![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লড়াই টা যখন মুক্তির.....,চিন্তার মুক্তির, বুদ্ধির মুক্তির,শৃঙ্খল মুক্তিরএবং অবশ্যই সংখ্যাগরিষ্ঠ গণমানুষের........তখন এ লড়াইপৃথিবীর প্রাচীনতম লড়াই,চিরায়ত লড়াই এবং অবশ্যই চলমান..........
নাগরিক মধ্যবিত্ত, আরও স্পষ্টভাবে বললে ঢাকার শিক্ষিত নাগরিক মধ্যবিত্ত, যারা ছবি ঘরে গিয়ে ঢাকাই ছবি দেখার কথা শুনলে সজোরে নাক সিটকান, জাত্যাভিমানের অবস্থান থেকে ঢাকাই ছবিকে রিক্সাচালক-গার্মেন্স কর্মী, বস্তিবাসীদের ছবি বলে ঘরে বসে ক্যাবললাইনে হিন্দী/ইংরেজি ছবি বা সিরিয়াল দেখে আত্মতৃপ্তি খুঁজেন, সময় কাটান, তাঁদের প্রায় সবাইকে 'মনপুরা'র জ্বর আক্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছে। খুব সফল এবং স্বার্থকভাবে। সিনেমা হলবিমুখ নাগরিক মধ্যবিত্ত-উচ্চবিত্তদের গোটা পরিবার নিয়ে দলে দলে উৎসব মুখর হয়ে ছবিঘরের দিকে ছুটে যাওয়া থেকে এটি প্রমাণিত। এ রকম একটি কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করতে পারার জন্য তরুন চলচ্চিত্র পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম প্রশ্নাতীতভাবে অভিনন্দিত হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তাঁকে বিনম্র অভিনন্দন।
ছবি হিসেবে মুক্তি পাবারও অনেক আগে বলা যায় ’মনপুরা’ নাগরিক মধ্য ও উচ্চবিত্তের ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করেছে। এর অসম্ভব সুরেলা এবং মনমুগ্ধকর একগুচ্ছ গানের অডিও সিডি প্রকাশের মাধ্যমে। ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে ছবির গানের সিডি প্রকাশ বিজ্ঞাপন এবং লগ্নিপুঁজি ঘরে তোলার হাতিয়ার হিসেবে যে, বেশ কার্যকর তা এর আগে কয়েকটি ছবির ক্ষেত্রে প্রমাণিত। গিয়াস উদ্দিন সেলিম সে ক্ষেত্রে শুধু পূর্বসূরীদের অনুসরণ করেছেন এবং সে অনুসরনে সফলও হয়েছেন। ছবিটির নির্মাণ শৈলী, বিশেষ করে ক্যামেরার কাজ একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে অন্য অনেকের মতো আমাকেও দারুন আলোড়িত করেছে। মূগ্ধ করেছে। তবে তার শিল্পমানের বিশ্লেষণ এ লেখার উদ্দেশ্য নয়। চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের এ কঠিন কাজটি এখানে সম্ভবও নয়। পোস্টেও শিরোনাম থেকে এটি স্পষ্ট যে, লেখাটি আলোচিত এ সফল সিনেমার একটি জেন্ডার বিশ্লেষণ দাঁড় করাবার চেষ্টায় এগুবে। পাশাপাশি ছবির গল্পে বিকশিত চরিত্র এবং ছবির দর্শক হিসেবে অভিষ্ঠ গোষ্ঠীর দিক থেকে একটি শ্রেণী বিশ্লেষণ দেয়ার সীমিত চেষ্টাও থাকবে। তাও প্রত্যাশিত জেন্ডার বিশ্লেষণটাকে আরেকটু পাকাপোক্ত করার উদ্দেশ্যে।
খুন, লাশের ভেজা শরীর এবং বিভৎসতার উৎপাদন: দর্শক মনোযোগ তৈরির পুরুষতান্ত্রিক বটিকা
মূলধারার ঢাকাই ছবির অন্যতম একটি উপাদান পুরুতান্ত্রিক বিভৎসতা। পুরুষের শিশ্নবাদী ক্ষমতার অবশ্যম্ভাবী প্রকাশ হিসেবে প্রায় প্রতিটি ছবিতে নারীর ওপর সংঘটিত বিভৎসতার (যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ, খুন,) দৃশ্যায়ন চলে। দর্শক মনোযোগ আকর্ষণ, টানটান উত্তেজনা ও সুড়সুড়ি সৃষ্টির লক্ষ্যে। সেদিক থেকে মনপুরাও ব্যতিক্রম নয়, বরং গিয়াস উদ্দিন সেলিম সে অব্যর্থ অস্ত্রটি খুব সফলভাবে ব্যবহার করেছেন। ছবির একবারে শুরুতেই। ঝড় ও বৃষ্টির রাতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিমূলকে দিয়ে একটি মেয়েকে খৃুন করিয়ে। তবে পরিবেশনের ঢংয়ে পার্থক্য আছে। মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে হয়তো খুনের দৃশ্যটাও দেখানো হতো, থাকতো খুনীর সাথে দস্তদাস্তির দীর্ঘ দৃশ্য। যার প্রধান উদ্দেশ্য হতো নারীর শরীরকে রূপালী পর্দায় ভোগ্য করে তোলা। না, খুনের দৃশ্য সেলিম দেখান নি। দস্তাদস্তিও না। খুনের শিকার মেয়েটির শাড়িপরিহিত লাশ বৃষ্টির জলে ভিজিয়েছেন। আচ্ছামতো। খুনের পর লাশটি ঘরের ভেতরে, বারান্দায় অথবা ঘরের অন্যকোন স্থানে থাকতে পারতো। কিন্তু থাকেনি। পরিচালক রাখেন নি। এ না রাখার অন্যতম কারণ বিভৎসতার মাত্রা বাড়ানো। ঝড় আর ভয়াবহ শব্দে বিজলী চমকানো রাতে মেয়েটি খুন হয়। আর সে বিজলী চমকানোর মতোই আরেকটি চমক দিয়ে দর্শকের মনে আবেগ-উত্তেজনা তৈরি করা। একই সাথে দর্শকের সামনে পরিবেশন করা নারীর ভেজা শরীর। যা মূলধারার সব বাণিজ্যিক ছবিতেই থাকে। সেলিম এক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে গেছেন। ভিজিয়েছেন জীবিত নয়, মৃত শরীর। একটি খুন দিয়ে ছবিটি শুরু হলেও এ খুনের কার্যকারণ সম্পর্কে পুরো ছবির কোথাও ইংগীত নেই।
খুন, বিভৎসতা ইত্যাদির সাথে বলপ্রয়োগের একটি গভীর সম্পর্ক রযেছে। আর পুরুষতান্ত্রিক সমাজকাঠামোয় বল প্রয়োগের একক মালিকানা পুরুষের। ফলে শিমুল বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হলেও বল প্রয়োগের ক্ষমতা রাখেন। পুরুষ হিসেবে। আর নারী হচ্ছে সে বলপ্রয়োগের নিরব শিকার। পুরুষতান্ত্রিক এ চিন্তা ও আচরণ কাঠামোটি ’মনপুরা’র একেবারেরই শুরুতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে পরিচালকের সচেতন অথবা অবচেতন মনের সুনিপুন কর্মে।
শ্রেণী পক্ষপাত এবং নারী-শরীর বনাম বিষয়
না, শ্রেণী পক্ষপাত নয়, বরং বলা যায় শ্রেণী টার্গেট। নাগরিক মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত। ছবির ভোক্তা হিসেবে। দর্শক হিসেবে। ছবিটি প্রথম বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্স-এ মুক্তিদেয়ার মাধ্যমেও এ টার্গেটের বিষয়টি আঁচকরা যায়। কারণ এ ছবি ঘরটির সচারচন দর্শক দরিদ্র নয়, ধনী, সর্বনিম্ন মধ্যবিত্ত। ফলে পুরো ছবির সংলাপ রচনা, কসটিউম নির্বাচন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তকে খুব বেশি তাঁর ভাবনায় রেখেছেন। ব্যবসায়িক এ ভাবনার কারণে তাঁকে বেশ কিছু জায়গায় বিচ্যুতি ঘটাতে হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে। মনপুরার পুরো গল্পটি বিকশিত হয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক কাঠামোয়। কিন্তু ছবির সংলাপ বাংলাদেশের কোন উপকূলীয় অঞ্চলের কথ্য ভাষার প্রতিনিধিত্ব করে না। ছবির পাত্র-পাত্রীদের মুখে কথ্য ভাষার যে ফর্মটি ধরিয়ে দিয়েছেন সেটি উপকূলীয় অঞ্চলের নয়। এটি প্রধানত শহুরে কথ্য ভাষা অথবা তার কাছাকাছি কিছু। এ বিচ্যুতিটি ঘটিয়েছেন একটি বিশেষ শ্রেণী ছবির লক্ষ্যভোক্তা (টার্গেট কনজিউমার) বলে।
ছবির নায়িকা পরী নৌকা বাইতে পারে। নদী তীরবর্তী এলাকায় বেড়ে উঠা মেয়ে। তার জন্য এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু তার জন্য ব্যবহৃত কস্টিউমগুলো কতটা বাস্তবতার কাছাকাছি? কতটা উপকূলীয় কিশোরী মেয়ের প্রাত্যহিক জীবনের কাছাকাছি আর কতটা স্রেফ বাণিজ্যিক এবং অবশ্যই পুরুষতান্ত্রিক? রঙিন কাগজ ভিজিয়ে কিশোরী মেয়েটির ঠোট লাল করার দৃশ্য গ্রামের কিশোরী দরিদ্র মেয়েদের চিরচারিত বেড়ে উঠাকে মনে করিয়ে দেয়। যদিও ঠোটের ক্লোজ শর্ট ব্যবাহর নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু মেয়েটি যখন বাবার সাথে সেজেগুজে মাছ ধরতে যায়, নৌকা বায় তখন সেটিকে অতিরিক্ত, কৃত্রিম এবং নিশ্চিতভাবে বাণিজ্যিক মনে হয়। সেটি আরও নিশ্চিত করে পরীর ব্লাউজের ডিজাইন। যেটি কোনভাবেই মনপূরার নয়, উপকূলের নয়। পুরোপুরিই শহুরে। যেন বা কোন শহুরে মেয়ে নদীর জলে নৌকায় বেড়াতে বেরিয়েছে। ছবিতে যে বসতি ও জীবনধারা দেখানো হয়েছে তার সাথে পরীর সাজসজ্ঝ ও কস্টিউমের সাথে মিলের থেকে অমিলই বেশি পরীলক্ষিত হয়েছে।
