![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের বর্তমান সমাজের মানুষের একটা বিশেষ, শুধু বিশেষই না বিশাল এক সমস্যা সেটা হলো আমরা ভাবি যে প্রভু কেন আমাদের প্রার্থনা মঞ্জুর করেন না।কিন্তু আমরা কোন মতেই ভেবে দেখি না যে প্রার্থনা করলাম সেটা আমার জন্য আসলেই প্রযোজ্য কি না। সে কারণেই প্রায়শই আমরা আত্মঅতৃপ্ততায় ভুগি। এই আত্মঅতৃপ্ততায় ভোগা মানুষগুলো যেমন তাদের নিজেদের জন্য ক্ষতিকর তেমনি সমাজের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ এদের মাঝেই নাস্তিক হবার প্রবণতা বেশি। আর এই নাস্তিকরা নিজেদের জন্য যেমন ক্ষতিকর আবার সমাজের জন্যও অনেক বেশি ক্ষতিকর। এই নাস্তিকদের বিষয়ে একটু ঘাটলে দেখা যাবে যে শুরুর দিকে এরা ধার্মিকই থাকে। জীবনের কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরে এদের মাঝ থেকে ধর্ম বিশ্বাসের ভিত্তিটা নিয়ত দূর্বল হতে থাকে। আর এই নাস্তিকদের মোটা অংশই আসে সেই পরিবার থেকে যাদের মধ্যে ধর্মীয় অনুশাসনের মাত্রা প্রকটভাবে কম। তার উপর বস্তুবাদী পড়াশোনার প্রভাব তো আছেই। এই বস্তুবাদী পড়াশোনা আমাদের শেখায় কোন কিছুর আউটপুট কিভাবে আসল, কিন্তু এটা শেখায় না এই 'কোন কিছু'টা কোথা থেকে আসল। এজন্যই নাস্তিকরা এটার উত্তর করতে সক্ষম যে মহাবিশ্বের উৎপত্তি কিভাবে হলো কিন্তু ঐ যে ঘন জমাটবদ্ধ হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মেঘ কিভাবে আসলো সেটার উত্তর দিতে অক্ষম। তাহলে নাস্তিক্যবাদে আমরা পাচ্ছি একটা অসম্পূর্ণ উত্তর যেটার উদ্ভব সৃষ্টির শুরুতেই হয়েছে। তারমানে হলো এরা যেখানে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে পুরাতন প্রশ্নটার উত্তর দিতে অক্ষম তারা কিভাবে বর্তমান কালের অতি আধুনিক সমস্যা গুলোর সমাধান দিবে? এ যেন বন্ধ্যার কাছে বাচ্চা প্রার্থনা অথবা ঘোড়ার কাছে ডিম চাওয়ার মত। এই মানুষগুলোর আরেকটা সমস্যা হলো তারা একটা ইনফাইনাইট (infinite) ফর (for) লুপের (loop) ভেতর ঢুকে গেছে। যেখান থেকে সহসা বেড়িয়ে আসা অতটা সোজা না। কিন্তু এদের মাঝ থেকে অনেকেই বেড়িয়ে আসেন। এর জন্য দরকার সঠিকভাবে বোঝা। একটা সাধারণ বিষয়কে অসাধারণ করা নাস্তিকদের দ্বারাই সম্ভব। তাদের মতে সব কিছুই এমনি এমনি হইছে। যদি সব কিছুই এমনি এমনি হয় তাহলে একখন্ড লোহা কেন ইস্পাতে পরিণত হয় না; কিম্বা কেনইবা কোন গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করতে হয় কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে? জানি এসবের উত্তর এমন কিছু একটা দিবেন যেটা সাধারণ ফুঁতেই উড়ে যাবে।যেমন বেশ কিছু দিন আগে এক নাস্তিক তার ওয়ালে লিখেছে অনেকটা এভাবে," কোরানেই আছে যে "বোঝার সুবিধার জন্য" কোরান এসেছে আরবীতে। এই লাইনেই কি পরিস্কার হয়ে যায়না যে কোরান কোন গ্লোবাল, ইউনিভার্সাল কিছু নয়?" এটা যে নিতান্তই পাগলের প্রলাপ বৈ কিছু নয় তার ব্যাক্ষা দিচ্ছি। সে যেটা বলেছে তার প্রেক্ষিতেই বলছি, কোরআন নাযিল হয়েছিল আরব দেশে। আরবদের মার্তৃভাষা হলো আরবি। এবং ঐ সময় আরব, সিরিয়া ইয়েমেন সহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক গুলো দেশের মানুষের মার্তৃভাষা আরবি। তাহলে তো ঠিকই আছে। বোঝার সুবিধার জন্য আরবি ছাড়া আর কোন ভাষা ছিল? আবার রোম, পারস্য সহ আরো অনেক বিধর্মী রাজার কাছেও আরবীতে মহানবী (সঃ) পত্র প্রেরণ করা হয়েছিল। কই তাদের তো ট্রান্সলেটর লাগে নাই। তার মানেও তারাও আরবী ভাষা বুঝত। আর কোরআনের প্রত্যেকটা কথার মধ্যে অনেক গুঢ় কথা লুকিয়ে আছে। সেটা নিশ্চয়ই ঐ দুই পয়সার নাস্তিকের বোধগম্য নয়। এখানে বোঝার সুবিধার্থে বলতে বেশিরভাগ মানুষ যে ভাষায় কথা বলে সেটা বুঝানো হয়েছে। আর ইংরেজিকে যে তথাকথিত ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ বলা হয় সেটা ২ বিশ্ব যুদ্ধের অনেক পরেও ইন্টারন্যাশনাল ছিল না। সেটা তথা কথিত বৈশ্বিক বলে পরিচিত পেয়েছে অনেক পরে। তাহলে কি দাঁড়াল? ঐ নাস্তিকের আধা পয়সার যুক্তি যে সহজেই মাইনাসে যায় খুব সহজেই অনুমেয়। আর ইউনিভার্সাল বলতে কতটুকু বোঝায় সেটাও জানা দরকার।