নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অচেনা পথিকের ব্লগ

আমি ব্লগিং এর জগতে একেবারেই নতুন।আমি ভালবাসি প্রতিদিন নতুন কিছু শিখতে।আর ভালবাসি মানুষের জন্য কিছু করতে।

মিজানুল হক

আমি ব্লগিং এর জগতে একেবারেই নতুন।প্রতিদিন নতুন কিছু শিখতে আমি ভালবাসি।আর ভালবাসি মানুষের জন্য ভাল কিছু করতে।

মিজানুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিকিৎসক নির্যাতন-এর শেষ কোথায়? কি এর পরিণতি? সমাধানই বা কি?

০৯ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০০



টংগীর এক প্রাইভেট হাসপাতালে “কটসন” ইঞ্জেকশন দিয়ে রোগী মেরে ফেলা হয়েছে(বিস্তারিত এখানে)। “কটসন” ইঞ্জেকশনের এত পাওয়ার হলো কিভাবে বোঝা গেল না। জ্বর আসলে যেমন প্যারাসিটামল দেই তেমনি একিউট এজমার রোগীকে সকাল বিকাল রাত্রি মুড়ি মুড়কির মত কটসন দেয়া হয়। বাস্তবে টক্সিক ডোজ বিবেচনা করলে প্যারাসিটামলের তুলনায় কটসন ইঞ্জেকশন একটা নিরীহ ড্রাগ ।

আমার মতে মামলা হওয়া উচিত ছিলো ঐ রোগীর এটেন্ডেন্স দের নামে, যারা ডাক্তার ঢাকা মেডিকেল এ রেফার করার পরেও রোগী নিয়ে যায়নি। সাধারন মামলা না খুনের মামলা। শুধুমাত্র আত্বীয় স্বজনের অবহেলায় রোগীটা মারা গেছে। মামলা হয়েছে ডাক্তারের নামে। মাথামোটা পুলিশ প্রশাসন ডাক্তারকে গ্রেপ্তারও করেছে।

হায়রে দেশের আইন...


আচ্ছা, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কি কয়েক বছরের মধ্যে এতই খারাপ হয়ে গেল যে শুধুমাত্র চিকিৎসকের অবহেলার কারণে হঠাৎ করে এত রোগী মারা যেতে শুরু করল?

পরিসংখ্যান কিন্তু তা বলে না।
মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলে বাংলাদেশের যতটুকু অর্জন তার প্রায় সবটাই কিন্তু চিকিৎসা ক্ষেত্রে। শিশুমৃত্যু মাতৃমৃত্যু হার হ্রাসে দেশের অগ্রগতি সারা বিশ্বে প্রশংসিত। এর কৃতিত্ব কিছুটা হলেও চিকিৎসকদের প্রাপ্য।

কোন লজিস্টিক্যাল/প্যাথলজিক্যাল সাপোর্ট বা যথাযথ একমোডেশন না দিয়ে , কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করে প্রতি বছর একঝাক চিকিৎসককে পাঠানো হয় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। নানা ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখী হয়ে সেবা দিয়ে যাওয়া এই চিকিৎসকরাই তো এই অর্জনের পেছনের মূল কারিগর।

অথচ এরা আজ স্বীকার হচ্ছে নির্যাতনের।

অভিযোগ?

ভুল চিকিৎসা…

চিকিৎসক ভুল চিকিৎসা দিচ্ছে সেটা বুঝতে হলে একজন চিকিৎসক হতে হবে। আর্টস নিয়ে পড়া সাংবাদিক বা এইট পাশ ওয়ার্ড সভাপতি চিকিৎসকের ভুল ধরার ক্ষমতা রাখে? কিভাবে?