ছবির বেশিরভাগ পুরুষ চরিত্রগুলোও গ্রামীণ পোষাক যেমন লুঙ্গি, গেঞ্জি, শার্ট ইত্যাদি পরে। কিন্তু ছবির নায়িকা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের যাদু বিদ্যায় শুধু শহুরে ঢংয়ে শাড়ি নয়, অন্তর্বাসও পরেন। এরপর শুরু হয় ক্যামেরার মূল কাজ। নায়িকার কোমর থেকে পিঠ পর্যন্ত বার কয়েক ক্লোজ শট এবং লং শর্ট। এ শর্টগুলোতে নায়িকা আর বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় না, রূপান্তরিত হয় বস্তুতে (অবজেক্টিফিকেশন অব উইম্যান বডি)। পুরুষতন্ত্র নারীকে বিষয় হিসেবে নয়, প্রধানত বস্তু হিসেবে দেখে। আর সে বস্তু ভোগ্য করে মুনাফা তৈরি করতে চায়। এ পুরুষতান্ত্রিক মনোজগত দ্বারা আমরা আকন্ঠ নিয়ন্ত্রিত হতে দেখি ছবির পরিচালককে। এখানে এসে সেলিমের ক্যামেরা গল্প ও অভিনয়ের চেয়ে নায়িকার শরীরের ভাঁজের ওপর বেশি মনোযোগী হয়ে উঠে। এ মনোযোগ আগাগোড়া পুরুষতন্ত্রের। সেলিমও তার উর্ধ্বে উঠতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন অথবা সফল হওয়ার কোন ইচ্ছাই তার ছিল না। অন্তত আমরা প্রত্যক্ষ করিনি।
পুরুষতন্ত্র উৎপাদন, পুনরোৎপাদন এর বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া
পুরো মনপুরা জুড়ে পুরুষতন্ত্রের ভুত দাপটের সাথে বেড়িয়েছে। কী সংলাপ, কী কাহিনী আর কী চরিত্র, প্রায় সবখানে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী শিমুল। কিন্তু সামাজিক শ্রেণী কাঠামোর দিক থেকে সে ধনী জোতদার পরিবারের একমাত্র দুলাল। বংশের বাতি। ছবির কাহিনীর একটি বড় অংশ এগিয়েছে এ বংশের বাতি রক্ষার তাগিদে। খুনের ঘটনাটি ঘটার পর জোতদার মামুনুর রশীদ তার বাড়িতে আশ্রিত সোনাইকে সাময়িকভাবে খুনের দায় শিকার করে নিতে বলেন। সোনাই তাতে ভয় পায়। থানা-পুলিশের ভয়ে মুনীবের কথা মানতে সে অস্বীকার করে। তখন মুনিব মামুনূর রশীদ বলেন, ‘তুই ভয় পাস না, আমি তোকে কয়েকদিনের মধ্যে ছাড়িয়ে আনবো, তাছাড়া থানা জেল এগুলো পুরুষ মানুষের জন্যই’। পরবর্তীতে নির্বাসনে থাকাকালীন সোনাই নিজেও একই কথা তার ভালবাসার পাত্রী পরীকে বলে। একবার নয়, কয়েকবার। আর এভাবেই দর্শকের কাছে পরিবেশিত হয় পুরুষালী (মাসক্যুলিনিটি) ইমেজ (প্রতিরূপ)। থানা-জেল এগুলোর জন্য সাহসের দরকার হয়। পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সাহসী হওয়া কোন মেয়েলী গুণ নয়, ১০০% পুরুষালী। পুরুষের বীরত্ব নির্মাণ এখানে শেষ নয়। সোনাই রাতের অন্ধকারে দীর্ঘ নদীপথ পাড়ি দিয়ে পরীর সাথে দেখা করে। প্রমাণ করে তার ভালবাসা। এ ভালবাসা বিরত্বের। অন্যদিকে ভয়, কান্না, ত্যাগ, অন্দরমহলে অপেক্ষা, এমনকি ভালবাসার জন্য জীবন উৎসর্গ প্রধানত মেয়েলী গুন। মনপুরার নায়িকারও এ গুনগুলো আছে। সেই একই পুরুষতান্ত্রিক নিয়মে। মনপুরার নায়িকা দক্ষ হাতে নৌকা বেয়ে বেড়ালেও (এটি ছিল একেবারের বাণিজ্যিক উপাদান, যা ওপরে আলোচিত হয়েছে) সাঁতরে নায়কের কাছে চলে যাবার কথা কখনও বলে না। সে সাহস সে দেখাতে পারে না। বরং তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় উৎকন্ঠা আর ভয় নিয়ে। তাঁর বীর নায়ক সোনাই এর জন্য। সোনাই পুলিশের হাতে ধরা পড়লে পরীর বিয়ে হয়ে যায় জোততার উচ্চবিত্তের একমাত্র মানসিক প্রতিবন্দী ছেলে শিমুলের সাথে।
ধনীর ঘরের মানসিক প্রতিবন্ধী কোন মেয়ের সাথে সুস্থ্য ছেলের বিয়ে হতে সাধারণত দেখা যায় না। ছেলেটি দরিদ্র পরিবারের হলেও। কিন্তু উল্টোটি ঘটে। অর্থাৎ মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলের সাথে সুস্থ্য মেয়ের বিয়ে। পরীর সাথে শিমুলের বিয়েটি পরিচালক শ্রেণী কাঠামোর ভেতরে ফেলে বিয়েটিকে দারিদ্র্যেও অভিঘাত বলে জায়েজ করতে চেয়েছেন। কিন্তু এখানে শ্রেণী সম্পর্ক একমাত্র নিয়ামক ছিল না। পরীর বাবা যদি মেয়ের পিতা না হয়ে ছেলের পিতা হতেন তাহলে কী হতো। দারিদ্রের কারণে সেকি কোন ধনীর মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে ছেলের বউ করে ঘরে তুলে আনতেন? বোধহয় না। পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাকাঠামোতে সেটি গ্রহণযেগ্যও হতো না। গিয়াস উদ্দিন সেলিমের কাছেও হয়নি।
বিয়ের পর পরী শশুর বাড়ি চলে যায়। তার চোখের জলে বুক ভাসে। প্রতিনিয়ত। দর্শক দেখা পায় কান্না ভেজা অপেক্ষারত সতী নারীর। যে যেকোন উপায়ে রক্ষা করে চলে তার ‘ভার্জিনিটি’। তার সতীত্ব। ভালবাসার মানুষটির জন্য। পরীকে পুরোপুরি সমর্থন যোগায় তার শাশুড়ি। বাঙালী পুরুষতন্ত্রে শাশুড়ি-বউ এর সম্পর্ক চির দা-কুমড়া হলেও এবং মূলধারার ছবিতে সাধারণত সেভাবে চিত্রিত হলেও এখানে পরিচালক ব্যতিক্রম। এখানে তিনি আমাদের উপহার দেন একজন আপাত: স্নেহশীল শাশুড়ি। কিন্তু স্নেহশীল কারপ্রতি? পরীর প্রতি? মোটেই না। তিনি আসলে যত্নবান তার ছেলের প্রতি। কারণ পীর বলেছেন, বিয়ে দিলে ছেলে ভাল হয়ে যাবে। তাই বিয়েটা টেকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা। সুতরাং ছেলের বউয়ের প্রতি আপত: দৃশ্যমান স্নেহগুলো ঝরে পড়ে কেবল বংশের বাতি রক্ষার প্রণোদনা থেকে। এ ভাবেই পুরুষতন্ত্র পুনরোৎপাদিত হতে থাকে। তার হাত ধরে ছবিটিও এগোয়। শাশুড়ি যখন বুঝতে পারে যে, কিছুতেই সোনাই এর ওপর থেকে পরীর মনকে আলাদা করা যাচ্ছে না, তখন পরিচালক পুরুষতন্ত্রের কথিত ‘নারীর কুটনামী বুদ্ধি’র প্রয়োগ করে। পরীর শাশুড়ি বানিয়ে বলে, আজ রাত সোনাইয়ের ফাঁসী হবে। তার ধারণা ছিল সোনাই বেঁচে নেই জানলে নির্ভরশীল নারীর শেষ অবলম্বন হিসেবে পরী শিমুলের কাছেই ফিরে আসবে। তার প্রতি মনোযোগী হবে আদর্শ স্ত্রীর মতো। পরীর ভালবাসা আর যত্নে শিমুল সুস্থ্য হয়ে উঠবে। পরী সোনাইয়ের ফাঁসি হবে এ বানানো সংবাদ বিশ্বাস করে। পুরুষতন্ত্রে ‘সতী নারীর পতি (এখানে আসল ভালবাসার মানুষ) না থাকলে নারীর জীবন বৃথা। সে বৃথা জীবন রেখে লাভ কি! সুতরাং পরী বিষ খেয়ে আত্মহত্য করে। এ চলচ্চিত্রে পরীকে ভালবাসার পরীক্ষা দিতে হয় তার জীবন দিয়ে। জীবন দিয়ে নারীকে ভালবাসার পরীক্ষা দেয়ার উদাহরণ এ প্রথম নয়। বাংলা গল্প, উপন্যাস, উপাখ্যানে এ রকম উদাহরণ অনেক। সেলিম শুধু তার পুনরোৎপাদন করেছেন। যার মাধ্যমে পুরুষতন্ত্র আরেকটু বল পেয়েছে। ছবিটার শুরু একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু দিয়ে, শেষও একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু দিয়ে। খুন, মৃত্যু না থাকলে টানটান উত্তেজনা তৈরি করা যায় না। সেলিম খুব সফল। টানাটান উত্তেজনা দিয়ে শুরু করে টানাটান উত্তেজনা নিয়েই দর্শকদের বাড়ি পাঠিয়েছেন। নায়কের বেঁচে যাওয়ার মধ্যে বাঁচিয়ে দিয়েছেন পুরুষতন্ত্রকেও। গোটা ছবিতে পুরুষতন্ত্রেও জয়গানই উচ্চারিত হয়েছে। পুনপৌনিকভাবে।
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:১৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ঠিক আছে.............। কিন্তু কেন একমত না সে সম্পর্কে যদি একটু বলতেন অধমের উপকার হতো.................। পরে নিশ্চই সময় পেলে বলবেন।
ধন্যবাদ।
২| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৪২
দেবব্রত বলেছেন: আপনার সাথে সহমত।
ধনযবাদ এই বিষয়টিকে এতো সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লেখার জন্য।
+++++
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:০২
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ..............................।
৩| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৫১
জইন বলেছেন: আমি এখনো মনপুরা দেখিনি দুই বার চেষ্টা করছি কিন্তু টিকেট পাই নাই ...... ধন্যবাদ চুলচেরা বিশ্লেষণের জন্য।
কিন্তু আপনি ভুল ভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন......
