![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথম বিষয়টা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিটা মানুষের জীবনে। প্রথম শব্দটার ভেতরেই থাকে খুব একটা ভালো লাগা মুহূর্ত। মানুষ তার প্রথম কিছুই ভুলতে পারে না। আর ভুললেও খুব কষ্ট হয়। কারণ প্রথম ঘটা বিষয়গুলো সহসাই মনের ভেতর দপ করে জ্বলে ওঠে। শুরুটা হয় সেই শৈশব থেকে, বুঝতে শেখার পর থেকে। আসলে শুরু হয়না, প্রথম বিষয়টা পুরোটাই প্রকৃতিগত। শৈশবে কিনে খাওয়া দু'টাকার তিলে গজা এখনো ভুলতে পারি না। অথবা লাটিম ঘুরাতে গিয়ে রাস্তার আইল বেয়ে হারিয়ে যাওয়া অনেক লাটিম, এখনো মাঝে মাঝে মনে হয় খুঁজে দেখি। কিন্তু দেখি না। কেন দেখিনা তা বলতে পারি না। হয়তো ওটাই আমার শৈশব। থাক না কোন বৃহৎ মৃত্তিকা খন্ডের তলায় লুক্কায়িত। প্রাইমারি স্কুলের দিনগুলি, প্রথম বন্ধু হিসেবে কাওকে বুঝতে পারা। অবশ্য তখনো জানতাম না বন্ধুত্ব কি? তবুও ক্লাসের পাশে বসা সবুজ ফ্রক পড়া সেই মেয়েটিকে আজো ভুলিনি। অথবা টিফিন ভাগ করে খাওয়াটা। এখনো কলিগদের সাথে প্রায়ই লাঞ্চ শেয়ার করি, কিন্তু ঐ স্বাদটা আর পাই না। তখনকার সময়গুলোর একটা আলাদা গন্ধ ছিলো হয়তো। চোখ বুজলে কেমন ভেসে আসে। শৈশবটা কাটে প্রায় সবারই চঞ্চলতায়। হাই স্কুলে উঠে কেমন একটা চনমনে ভাব চলে আসে সবার মধ্যে। শৈশবের চঞ্চলতা কেটে যায়। ছেলেটার হাফ প্যান্ট হাঁটু বেয়ে নেমে যায় পায়ের গোড়ালি অবধি। মেয়েটাও ফ্রক ছেড়ে সালোয়ার কামিজে নিজেকে সাজায়। প্রথম ফুলপ্যান্ট পড়ে স্কুল মাঠে সালোয়ার কামিজে মেয়েটিকে দেখে কেমন একটা বোধ হয়েছিলো। কেমন তা বলতে পারিনা কিন্তু অনুভবটা যে প্রথম, বেশ সতেজই রয়ে গেছে। ছেলেটার চোখে ঘোর লাগে, মেয়েটার চোখে স্বপ্ন। বিদ্যালয় বার্ষিক অনুষ্ঠানে মেয়েটার গান কিংবা ছেলেটার কবিতা পাঠ, এখনো সতেজ হয়ে আছে। আজও জীবন্ত হয়ে আছে খেলার মাঠে বন্ধুদের সাথে হুটোপাটিতে মেয়েটার হাতে অসাবধানতাবশত লেগে যাওয়া স্পর্শ। কেমন একটা শিহরণ বয়ে গিয়েছিলো ভেতরে, মেয়েটাও হয়তো কেঁপে উঠেছিলো অজানা শঙ্কায়, প্রথম। ক্লাসের ২য় সারির কোনার দিকে বসে থাকা হিন্দু মেয়েটি, ভালো লাগতো কিনা জানি না, কিন্তু এখনো মনে পড়ে। মেয়েটার বাড়ি ছিলো আমাদের দশ বাড়ি পর। প্রায়ই বাড়িটার পাশ দিয়ে যেতে যেতে আনমনে তাকিয়েছি বাড়িটার দিকে। আনমনে না সচেতন ভাবেই তাকিয়েছি। অবশ্য তাকানোর কারণ ছিলো মেয়েটা বড়ো দিদি। আহামরি কোন সুন্দরী বলে তাকাইনি। তাকিয়েছি আলুথালু হয়ে থাকা পাগলী মেয়েটার বিষণ্ণ চেহারার দিকে। মানষিক প্রতিবন্ধী ছিলো। কিন্তু কেনজানি মনে হত আমার উৎসুক চোখের দৃষ্টি সে বুঝতে পারতো। কেমন একটা বড়োবড়ো চোখে তাকাত। কথা বলতে পারলে হয়তো বকাও দিত। অতশী, ওহ মনে পড়লো নামটা, অতশীর দাদা আমাদের সাথে বিকেলে খেলত। আমাদের ২/১ ক্লাস সিনিয়র। কিন্তু অষ্টম শ্রেণির পড় আর এগুয়নি পড়ার দৌড়। তাই