নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়েশ করে, আলসেমিতে...

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

মুনির হাসান

অলস লোক। নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার খায়েশ কিন্তু করতে পারি না!

মুনির হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কলম্বিয়ার ডায়েরী: আপাত শেষ পর্ব

২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:৩০



রেজাল্ট ঘোষণার পর বাংলাদেশ দল



২৭ জুলাই দুপুর ২টা : কাল রাতে ফলাফল ঠিক হয়ে যাওয়ার পর আইএমওর এখন শুধু আনুষ্ঠানিক সিরেমনি আর গ্রান্ড ডিনার বাকী আছে। সেটাও আজকে কতক্ষণ পর হয়ে যাবে।

আজ সকালে আমরা গিয়েছিলাম শহরে। সান্টা মার্তা দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় প্রাচীণ শহর। প্রথমটা ভেনিজুয়েলাতে।এটিকে বলা হয় ডিস্ট্রিক অব ট্যুরিজম। ক্যারিবিয়ান সাগর থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে কলম্বিয়ার অন্যতম প্রথান পর্বতমালা সান্টা মার্তা। এর সবচেয়ে উচু শৃঙ্গ হল সাইমন বলিভার শৃঙ্গ যা কীনা ৫৭০০ মিটার উঁচু। পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝখানে বলে এটি একটি চমৎকার শহর, ট্যুরিস্টদের জন্য তো বটে। শহরটা অনেক বড়, লোকজনও ম্যালা। এই শহরে প্রায় পাঁচ লক্ষ , আই রিপিট, পাঁচ লক্ষ লোকের বাস। ট্যুরিজমই প্রধান ব্যবসা। আর আছে হস্তশিল্প। সান্টামার্তার হাতে বানানো জিনিষপত্র ইউরোপ প্রায় দখর করে রেখেছে।

পাঠক যেমনটি ভাবছেন, সমুদ্র কাছে বলে আর একটি ব্যবসাও ভাল হওয়ার কথা। আমি অবশ্য সেই সম্পর্কে তেমন কিছু বের করতে পারিনি।

মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আমেরিকার পুরোটাই স্পেনের কলোনী ছিল। স্পেনের কলোনীর সঙ্গে ইংরজ কলোনীর একটা বড় পার্থক্য হল মূল স্পেনীয়রা এই আক্রমনাত্মক স্প্যানিয়ার্ডদের কোন সহায়তা দিত না। ফলে, কোন দেশে আস্তানা গাড়ার পরপরই তারা মোটামুটি নিজেদেরকে রাজা বানানোর মত অবস্থানে নিত। আদিবাসীদের ধরে এনে গ্রাম, শহরের গোড়াপত্তনের একটা ব্যবস্থা ছিল। এই এলাকার আদিবাসীদের ভাষা ছিল অনেকগুলো। স্পেনিশরা আসার আগে তাদের নিজেদের মধ্যে তেমন যোগাযোগ ছিল না। স্পেনিশরা এসে সেতুবন্ধনের দায়িত্ব নিয়েছে। আর কৌশলে ঢুকিয়ে দিয়েছে নিজেদের ভাষা!

মেক্সিকানদের সঙ্গে আর একটা পার্থক্য লক্ষ করেছি। মেক্সিকানদের মধ্যে সবসময় লম্বা মেক্সিকান (স্পেনিশ অরিজিন) আর বেটে মেক্সিকান (মায়া অরিজিন) আছে। তবে, এখানে নাই। এখানে লম্বাদের চোখেই পড়ে না। এমনকী মে মেয়েদের মধ্যে মোটাদের সংখ্যাও কম।তাই বলে সবাই ক্ষীণ কটি তা কিন্তু নয়।

আর একটা বিষয় হল সিয়েস্তা। কলম্বিয়ানদের সিয়েস্থা নাই। মানে চোখে পড়লো না আর কি।

শহরের কেন্দ্রস্থলে অনেকগুলো মূর্তি বানায় রাখছে। চেহারা দেখে বোজা যায় ইন্ডিয়ান, স্পেনিশ নয়!



যদিও স্পেনিশ যারা এসেছিল এখানে উপনেবিশ গড়তে তারা কিন্তু কালক্রমে কলম্বিয়ান হয়ে গেছে।

২৯ তারিখ থে এখানে একটা উৎসব হবে তার জন্য শহরের কেন্দ্রস্থলকে সাজানো হচ্ছে। কয়েকটা দোকানপাট খোলা ছিল। তবে, মজার একটা ব্যাপার দেখা গেল। বিদুষীর জন্য নাচের পোষাককেনার জন্য এক দোকানে ঢুকেছি। কাউমাউ করে বোঝানোর পর, আমাদের গাইড ছিল, জানা গেল এটি পোষাক বিক্রির দোকান নয়, এটি আসলে রেন্ট-এ-ড্রেস ডট কম। আমাদের দেশে একসময় বিয়ের আচকান, শেরোয়ানী আর টুপি ভাড়া পাওয়া যেত (এখন যায় কিনা জানি না)। এখানে সব ভাল পোষাক ভাড়া পাওয়া যায!!! মোপাসার নেকলেস গল্পের কথা মনে পড়ল।আমরা কিছুই কিনতে পারলাম না। মাহীরা কফি কিনলো। গরমে জান কারবার দেখে হোটেলে এসে পড়েছি।