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:০৪
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ..................
আপনার মতামতের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা রেখে অনুরোধ করছি ভুলগুলো মানে আপনি যে ব্যাখ্যাগুলোর সাথে একমত না সেগুলো ধরিয়ে দিলে আলোচনাটা সুবিধা হতো....................আমিও হয়তো ভূল শুধরে নিতে পারতাম। আশা করি সে সুযোগ করে দিবেন।
আবারও ধন্যবাদ।
৪| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:০৩
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: প্রথমেই একটা আপত্তি: সবকিছুকে জেন্ডার ইস্যুতে নিয়ে যাওয়াটা কারো কারো কারো ম্যানিয়াক হয়ে যাচ্ছে, লেখার শিরোনামটি আপনাকেও সেরকম একজন ম্যানিয়াকগ্রস্থ প্রমাণ করল।
লেখার ২য় অংশের সঙ্গে ভয়ানকভাবে একমত, আমি একটা রিভিউ লিখেছি এটার, সেখানেও কমন্টের অংশে বিষয়টি বলেছি।৩য় অংশের সঙ্গে আংশিক একমত, ১ম অংশের সঙ্গে কোনভাবেই একমত নই।
তাই এই অংশটাই বলি:
আমার মনে হয় বৃষ্টিতে ভেজার দৃশ্যটা সিনেমার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাসং্গিক, এখানে পরিচালকের ভিন্ন উদ্দেশ্য খোজাটা ছিদ্রাণ্বেষী মানসিকতার পরিচায়ক। একজন মানসিক প্রতিবন্ধী খুন করেছে, এক্ষেত্রে সময়টা বিবেচনায় রাখতে হবে, বৃষ্টি হচ্ছে, হাওয়া বইছে, এসময় মা তার পাগল ছেলেকেবাধন খুলে দিয়েছেন...ব্যস ছেলেটি খুন করল, কিন্তু মেয়েটি ববাইরে কেন? বৃষ্টিতে ভেজাটা অনেকেরই খুব প্রিয় একটা শখ...ধরা যাক, মেয়েটি সেসময় বৃষ্টিতে ভিজছিল........এরপর হত্যা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া যেমন হওয়া উচিৎ, তাই হয়েছে.....এখানে শারীরিবক ব্যাপারটা আসেনা, কারণ মৃত মানুষের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি অর্থহীন আবেদন। এই শরীরের ব্যাপারটিই স্থূলভাবে প্রকাশ করেছেন পরিচালক 'নায়িকার ক্ষেত্র'.........সিনে কমপ্লেক্সে মুক্তি দেয়াটাও নতুন কিছু নয়, এটা প্রযোজকের সিদ্ধান্ত....
আমি রিভিউটা লিখেছি, একজন সাধারণ দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, সেখানে জেন্ডারের বিভাজন খুজতে নয়, তবুও আমার রিভিউতে আপনার অনেক কথাই মআছে....পড়ার নিমন্ত্রণ রইল
Click This Link
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:১৭
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ হিমালয় নিমন্ত্রণের জন্য। অবশ্যই পড়বো এবং প্রমিজ মতামত জানাবো।..................
একটু সবিনিময়ে বলি সব কিছু জেন্ডার ইস্যুতে নিয়ে যাওয়া যেমন হয়তো ঠিক নয়, আবার আমরা চাই বা না চাই সামাজিক প্রপঞ্চগুলোর সব সময় কিছু না কিছু জেন্ডার মাত্রিকতা থাকে। আমি কিন্তু শুরুতেই বলেছি, আমি আমার লেখায় জেন্ডার সম্পর্কের প্রতিফলনটা দেখতে চাইবো। এখন আমার এ চাওয়াটাকে আপনি যদি ম্যানিয়াকগ্রস্থতা বলেন, সে দায় আমার নয়। আবার সেটি বলার স্বাধীনতা আপনার আছে। কিন্তু আমি আস্থার সাথে বলতে চাই এ ছবির অবশ্যই একটি জেন্ডার মাত্রিকতা আছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে গিয়াস উদ্দিন সেলিম সচেতনাভাবে সেগুলো করেছেন কিনা? হয়তো হ্যাঁ হয়তো না। কিন্তু তার অবচেতনমনে হলেও কোন না কোনভাবে ছবির কাহিনী, নির্মাণে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের প্রকাশ পেয়েছে। আমি সে জায়গাটা আমার সীমিত সাধ্যের মধ্যে ধরবার চেষ্টা করেছি।
মেয়েটিকে হত্যার পর ভেজানোর দৃশ্য নিয়ে আপনিও একটি কল্পনা করেছেন। ছবির দিক থেকে। আমি আবার জেন্ডার মাত্রিকতার দিক থেকে অন্যভাবে ভেবেছি। দু'ভাবনায় যুক্তি আছে। এ যে ভাবনার মাত্রিকতা দর্শকের সামনে খুলেছে সেটি অবশ্য সেলিমের স্বার্থকতা। সে স্বার্থকতা স্বীকার করেও লাশটিকে ভেজানো আমার কাছে শিল্পের চেয়ে অন্য কিছু মনে হয়েছে। কারণ ছবির শুরুর কয়েক মুহূর্ত দর্শককিন্ত জানে না বৃষ্টিতে পড়ে থাকা মেয়েটি মৃত কি না। যতক্ষন না সোনাই সে খবরটি দেয়।
সিনেকম্পক্সে এর মুক্তির বিষয়টি অবশ্য নুতনু কিছু নয়। সেটি দোষও নয়। আমি সেটি বলিনি। আমি শুধু বলেছি, টার্গেট যেহেতু শিক্ষিত মধ্যব্ত্তি-উচ্চব্ত্তি, যারা এখন আর ছবি ঘরে যান না, তাদের জন্য ছবিটি ওরকম অভিজাত হলে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত আলোচনাকে আরেকটু এগিয়ে দিল।
ধন্যবাদ
৫| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:০৪
কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: পুরুষতন্ত্র বিষয়টিকে আপনি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তাতে খুব জানতে ইচ্ছে করছে আপনার দৃস্টিতে ভাল ছবির কাহিনী কেমন হবে? এক কাজ করুন - মনপুরার কাহিনীটিকেই আপনার মত করে লিখেফেলুন। সেখানে নিশ্চয়ই একটি মানষিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে একটি সুস্থ ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার কাহিনী থাকবে। তখন আপনারমত অন্যকেউ আবার নারীতন্ত্রের কথা বলে তার সমালোচনা লিখবে - কি বলেন?
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:২৭
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আমি যদি ভুল না করি, আমার ধারণা, আপনি আমার লেখার মূল সূরটা ধরতে পারেন নি। এটি নিশ্চই আমার নিজের দুর্বলতা যে, আমি যা বলতে চাইছি তা আপনাকে বুঝাতে পারিনি।
অথবা আপনি নিজে বুঝতে চান নি সে একই মনোজাগতিক কাঠামোর কারণে............................।
আমি নির্ধিধায় বলেছি যে, মনপুরা একটি ভাল ছবি। শুধু ভাল ছবি নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু। আমি শুধু ছবিটির উল্টে পিঠ দেখতে চেয়েছি। তাও জেন্ডার মাত্রিকতার দিক থেকে। আমি একবারও বলিনি এছবির কাহিনী খারাপ। বরং কাহিনীর বিন্যাসে, চরিত্র নির্মাণে কীভাবে পুরুষতান্ত্রিক চেতনা, মূল্যবোধ পরিবেশিত হয়েছে সেটি ছিল আমার মূল আলোকপাতের বিষয়। কিন্তু তার জন্য চলচ্চিত্র হিসেবে এটি নিম্মমানের হয়ে গেছে, তা আমার পোস্টের কোথাও নেই।
পরীও শিমুলের বিয়ের ঘটনাপরস্পরায় যে সম্পর্ক কাঠামোটি প্রকাশিত হয়েছে আমার কাছে তা পুরুষতান্ত্রিক চিন্তাকাঠামো থেকে উৎসারিত বলে মনে হয়েছে। আমার এ সৎ পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করার অধিকার নিশ্চই আমার আছে। কী বলেন?