বাশু কাকার, অতশীর বাবা, সাথে মুদি দোকানই করত। ওর সাথে ভাব ছিলো খুব। প্রায়ই ওদের বাড়িতে যেতাম। গেলেই কাকী নাড়ু মুড়ি খেতে দিত। আবার বিভিন্ন পার্বনে পিঠা-পায়েশও থাকত। অতশী কিছু বলতো না। চেয়ে থাকতো। চোখে চোখ পড়লে দৌড়ে পালাত। আমি যেতাম আরেক কারণে, অতশীর দিদি, অনিতাকে দেখতে। অবাক হয়ে ওকে দেখতাম। একটা মানুষ এমন কিভাবে হয়? কেন হয়? জানতাম না। ২০/২২ বছরের মেয়ে। কোমর থেকে পা পর্যন্ত অপুষ্টির জন্য আর বাড়তে পারেনি। বাড়েনি বুদ্ধিতেও। কিন্তু চোখজোড়া বড়ো মায়াবী। চেয়ে থাকলে মায়া হয়। আলুথালু থাকলেও নিজের ব্যাপারে বেশ যত্নশীল ছিলো। বিশেষত কাজল কালো চোখদুটির প্রতি। হয়তো কাজল পরতো তাতে। কেমন একটা লজ্জা লজ্জা আভা থাকতো মুখে। খারাপ লাগতো না। হয়তো কিছু একটা ভালো লাগা কাজ করত।
সেবার এলাকায় একটা মারামারি লাগে। নৃপেনকে, অনিতার দাদা ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। বাশু কাকাকে দেখলাম সকালে বাবার হাত ধরে কান্নাকাটি করছে। ঘটনা শুনে বুঝলাম, এলাকার যোগেন ঘোষের কাছে বাশু কাকা কিছু টাকা পেত। সেই টাকা না দেবার ফন্দিতে নিজের ভাইকে সম্পতির ভাগ থেকে বঞ্চিত করতে তাকে মেরে সেই দোষ চাপিয়েছে নৃপেনের উপর। দুদিন পর নৃপেনকে ছাড়িয়ে আনে বাবা। আবার সেই খেলার মাঠ, পোড়োবাড়ী, অনিতা। খেলতে গিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা কাঁচে পা কেটে গিয়ে এক রক্তারক্তি অবস্থা। তারপর অনেকদিন বাড়িতে থাকতে হয়েছিলো। পা অনেকখানি কেটেছিলো কিনা। তখনই প্রথম টের পাই বাড়ীতে আটকে থাকা কতটা যন্ত্রনার। অনিতার কথা মনে হত। হয়তো অনুভব করার চেষ্টা করতাম ওর কষ্টগুলো। অনেকদিন স্কুলেও যাইনি। পড়াশুনায়ও পিছিয়ে পড়েছিলাম বেশ। তারপর একদিন স্কুলে গিয়ে হাজির। বেশ পরে যাওয়ায় মেয়েদের সারীর পেছনের সিটে বসতে হয়েছিল, আরেকটি মেয়ের সাথে, লিপির সাথে। প্রথম কোন মেয়ের পাশে একসাথে বসে ক্লাস করা। আমি কেমন যেন কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম। লিপিই আড়মোড়া ভাঙলো কথা শুরু করে। টিফিনের ব্রেকে লিপির কাছ থেকে এতোদিন ক্লাসের হয়ে যাওয়া পড়াশোনার খোঁজ নিচ্ছিলাম। অতশীকে দেখলাম এক নজর। হয়তো চোখ জোড়া ছল ছল করে উঠেছিলো ওর। প্রথম হয়তো কারো চোখ আমার জন্য ছল ছল করে উঠলো। পরের দিন স্কুলে যেতেই খবর পেলাম বন্ধু শরীফের বাবা আব্বাস আলী স্যার, আমাদের সমাজ পড়াতেন, সকালে ইন্তেকাল করেছেন। শুনেই ভেতরটা কেমন হুহু করে উঠলো। মৃত্যু সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিলো না। খুব কেঁদেছিলাম সেদিন। মনে হয় শরীফের চেয়েও বেশি। শরীফের বাবার মৃত্যুর পর তিন দিন শরীফের সাথে ওর বাড়িতে ছিলাম। গ্রামে মানুষ ৯-১০ টার ভেতরই শুয়ে পড়তো, আমরাও তাই। ওদের বাড়ি গিয়ে দেখলাম সবাই ঘুমিয়ে পড়লে শরীফ উঠে পড়ত, আর ওজু করে এসে নফল নামাজ পড়তো অনেকক্ষণ। নামাজে কান্নার