নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী

সংযুক্ত সম্পাদক, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি

মণীশ রায় চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

উড়ালপুলের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে সকল দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:১৯

৩১ মার্চ, ২০১৬। বৃহস্পতিবার দুপুর প্রায় সাড়ে বারোটা।
অন্যান্য দিনের মতই কর্মব্যস্ত বড়বাজার পোস্তা এলাকা।
নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের একশ মিটার দীর্ঘ একটি অংশ ভেঙে পড়ল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী তলায় চাপা পড়ল একটি মিনিবাস, ট্যাক্সি সহ আরও অনেক মানুষ।
সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৬ এবং আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ।
কিন্তু, বেসরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
অনেকেই বলেছেন বাস, ট্যাক্সির মত যাত্রী বোঝাই গাড়ি চাপা পড়েছে। তাই মৃতের সংখ্যা এত কম হতেই পারেনা।

অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে প্রশাসন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম দেখাতে অনেক দেহ গোপনে পাচার করে দিয়েছে।

কিন্তু, এই দুর্ঘটনার দায় কার?
ঘটনার কিছু পরেই মুখ্যমন্ত্রী এসে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সবাইকে নির্দেশ দিতে শুরু করলেন।
তিনি অনুরোধ করলেন এই দুর্ঘটনা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবেননা। যদিও পরমুহূর্তেই তিনি জানাতে ভুললেন না যে, ব্রিজ তৈরির টেন্ডার ২০০৯ সালে বাম আমলে পাশ হয়েছিল তাই তদেরকেই এর দায়ভার নিতে হবে।
তার কথায় ক্ষুব্ধ জনতা প্রশ্ন তুলেছে, কাল হাওড়া ব্রিজ ভেঙে পড়লে কি তিনি ব্রিটিশ সরকারের বর্তমান প্রতিনিধি রাণী এলিজাবেথকে শূলে চড়াবেন?

এই ঘটনা রাজ্যের পুলিশ ও ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের ব্যার্থতাকে আবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
বোঝা গেল ঘুষ খেতে আর মন্ত্রীদের চাটুকারি করতে তারা যথেষ্ট দক্ষ হলেও এই বিষয়ে তাদের কোন অভিজ্ঞতা নেই।
তা সত্ত্বেও সেনাবাহিনীকে দীর্ঘসময় উদ্ধার কাজে অংশ নিতে দেওয়া হলনা।
কারণ, সেই মুখ্যমন্ত্রীর আদেশ।
সেনা আহতদের উদ্ধার করলে ভোটের মুখে রাজ্য সরকারের ক্রেডিট চলে যাবে।

এভাবেই শাসক দলের নোংরা রাজনীতির চিত্র দেখল রাজ্যবাসী।
এক্ষেত্রে, বিরোধী বাম-কংগ্রেস জোটের ভূমিকা প্রশংসনীয়। মূলত তাদের উদ্যোগেই মানিকতলা ব্লাডব্যাঙ্ক, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও আরও কিছু স্থানে জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তদান করেন।
কিন্তু সেখানেও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিধায়ক নির্মল মাজি ও আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ফতোয়া দেন যে, রাজ্যে প্রচুর রক্ত আছে তাই "সিপিএমের দেওয়া রক্ত" নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
এর ফলে বহু লোককে ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। নির্লজ্জ পুলিশ প্রশাসনও অনেক মানুষকে রক্তদানে বাধা দিয়েছে।
এমনকি এই অন্যায়ের বিরোধিতা করায় অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজ্যসরকার দুর্ঘটনার পরেই ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু, তাই নিয়েও জনগণের ভিতর তীব্র ক্ষোভ আছে।
অনেকেই অভিযোগ করছেন এক্ষেত্রেও বড়মাপের দুর্নীতির সম্ভাবনা আছে।
কারণ, শাসক দলের কর্মীরা নিজেদের আহত তালিকায় নাম লেখাচ্ছেন।

ব্রিজ নির্মাণ সংস্থা আইভিআরসিএল এর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত হত্যার মামলা দায়ের করেছে।
কিন্তু, প্রশ্ন হল এর ভিতর "অনিচ্ছাকৃত" কোনটা?
আমরা সবাই জানি এই দেশে কোন ব্রিজ তৈরির টেন্ডার পেতে হলে কোটি কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়।
এছাড়াও শাসকঘনিষ্ঠ সংস্থার কাছ থেকে বেশি দামে নিম্ন মানের মাল কিনতে হয়।
ফলে টেন্ডার পাওয়া সংস্থাটিও নিজের মুনাফা বাড়াতে আরও নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার করে।

এই ঘটনার পরেও একই কথা তদন্তে সামনে আসছে।
তাদের সম্মিলিত দুর্নীতির ফলে বহু মানুষের প্রাণ যেতে পারে জেনেও তারা স্বেচ্ছায় এই কাজ করে থাকে।
তাই একে কখনোই অনিচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড বলা যায়না।

'ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি'র পক্ষ থেকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে সকল দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৪

বিজন রয় বলেছেন: কোন শাস্তি হবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.