একজন রোগী যখন মারা যায় স্বাভাবিক ভাবেই তার আত্বীয় স্বজনের মানষিক অবস্থা খারাপ থাকে। তাদের যদি উস্কায়ে দেয়া হয় যে রোগী মারা গেছে চিকিৎসকের ভুলে তখন তারাই ঘটায় এই ঘটনাগুলো। কত কয়েক বছর দেশের পত্রপত্রিকাগুলো সরকারি হাসপাতাল এবং ডাক্তারদের নামে নানা রকম মিথ্যা বানোয়াট কাহিনী লিখে মানুষের মন বিষিয়ে তুলেছে। এখন রোগী মারা গেলে মানুষ সবার আগে ভাবে ডাক্তার আসতে কি দুই মিনিট লেট ছিল বা ডাক্তার কোন ইঞ্জেকশন পুশ করেছিলো কিনা ?

অথচ এই পত্রিকাগুলো কখনো প্রচার করেনি যে সরকারী হাসপাতালে প্রতিদিন কত শত অপারেশন ফ্রি তে করা হচ্ছে। আউটডোর ইমার্জেন্সিতে নামমাত্র মূল্যে হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে।

একটু তুলনা করে দেখুন সরকারী অন্য সেক্টর গুলোর সাথে সরকারী হাসপাতালের। সরকারী ব্যাংক, অফিস আদালত, শিক্ষাবোর্ড থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ অফিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ পর্যন্ত প্রতিটা যায়গায় অবৈধ লেনদেন ছাড়া আপনি একটা কাজও আদায় করতে পারবেন না। হাসপাতালগুলোই একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান যেখানে চিকিৎসা পেতে কোন ঘুষ লাগে না। কেউ কেউ হয়ত বলবেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের বখশিষের কথা। তাদের বিনীত ভাবে জানাই এর সাথে চিকিৎসকদের কোন সংযুক্তি নাই এবং এই অর্থের পরিমানও অতি নগন্য। কোন রকম অর্থ লেনদেন ছাড়াই যেখানে দিনে হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা পাচ্ছে সেখানে চিকিৎসা দিচ্ছে যে চিকিৎসকরা তারা কি সততার জন্য প্রশংশা পাবার যোগ্য না? দেশের প্রতিটা সেক্টর যেখানে দুর্ণীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত সেখানে সম্পূর্ণ সিস্টেমকে ঘুষমুক্ত রেখে দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন যে চিকিৎসক রা তারা কি ন্যূনতম ক্রেডিট ডিজার্ভ করে না?

অথচ এরা কাজ করে মানুষের জীবন নিয়ে। কি পরিমাণ মানষিক চাপ একজন চিকিৎসককে নিতে হয় সেটা কি কেউ কল্পণা করতে পারে? একজন রোগীর জীবন মৃত্যু নিয়ে এদের কাজ। সেই কাজটা যাতে মনোযোগ দিয়ে করতে পারে সেই ব্যবস্থা করা কি দেশের দায়িত্ব নয়? তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কি প্রশাসনের কর্তব্য নয়?

সামনে মরণাপন্ন রোগীকে নিয়ে যদি চিকিৎসককে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় তাহলে তার পক্ষে কোনদিনই সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া কি আসলেই সম্ভব ?

চিকিৎসকের সাথে দেশের অন্য সব পেশারজীবিদের কাজে অনেক পার্থক্য আছে। চিকিৎসক মানুষের জীবন মৃত্যু নিয়ে কাজ করে। এত বেশী মানষিক চাপ অন্য পেশার মানুষকে সহ্য করতে হয় না। অন্য সব পেশার মানুষ বিভিন্ন রকম ছুটি ভোগ করে। খাতা কলমে চিকিৎসকরা এই ছুটিগুলো পেলেও বাস্তবে কিন্তু সেগুলো ছুটি নয়। নৈমিত্তিক ছুটি, অর্জিত ছুটি নিতে হলে তার নিয়মিত ডিউটিগুলো তাকে কোন না কোন ভাবে ম্যানেজ করতে হয়। ফলে কাগজে কলমে ছুটি পেলেও তাকে বাড়তি কাজ করে পরে সেগুলো পুষিয়ে দিতে হয়। শুধু এগুলোই নয় ঈদ, পূজা পার্বণে ইমার্জেন্সি সার্ভিস কিন্তু ঠিকই খোলা রাখতে হয় চিকিৎসকদের।

তাহলে চিকিৎসকরা কি বাড়তি প্রণোদনা আশা করতে পারে না? আলাদা বেতন কাঠামো কিংবা আলাদা কোন সম্মান, আলাদা কোন উৎসাহ ভাতা?

