নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাধারন একজন বালক!

মিসকাতুর রহমান

সাধারন মানুষ!

মিসকাতুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈচিত্রময় ভালোবাসা!

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:০৯

ঐশীর সাথে রিলেশনের আজ ৭ বছর পুরন হলো।
বড্ডো ভালো মেয়েটা। আমার মতো :-P
'আয়াত' আমাদের মেয়ে। ঐশী রেখেছে নামটা।
৪ বছর হয়েছে সবে। অ আ পড়তে শিখেছে।
ঐশীর সাথে প্রথম দেখা হয় একুশে বই মেলায়।
নীল একটা শাড়ী পরে এসেছিলো বান্ধুবিদের সাথে।
এতো মানুশের মাঝে কেনো জানি তাকেই আমার বার বার চোখে পড়ছে।
অপুরুপ সুন্দর একটা মেয়ে। বন্ধুদের কাছে জানতে পারলাম মেয়েটা
আমাদের ক্যাম্পাসেরি। কিঞ্চিত টাস্কি খেলাম। আমাদের ক্যাম্পাসে এতো
সুন্দর মেয়ে আছে কখনো খেয়ালি করলাম না।
পরদিন ক্যাম্পাসে গিয়েই দেখি ঐশী বান্ধুবিদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।
কথা বলার খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো। কিন্তু সাহস পেলাম না।
কয়েকদিনেই পুরো ক্যাম্পাস জেনে গেলো আমি ঐশীকে ভালোবাশি এই
কথাটা। বন্ধুদের মনের কথা বললে যা হয় আর কি। :-/ পুরো ক্যাম্পাসে
জেনে গেছে তাই সাভাবিকভাবে ঐশীও জেনে গেছে।
একদিন লাইব্রেরিতে মুখোমুখি হয়ে যাই আমরা।
চোখ বড় করে আমার দিকে তাকালো।
আমি পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চাইলাম।
আমাকে পিছন থেকে ডাক দিলো ঐশী।
- পুরো ক্যাম্পাসে এইসিব কি শুনছি?
আপ্নি নাকি আমাকে ভালোবাসেন?
- না ইয়ে মানে ইয়ে......
- কি ইয়ে ইয়ে লাগিয়ে রাখলেন? ভালোবাসেন?
- ইয়ে মানে হুম বাসি।
- বলেননি কেনো আমাকে?
- ভয়ে বলিনি। যদি না করে দেন।
- হুম তা অবশ্য ঠিক। তো আপ্নাকে তো এখন শাস্তি পেতে হবে।
- কি করলাম আমি?
- আমাকে বলার আগে পুরো ক্যাম্পাস্কে জানিয়েছেন।
- আচ্ছা কি শাস্তি? :-(
- কাল বিকেল ৪ টায় ক্যাফ ৮৮ এ চলে আসবেন। এক সাথে কফি খাবো।
- :O
- হা করে আছেন ক্যান? দেরি হলে অনেক মারবো।
- আচ্ছা আসবো সময় মত।
-হি হি হি
তারপর থেকে আমাদের ভালোবাসার গল্প শুরু।
১ বছর পরেই আম্রা ক্যাম্পাস থেকে পাশ করে বের হয়ে যাই।
পরের বছর আম্রা পরিবারের মত নিয়ে বিয়ে করে ফেলি।
পরের বছরি আয়াতের জন্ম হয়।
ঐশী সবসময় বলতো আমাকে এতোবেশি ভালোবেসোনা। পরে
মায়ায় পরে যাবা। আমি ভাবতাম এম্নিতেই বলতো।
আয়াতের বয়স যখন ৪ মাস, তখন আমি একদিন হটাৎ খেয়াল করলাম
ঐশীর মুখ দিয়ে রক্ত পরছে। বাসার কাজের বুয়া থেকে জান্তে পারলাম অনেকদিন
থেকেই নাকি এভাবে মুখ দিয়ে রক্ত যাচ্ছে ঐশীর।
আমার কেনো জানি বেপারটা ঠিক লাগছিলো না।
ঐশীকে নিয়ে সাথে সাথেই গেলাম ডাক্তারের কাছে।
আমি সারাদিন অফিস করে অনেক টায়ারড থাকি বলে আমাকে টেন্সন দিতে
চায়নি ঐশী। তাই এতোদিন আমার কাছে লুকিয়েছিল ব্যাপারটা।
ডাক্তার ঐশীকে দেখলো আর আমাকে এক্টু পাশের রুমে ডেকে নিয়ে গেলো।
ডাক্তারের কথা শুনে আমি যেনো আকাশ থেকে পড়লাম।
ক্যান্সারের লাস্ট স্টেপে ঐশী। এই পৃথীবিতে আর মাত্র ৫ মাসের মেহমান ঐশী।
আমার মাথার উপর যেনো আকাশ ভেংগে পরলো।
ঐশী আগে থেকে জান্তো তার আর বেশিদিন সময় নেই।
আমার চোখ লাল দেখে ঐশি আমাকে বললো,
আর বেশিদিন নেই না? কয় মাস আছি তোমার সাথে আর?
আমি কান্না আটকাতে পারলাম না। মেয়েদের মতো ঐশিকে
জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম। এতক্ষনে বুজতে পারলাম ঐশী
কেনো বলতো আমাকে বেশি ভালোবেসোনা।
আমার সল্প আয়ের ইনকামে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি ঐশীকে
বাচানোর। পারলাম না। ৫ মাস পরেই আমাকে আর আয়াতকে
রেখে চলে গেলো না ফেরার দেশে। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে ছাদে আমাকে বলেছিলো
আচ্ছা আমি চলে গেলে তুমি কি অন্য কাউকে আয়াতের মা হিসেবে ঘরে তুলবে?
আমি বলেছিলাম না। সে বলেছিলো আমার আয়াতকে বড় একজন ডাক্তার বানিয়ো।
আর যখন আমাকে দেখতে মন চাইবে তোমার ঐ আকাশের তারাটার দিকে তাকিয়ো।
আমি ওখান থেকেই তোমাদের দেখবো। আর হুম আমি সব সময় তোমাদের সাথে আছি।
আয়াতকে স্কুলে ভরতি করাবো কাল।
আয়াতের খুব আম্মুকে দেখতে মন চাচ্ছে।
ছাদে খুব সুন্দর চাদের আলো। ছবির এলবামটা নিয়ে ছাদে গেলাম।
আয়াত হটাৎ প্রশ্ন করলো,
-আচ্ছা বাবা, মা আমাদের সাথে থাকেনা কেনো?
- থাকেতো। সব সময় আমাদের সাথে থাকে। আমাদের সব সময় দেখে শুধু
আম্রা তোমার আম্মুকে দেখিনা।
- বাবা মা কোথায়?
- ঐ যে তারাটা ঐটা তোমার মা।
মেয়েটা অনেক খুশি হয়ে গেলো। প্রত্যেকদিন সন্ধা হতে না হতেই ছাদে উঠে বসে থাকে।
মায়ের সাথে নাকি তার অনেক কথা। বাবাকে ও বলা যাবেনা।
এ ১ বছরে অনেক কিছু শিখেছি। অনেক কিছুর সাথে মানিয়ে নিয়েছি।
মেয়েটাকে যে করেই হোক ডাক্তার বানাবোই। ঐশীর সপ্ন পুরন করবোই।
ভালোবাসি অনেক তাকে। বুকের বাম পাশের ব্যাথাটা মাঝ রাতে এখনো উঠে।
জীবন সত্যি অনেক বৈচিত্রময়।
লেখার চেষ্টায় - মিশকাতুর রহমান

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.