আর ইংরেজি ভাষা শিখে নিজেরে ইউনিভার্সের বড়ো হেডাম মনে করা অতি উন্নতমানের বোকামি। ইউনিভার্স বলতে সমগ্র মহাবিশ্ব কেই বোঝায়।সমগ্র মহাবিশ্বের কোথাও ইংরেজি বলে কোন ভাষা নেই। শুধুমাত্র মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির এক ছোট এক গ্রহ পৃথিবীর ছোট শহরে বসে ছোট গলির কোন এক জীর্ণ কুটিরে বসে নিজেকে বড়ো ভাবা, স্রস্টা, সৃষ্টি এসবের প্রক্রিয়া নিয়ে নিজেকে বড়ো গবেষক ভাবাও একজাতীয় মানসিক ব্যাধি। আর নাস্তিকেরাই আপাতত এই ব্যাধির প্রধান উত্তরসূরী। এরা নিজেরা ঘোড়ার ডিম বুঝবে আর বাকী সমাজের মানুষকেও চেষ্টা করবে ঐ ঘোড়ার ডিম ভক্ষণ করাতে। আরেকটা বিষয় হলো এই নাস্তিকরা অধিকাংশই মুসলিম বিদ্বেষী অথবা মুসলিম বাদে অন্য ধর্মালম্বী। আবার মুসলিমদের ভিতরও একশ্রেণির নামধারী লোক আছে যারা পরিবার থেকে প্রকৃত শিক্ষার অভাবে নাস্তিক হয়ে গেছে। কারণ বর্তমানে বাংলাদেশে এমন কিছু পরিবার গড়ে উঠেছে যে পরিবারের পিতা-মাতারাই নিষিদ্ধ প্রেমের মাধ্যমে যেখানে পিতা-মাতাই তাদের প্রেম করার গল্পো গুলো রসিয়ে রসিয়ে আলাপ করে।তাহলে তারা কি শিখবে? তারা তো আর আজমীর শরীফের পীর হয়ে উঠবে না। এখানে আবার এমন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ঘটছে যেখানে নৈতিক মূল্যবোধের ব্যাপারটা সুকৌশলে মুছে ফেলা হচ্ছে। এই মানুষগুলোই যদি কিছুমাত্রার ধার্মিকতার খোলসে থাকে, আমি আসলে বলতে চাচ্ছি সেই সব নাস্তিকদের কথা যারা আপাত দৃষ্টিতে ধার্মিকতার লেবাসে আছে (কিন্তু আদতে যে কি না নাস্তিক, সমাজে চলতে হয় বলে একটা লেবাস ধরে আছে) সে যখন প্রার্থনা করার পরও কিছু পায় না সেক্ষেত্রে তাহলে দোষটা কার? তা কোন মতেই ঈশ্বরের নয়। কারণ তুমি ঈশ্বর সৃষ্ট এই পৃথিবীতে আছ সব কিছু ভোগ করছ তারপরও প্রতিনিয়ত তার সাথে গাদ্দারী করে যাচ্ছ, এর পরেও প্রার্থনা কেন মঞ্জুর হয় না এরম প্রশ্ন করাই অবান্তর। আবার মুসলিমদের মাঝেও এমনটা অনেক দেখেছি যে তারা এভাবে বলে যে আল্লাহ্'র কাছে এতো চাইলাম কিন্তু পাইলাম না কেন? এর অনেকগুলা কারণ বিদ্যমান। এর মধ্যে প্রধান যে কারণ সেটা হলো নিয়্যাত। বুখারী শরীফে বলা আছে, "প্রত্যেকটা কাজের ফলাফল নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। " তাহলে আমার নিয়্যাত যদি খারাপ থাকে তাহলে ঈশ্বর কিভাবে তা কবুল করবেন? আরেকটা বিষয় হলো প্রার্থনায় অমনোযোগিতা। কুরআনে একারণেই বলা আছে,"অনেকেই তাদের সালাতের ব্যাপারে উদাসীন।" অনেকেই মসজিদে আসেন কিন্তু তার মন পড়ে থাকে বাসায় অথবা যে কাজে ব্যস্ত থাকেন সেখানে। নামাযে এমন মুসুল্লিও আছে যে অমনোযোগিতার জন্য কয় রাকআত নামায পড়েছেন সেটাই খেয়াল থাকে না। তাহলে এক্ষেত্রে দোষটা কার? সহজেই অনুমেয়। এরকম আরো অনেক কারণ দেখানো যাবে। তাই আগে নিজে শোধরাই তারপর দেখি প্রার্থনা মঞ্জুর হয় কি না দেখি। কারণ কোরআনে এরকম বলা আছে, "নিশ্চয়ই মানুষ হচ্ছে অকৃতজ্ঞ।" এহেনও অকৃতজ্ঞ মানুষ কে যে প্রভু বার বার শোধরানোর সুযোগ দেন এটার কৃতজ্ঞতাস্বরুপই কি কখনো আমরা কখনো শোকর-গোজারী করি? সব সময় নিজেরটাই বুঝেন তাই না?
©somewhere in net ltd.