যাদের কাছে সর্বোচ্চ এবং আন্তরিক সেবা আমরা আসা করি তাদের জন্য একটু বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও কি রাষ্ট্রের করা উচিত নয়?

এই লেখা দেশের নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌছাবে না। কোন সমাধানও আসবে না। তাই ঘটনা প্রবাহের সর্বশেষ ফলাফল বলে নেই।

ইমিডিয়েট যে সমস্যা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে তা হলো চিকিৎসক ইমার্জেন্সি ট্রিটমেন্ট দিতে ভয় পাচ্ছে। এজমার রোগীকে “কটসন” দেয়ার অপরাধে যদি তাকে গ্রেপ্তার হতে হয় তাহলে সে কিভাবে ইমার্জেন্সি রোগীর চিকিৎসা করবে। যে রোগীকে একটা ইঞ্জেকশন দিলে হয়ত সে আরেকটু বেশী সময় পেত মেডিকেল পর্যন্ত পৌছাইতে সেখানে নিরাপত্তার ভয়ে ডাক্তার কোন চিকিৎসা না দিয়ে রেফার করবে। ফলাফল কি হবে বুঝে নিন।

এখন দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রটি ডাক্তার হবার স্বপ্ন দেখে না। আগামী পাঁচ-দশ বছর এভাবে চলতে থাকলে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে দেশের দ্বিতীয় তৃতীয় লেভেলের ছাত্ররা। সবচেয়ে ভয়ংকর তথ্য হলো ডাক্তারদের মধ্যে বিদেশে যাবার ইচ্ছা এখন প্রবল ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে যেটা কয়েক বছর আগেও ছিল না। বলাই বাহুল্য দেশের বাইরে তারাই যাবে যারা বাশী যোগ্য, বেশী মেধাবী। আগামী ১৫-২০ বছরে চিকিৎসাক্ষেত্রে মেধাশূন্যতা দেখা যাবে।

এই সঙ্কট হবে ভয়াবহ সঙ্কট। অনেকটা মেরুদন্ড ভেঙে দেয়ার মত। মেরুদন্ড ভাঙার এই প্রক্রিয়া ইতিঃমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

কোন বিচিত্র কারণে আমাদের দেশের রাজনৈতিক/প্রশাসনিক ব্যাক্তিত্বদের ধারণা শুধু গ্রামে চিকিৎসকের থাকা নিশ্চিত করতে পারলে সকল সমস্যার সমাধান হবে।

