নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবতা

আমি মানুষ, এটাই আমার পরিচয়।

নীপা জামান চৌধুরী

আমি মানুষ ,এটাই আমার পরিচয় ।

নীপা জামান চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশপন্থি

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৯

যারা বাংলাদেশে রাজনীতি করে বা করতে চায় তাদের মনে হয় কিছু ব্যাপারে একটু সচেতন থাকা প্রয়োজন...



১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় রাশিয়া বাংলাদেশ কে সমর্থন জানায় এবং চীন জানায় না । আমাদের দেশের বাম ঘরানায় মাওবাদ আছে আবার মার্কস- লেনিনবাদ ও আছে । মাও , লেনিন ও মার্কস এর দারাই অনুপ্রাণিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় চীনপন্থিরা স্বাধীনতা যুদ্ধ কে দুই কুকুরের কামড়াকামড়ি বলে আখ্যায়িত করেছিলো যার প্রেক্ষিতে তাদের কে স্বাধীনতার স্বপক্ষের বলে অনেকেই স্বীকার করে না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মাও জীবিত ছিলেন। উনি কেন বাংলাদেশের শোষিত মানুষ এর পক্ষে তখন মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন না দিয়ে পাকিস্তান কে সমর্থন দিয়েছিলেন তা আমি জানি না ... এ ব্যাপারে আমাকে আরো অনেক বেশী জ্ঞ্যাণ অর্জন করতে হবে বলেই আমি মনে করি তবে একটা সাধারণ কথা বলতে চাই, বাংলাদেশের জন্য বা যে কোন দেশের জন্য তার পরিস্থিতি এবং বাস্তবতা অনুযায়ী সেই দেশপন্থা বের করা এবং অবলম্বন করা জরুরী... যে ব্যাক্তি শোষিতের জন্য মতবাদ দেন তার তো সবসময় শোষিতের পক্ষেই যাওয়া উচিত তা না করে কেন উল্টা ঘটনা ঘটলো তা অবশ্যই গভীর ভাবে আমাকে পর্যবেক্ষন করে তারপর আবার বলতে হবে, তাই সেই প্রসঙ্গে আবার লিখার ইচ্ছা পোষণ করেই আমার বাকি কথাগুলো বলি। বর্তমানে দেশের স্বার্থে যারা কাজ করতে চায় , দেশপ্রেমে যারা উজ্জীবিত তাদের ভেতর যে কোন মতালম্বী মানুষ থাকতে পারে । রাশিয়া পন্থি হলেই সে দেশপ্রেমিক আর চীনপন্থী হলেই সে দেশপ্রেমিক না কিংবা শত্রু পক্ষ - এমন টা নয় বলেই আমি বিশ্বাস করি। (যদিও তাতে কারো কিছু এসে যায় না) বর্তমান প্রেক্ষাপটে যে যেই দল ই করুক না কেন , দেশপ্রেম কোন দলের মুখাপেক্ষী বা মহতাজ না। মানুষ এর ন্যায় - অন্যায় , ভাল-মন্দ বুঝার জ্ঞ্যাণ আছে, তার আলোকে নিজ নিজ যোগ্যতা কে কাজে লাগিয়ে মানুষ দেশপ্রেম প্রমাণ করত কাজ করে যেতে পারে এবং বিপ্লবের পথে সমাজ পরিবর্তন ও মুক্তির বাসনায় আগাতে পারে ।





একজন বাঙ্গালী বা বাংলাদেশী মস্কোপন্থি কিংবা পিকিংপন্থি হয়ে বাংলাদেশ কে , তার সমাজ কে পরিবর্তন করবে??? কেন??? কিভাবে???





একজন বাঙ্গালী বা বাংলাদেশী রাশিয়াপন্থি কিংবা চীনপন্থি হয়ে বাংলাদেশ এবং বাঙ্গালি জাতির মুক্তির পথ গড়বে??? কেন??? কিভাবে???





বাচ্চা বয়সে আমরা অগ্রজের শেখানো সব আচার বিচার অনুযায়ী বড় হই , শিখি তারপর আমরা চারপাশ থেকে শিখি , শিখে শিখেই বড় হই , বুঝতে শিখি তারপর ও আমরা অতীতে যাই ইতিহাস পড়ি রেফারেন্স কিংবা অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য । যে কোন পরিবর্তন , যে কোন এক্সপেরিমেন্ট, যে কোন যুদ্ধ বিগ্রহ - সব খানে আমরা রেফারেন্স খুঁজি কারণ সেখান থেকে শিখার বিষয় আছে - পূর্ব অভিজ্ঞতা , কৌশল , সফলতা/ ব্যার্থতার কারণ --- সব কিছু থেকেই আমরা শিখি সফল হবার জন্য , সামনে যথার্থ কর্মদক্ষতা সম্পন্ন হওয়ার জন্য ... অতীতের ভুল ত্রুটি গুলো রিপেয়ার করেই আমরা সফলতার দ্বার উন্মোচনে নিয়োজিত হই ... সমাজ এবং যে কোন সিস্টেম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যে কোন মতবাদের সাংগঠনিক অধ্যায় গুলো নিঃসন্দেহে আমাদের সমাজ পরিবর্তনে সাহায্য করবে , বিপ্লবে সাহায্য করবে ... রেফারেন্স হিসেবে বিভিন্ন মতবাদ আমাদের সমাজ পরিবর্তনের ধারাকে উন্নত করবে তবে বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশি কে বাংলাদেশপন্থি ই হতে হবে। দেশ উদ্ধারের জন্য আমাদের কে বাংলাদেশপন্থি ই হতে হবে ... রাশিয়া/মস্কো এবং চীন/পিকিং পন্থি হয়ে কোন মানুষ বাংলাদেশ কে উদ্ধার করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি না ...





