আস্তিকতা অর্থাৎ স্রষ্টা বা ইশ্বরে বিশ্বাস এর মাঝে সুসংগতিপূর্ণ যে মতামত ব্যক্ত করেন তা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে তিনি নাস্তিক ছিলেন না অর্থাৎ স্রষ্টা বা ইশ্বরে অবিশ্বাস করতেন না-
"In my most extreme fluctuations I have never been an atheist in the sense of denying the existence of a God.— I think that generally (& more and more so as I grow older) but not always, that an agnostic would be the most correct description of my state of mind."
যিনি চিন্তা-চেতানায় ও বিশ্বাসে নাস্তিক ছিলেন না। তার কর্মও নিশ্চয় নাস্তিক্যবাদকে কখনই প্রশ্রয় দেয় নাই। কিন্তু অজ্ঞতা প্রসূত ভুল বোঝাবুঝির কারণে ধর্মান্ধ সম্প্রদায় কর্তৃক তিনি ও তার কর্ম প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় নাস্তিক সম্প্রদায় সেই সুযোগকে লুফে নিয়েছিল এবং তার কর্মের কিছু অংশকে ভিন্নভাবে উপস্থান কোরে তাদের পক্ষে কাজে লাগানোর জন্য যে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছিল এবং এখনও করছে তা বলার অপক্ষো রাখেনা।
ধর্মহীনতা ও ধর্মের খাঁটি ঐশীবাণী হৃদয়ঙ্গম করার ব্যর্থতার কারণে সৃষ্ট ধর্মান্ধতা মানুষকে সরাসরি বিবর্তনবাদী নাস্তিক কিংবা বিবর্তন বিরোধী আস্তিক হতে কিংবা কুসংস্কারাচ্ছন্ন সস্তা সেন্টিমেন্টকে আত্মস্থ কোরে তা ধর্ম হিসেবে মানতে শেখায়।
ধর্মের নিগূঢ় তত্ত্বকে আত্মস্থ করার আগেই বংশপরম্পরায় প্রাপ্ত ধর্মের ভাসা ভাসা জ্ঞানের উপর ভর কোরে যখন মানুষ প্রকৃতির মাঝে বিরাজিত গভীর তত্ত্বকে স্থুল দৃষ্টিতে দেখতে চায়, তখন সে নিজেই বিভ্রান্তিতে হাবুডুবু খায়।
©somewhere in net ltd.