বাঁধ ভেঙ্গে যেত ছেলেটার। বাবাকে কোন ছেলে কতটা ভালোবাসতে পারে ওকে দেখে প্রথম বুঝেছিলাম। সেদিনই প্রথম বুঝেছিলাম সব কান্না দেখা যায় না। ইতোমধ্যে টেস্ট পরীক্ষা এগিয়ে আসতে লাগলো, পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। ফরম ফিলাপের জন্য ৬০০ টাকা করে লাগতো। আমরা সবাই লাস্ট ডেইটের আগেই জমা দিয়েছিলাম। শেষের দিন অতশীকে দেখলাম মন খারাপ করে স্কুল মাঠের শেষ মাথায় গাছ তলা বসে আছে। কথা বলে বুঝলাম ফরম ফিলাপের টাকা জোগার হয়নি। স্কুল থেকেও সাহায্য চেয়ে পায় নি। হেড স্যারের সাথে দেখা করতে গেলাম ওর বিষয়ে কথা বলতে। হেড স্যারের সেদিন জবাব ছিলো, “আরে ও সব হিন্দুর বাচ্চারা পড়া শিখলেই কি আর না শিখলেই কি। বিয়া কইরাই তো কয়দিন পর চইল্যা যাবি ইন্ডিয়া”। সেদিনই প্রথম বুঝেছিলাম হিন্দুরা এক জাতি আর মুসলমানরা আরেক জাতি। কিন্তু পরে অতশী ম্যাট্রিক পরীক্ষাতে বসেছিলো। কিভাবে বসেছিল সেটা না বলি। রেজাল্ট হবার পর শহরে চলে এলাম। কলেজে ভর্তি হতে। শহরে এসে প্রথম বুঝলাম পৃথিবী অনেক বড়ো। শহরের বড়ো উদ্যানে আমি আর শরীফ, ওর বাবা মারা যাবার পর বেশ ভাব হয় ওর সাথে, প্রতিদিন বেড়াতে যেতাম। নানা রকম মানুষ দেখতাম সেখানে। অবাক হয়ে চেয়ে চেয়ে দেখতাম। শরীফকে দেখতাম লাল নীল কাগজে নিজের মনের কথা লিখতে। কেন লিখত, কার কাছে লিখতো কোন দিন শোনা হয় নি। এমনি একদিন বসে আছি উদ্যানে, লিপিকে দেখলাম বাচ্চা কোলে করে ওর দ্বিগুণ বয়সী এক লোকের সাথে বসে গল্প করছে। আমি ভেবেছিলাম ওর বাবা হবে হয়তো। কিন্তু ঘোর কাটলো ওর উত্তর শুনে। ঐ দ্বিগুণ বয়সী লোক নাকি ওর স্বামী। ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ভালো ফল হয়নি। তাই বিয়ে দিয়ে দিয়েছে। সেদিন প্রথম অবাক হয়েছিলাম বলতে গেলে। পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করলে বিয়ে করিয়ে দিতে হবে! শহরের মানুষগুলোকে আমার প্রথম দৃষ্টিতে পাথরের মূর্তি মনে হয়েছিল। কেমন একটা অপরিমিত গতিশীলতা। প্রথম প্রথম ভাল্লাগতো না। পরে অবশ্য ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখনো বেশকিছুদিন গ্রামে কাটালে শহরে একটু অপ্রস্তুতই লাগে বৈকি।
কলেজ বন্ধ হওয়ায় বেশ লম্বা একটা ছুটি পেয়েছিলাম। বাড়ি এসে শুনি অতশীর দিদি মারা গেছে। শুনে বেশ কষ্ট পেয়েছিলাম। দৌড়ে ওদের বাড়িতে চলে গেছিলাম। অতশীকে দেখলাম মন মরা হয়ে আছে। নৃপেন দোকানে গেছে। অতশীর দিদির ঘরে কখনো যাওয়া হয়নি সেদিন গেছিলাম, কিন্তু অনিতা, অতশীর দিদি ছিলো না। ছোট একখানা ঘর, একটা চৌকি। তাতে বিছানা বালিশ পাতা। দেয়ালের একপাশে কিছু ময়লা পুরাতন কাপড়। দেয়াল জুড়ে দেখলাম অনেক শতরঞ্জি। শুনলাম এগুলো সব অতশীর দিদির সেলাই করা। একজন নির্বাক মানুষের ভেতরে এতো কথা লুকিয়ে থাকতে পারে শতরঞ্জি গুলা না দেখলে বিশ্বাস হতো না। খুব মন খারাপ হয়েছিল। অনেকদিন মনে হয়েছে অনিতার হাতটা একটু