আর নারীতন্ত্র? আপনাকে শুধু এটুকু বলি, অসম সম্পর্ক কাঠামো সেটি যে তন্ত্রেরই হোক সেটি কখনো ন্যায্য নয়।
আপনাকে ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
৬| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:২৩
মুক্ত বয়ান বলেছেন: ভাই, একমত হ্ইতে পারলাম কয়েকটা বিষয়ে।
পরীর পোশাক গ্রহণযোগ্য হয়নাই। আর, তাকে উপস্থাপনের ব্যপারটা তেমন শোভন হয়নাই। ক্যামেরায়, বার বার তাকে পেছন থেকে প্রদর্শন কিছুটা দৃষ্টিকটু।
তবে, একটা বিষয়, পরিচালক কোথায় ছবি মুক্তি দিয়েছেন এটা নিয়ে আপনি পুরুষতান্ত্রিকতার যে বিষয়টি টেনেছেন এটার সাথে দ্বিমত। কারণ, এখন মোটামুটি একটা ট্র্যাডিশন হয়ে গিয়েছে, বিকল্প ধারা(!!)র ছবি হলেই তাকে বসুন্ধরায় মুক্তি দিতে হবে!! তবে, পরিচালক এর সাথে সাথেই কিন্তু আরও কয়েকটি জায়গায় মু্ক্তি দিয়েছেন। আর, এখন তো মোটামুটি সবখানেই চলছে এই চলচ্চিত্র।
নারীদের কুটিল বুদ্ধি নিয়ে আপনি যা মন্তব্য করলেন, এটা আমার কাছে ভাল লাগে নাই। কেননা, এক্ষেত্রে আপনি শুধু শাশুড়িকে দেখলেন, কিন্তু প্রথমেই যখন মামুনুর রশীদ সোনাইকে মনপুরায় পাঠিয়ে দিল, তখন তো পরিচালক যে ম্যাসেজটি দিয়েছেন তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়, ঐ সিদ্ধান্তটি স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলে নিয়েছেন।
জেল-থানার ব্যাপারটি এসেছে গ্রামীণ পরিবেশের স্বার্থেই!! এখনও গ্রামীণ পরিবেশে কে কতবড় সেয়ানা এটা বোঝাতে তার নামে মামলা আছে, তার বিবরণ দেয়!! তার উপর যদি, কোন মামলায় তাকে জেলে যেতে না হয়, সেটা তো সোনায় সোহাগা!!
নারীদেহ ভিজিয়েছেন, এটা সত্যি। কিন্তু, তার কী অশ্লীল প্রদর্শন করেছেন পরিচালক?? দৃষ্টিকটু যে ব্যাপারটা ছিল, তা হল মৃতদেহটিকে দুইজনের কোলে করে আনার ব্যাপারটা।
নারীদেহের এমন প্রদর্শনকে যদি অশ্লীল বলেন, তাহলে তো "পদ্মা নদীর মাঝি" সিনেমায় রূপা গাঙ্গুলীর অভিনয় দেখে আপনি সিনেমাকেই নিষিদ্ধ করতে বলবেন!!
উপরে করা মন্তব্যগুলো একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি চমৎকার। বিশ্লেষণভঙ্গিও ভাল লাগল। ভাল থাকুন।
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৩৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: প্রথমে আপনার মতামতের জন্য বিনীত শ্রদ্ধা.....।
প্রথমে কয়েকটি বিষয়ে আপনি আমাকে ভুল বুঝেছেন অথবা আমি হয়তো ঠিকমতো বোঝাতে পারিনি। সেগুলো নিয়ে বলি
এক. হলে ছবি মুক্তির বিষয়টিকে আমি মোটেই পুরুষতন্ত্র বলিনি। এ প্রসঙ্গটি এসেছে ছবির টার্গেট অডিয়েন্স নিয়ে। আমি বলতে চেয়েছি ছবির টার্গেট অডিয়েন্স শহুরে মধ্যব্ত্তি-উচ্চবিত্ত। যারা সাধারণত ছবি ঘরে যান না। তাদের দরকার অভিজাত সিনেমা হল। ছবির মূলটার্গেট ভোক্ত যেহেতু শহুরের উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত সেজন্য ছবিটি সিনেপ্লেক্সে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আমি এ প্রসঙ্গটি এনেছিলাম ছবির কিছু বিচ্যুতি প্রসঙ্গে। যেমন ছবির ভাষা উপকূলীয় নয়। যে ভাষাটি ব্যবহহৃত হয়েছে তাও শহুরে মধ্যবিত্তের কথ্য ফর্ম। আশা করি আমাকে বুঝতে পেরেছেন।
আমি কিন্তু কোন দৃশ্যকে অশ্লীল বলিনি। সেটি আমার উদ্দেশ্যও নয়। আমি দৃশ্যগুলোর পেছনের মনোজগত, যেটি আমার কাছে পুরুষতান্ত্রিক বলে মনে হয়েছে, আমি সে বিষয়টি ধরবার চেষ্টা করেছি। সুতরাং পদ্ধানদীর মাঝি নিষিদ্ধ করার দাবি উঠানোর প্রশ্নই উঠে না।
আপনাকেও আবারও ধন্যবাদ।
৭| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৩২
কায়েস মাহমুদ বলেছেন:
একমত হইতে পারলাম না , দুঃখিত।
এখন যাই, খাবার খেয়ে আসি।
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:৫১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য.........................................
কিন্তু একমত কেন হতে পারলেন না বা দ্বিমতের জায়গাগুলো কোথায় এবং কেন তার বিশ্লেষণ থাকলে আমার/আমাদের সুবিধা হতো। আলোচনাটা আরও সমৃদ্ধ হতে পারতো। নিজের ভূলগুলোও শুধরে নিতে পারতাম.................................।
কী আর করা, আপনারতো বেশ খিদা পেয়েছে। খাবার পরে আসবেন। যদি সময় হয়।
আবারও ধন্যবাদ।
৮| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৩৬
মুক্ত বয়ান বলেছেন: মনপুরা নিয়ে আমার নিজের লেখা এটায় আমার ব্যক্তিগত মতামত আছে। অনেকেরই মন্তব্য আছে। আপনিও দেখতে পারেন।
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৪৮
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ঠিক আছে, অবশ্যই দেখবো এবং মতামত জানানোর ইচ্ছে রাখি।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৯| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৩৬
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: "আবার আমরা চাই বা না চাই সামাজিক প্রপঞ্চগুলোর সব সময় কিছু না কিছু জেন্ডার মাত্রিকতা থাকে"....দেখেন আপনি ০ কে শূন্য ভাবতে পারেন, চাইলে ইংরেজি অক্ষর 'ও' ভাবতে পারেন....প্রায় সবকিছুতেই এরকম প্যারালেল ভাবনার স্কোপ থাকে...তাই বলে সবকিছুকে যদি ঘুরেফিরে একটি টার্মিনালে নিয়ে যেতে চান, ম্যানিয়াকগ্রস্থতার সূচনাটাও সেখান থেকে ঘটে।
এবার আপনার নির্মাণশৈলী বিষয়ে প্রশ্নসাপেক্ষে। আপনি পুরুষতান্ত্রিকতার কথা বলছে? কয়েকটা সিনেমার নাম বলি : পদ্মানদীর মাঝি, অশনি সংকেত, সারেং বৌ, দুখাই, তিতাস একটি নদীর নাম..........এই সিনেমাগুলো দেখার সময় এই প্রশ্নগুলো কি আপনার মাথায় আসেনি? না এসে থাকলে কেন আসলনা? কুবের-কপিলার গোসলদৃশ্য, কপিলার বিভিন্ন সময়কার অঙ্গিভঙ্গি...সেখানে কোন ইঙ্গিত পাননি?একইভাবে সারেং বৌ এ কিছু দেখেননি? তারও অনেক বছর আগেকার ছবি 'তিতাস একটি নদীর নাম' এ কোন বাকা চোখে দেখার মত কিছু পাননি? সে তুলনায় একবিংশ শতাব্দীতে একটি নারীশরীরের নিথর পড়ে থাকার মত একটি নিরীহ দৃশ্যকে যদি আপনি পুরুষতান্ত্রিকতার প্রতিভু ভাবেন, তাহলে বলবো কেউ পুরুষতান্ত্রিকতার ঊর্ধ্বে নয়, এমনকি মহামনীষীরাও নন।।
]
শ্রেণীবিভাজনের প্রশ্নটাও সিনেমাতেপ্রাসং্গিক মনে হয়েছে, কারণ ধনীর অসুস্থ ছেলের সঙ্গে গরীবের সুন্দর মেয়ের বিয়ে দেয়াটা নিয়মিত ঘটে, আমার আম্মু এডভোকেট, এ ধরনের কেস সে প্রায়ই করে। পরিচালক যদি অন্যকিছু দেখাতেন সেক্ষেত্রে সেটা একটা আইডিয়া হত, বাস্তবতা নয়।।। থিওরিটিকাল কথা-বার্তার চেয়ে বাস্তবসম্মত চিত্রায়ণই ভাল লাগে........
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৫১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ আবারও আলোচনার মাধ্যমে এ পোস্টটিকে সমৃদ্ধ করাবার জন্য..........................