আমরা ছোট থেকে বড় হচ্ছি , দেশ এর সার্বিক পরিস্থিতি দেখছি ... মানুষ হিসেবে আমাদের প্রাপ্য গুলো কে বুঝতে পারছি , তা পাচ্ছি কিনা বুঝতে পারছি ... আদৌ তা পাওয়া সম্ভব কিনা , বুঝার চেষ্টা করছি ... সম্ভব - অসম্ভবের পেছনের কারণ গুলো জানার চেষ্টা করছি , বিচার করছি ... ন্যায় হচ্ছে কি অন্যায় হচ্ছে বুঝতে পারছি ... আচ্ছা ধরে নিলাম আমরা অতীতের তেমন কিছুই জানি না ... শুধু বর্তমানের দিকে তাকাই ... আমাদের কি আছে এবং কি নাই এবং কেন নাই এবং থাকা সম্ভব ছিলো কিনা - এই ব্যাপার গুলোর শিকড় পর্যন্ত পৌঁছানো কি খুব কঠিন ? এসবের জন্য কি আমাকে বা যে কোন মানুষ কে বিভিন্ন তত্ত্ব বুঝে আসতে হবে ??? আমি তেমন মনে করি না ... খুব স্বল্প জ্ঞ্যাণী মানুষ আমি ... চারপাশ থেকে অনেক কিছুই দেখে বুঝে নিয়েছি , শিখে নিয়েছি তাই মনে হয় মানবপন্থি এবং বাংলাদেশপন্থি হওয়াটা ই অনেক বেশী জরুরী ...





শেখ মুজিব জাতির জনক এবং বঙ্গবন্ধু বিশেষণে বিশেষিত বলেই উনাকে নিয়ে এত সমালোচনা । আজ যদি উনার স্থলে এ কে ফজলুল হক কিংবা মাওলানা ভাসানি কিংবা জেনারেল ওসমানী স্বাধীনতার ডাক দিয়ে , মুক্তিযুদ্ধের নেতা হয়ে জাইর জনক কিংবা বঙ্গবন্ধু হতেন তাহলে শ্রদ্ধেয় সেই নেতা গণ ও আজ সেই এক ই সমালোচনা , অপবাদ কিংবা কুৎসার শিকার হতেন ...!!! আজ যারা এ কে ফজলুল হক কিংবা মাওলানা ভাসানি কিংবা জেনারেল ওসমানী কিংবা তাজউদ্দীনের যোগ্যতা এবং নেতৃত্বে পঞ্চমুখ , তারা ই উনাদের জাতির জনক কিংবা বঙ্গবন্ধু পদবী প্রাপ্তিতে ঠিক এক ই ভাবে সমালোচনা , পর্যালোচনা এবং অপবাদ রটনায় লিপ্ত হতো নিঃসন্দেহে ... এটা আমাদের বাঙ্গালির চিরচারিত চরিত্র বলা চলে ...!!!





আমরা সংকর জাতি। আমাদের বুক আর পিঠ - সব সমান । আমাদের যদি কিছু থেকে থাকে তো সেটা হলো নিজ স্বার্থ ...!!!





দেশ কে ভালবাসার জন্য , সমাজ পরিবর্তনের জন্য , মুক্তির জন্য কোন দলমতের অনুসারী হওয়াটা কি এত ই প্রয়োজন ??? দেশের স্বার্থে শক্তি সামর্থ্য অর্জনের জন্য আসলেই কি কোন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন???? আমাদের দেশে আছে তো অনেক রাজনৈতিক দল - দেশের স্বার্থে তাদের সম্মিলিত শক্তি , সংগঠিত উদ্যোগ গুলো কোথায়??? একেকটি দলের ভেতর হাজার মত এবং সেই অনুযায়ী হাজার গ্রুপিং - কোথায় তাদের দেশ গড়ার স্পৃহা এবং পদক্ষেপ গুলো ??? তাদের সাংগঠনিক শক্তি গুলো তো সব ক্ষমতা দখলে ব্যাবহৃত - সমাজের বৃহৎ কল্যাণ কিংবা উন্নয়নে তো তাদের দলমত এবং সংগঠিত শক্তির প্রয়োগ দেখতে পাই না আমরা ... যদি তাই হতো তাহলে আজ বাংলাদেশের মানুষ মৌলিক চাহিদা পূরণে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতো নিঃসন্দেহে ... বিভিন্ন দলমতের ভেতর যারা আছেন প্রকৃত দেশপ্রেমিক তাদের কোন বেইল নাই দলে ... তারা দলে নিগৃহীত ... এত বড় বড় রাজনৈতিক দল করেও গত ৪২ বছরে বাংলাদেশ কে মৌলিক চাহিদা পূরণে , নিরাপত্তা প্রদানে সক্ষম হন নাই তারা ... সমাজ পরিবর্তন করতে পেরেছে বলেও মনে হয় না ... বাঙ্গালির চরিত্র বরং আরো বেশী অধঃপতিত এবং নৈতিক মূল্যবোধ কর্পূরের মতো উড়ে গিয়ে সামাজিক অবক্ষয়ের মাত্রা আকাশ ছোঁয়া !!!