সাময়িক এই মলম বিতরণ বন্ধ করে এবার তারা কি ভেবে দেখবেন কিভাবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা একটি স্থায়ী এবং শক্তিশালী ভিত্তির উপর স্থাপন করা যায়?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: অনেক আগে দেখা একটা ছবির ডায়ালগ মনে হয় অনেকটা এরকমই ছিল “You know! Your honor! When we, the doctors, stay in the O.T. (Operation theatre), Angel of Death waits outside the door?”.
ছোট ছিলাম, ছবিটা খুব দাগ কেটেছিল মনে। আপনার লেখাটা পড়ে আবার ছবিটার কথা মনে পড়ে গেল (যদি কোন পাঠকের ছবিটার নাম জানা থাকে, তাহলে জানানোর অনুরোধ রইল)।
ছবিটার ডাক্তারেরও একই অবস্থা হয়েছিল। ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে তার নামে রোগীর আত্মীয় স্বজনেরা কোর্টে মামলা করেছিল, কোর্টে দাঁড়িয়ে ডাক্তারও চিৎকার করে এই কথাটিই বলেছিল।
কিছু ডাক্তার যে কর্তব্যে অবহেলা করে না, তা নয়। কিন্তু যে এ্যাটেনডেন্ট ডাক্তারীর "ড" ও জানে না, সেই যখন একসময় রোগ বিশারদ হয়ে উঠে তখন সত্যিই খুব অবাক লাগে।
আপনার কষ্টটা বুঝতে পারছি। দেখবেন, একসময় সব ঠিক হয়ে যাবে। সেদিন ডাক্তার বা রোগী কেউই আর বিদেশ যেতে চাইবে না, রোগীর এ্যাটেন্ডেন্ট রাও পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা করবে।
আমরা ধীরে ধীরে হলেও সে পথে এগিয়ে যাচ্ছি।

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৪

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ডাক্তারদের প্রতি মানুষদের যেখানে থাকার কথা কৃতজ্ঞ , সেখানে অধিকাংশ মানুষ দিনদিন হয়ে পড়ছে বীতশ্রদ্ধ । দায় কার?

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:০৩

আমিনুর রহমান বলেছেন:



এই নিউজটা আমি আজকে সকালেই পড়লাম তখনই ঘটনা মনে পড়েছিলো। আপনার পোষ্টেই সে ঘটনাটা বলি।
ঘটনাটি গত ৫ তারিখের। অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে আমার এক কাজিন রাত ৩টায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়।
যাইহোক আমি মেডিকেলে পৌছাই সাড়ে ৫টার দিকে। ধরেই নিয়েছিলাম কোন ডাক্তারকে দেখা যাবে না। বড়জোর ঘুমানো
অবস্থায় পাবো। ভুল ছিলো আমার ধারণা গিয়ে দেখি একের পর এক রোগী আসছে। কাউকে ঔষধ দিয়ে বিদায় করছো তো কাউকে ভর্তির পরামর্শ দিচ্ছে। আমি ফাকে দিয়ে আমার রোগীর অবস্থা কি জানতে চাইলাম। খুব ভালোভাবেই রোগীর অবস্থা ব্যাখ্যা করে আমাকে জানালেন। আমি তৃপ্ত হলাম উনার কথায়। মূল ঘটনা এখন শুরু - দেখলাম একজন রোগী আসলো। উনি রোগীর সিটিস্ক্যান দেখলেন। সিটিস্ক্যান দেখার মাঝেই ডাক্তার হঠাৎ করে বললেন "আমি আপনাদের সাথে রাতে কথা বলেছিলাম না? আপনাদের অন্য একটা হাসপাতালে যেতে বলেছিলাম??" আমি মনে মনে বললাম ডাক্তার তুমি সরকারী হাসপাতাল থেকে রোগীদের প্রাইভেটে রেফার কর, হুম। চুপ করে শুনছিলাম তাদের কথা। ডাক্তার রেগে গিয়ে বললাম আপনার এতো চালাকী করেন কেনো ? ভালো পরামর্শ ভালো লাগে আপনাদের তাই না। এইতো ৭ হাজার টাকা দিয়ে সিটিস্ক্যান করে ধরা খেলেন। অতি চালাকদের এমনই হয়। দালালদের কথা শুনেন আপনারা আর আমরা ডাক্তার তাদের কথা শুনেন না। আমি তখন ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম যে আপনি কোন হাসপাতালে রেফার করেছিলেন? উনি বললেন- মাথায় সমস্যা তাই নিউরোসায়েন্সে রেফার করে দিয়েছিলাম। আর উনারা আগে টিকেট ফেলে দিয়ে একটা ক্লিনিক সিটিস্ক্যান করে আবার এখানে নতুন টিকেট কিনে নতুন রোগী হিসেবে এসেছে। আমি আগেই জানতাম নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের কথা । ভীষণ ভালো সেবা দিচ্ছে নিউরোতে এখন। সরকারী হসপিটাল আর সিটিস্ক্যান করতে ও মাত্র ২০০০ টাকা লাগে।