প্রথমে বিনীতভাবে বলতে চাই.........আমি কিন্তু কোন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গিয়াস উদ্দিন সেলিমকে টার্গেট করিনি। একটি একাডেমিক আলোচনা দাড় করবার চেষ্টা করেছি। হতে পারে সে আলোচনায় সীমাবদ্ধতা আছে। অন্তত এটি যে কম্প্রিহেনসিভ নয় সে ব্যাপারে আমি খুউব সচেতন।
আপনি যেসব ছবির কথা বলেছেন, এবং সেখানেও পুরুষতান্ত্রিক উপস্থিতি আছে বলে (আমার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে) মন্তব্য করেছেন তার সাথেতো দ্বিমত করার কোন কারণ নেই। আমি কিন্তু শ্লীলতা-অশ্লীলতার প্রশ্ন তুলি না। বরং ক্ষমতার সম্পর্কটি আমার কাছে জরুরি। এবং সম্পর্কটি সব জায়গায় আছে। থাকবে। কিন্তু এ সম্পর্কটি কীভাবে প্রকাশ পেল সেটি গুরুত্বপূর্ণ। একটি ছবি যখন (চেতনায়-অবচেতনায়) পুরুষতান্ত্রিক মনোজাগতিক কাঠামো থেকে তৈরি হয় তখন সেখানে নারী প্রধানত নিষ্পক্রিয়, বস্তু (ভোগের), এবং পুরুষ সক্রিয় এবং ভোক্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়। ফলে আমি সে সম্পর্ক কাঠামোটি দেখার চেষ্টা করেছি। এ ক্ষমতা সম্পর্কটি সেক্স থেকে শুরু করে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক সব সম্পর্কের মধ্যে প্রকাশ পায়।
দ্বিতীয় প্যারা প্রসঙ্গে: আমি কিন্তু বলিনি ওটি অপ্রাসঙ্গিক। আমি বলেছি, এবং আপনিও যেটিকে গ্রহণযোগ্য বলেছেন, সেটি কোন সমাজ ও চিন্তাকাঠামোটি গ্রহণ যোগ্য করেছে। অবশ্যই পুরুষতন্ত্র। পরিচালক সেই পুরুষতন্ত্রকেই পরিবেশন করেছেন। কারণ রিক্স নিতে রাজী হননি। রিক্স নিলে ব্যবসার লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সুতরাং আপনি খুব সত্য বলেছেন যে সেটি ঠিক হতো না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে চলচ্চিত্রে সমাজ দায়বদ্ধতাও আছে। বিকল্প (আপনি যেটিকে আইডিয়া বলছেন) ধারণা তৈরি কে করবে। কাউকে না কাউকে করতে হবে। না হয় নারীর প্রতি যে বৈষম্য (এ ছবিতে মানসিক প্রতিবন্ধীকে বিয়ে করতে হলো) সেটি দুর করার কাজগুলো কীভাবে এগুবে? সিনেমা এখানে একটি বড় হাতিয়ার হতে পারে।
আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।
১০| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৪৭
মুক্ত বয়ান বলেছেন: হিমালয়.. তুমি চালাইয়া যাও। আমি একটু পর চলে যাচ্ছি। তাই আর এখানে কথা বলা যাইতেছে না।
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:১২
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আবারও দাওয়াত রইলো.........
১১| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:০৪
নুশেরা বলেছেন: পড়লাম। ছবিটি দেখিনি। তারপরও স্থিরচিত্রে দেখা কস্টিউম প্রসঙ্গে আপনার বিশ্লেষণ যথার্থ মনে হয়েছে।
"মনপুরার নায়িকা দক্ষ হাতে নৌকা বেয়ে বেড়ালেও (এটি ছিল একেবারের বাণিজ্যিক উপাদান, যা ওপরে আলোচিত হয়েছে) সাঁতরে নায়কের কাছে চলে যাবার কথা কখনও বলে না। সে সাহস সে দেখাতে পারে না। বরং তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় উৎকন্ঠা আর ভয় নিয়ে। তাঁর বীর নায়ক সোনাই এর জন্য।"--- এই পর্যবেক্ষণটির সূক্ষ্মতা প্রশংসনীয়।
বাকী পর্যবেক্ষণগুলোর (ক্যামেরার কাজ ইত্যাদি বাদে) বেলায় পরিচালক সামাজিক বাস্তবতারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন বলে জোরালো যুক্তি দেয়া সম্ভব।
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৮:৩৪
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ এতবড় লেখা গভীর ধৈর্যের সাথে পড়ে মন্তব্য করবার জন্য।
আমি আপনার সাথে ১০০% ভাগ একমত পরিচালক সামাজিক বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। আমার কাছে মনে হয় এটি আপাত: চিত্র। এ চিত্রেরও আরেকটি চিত্র রয়েছে। পরিচালক কেন মূলধারার 'ইডিওলজি'র কাছে হার মানেন? চলমান বাস্তবতাকে তুলে ধরেন। ডিকন্সট্রাকশনের কাজটি করেন না? আমার ব্যক্তিগত উত্তর, একটি তার/তাদের অবচেতন। এ অবচেতনটা তৈরি হয় প্রবল এবং ক্ষমতাবান আদর্শ দ্বারা। পুরুষতন্ত্রও সেরকম একটি আদর্শ। সে কাঠামো থেকে সেলিম, আমি, আপনি (উদাহরণ হিসেবে) হয়তো কেউ মুক্ত নই। অন্যটি হচ্ছে পরিচালকের ব্যবসায়িক স্বার্থ। বেশিরভাগ দর্শক যা খাবেন বলে পরিচালকের অভিজ্ঞতা বলে তিনি তাই সৃষ্টি করেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে সামাজিক বাস্তবতাকে তুলে ধরা যেমন পরিচালকের কাজ, আমার মনে হয়, সেটিকে চ্যালেঞ্জ করাও তার কাজ। কিন্তু এটি খুব কম হয়। ডিকন্সট্রাকশনের জন্য যে সাহস ও আদর্শবাদের দরকার হয়, সে ওরিয়েন্টেশন অনেক সময় থাকে না। থাকলেও ব্যবসার কাছে সেটি হার মানে।
মূল্যবান মন্তব্যে পোস্টটিকে সমৃদ্ধ করবার জন্য আপনার প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা।
১২| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:০৪
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: " আমি কিন্তু কোন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গিয়াস উদ্দিন সেলিমকে টার্গেট করিনি"....আমি মন্তব্যের কোথাও এমন অভিযোগ করিনি।।তাই এ সংক্রান্ত অবস্থান পরিষ্কার করাটা নিষ্প্রয়োজন....
আমি বলেছি 'প্যারালেল ভাবনার স্কোপ' প্রসং্গে, সে বিষয়ে আপনার মতামত কী?
আমিও শ্লীল-অশ্লীল প্রসঙ্গে বলিনি, বলেছি পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি বিষয়ে আপনার বক্তব্য প্রসঙ্গে। পরিচিতি+খ্যাতি+ বোদ্ধামহলে গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায আমার উল্লেখিত সিনেমাগুলো মনপুরার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে...সেক্ষেত্রে প্রশ্ন যদি তুলতেই হয, ওগুলো নিয়ে আগে তোলা উচিৎ, কারণ তাহলে আলোচনার প্লাটফর্মটা আরো ওপেন হতে পারে..কিন্তু সেগুলো কালজযী চলচ্চিত্র হওয়াতে যদি ছাড় পেয়ে যায়, আর একজন নব্য পরিচালকের প্রথম চলচ্চিত্রটাই যদি সেই একই অভিযোগে অভিযুক্ত হয় তখন কথার অবকাশ থাকে বইকি....
এরপর বলছেন পরিচালকের দাযবদ্ধতা প্রসং্গে...এ বিষযে বললে বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র, এমনকি সত্যজিত রায়কেও কাঠগড়ায দাঁড় করাতে হবে....কেননা তাদের অধিকাংশ সৃষ্টিগুলোই শেষ পর্যন্ত সমাজের প্রচলিত রীতির কাছেই আপোষ করেছে, সে তুলনায় গিয়াস উদ্দিন সেলিম এসেই সীজারের মত সবকিছু পাল্টে দেবেন এটা তার প্রতি বাড়তি প্রত্যাশা।।। তাছাড়া, পুঁজিবাদী যুগে এক্সপেরিমেন্ট করার ভরসা তাকে কে দেবে? আপনি যেমন একটি পেশাজীবী শ্রেণীর প্রতিনিধি, পরিচালনাও একটি পেশার মত......সেক্ষেত্রে সমস্ত দায়বদ্ধতা কি তার একার কাধে ছেড়ে দেয়া উচিৎ???
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:৩৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: না, মোটেই উচিত নয়। একার ঘাড়ে কোন ভাবে দায় চাপানো যায় না। আমি আপনার সঙ্গে সর্ম্পূর্ণ একমত প্যারালাল ভাবনার সম্ভাবনার ইস্যুতে। আপনি যে কালজয়ী ছবিগুলোর কথা বলেছেন সেসব ছবির সকল পরিচালকের প্রতি বিনীত শ্রদ্ধা রেখে বলত চাই ওগুলোর একটাও পুরুষতন্ত্রমুক্ত নয়। প্রসঙ্গক্রমে সুযোগ নিয়ে বলে রাখতে চাই আমি আমার একাডেমিক থিসিসে ওগুলো নিয়ে সামান্য কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে এ প্রসঙ্গগুলো এসেছিল। যেগুলো আপনি বলছেন। পুরুষতন্ত্র কেন, যে কোন সামাজিক আদর্শের ট্রান্সফরমেশন কিন্তু ধারাবাহিক। অনুজদের ভেতরে এসেছে অগ্রজদের হাত ধরে। সত্যি কথা বলতে কি, এ যে আমি পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্দে এতকথা লিখছি, আমিও কি পুরুষতন্ত্র মু্ক্ত? না। কারণ আমিও একটি সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করি। প্রশ্ন হচ্ছে এ সীমাব্দ্ধতার পরও তার বিরুদ্ধে লড়বার ইচ্ছাটা।
আমি আপনার সাথে খুব একমত আপনার উল্লিখিত ছবিগুলোসহ একটি সামগ্রিক আলোচনা করা গেলে প্লাটফর্মটা আরও বড় হতো। আরও ওপেন হতো।
না, সেলিম একদিনে পাল্টে দেবেন সে প্রত্যাশা আমি একেবারে করিনি। এতটা অবিচার তার ওপর করার কোন কারণ নেই। সেলিম যে একজন শক্তিশালী পরিচালক তাততো কোন সন্দেহ নেই। যদিও আমার লেখার উপজীব্য সেটি ছিল না।
দলে দলে ঢাকার মধ্যব্ত্তি পরিবার ছবিঘরে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। এটি সেলিমের বড় স্বার্থকতা।
শুভেচ্ছা আপনাকে।
১৩| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:৫২
রাগ ইমন বলেছেন: জেন্ডার এর দিক থেকে বিচার বিশ্লেষনটা ভালো লাগলো ।
পুরুষ তান্ত্রিকতা কোথায় কিভাবে মানুষের মনস্তত্ত্বে কাজ করে সেইটা বোঝা এত সহজ না ।
একটা উদাহরন দেই , মেডিকেল এন্থ্রোপলজি পড়ার আগে আমিও খেয়াল করিনি , নারীদেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া গুলোকে বর্ননা করা হয়েছে নেতিবাচক শব্দ দিয়ে । আর পুরুষ দেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া গুলো ইতিবাচক শব্দ দিয়ে । খুব গভীরভাবে চিন্তা না করলে এরকম অনেক মনস্তত্ত্বই ধরা পড়ে না ।
অনেক সময় নিজেদের অজান্তেই আমরা কোন একটা তান্ত্রিকতার পক্ষে কাজ করে ফেলি । জানতেও পারি না , বুঝতেও পারি না , কি ভাবে করছি ।
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:০৪
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ রাগইমন.....................