ধরে দেখি অথবা চোরা চোখে না দেখে সোজাসুজি দেখি মেয়েটার চোখ দুটোকে। কিন্তু সাহসে কুলোয়নি। বাড়ি ফিরে মন খারাপ করে বসেছিলাম সারাদিন, সারা দুপুর, সারা বিকেল। সন্ধ্যার নামাজের দুআ তে বলেছিলাম আল্লাহ্’কে, “হয়তো, অনিতার বাবা মায়ের দোষ আছে। কিংবা হয়তো সত্যের আলো সেভাবে পায়নি। কিন্তু মেয়েটার তো কোন দোষ নেই, ও তো জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। ওকে তো কোনদিন মূর্তির সামনে মাথা নোয়াতে দেখিনি। ওকে দয়া করে জাহান্নামে দিও না, আল্লাহ্”।ওর জন্য সেদিন প্রার্থনাও করেছিলাম। পৃথিবীতে কারো জন্য সেদিনই প্রথম প্রার্থনা করেছিলাম। কিন্তু পরক্ষণেই হেড স্যারের কথা মনে পড়ে গেছিলো। বোধ হচ্ছিলো ভুল করলাম নাতো? আরেহ হলই না হয় একটু ভুল। কিইবা এমন ক্ষতি হবে। ওরাও তো মানুষ। ওদের কে তো আল্লাহ্ই সৃষ্টি করেছেন। এরম সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে সময় আগাতে লাগলো। কখনও ঝড়ো বেগে কখনো মিষ্টি মধুর ছন্দে। দিনকে দিন ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। বদলাতে থাকি আমি আমরা। বহুদিন গ্রামে যাওয়া হয়না। তাই ওদেরও কোন খোঁজ খবর পাইনি। অনেকপরে শুনেছিলাম একরাতে ওরা সবাই অজ্ঞাত কারণে আত্মহত্যা করেছিল। কেন করেছিল কোন দিন খোঁজ করিনি। হয়তো কেউ মেরে ফেলেছিল ওদের বাড়ীটা দখল করার জন্য। অথবা হয়তো ভারত যাবার টাকা যোগার করতে পরেনি, অথবা.... থাক আর চিন্তা করতে ভাল্লাগছে না। চিন্তাগুলোও আজ এলোমেলো। স্থির থাকতে চায় না। কেউ নেই আজ। শরীফ, বাসু কাকা, নৃপেন, অতশী, লিপি কিংবা অনিতা। কোথায় যেন সহসাই হারিয়ে গেছে। আচানকই। এখনো মাঝে মাঝে বাগানের বেলী ফুল গাছের নীচে দাঁড়িয়ে প্রথম তোমার হাত থেকে পাওয়া সেই বেলী ফুলের গন্ধ খুঁজতে থাকি। এখনও রাস্তায় বেরুলে কোন তিলে গজাওয়ালা বা লাটিম বিক্রেতাকে দেখি। অপলক দৃষ্টিতে দেখি। মনে হয় এরকমই কোন লাটিম বিক্রেতার কাছে হয়তো জমা আছে হাজারো শৈশব। শিশুর হাতের গ্যাস বেলুন বা রমণীর কাজল চোখের গভীরে হয়তো লুকিয়ে আছে কারো শৈশবের কৈশরের প্রথম ভালোলাগা। দিন গুলো হঠাৎই হারিয়েছে। কোথায় হারিয়েছে? জানি না তো...
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৭
মসীহ্ বলেছেন: thanks for your patience and for reading my blog.
২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৪:৫৫
জাহিদ অনিক বলেছেন:
হুম ! ১ম অনেক কিছুই স্মৃতিতে রয়ে যায়। মাঝেমাঝে স্মৃতি ধোকা দেয়। তবে বিস্মৃতি হবার চেয়ে ভালো বোধহয় আর কিছুই নেই।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮
মসীহ্ বলেছেন: বিস্মৃতি হওয়াও যে অনেকটা কষ্টের...
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৪
আমি তনুর ভাই বলেছেন: more appreciating blog! Great internet site! It looks extremely good! Maintain a good job!| you are rocking man…!