নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাবছি....\n\nআরেকদিন লিখব

প্রীতি পারমিতা

প্রীতি পারমিতা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপেক্ষা

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৬

বাবার বকা খেয়ে সুহা সোজা চলে গেল ছাদে। তারপর ছাদের এক কোনায় তার প্রিয় একটা জায়গায় বসে হাঁটুতে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগল। তারপর হঠাৎ কে যেন বলল, “কি হয়েছে আমার সুহা মামুনির? এই সুহা'', সুহা মাথা তুলে তাকাল। চারপাশে ভালো করে দেখল, নাহ! কেউ নেই। কারন এই কণ্ঠস্বরটা যার সে আজ ওর থেকে অনেক দূরে। সুহা জানে না কত দূরে এবং কোথায় সে।

সুহা ধীরে ধীরে উঠলো। তারপর ওর ঘরে যেয়ে খাতা পেন্সিল নিয়ে বসে পড়ল চিঠি লিখতে। আজ স্কুলে টিচার ক্লাশে চিঠি লেখা শিখিয়েছেন। সোহা তার খাতায় গোটা গোটা করে লিখতে শুরু করলো,

প্রিয় মামুনি, কেমন আছো? কোথায় তুমি? আমাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেলে? মামুনি, জানো আমাকে না কেউ ভালোবাসে না। বাবা খালি বকা দেয়। আর ভাইয়া পড়ালেখা বাদ দিয়ে সারদিন ল্যাপটপ নিয়ে বসে থাকে। আর বুয়া কাজ না করে সারাদিন সিনেমা দেখে, আমাকে একটুও কার্টুন দেখতে দেয় না। আমাকে আর আগের মত দেখে না, আমি শুধু একা থাকি। তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো আমার ভালো লাগে না এখানে। আমাকে তোমার কাছে নিয়ে যাও। আমি তোমার চিঠির অপেক্ষায় থাকলাম। তুমি ভালো থেকো।

ইতি

তোমার সুহা

তারপর সুহা চিঠিটা নিয়ে দারোয়ান কাকার কাছে গেল। এ বাড়িতে একমাত্র দারোয়ান কাকাই ওকে আদর করে। সে দারোয়ান কাকাকে বলল, “কাকা আমি মার কাছে চিঠি লিখেছি। মার ঠিকানা তো জানি না, তুমি কি জানো?” দরোয়ান কাকা চুপ করে রইলেন। তারপর হেসে বলল, “চিঠিটা আমাকে দাও। আমি মার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিব।” সুহা খুশি হয়ে দারোয়ান কাকাকে চিঠিটা দিয়ে বলল, “ মামুনি আমাকে চিঠি দিবে তো?”

দারোয়ান কাকা বলল, “ হ্যাঁ দিবে, তুমি অপেক্ষা কর।'' সুহা এই কথা শুনে খুশি হয়ে গেল। নিজের ঘরে যেয়ে অপেক্ষা করতে লাগল মায়ের চিঠির জন্য। ঘরে এসেই কেমন যেন উদাসীন লাগতে শুরু করল। সুহা চলে এর তার ঘরের ছোট্র জানালাটার পাশে। মরচে ধরা গ্রিল ধরে সে আকাশের তারা গুলোর দিকে তাকাল! তাকিয়ে বলল, “মামুনি, চিঠি দিও কিন্তু, আমি চিঠির অপেক্ষায় থাকলাম”।

সুহা জানেনা তার এই চিঠির উত্তর আসবেনা কখনো! পরীক্ষার খাতায় যেমন ভুল করে সুহা ও ঠিক তেমনি ভুল করল, সে চিঠির প্রাপকের ঠিকানা লিখতে পারল না! দু চোখে রাত জাগা ক্লান্তির শোক আর মনের মাকোণে ছোট্ট আশা বেঁধে মামুনির চিঠির অপেক্ষায় ঘুমিয়ে পড়ল সুহা। সে তো জানে না যে তার মামুনি আকাশের ওই তারাদের মাঝে একজন হয়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে!! :(

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৬

মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ বলেছেন: খুব সুন্দর হয়েছে লেখাটা, পড়ে ভালোলাগলো।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৪

প্রীতি পারমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া :)

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০০

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লাগল , অনেক ভাল লিখা।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৫

প্রীতি পারমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া :)

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৪

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: চিঠি আর আসবে না সুহাও উত্তর খুজে পাবে না :( :( :(

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৬

প্রীতি পারমিতা বলেছেন: হুম অপেক্ষাও শেষ হবে না :(

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ২:১৯

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: আবেগটা বাস্তবতার প্রতীক।

কিন্তু আমার ভুল না হলে এমন লেখা অথবা এটার দৃশ্যায়ন করা কোন চিত্র আমি দেখেছি আগেও।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৭

প্রীতি পারমিতা বলেছেন: হতে পারে। কারণ গল্পটা তিন বছর আগে লিখেছিলাম এবং অন্য একটা ব্লগে প্রকাশ হয়েছিলো :)
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ :)

৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৬

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: অপেক্ষা তো প্রতিমহূর্তে সবাইকে করতে হয় :Dভাল লাগলো:)

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৮

প্রীতি পারমিতা বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.