আপনি ঠিকই বলেছেন ভাষার একটা নিজস্ব রাজনীতি আছে। আবার সে রাজনীতির জেন্ডার মাত্রিকতাও আছে। এ মাত্রিকতাটা যেহেতু সংস্কৃতির বিভিন্ন বাহনের মাধ্যমে ট্রান্সফরম হয় সেহেতু এটি সহজে আমাদের চোখে পড়ে না। ফলে এ আলোচনাগুলো যখন আসে তখন সহজে গ্রহণযোগ্যতা পায় না। এ না পাওয়াটা অস্বাভাবিক না।
আপনার শেষ মন্তব্য প্রসঙ্গে বলি................এই যে আমাদের মনের অজান্তে ঘটে, এ ঘটাতে পারাটাই পুরুষতন্ত্রের স্বার্থকতা এবং শক্তি। দরকার সে শক্তির বিরুদ্ধে লড়বার....................।
শুভেচ্ছা এবং কৃতজ্ঞতা আমার ব্লগে আপনার মতো নৃবিজ্ঞানীর ভিজিটের জন্য এবং মূল্যবান মন্তব্য করে পোস্টটিকে সমৃদ্ধ করবার জন্য।
১৪| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:০১
ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: শামীম ভাই, লেখার কিছু অংশের সাথে ( চরিত্রের মুখের ভাষা, নায়িকার পোশাক, বডি ল্যাঙগুয়েজ, নায়িকার শাশুড়ির চিন্তাধারা ইত্যাদি) আমি একমত, আপনার পর্যবেক্ষণের প্রশংসা করতেই হয়।
তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের মাঝে সামাজিক, পারিবারিকভাবে যে পুরুষতান্ত্রিকতা চলে, সেটাকেও সেলিম উঠিয়ে আনছেন। ধরেন, পাগল ছেলের সাথে সুন্দরী, গরীব ঘরের মেয়ের বিয়ে, বা ছেলের স্বার্থে মিথ্যা বলে পুত্রবধূকে মোটিভেট করা, নারীজন্মের একমাত্র সার্থকতা প্রাণপ্রিয় পুরুষের সাথে মিলন ইত্যাদি কিন্তু আচরণগতভাবেই আমাদের বৈশিষ্ট্য, সেখানে নারী পুরুষ নির্বিশেষেই আমরা দায়ী/অভিযুক্ত। সেলিম শুধুই সেটাকে ব্যবহার করেছেন, বা তুলে ধরেছেন বলে মনে হয়েছে।
একটা ভিন্নধর্মী আলোচনা তুলে আনার জন্যে ধন্যবাদ।
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:০৮
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ........................।
'তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের মাঝে সামাজিক, পারিবারিকভাবে যে পুরুষতান্ত্রিকতা চলে, সেটাকেও সেলিম উঠিয়ে আনছেন। ধরেন, পাগল ছেলের সাথে সুন্দরী, গরীব ঘরের মেয়ের বিয়ে, বা ছেলের স্বার্থে মিথ্যা বলে পুত্রবধূকে মোটিভেট করা, নারীজন্মের একমাত্র সার্থকতা প্রাণপ্রিয় পুরুষের সাথে মিলন ইত্যাদি কিন্তু আচরণগতভাবেই আমাদের বৈশিষ্ট্য, সেখানে নারী পুরুষ নির্বিশেষেই আমরা দায়ী/অভিযুক্ত। সেলিম শুধুই সেটাকে ব্যবহার করেছেন, বা তুলে ধরেছেন বলে মনে হয়েছে।' এ পর্যন্ত আমি পরিচালকের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আপনার সাথে সর্ম্পর্ণ একমত। কিন্তু পরিচালকের দায় শুধু এটিকে তুলে আনা নয়। বিরীতটাও নির্মাণ। সে বিপরীত নির্মাণটা কিন্তু আর খুজে পেলাম না। ফলে ছবিটি কিন্তু মূলধারার জয়গানই গাইলো। আমি একই সাথে সেটিও ধরবার চেষ্টা করেছি।
মন্তব্যের জন্য কৃত্জ্ঞতা.....................।
১৫| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:২০
রাগ ইমন বলেছেন: দুঃখিত একটা তথ্য বিভ্রাট ঘটে গেলো । আমি নৃ বিজ্ঞানী নই , ডাক্তার । জনস্বাস্থ্য সম্পর্কে পড়তে গিয়ে চিকিৎসা নৃবিজ্ঞান পড়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ । আশা করি এ রকম বিশ্লেষন আরো পড়ার সুযোগ পাব আপনার কাছ থেকে । ভালো থাকুন।
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: পাবলিক হেলথ পড়তে গিয়ে..............................? তাতে কি? আমি পাবলিক হেলথ কে সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে বেশি বিবেচনা করি। চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানী আর কি? হা হা। আর চিকিৎসা নৃবিজ্ঞান আমার নিজেরও আগ্রহের বিষয়।
আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা.............ভাল থাকবেন।
১৬| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:২৭
সালাহ্ উদ্দিন শুভ্র বলেছেন: এই ছবির আগে জানতাম। পরে জানি না। মানে ছবির শ্যুটিং হচ্ছে এসব জানতাম। দেখা হয়নি। আর ছবিটাতো তৈরিই হয়েছে মধ্যবিত্তকে হলে ফিরিয়ে নেয়ার জন্যে। তো মধ্যবিত্ততো মজাই পেয়েছে। আবার হলমুখো হয়েছে। আমার বন্ধুরাই টিকিট না পেয়ে পিরে গেছে-আবার গিয়েছে। দেখেছেই। কারণ তাদের আড্ডা দেয়ার জায়গা নেই।
আপনার মতের সাথে অনেকাংশেই একমত। তবে কিছু মত পার্থক্য আলোচনা করলাম না। সেটা চলচ্চিত্র সম্পর্কিত আমার বোধের ঘাটতিও হতে পারে বলে। অন্য সময় সেই আলোচনা করবো। কিন্তু ছবিটাকে পুরুষতান্ত্রিক আমিও বলি।
কেমন আছেন।
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৬
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: মধ্যবিত্তকে ছবিঘরে টেনে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সেলিম ১০০ ভাগ সফল। কিন্তু তার জন্য তাকে নির্মাণে কম্প্রোমাইজ করতে হয়েছে।
মত পার্থক্যের জায়গাগুলো বলেলে বাধিত হবে। আলোচনাটাও আরেকটু বিস্তৃত হবে। সে অপেক্ষায় থাকলাম।
ভাল আছি? আপনি কেমন? ই-মেইলে নম্বর দিবেন। ফোনে আলাপ করা যাবে। শুভেচ্ছা।
১৭| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৪
তনুজা বলেছেন: ছবিটা দেখার সুযোগ হয়নি .. তাই মতামত দিতে পারলাম না
তবে আপনার বিশ্লেষণ ভাল লেগেছে +
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৫৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ছবি দেখার পর আপনার মতামত পাবো, সে প্রত্যাশায় রইলাম। বিশ্লেষণ এর সীমাবদ্ধতা, এবং যেগুলোর সাথে আপনি একমত নন সেগুলো নিয়ে অবশ্যই মতামত দিবেন।
বিশ্লেষণ ভাল লেগেছে বলে কৃতজ্ঞতা.......................
১৮| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৪
মিশুক - ঢাকা বলেছেন: আমি একসময় নৃবিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। বর্তমানে মিডিয়াতে কাজ করি।
নৃবৈজ্ঞানীক সমালোচনায় আমার সময় নেই। সিনেমাবোদ্ধা হওয়ারও ইচ্ছে আমার নেই।
আমি সিনেমা দেখি মনের খোরাকের জন্য।
মনপুরা সিনেমা আমার বেশ ভালো লেগেছে।
আপনাদের সবার আলোচনা/সমালোচনাও পড়লাম। ভালো লেগেছে সেগুলোও.....................
২২ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:২০
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১৯| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৪
শওকত হোসেন মাসুম বলেছেন: এখনো দেখা হয়নি। দেখার সময় আপনার বিশ্লেষণ মাথায় থাকবে।
২০ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:০৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মাসুম ভাই পড়বার জন্য।
২০| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৫৬
মুক্তি মণ্ডল বলেছেন: বস আপনার লেখাটা চমতকার। বিশ্লেষণ দারুণ লাগলো। আমি আবারো পড়বো। এখন শোকেসে রাখলাম। ভাল থাকবেন।
২২ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৫১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা.............ভাল থাকবেন।
২১| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:০২
গৌতম রায় বলেছেন:
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:০৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: বুঝলাম না। আপনার ভাষা খুব বিমূর্ত। হা হা।
বললে আলোচনা করা যেত। আমার ব্লগ ভিজিট করবার জন্য বিনীত ধন্যবাদ।
২২| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:০৪
লুকার বলেছেন:
জ্ঞান গর্ভ আলো চনা পড় তেই হাপা ইয়া গেলাম,
সিনেমা আর কী দেখুম!