মৌলবাদ , মৌলবাদ বলে আমরা মুখ দিয়ে ফেনা তুলে ফেলি ! মৌলবাদ কি ???



ভালো- মন্দের বিচার দরকার নাই , পূর্বাপর বিবেচনা না করেই কট্টর মনোভাব ধারণ - লালন - পালন ---- এই তো মৌলবাদ --- মৌলবাদের রাজনৈতিক রূপের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রনৈতিক ক্ষমতা দখল। দেশ ও জাতি কে উপেক্ষা করে যে জন তার ধারণকৃত মতবাদে কট্টর এবং সেই কট্টর মানসিকতার বহিঃপ্রকাশে কট্টর তার সব ভাষা , আচরণ এবং কর্মকাণ্ড সেই তো মৌলবাদী ...



ডান , বাম - সব দলের ভেতর ই মৌলবাদী , কট্টর মনোভাবাপন্ন অনুসারী / কর্মী আছে --- তাদের কে আমরা বিভিন্ন নামে ডাকি , সব থেকে ভদ্র ভাবে ডাকি '' অতি ডান '' কিংবা '' অতি বাম '' বলে ... এই অতি দান কিংবা অতি বাম পন্থিরা কি মৌলবাদী নয় ??? তাহলে কেন আমরা শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট দলকে মৌলবাদী বলে আমাদের স্বার্থ উদ্ধার করি নিজেদের মৌলবাদী চেহারা গুলো লুকিয়ে ???



কট্টরপন্থা অবলম্বন করে তো আমরা বেশীরভাগ ই মৌলবাদের চর্চা করি । আমাদের মানসিকতায় প্রচন্ডরকম সমস্যা আছে । আমরা ধারণ করি কিছু , লালন করি কিছু , পালন করি কিছু কিন্তু প্রকাশ করি ভিন্ন কিছু ...!!! ভন্ডামীর বীজ আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে । এই ফাঁকিবাজি ডবল গেইম আসলে কার সাথে খেলা হচ্ছে ? বিপক্ষের সাথে??? তা তো মনে হয় না ... এই ফাঁকিবাজি ডবল গেইম টা মানুষ আসলে খেলছে নিজের সাথেই, দেশের সাথে , জাতির সাথে...!!! দেশপ্রেমের নামে ডবল গেইম খেলছি আমরা অনেকেই , মৌলবাদী হচ্ছি আমরা অনেকেই আর এই চোর - পুলিস খেলাখেলিতে বলি হচ্ছে প্রকৃত দেশপ্রেমিক মানুষ গুলো ...!!!





মানসিকতার পরিবর্তন করি আসেন , ভাই - বোন সব ... নিজের কর্ম এবং চিন্তাধারা কে বিচার করি আগে তারপর অন্যের দিকে আঙ্গুল তুলি এবং খাবলা খাবলা কাঁদা ছিটাই ... প্রথমে নিজের আত্মার কাছে স্বচ্ছ হই ... বাংলাদেশপন্থি হই আগে তারপর বিপ্লব , সমাজ পরিবর্তন , মুক্তি নিয়ে গলা ফাটাই , কলম চালাই ... নিজের কর্ম ও মানসিকতা দিয়ে আগে মানুষ হই এবং বাংলাদেশপন্থি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ ও প্রতিষ্ঠা করি তারপর দেখবো সমাজ পরিবর্তিত না হয়ে কোথায় যায় ... নিজেকে আগে মানুষ করি - সমাজ পরিবর্তন হতে বাধ্য ...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

সাব্বির ০০৭ বলেছেন: অসাধারণ লেখা, আপু! একেবারে আমার মনের কথা বলেছেন! দু্ঃখ হল, তবুও আমাদের দেশপ্রেমিক (?) বুদ্ধিজীবিদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে না!

২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩৮

মাজহারুল হুসাইন বলেছেন: একটা জিনিষ চোখে লাগল তাই বলতেছি । বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সমালোচনার কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু ! এই ধারনা কিভাবে হল ? এর অর্থ কি এই যে ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞ ?

তার ১৯৭২-৭৫ সালের শাসন নিয়ে সমালোচনা হয় । তিনি ৭১ সালের মত রাষ্ট্রপতি থাকলে এ সমালোচনার শিকার হতেন না । অথবা শাসক হিসাবে সফল হলে আমাদের ৭১ এর চেতনার সফল বাস্তবায়ন করলে এ রকম সমালোচনা করার সাহস ও কেউ পেত না ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.