কিছুক্ষণ আগে মহাসমুদ্রে স্নান করে এসেছি। এখন রেডি হবো সমাপনীতে যাওয়ার জন্য।



২৭ জুলাই, রাত ১১টা : এত লম্বা ক্লোজিং আমিআর দেখি নাই। ১০০টা দেশের লোক আসছে আর তারা তাদের নেতার কাছে যাবে না, এটা কি হতে পারে? কাজে ক্লোজিং এর আয়োজন করা হয় সান্টা মার্তার উপকূলে যাদুঘরের সামনে। যাদুঘর মানে ঐ বাড়িতে মারা যান সাইমন বলিভার, লাতিন আমেরিকার মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা। ঐ ভবনের সামনেই আয়োজন।কোন স্টেজ নাই আলাদা করে। সিড়ি ঘরটাই স্টেজ। আর শুরুতে নেতার সমাধিতে সামরিক কায়দায় পুস্পস্তবক অর্পন। চসক আরো ছিল। শুরুতেই কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট একটা ভিডিও ভাষন দিলেন।





এত চমৎকার বলেছেন যে সবাই খুবই আপ্লুত হয়েছে। এরপর তিন বাচ্চা মিলে তিনটে গান গাইল। তারপর হল পদক বিতরণ। তারপর আবার গান, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পতাকা হস্তান্তর করে আমাদের বাসে করে ফেরৎ আসা। ততক্ষনে প্রায় ১০টা। কাজে ডিনারটাবেশি ভাল হলো না। এখন রুমে ফিরে কিছু টুকটাক পয়েন্ট লিখে রাখছি।

কাল দীর্ঘক্ষণ মারিয়া ক্যারোলিনার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। ও এখানে মালয়েশিয়া দলের গাইড। সান্টা মার্তা শহরে একটা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে, বিজনেজ এডমিনিস্ট্রেশনে।



এক ভাই ও একবোন। মারিয়ার বাবা ভেনিজুয়েলার আর মা কলম্বিয়ার। ওরা বড় হয়েছে ভেনিজুয়েলায় কিন্তু চাভেজকে পছন্দ না হওয়ায় ওর মা ওদের দুই ভাইবোনকে নিয়ে কলম্বিায় চলে এসেছে।

ওর কাছ থেকে অনেক খবর পাওয়া গেল কলম্বিয়ার। আমাদের মত এই দেশেও ধনী ও গরীবের পার্থক্য বিশাল। যেমন ব্যারেনকুইয়ার প্রায় ৬০% জমির মালিক হল মাত্র ৫টি পরিবার। ফলে, ওরা আরো ধনী হয়। তবে, ওরা অনেক বেশি গরীব নয়। মাথাপিছু আয় ১০ হাজার ডলারের বেশি।

স্প্যানিশের পাশাপাশি এখন ওরা ইংরেজি শেখে। তবে, ওদের আদিবাসীদের প্রায় ৬০টার মত ভাষা আছে। এমনিতে ওরা বেশ অতিথিবৎসল।আমরা জানতে চাইলাম – যা শোনা যায়, কলম্বিয়া একটা খুবই রিস্কি জায়গা, এটার কী ব্যাখ্যা

জানালো আগেএরকম ছিল। এখন অনেক কমে গেছে। তবে, ড্রাগ ব্যবসায়ীরা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে।

শিক্ষাকেই ওরা পূঁজি ধরেছে এগিয়ে যাবার। আজ প্রেসিডেন্টও একই কথা বলেছেন। ক্লাশ ইলেভেন পর্যন্ত এখন বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ। এছাড়া রয়েছে ভালদের জন্য রয়েছে বৃত্তি। ভাষা এবং গণিতের জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম।অনুষ্ঠানে মেয়র ছিলেন, ফার্স্ট লেডি ছিলেন এবং ণর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টও ছিলেন। তবে, কেও কোন বক্তৃতা দেন নি। শুধু যে কয়জনের বক্তৃতা দেওয়ার দরকার সে কয়জন দিয়েছে।অনুষ্ঠানে আয়ারল্যান্ডের উপদলনেতা গর্ডন লাসলি লাল-সবুজ ফতুয়া পড়েছেন এবং আমি আর মাহবুবের সঙ্গে বসেছেন। কোন কোন বিষয় এমনিতে মন ভাল করে দেয়।



ভাল কথা কাল এটা গিরগিটি দেখেছি যা রং বদলাতে পারে। ব্যারিষ্টার মওদুদের কথা মনে হয়েছে কেনজানি!

কাল সকালে শুরু হবে ৪৮ ঘন্টার যাত্রা! ৩১ তারিখ ইনশাআল্লাহ ঢাকাতে পৌছাবো, চার খুদে গণিতবিদকে আর চমৎকার এক স্মৃতি নিয়ে। আমার খেরোখাতার অংশবিশেষ এই কয়দিন সবার সঙ্গে শেয়ার করলাম। আশাকরি, আগামী সেপ্টেম্বরে প্রকামিতব্য আমার ট্রাভেলগে পুরোটা দিতে পারবো।



এই সময়ে আমাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।



সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।



মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৩১

আরজু পনি বলেছেন:

আপনাকে ছবি দেখে চেনার চেষ্টা করছি :D

২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৫

আমার মন বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার সব সময় আপডেট রাখার জন্য। :)

৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:১১

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার পোষ্টের মাধ্যমে আমাদের জানানোর জন্য ! ~

৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৮

মাহতাব সমুদ্র বলেছেন: দারুন পোস্ট!!

৫| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৪

বটের ফল বলেছেন: অভিনন্দন স্যার আপনাকে এবং আমাদের দলকে।

নিরাপদে ফিরে আসুন আমাদের মাঝে- এই প্রার্থনা।

ভালো থাকুন।

+++++++++++++++++++

৬| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ফলাফল কেমন হবে মনে হয়?

৭| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: পত্রিকায় আপনাদের খবর দেখলাম। অভিনন্দন। :)

দেশে ফিরল গণিত দল

৮| ০১ লা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: পত্রিকায় আপনাদের খবর দেখলাম। অভিনন্দন। :)

দেশে ফিরল গণিত দল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.