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:২০
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ঠিক বলেছেন..................
তবু ছবিটি দেখবেন। ভাল লাগবে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
২৩| ১৭ ই মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৭
টানিম বলেছেন: আমি ছবি টি দেখি নাই, তাই আপনার লেখায় কোনো মন্তব্য করলাম না।
একটা কথা, আমরা মানুষরা কিন্তু কখনই ১০০ ভাগ সফল,হতএ পারি না , তাই নয় কি ? ভুল তো একটু হবেই। আমাদের তা ভুলে গেলে চলবে না।
সেলিম সাহেব মনপুরার মাধ্যমে মানুষকে হলে টেনেছেন এবং সুস্হ ধারা র ১টি ছবি উপহার দিয়েছেন এটা কি কোনো ভাল দিক নয়।??????????
আপনার সমালোচনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
ধন্যবাদ
২৩ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:১২
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনার সাথে পুরোপুরি সহমত এবং পড়বার জন্য এবং মন্তব্য করবার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
২৪| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৮:৪৩
প্রণব আচার্য্য বলেছেন:
ফেসবুকের লিংক থেকে পোষ্টটি পড়েছি।
আমি বস সময়ের দৈনতা হেতু কোথাও যেতে পারিনা।
সময়সামর্থ আমার খুবই কম।
তবে আপনাদের পোষ্ট আমি প্রায় নিয়মিতই পড়ি
অধিকাংশ সময়ই লগআউট থাকি
ধন্যবাদ শামীম ভাই অধমকে স্মরণে রাখার জন্য
২৩ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:১৬
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
ভাল লাগলো জেনে যে আপনি আমাদের পোস্ট নিয়মিত পড়েন।
অধমের ব্লগে আসবার জন্য একটি বাড়তি ধন্যবাদ।
২৫| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:১৮
পথিক!!!!!!! বলেছেন: ছবিটা আমি এখনো দেখি নাই
তবে পুরুষতান্ত্রিকতা যা বললেন তা কান এসেছে
যারাই দেখে গল্প বলতে গেছে নায়িকার গেট আপ এবং ক্যামেরার পুরুষিয় কামনার বিষয়ে একটা আলাদ অধ্যায় থেকেই গেছে আলোচনায় তাদের ।
২৩ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৩
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য। আর ছবিটি দেখার আমন্ত্রন রইলো। তখন হয়তো আপনার বিস্তারিত মন্তব্য পাবো।
২৬| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:২০
রেজওয়ান শুভ বলেছেন: যে সিনেমা হলে যায় ই নায়িকাদের ব্লাউজ দেখার জন্য , তারে যাই দেখানো হোক , সে খালি ব্লাউজ ই দেখবো।
লুইচ্চামি সমৃদ্ধ পোস্টে কৈষষা ...........
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:৪৭
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: জনাব শুভ, নাম শুভ হলেও আপনার মন্তব্যটি শুভচিহ্ন বহন করে না। আমি চাইলে আপনার মন্তব্যটি মুছে দিতে পারি। তাতে আপনাকে মুক্তি দেয়া হবে। আপনার মন্তব্যের লেবেল সম্পর্কে অন্য ব্লগাররা জানতে পারবেন না।..........................।
এটি প্রধানত একাডেমিক আলোচনা। সে আলোচনায় আপনার একমত পোষণ করার কোন দরকার নেই। দ্বিমত আপনি করতেই পারেন। সে দ্বিমত প্রকাশ করাও শোভনীয় এবং প্রত্যাশিত। কিন্তু একাডেমিক আলোচনায় যদি আগ্রহ না থাকে অথবা নিজকে যোগ্য না ভাবেন তাহলে খুব বিনয়ের সাথে বলবো ভবিষ্যতে এ ধরনের মন্তব্য করার জন্য অন্তত আমার ব্লগে আসবেন না। এটি বিনীত অনুরোধ সুস্থ্য ব্লগিং এর স্বার্থে।
ভাল থাকবেন।
২৭| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:১৫
রেজওয়ান শুভ বলেছেন: ও আচ্ছা ... বুঝলাম।
২৩ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:২৪
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ও আচ্ছা ... বুঝলেন!!!!
২৮| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:১৫
বুলবুল আহমেদ পান্না বলেছেন: হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: প্রথমেই একটা আপত্তি: সবকিছুকে জেন্ডার ইস্যুতে নিয়ে যাওয়াটা কারো কারো কারো ম্যানিয়াক হয়ে যাচ্ছে, লেখার শিরোনামটি আপনাকেও সেরকম একজন ম্যানিয়াকগ্রস্থ প্রমাণ করল।
......এই ব্যাপারে আমি হিমালয় এর সাথে একমত।
আর মনপুরা এখনো দেখিনি। দেখে আবার কমেন্ট করবো আশা করি।
২৪ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৮:৪৪
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ....................................
মনপুরা অবশ্যই দেখবেন। আপনার কমেন্টের অপেক্ষায় থাকলাম।
২৯| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:২৩
রেজওয়ান শুভ বলেছেন: জনাব বুলবুল আহমেদ পান্না , নাম পান্না হলেও আপনার মন্তব্যটি হীরা-পান্না বহন করে না। লেখক চাইলে আপনার মন্তব্যটি মুছে দিতে পারেন। তাতে আপনাকে মুক্তি দেয়া হবে। আপনার মন্তব্যের লেবেল সম্পর্কে অন্য ব্লগাররা জানতে পারবেন না।..........................।
এটি প্রধানত একাডেমিক আলোচনা ....... অন্তত এই ব্লগে আসবেন না। এটি বিনীত অনুরোধ সুস্থ্য ব্লগিং এর স্বার্থে।
ভাল থাকবেন।
যারা সমালোচনা হজম করতে পারেন না , তাদের পোস্টে সমালোচনা করতে আসাটা অর্থহীন। সস্তা কিছু ভালো কথা বলে যান , জনৈক সর্বজ্ঞানী সাহেব খুশি হবেন।
সস্তা পোস্টে সস্তা কমেন্ট কাম্য। এক্ষেক্রে সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।
২৪ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৪০
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনার নিজের প্রতি সুবিচারের প্রশংসা না করে উপায় নেই। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা..................
২৪ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:২১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন:
৩০| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৪২
বুলবুল আহমেদ পান্না বলেছেন:
২৫ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:২১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ঠিক আছে!!!!
৩১| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:০৯
গৌতম রায় বলেছেন: ...আসলে অনেক বড় একটা মন্তব্য লিখেছিলাম। কিন্তু পুরা মন্তব্য হাপিশ!!
হিমালয়ের বক্তব্যে পুরোপুরি দ্বিমত। নারী-পুরুষের যথাযথ সম্মান জানানোটা আমাদের প্রাত্যহিক চর্চা হতো, তাহলে এই লেখকের আজকে এই পোস্ট দিতে হতো না। যতোদিন সেটা না হচ্ছে, ততোদিন সব বিষয়কেই জেন্ডারের আলোকে দেখতে হবে। কারো ভালো লাগুক বা না লাগুক।
লেখকের বক্তব্যের সাথে একমত।
২৪ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:৫১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে পড়বার জন্য এবং মন্তব্য করবার জন্য।
একাডেমিক জায়গা থেকে আমি কারও মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যকে নাকচ করে দেয়ার পক্ষে নই। কারণ একটি বিষয়কে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান ও মাত্রিকতা থেকে দেখার সুযোগ আছে। তাতে লাভও আছে। একটি পূর্নাঙ্গ চিত্র পাওয়া যায়। পাঠক হিসেবে এটি একটি বাড়তি পাওনা আমাদের।
আর নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি যেটি আপনি বলবার চেষ্টা করেছেন আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় এটি অনেক টা উপসনার মতো। সব সময়ের ব্যাপার। আর তার মাধ্যমে হয়তো গুণগত পরিবর্তনগুলো আস্তে আস্তে সূচিত হবে।
ছবিটি নিয়ে, বিশেষ করে জেন্ডার ডাইমেনশন থেকে আপনার মতামত পেলে আলোচনাটা আরও এগিয়ে নেয়া যেত। সে অপেক্ষা নিশ্চই করতে পারি।
আবারও ধন্যবাদ।
৩২| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:১৭
হিমালয়৭৭৭ বলেছেন: @শুভ, তোমার প্রকাশভঙ্গিটা ভাল লাগলো না, পুরো লেখাটি মনে হয় তুমি পড়নি, বা পড়লেও বিষয়বস্তু ধরতে পারনি। যাইহোক, আর কিছু বলার নাই.......