আমাদের অবস্থা হলো এই ডাক্তারের কথা বিশ্বাস না করে করি অশিক্ষিত দালালের কথা। এই অবস্থার অবসান হোক দ্রুত।

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:১৬

মেহবুবা বলেছেন: ধন্যবাদ। সহমত ো পোষন করছি।

৫| ১০ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮

বিষাদ সময় বলেছেন: অতিতে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে অনেক বার চ্যাম্পিয়ান হয়েছে, বর্তমান অবস্থাও প্রায় একই রকম। যেখানে প্রায় সব পেশার লোকই কম বেশী দুর্নীতি গ্রস্থ, সেখানে ডাক্তাররা তার ব্যতিক্রম হবেন তা আশা করা যায় না। তারপরও একজন ডাক্তার বা একজন বিচারক দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ হবেন এটা সমাজের বেশির ভাগ মানুষ এখনো মেনে নিতে পারেনা। কারণ এ দু শ্রেণীর ব্যাক্তির কাছে মানুষ যায় অত্যন্ত অসহায় অবস্থায় এবং অত্যন্ত আশা নিয়ে। এরপর সেই আশা ভঙ্গ হলে মানুষের প্রতিক্রিয়াটিও হয় তীব্র।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ ডাক্তারদের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্য অভিযোগ প্রায় প্রমানিত সত্য ঘটনা আর ভূল চিকিৎসা যে পরিমাণ করা হয় তার তুলনায় অভিযোগ আসে খুব সামন্যই।

তবে একটা কথা সত্য যে আমরা হলাম হুচুকে বাঙালী একবার কোন ডাক্তারের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে দিতে পারলে হল কেউ আর খোঁজ খবর নিবে না যে ডাক্তার ভুল চিকিৎসা করলেন না ঠিক চিকিৎসা করলেন, চারিদিকে শুধ রব উঠবে ধর, ধর, মার, মার। এ কারণে হয়তো একজন ভাল চিকিৎসক খাবেন মার আর ভূয়া চিকিৎসক পাবেন বাহবা। সামাজের সব ক্ষেত্রেই প্রায় এ অবস্থা।


"চিকিৎসক ভুল চিকিৎসা দিচ্ছে সেটা বুঝতে হলে একজন চিকিৎসক হতে হবে। আর্টস নিয়ে পড়া সাংবাদিক বা এইট পাশ ওয়ার্ড সভাপতি চিকিৎসকের ভুল ধরার ক্ষমতা রাখে? কিভাবে?"

ভাই আপনার এ কথাটি ভুল। কারণ কোন ডাক্তার মোটা দাগের কোন ভুল করলে সেটা ধরতে এন্টার নেটের এ যুগে চিকিৎসক হওয়ার প্রৃয়োজন হয়না (নিচে একটি উদাহরণ দিব)। আর কোন দায়িত্ববান সাংবাদিক যখন কোন ডাক্তার এর সুক্ষ ভুল ধরেন তখন সে সাংবাদিক এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কোন বিশেষজ্ঞ এর সাথে পরামর্শ করেই রিপোর্ট করেন।

এবার একটি ঘটনা উল্লেখ করি:

