নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবতা

আমি মানুষ, এটাই আমার পরিচয়।

নীপা জামান চৌধুরী

আমি মানুষ ,এটাই আমার পরিচয় ।

নীপা জামান চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবার আগে তার পরিচয় মানুষ ।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:০১

নারী - তার পরিচয় কি ? নারী কোন পশু কিংবা মেশিন নয়, মানুষ ই তার প্রথম পরিচয় । প্রকৃতি ও সৃষ্টির বৈচিত্রে গঠনগত বিচারে সে ভিন্ন কিন্তু মননে এবং অধিকারে সে একজন মানুষ, পুরুষ থেকে ভিন্ন কিছু নয় । মানবতার বিচারে বৈষম্যের কোন অবকাশ নেই। একজন পুরুষ যেমন পিতা, ভাই, স্বামী, পুত্র ঠিক তেমনি একজন নারী মা, বোন, স্ত্রী, কন্যা... মাতৃত্ব বিচারে নারী অতুলনীয় । তাহলে কেন তাকে কোন ধর্ম কিংবা পুরুষ কিংবা সমাজ মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়? কোন সে স্বার্থ?

বাংলাদেশ নামক দেশটার যখন জন্ম তখন থেকে অসম্প্রদায়িক , ধর্ম নিরপেক্ষ একটি দেশ হিসেবে তার পরিচয় যেখানে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলা হয়েছে । বাংলাদেশের জন্মের পেছনে নারীর অবদান এবং আত্মত্যাগের কোন তুলনা চলে না। পুরুষ এর মতো ই বাংলার নারী মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা কে ছিনিয়ে এনেছে সেই হায়েনার কবল থেকে... যুগযুগ ধরে সমগ্র বিশ্বে নারী তার অবদান রেখেছে পুরুষ এর পাশাপাশি । তাহলে আজ কেন নারী অধিকার নিয়ে কথা উঠে এই স্বাধীন বাংলাদেশে? বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী । ব্যাবসা , চাকরী , শিক্ষা , কৃষি , শিল্প , সংস্কৃতি, খেলাধুলা, সেবা , পরিবেশ , প্রশাসন - সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নারীর অবদান আজ বিশ্বব্যাপি সমাদৃত, প্রশংসিত। সমাজের প্রাচীন ধারার প্রতি লক্ষপাত করেই নারী উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করা হয় গৃহ এবং সমাজের সর্ব স্তরে নারীর সম অধিকার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা লক্ষ্যে । দেশের সব থেকে বেশী বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সব থেকে বড় শিল্প খাত গার্মেন্টস যেখানকার ৮০ ভাগ শ্রমিক নারী। নারী আজ পর্বত আরোহী, প্যারাট্রুপার এবং সমাজ ও দেশ এর সংগঠক। এমন কোন ক্ষেত্র কিংবা অঙ্গন নাই যেখানে নারীর প্রশংসনীয় অবদান নাই ... তারপর ও নারী কে ওরা মানুষ এর মর্যাদা দিতে চায় না। নারী কে কুক্ষিগত , শৃঙ্খলিত করতে চায় ওরা। আজ যখন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে ঠিক এই মহেন্দ্রক্ষনে এক অশুভ চক্র ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীর উন্নয়নের পথ কে কণ্টকময় এবং বাধাগ্রস্ত করছে।

সংগ্রামী সহযোদ্ধা, অশুভ চক্র ১৩ দফা দাবী জানিয়েছে যার ভেতর ২ টি দাবী এমন যে,

ক. ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।

খ. ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা।



আমাদের দেশের শীর্ষ স্থানীয় নারী নেতৃত্ব ও সেই অশুভ চক্রের সাথে একমত হয়ে যুথবদ্ধ ভাবে পথ চলছে!!!



বাংলাদেশ একটি গরীব দেশ , যেখানে মৌলিক অধিকার মিটাতে এবং সংসার চালাতে নারী - পুরুষ উভয়ের সহযোগীতা ও অবদান আবশ্যক। নইলে অনাহারে অর্ধাহারে সংসার চলবে , শিক্ষার অভাবে জাতি আবারো অন্ধকার যুগে প্রবেশ করবে , সচেতনতার অভাবে মানুষ বর্বর জীবন যাপন করবে । নারী সম অধিকার এবং মানবাধিকার পেলে ধর্মের ক্ষতি কোথায়? ধর্মের দোহাই দিয়ে সেই অশুভ চক্র কেন বাংলাদেশ এবং এই জাতিকে সভ্যতা বিবর্জিত করতে চায়???

আমরা বাংলাদেশি , আমরা মুলমান , হিন্দু , বৌদ্ধ, খৃস্টান, আদিবাসি- আমরা সবাই এক জাতি । ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা কেন আমাদের কে বিভক্ত করতে চায়? তাদের স্বার্থ কি , সেইটা বুঝে নেয়ার দায়িত্ব আমাদের।

দেশ , সমাজ , জাতি কে বিভাজিত করার অপ তৎপরতায় যারা লিপ্ত তাদের মুখোস অন্য কেউ , অন্য কোন মাসীহা এসে উন্মোচন করে দিয়ে যাবে না ... এই মুখোস উন্মোচনের গুরুদায়িত্ব আমার , আপনার- আমাদের সবার ...

আমাদের মানবাধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের ই । মোট জনসংখ্যার আধা শক্তি হয়েও কেন আমরা অন্যের মুখপানে চেয়ে থাকবো??? আমরা নিজেরা ই নিজের শক্তি ... নিজেকে চিনুন , নিজেকে জানুন , নিজেকে বুঝুন - সর্বোপরি বিশ্বে নিজেকে মানুষ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব টা আমাদের নিজেদের ই ... মুক্তি পাক সচেতনতা ... জয় হোক মানবতার ...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.