| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুজিব রহমান
মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ
ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান পদ্মভূষণ লিখেছেন কমই। তার কোন বই পড়ার সৌভাগ্য হয়নি সহজলভ্য নয় বলেই হয়তো। আত্মজীবনী কিছুটা পড়েছিলাম। পত্রিকায় তার লেখা খুব একটা পড়া হয়নি। এরপরও তিনি বাংলাদেশের প্রধান বুদ্ধিজীবী হিসেবেই অনেকের কাছে স্বীকৃত। তার জন্মও সম্ভবত ভারতেই, ভারত থেকেই পদ্মভূষণ খেতাব পেয়েছেন। আমার কাছে তাকে জ্ঞানতাপস ড. আব্দুর রাজ্জাকের মতো মনে হয়। প্রথম ধারণাটা দেন আহমদ ছফা ৩১ জুলাই ১৯৯৮ মানবজমিন পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে। তিনি বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের এখনকার যে অবস্থা ড. আনিসুজ্জামান ছাড়া আমি একজনকেও দেখি না যার বুদ্ধিবৃত্তিক সৌন্দর্য আছে’। আসলেই অধিকাংশ বুদ্ধিজীবীদের দুই দলে ভাগ করা যায়। অনেককেই ভাড়া করা লোক বলেই মনে হয়। এখন অবশ্য পুরোটা বুঝা যাচ্ছে না। অনেকে তাঁকে সরকার দলীয় বুদ্ধিজীবী মনে করছেন। তার চরিত্রের মধ্যে একটা সাধুতা রয়েছে। তাঁর মধ্যে একটা দৃঢ়তাও রয়েছে। সাকা চৌধুরীর মামলায় তিনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সম্ভবত অন্যকারণের সাথে তাঁকে হত্যার হুমকী দেয়ার এটাও একটা কারণ। একাত্তরে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তিনি এটা করেছিলেন তাঁর বিশ্বাস ও সততা থেকে। তিনি সাহসী লোক বলেই জানি। তাঁকে সর্বশেষ গতমাসে দেখি বিক্রমপুরে; সামন্যই বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি হিসাবে। তিনি ভয় পাওয়ার লোক নন, দুঃখ পেতে পারেন। এমনিতেই তাঁর বয়স হয়েছে, তার মধ্যে এই বাড়তি চাপ মনোকষ্টের কারণ হতে পারে। তিনি হুমকীর পরে যথার্থই বলেছেন, ‘আমরা কখনো ভাবতে পারিনি যে স্বাধীন এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য বক্তব্য-বিবৃতি দিতে হবে। মুক্তমনাদের আত্মরক্ষার্থে পথ খুঁজতে হবে’। তাঁকে যারা হত্যা করতে চায় তাদের ধীক্কার জানাই। এটা সেই একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে তুলনীয়। তখন বুদ্ধিজীবীদের ঘর থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। আজ দেশের প্রাজ্ঞজনদের একেরপর এক হত্যার হুমকী দেয়া হচ্ছে। যদি নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেঙ্গে একজনও খুন হয়ে যান তাহলে আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। আরেকটি বুদ্ধিজীবী হত্যা এদেশ সহ্য করতে পারবে না, একাত্তরেরটাই কাটিয়ে উঠতে পারেনি আজও। ******
©somewhere in net ltd.