আমার আম্মার প্রচণ্ড শ্বাস কষ্ট হওয়ায় কোন এক বিশেষজ্ঞ এর অধিনে এক প্রাইভেট হাসাপাতালে ভর্তি করলাম। পাঁচ দিন তার চিকিৎসার সাথে অক্সিজেন চলল। পাঁচদিন পরে ডাক্তার বললেন উনাকে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন। এক জুনিয়র ডাক্তার রিলিজ অর্ডারের সাথে আমার হাতে একটা ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে দিলেন বললেন ব্যবস্থা পত্রের নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ খাওয়াতে। ব্যবস্থাপত্রটি হাতে নিয়ে দেখলাম তাতে একটি এন্টিবায়োটিক লেখা আছে "চলবে"।
আমি ব্যবস্থাপত্রটি নিয়ে বিশেষজ্ঞ সাহেবের কাছে গেলাম জিজ্ঞাসা করলাম এন্টিবায়েটিক চলবে মানে কি স্যার? তিনি বললেন, এন্টিবায়োটিক চলবে লিখেছে নাকি, দেখি। তিনি ব্যবস্থপত্র টি হাতে নিয়ে এসিসটেন্টকে হাসপাতালের রেকর্ড আনতে বললেন তারপর রেকর্ড দেখে বললেন এন্টিবায়োটিক আরও তিনদিন খাওয়াতে হবে। এরপর আমি ডাক্তার সাহেব কে জিজ্ঞাসা করলাম, পাঁচ মিনিট অক্সিজেন না দিলে আম্মার অক্সিজেনের মাত্রা ৮৪ তে নেমে যাচ্ছে এ অবস্থায় বাসায় নিয়ে আমি উনাকে রাখবো কি করে? ডক্তার সাহেবের উত্তর, বলেন কি !! তাহলে তো উনাকে আজ রিলিজ দেওয়া যাবে না, আগে বাসায় অক্সিজেনের ব্যবস্হা করুন তারপর রিলিজ দিব।
এবার বলুন এ ভুল গুলো বোঝার জন্য কি আমার চিকিৎসক হওয়া প্রয়োজন???

ধন্যবাদ।



৬| ১০ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৩:৩১

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

আপনার পোষ্ট প্রথম দুইলাইন পড়ার পর এত হাসি পাইল যে আর পড়তে ইচ্ছা করল না।

ভালই কইসেন কটসন দিয়া মাইরাফালাইসে, :) :) :) :)

আমিতো আরো জানতাম মর মর রোগীরে অনেক সময় কটসন বা অন্যকোন স্টেরয়েড দেয়া হয় to buy some time, i mean শেষ কোন চেষ্টা আর করা যায় কি না। ভালোই , বাংলা রোগীরা কটসন পায়া তাড়াতাড়ি মরতেসে, ভালো।

রোগী মরলেই তো ডাক্টারের ভালো। ডাক্তারের নাম হয়। :) :) :)

৭| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ৮:৩৫

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: দারুন লিখেছেন কিন্তু লেখার বিষয়ব বস্তুটি আমাদের দেখের ডাক্তারদের সেবা বিষায়ক মেন্টালিটির সাথে যায়না বলেই আমার মনে হল। আমাদের দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগীকার তারা কাস্টমার হিসেবেই দেখেন এবং ডাক্তারীকে ব্যাবস্যা হিসেবে। এই কথাটি আমি কয়েকজন ডাক্তারকে নিজের মুখে বলতে শুনেছি। আমার বোনের রিপোর্ট দেখাইতে গিয়ে আমার এই বিষয়ে লেগে যাওয়ায় এক ডাক্তার বলেছিল কথাটি। । রোগী দেখানোর পরের দিন দিপোর্ট দেখাইতে গিয়ে আবার ফি দিতে হয়েছিল আমাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউনাটেড হসপিটালে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনাবলি সেগুলোর প্রমান বহন করে। আমার এক বন্ধুর শশুরকে বায়োপ্সির স্যাম্পল দিতে গিয়ে প্রান দিতে হয়েছে। আর এক বন্ধুর সুস্থ বাচ্চাকে সাতদিন ইন্টেভসিভ কেয়ারে রাখিয়ে অসুস্থ বানিয়ে মোটা বিল দিতে হয়েছে।

এ রকম আরো হাজার উদাহরণ আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.