@গৌতম রায়, আপনি দয়া করে আমার ৩টি মন্তব্যই পড়েন....তাহলে সহমত-দ্বিমতের অবকাশ আসবে।একটি অংশ কোট করেই চূড়ান্ত রায় দেয়াটা সমীচীন নয়।।।
৩৩| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:২৩
লীনা দিলরূবা বলেছেন: ছবিটি এখনো দেখিনি। তাই আপনার বিশ্লেষনের অন্তে মন্তব্য করতে পারছিনা। ব্লগে মনপুরা নিয়ে অনেক আলোচনা দেখেছি, পড়েছি। "শ্রেণী পক্ষপাত এবং নারী-শরীর বনাম বিষয়" আপনার লেখার এই অংশটি ভাল লেগেছে কারন পর্যবেক্ষণটি সঠিক। অমি রহমান পিয়ালের মনপুরা দর্শন অন্তে লিখিত পোস্টে এই সংক্রান্ত একটি পয়েন্ট দেখে আমার মনে হয়েছিল সিনেমাটিতে নারীর শরীরকে দর্শণীয় করে উপস্থাপন করে পরিচালক মনে হয় নান্দ্যনিকতার দোহাই দিয়ে সমালোচনার হাত থেকে বাঁচতে চাইবেন। এখন দৃশ্যটির ডিটেইল শুনে বুঝলাম সবই।
"ধন্যবাদ চঞ্চল, দিনটি দারুণ করে দিলেন" Click This Link
লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:০১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্য এবং সহমত প্রকাশ করবার জন্য্।
আপনার দেয়া লিংকটি পড়ে আসলাম এবং নিশ্চিত হলাম যে, দর্শকের মনে একটা সুড়সুড়ি জাগতে পারে। জাগানো টার্গেটও ছিল। বাণিজ্যিক স্বার্থে। পুঁজিবাদ পুরুষতন্ত্রের হাত ধরেই এগোয়। ফলে মুনাফার জন্য এ সুড়সুড়ি তার খুব প্রয়োজন। সুতরাং এটিকে নান্দনিকতার দোহায় দিয়ে পারপাওয়া যাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ সেটি নান্দনিকভাবে আসেনি। এসেছে অপ্রাসঙ্গিক এবং অবাস্তবভাবে। নান্দনিকতার একটি অন্যতম শর্ত প্রাসঙ্গিকতা। কৃত্রিমতা নয়।
আমার মনে হয় অমি রহমান পিয়ালের পোস্টটি এ পোস্টের মনোসামাজিক বিশ্লেষণটাকে জায়েজ করার ক্ষেত্রে রেফারেন্স হতে পারে। তবে লেখাটি অসম্ভব সাবলীল। এক নিমিষে পড়া যায়।
আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।
৩৪| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:০৪
ছন্নছাড়ার পেন্সিল বলেছেন: শামীম ভাই, যে বিপরীত চিত্র তুলে আনার কথা বলছেন, সেটা সিনেমাটিতে আনতে পারে এরকম চরিত্রের অভাবও চোখে পড়ছে এখন। আপনার জবাবের পর থেকেই চিন্তা করছিলাম, সোনাই অতি সরল, পরী অতি বন্দী, সোনাইয়ের মহাজন অতি-লোলুপ, পরীর বাবা অতি-লোভী...।
এর মাঝে এক পাগলকেই কিছুটা 'আধুনিক' মনে হচ্ছে, যে অন্তত পরীর কান্না বা কষ্টটা কিছুটা হলেও অনুধাবন করে, হোক না তা পাগলীয় অনুভব!
সেলিম সেই চেষ্টা করেছিলেন কী না জানি না, তবে চিন্তাকে কর্মে রূপান্তর করার স্কোপটা ছিল না। আর মূলধারার ছবির বক্তব্য তো মূলধারাকেই সমর্থন করবে!
১৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৪৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আরে আপনার এ পর্যবেক্ষণটা মনে ধরেছে। আমি এ ভাবে ভাবিনি। এখন মনে হয় এভাবেও দেখার সুযোগ রয়েছে।
পীরের উপস্থিতিতে শীমুলের আচারণগুলো আমার কাছে শুধু আকর্ষণীয় মনে হয়নি, বিপুল প্রতিবাদও মনে হয়েছে। ছবিটি যে এলাকার মানে যে এলাকার জীবন চিত্র নিয়ে এগিয়েছে সেখানে এ ধরনের পীর প্রায় আসেন। এলাকায় থাকেন। খাওয়া-দাওয়া করেন আর সুপরামর্শ দেন। যার বেশির ভাগ ক্ষমতাবানদের পক্ষে। সে রকম ক্ষমতাবান পীরের সাথে শীমুল যে আচরণটি করেছে সেটি একটি বড় প্রতিবাদ। আমার মনে হয় গিয়াস উদ্দিন সেলিম এ প্রতিবাদের ব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সামাজিকায়ন তার থাকার কথা। কিন্তু পীর নিজে বাঁচার তাগিদে তাড়াতাড়ি শিমুলকে শেকড় পরানো এবং পরক্ষণে সমাধান হিসেবে একমাত্র বিয়ের বাটিকা দিয়ে যায়। সে বাটিকার সরসরি শিকার নারী। ছবির নায়িকা। আর এ বটিকাটা শিমুলের মা-বাবার জন্য অনিবার্য্ হয়ে যায়, কারন, শিমুল তাদের বংশের বাতি। ফলে পীরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের বিদ্রোহ প্রতিবাদ পরক্ষণে পুরুষতান্ত্রিক ফ্রেমে বন্দী হয়ে যায়। কারণ গিয়াস উদ্দিন সেলিমও হয়তো এ ধরনের কথা শুনেই বড় হয়েছেন যে, বিয়ে করলে পাগলও (দুঃখিত এ শব্দটি ব্যবহারের জন্য, আমি সাধারণত মানসিক প্রতিবন্ধী শব্দটি পছন্দ করি) ভাল হয়ে যান। এ পুরুষতান্ত্রিক সামাজিকায়নতো আমাদের সবারই আছে।
পুনশ্চ: আপনার ওপরের দেখার মাত্রাটা খুব ভাল লেগেছে।
৩৫| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:২৪
শম্পা শাহরিয়ার বলেছেন: মনপুরা নিয়ে যাদেরই পোস্ট দেখলাম সবাইই দেখলাম একেক দিক দিয়ে এর বিশ্লেষন করে একেক ভাবে তাদের মন্তব্য করেছেন । কেউ কোন একটা জিনিস কে ভাল বলেছেন তো কেউ সেই জিনিস কেই আবার খারাপ বলে যুক্তি দাড় করিয়েছেন ।
আমি সিনেমাটা দেখার সময় আসলে এত চিন্তা ভাবনা করে দেখি নাই , একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে দেখেছি ,
আমার কাছে তো সবই ভাল লাগল , খালি হ্যাপী এন্ডিং হলে আরও খুশি হতাম ।
২৩ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:০৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে..................................
আপনি ঠিকই ধরেছেন ছবিটিকে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রিকতা থেকে বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছে। তবে এটি খারাপ উদ্দেশ্যে নয়। অন্তত আমার পোস্টটি। বরং এটিও ছবির স্বার্থকতা যে ছবিটিকে ভিন্ন ভিন্ন ডাইমেনশন থেকে দেখা হচ্ছে। একাডেমিক আলোচনার স্বার্থে এটি ভাল লক্ষণ। অন্তত আমার মনে হয়।
আপনার মতো আমার/আমাদের কাছেও ছবিটি ভাল লেগেছে। তাহলে আমার পোস্ট? সেখানে আমি জেন্ডার ডাইমেনশন থেকে ছবিটিকে বোঝার চেষ্টা করেছি। এই যা।
অনেক ধন্যবাদ। । ভাল থাকবেন।
৩৬| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:৪১
তীর্থক বলেছেন: যারা মনপুরা দেখেন নি তাদের জন্য খুব ভাল একটা গল্প লিখেছেন। ধন্যবাদ।
চুল চেরা বিস্লেষন করেছেন আপনার দৃষ্টিকোন থেকে সেজন্যেও ধন্যবাদ।
এবার একটু মুল আলোচনায় আসি:
"খুন, লাশের ভেজা শরীর এবং বিভৎসতার উৎপাদন: দর্শক মনোযোগ তৈরির পুরুষতান্ত্রিক বটিকা"
---লাশটি মুলতা রাতে'র বিজলী ঝলকানিতে হঠাৎ ২-১ বার দেখাগেছে। মেয়ে না কি ছেলে তা বুঝতে হয়েছে অনেক কষ্ট করে শুধুমাত্র শাড়ি পড়া দেখে।
---অতএব "খুন, লাশের ভেকা শরীর...............পুরুষতান্ত্রিক বটিকা" আপনার লেখায় চটকতা আনার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু না।
---পরিচালক বিভৎসতা এড়িয়ে সুস্থধারা'কে নশ্চিত করেছেন।
"শ্রেণী পক্ষপাত এবং নারী-শরীর বনাম বিষয়"
--- নায়িকা কোথায় শহুরে কিংবা উচ্চবিত্তে'র ঢংয়ে অন্তর্বাস পরেছে তা লিখলেন কিন্তু পুরো ছবিটাই যে আধুনিক সম্পুর্ন রঙিন সে ব্যপারে ত কিছু বললেন না।
--- ধরে নিন ছবিটি সাদা-কালো। নায়িকা'র ব্লাউজ'টি এখন কেমন লাগছে।
--- কেন রঙিন ছবি'র কথাটি প্রথমেই আনলাম সেটা বলি। সাদা-কালো আর রঙিন ছবির আলাদা আলাদা আবেদন আছে। সাদা-কালো ছবির প্রেজেন্টেশান আর রঙিন ছবির প্রেজেন্টেশান এক হলে তা অস্যাভাবিক লাগে। অর্থাৎ বৃহৎ পরিমন্ডলে সফল হিসেবে বিবেচিত হয় না। যারা রঙিন "মুঘলে আজম" দেখেছেন তারা ব্যপারটা ধরতে পারবেন।
--- ঠোটের ক্লোজ শট, নয়িকার কোমর থেকে পিঠ পর্যন্ত দেখান ছবিটি'কে আর গ্রহন যোগ্য করেছে দু'টো কারনে:
১) বানিজ্যিক ছবিতে কোমর থেকে বুক দেখান হত এবং নয়িকা মাঝে মাঝে অশ্লিলভাবে ঠোট কামড়াতেন। পরিচালকও তা অশ্লিলভাবেই পর্দায় উপস্থাপন করতেন।
২) এটি প্রেমে'র ছবি। নায়িকা'র শরীর'কে মাঝে মাঝে দেখান হতেই পারে। আমি আমার গার্লফ্রেন্ডে'র শরীরে'র দিকে তাকাই। দর্শকও নিশ্চয়ই নায়িকা'র শরীরে'র দিকে তাকাবে।
--- কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে নায়কের অর্ধ নগ্ন শরীর যে বেশ কয়েকবার দেখাল সেটা কে কিভাবে ব্যক্ষা করবেন?
"পুরুষতন্ত্র উৎপাদন, পুনরোৎপাদন এর বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া"
--- নায়কে'র নদী সাতরে নায়িকা'র কাছে যাওয়া'টা যুক্তিসঙ্গত মনে হয়েছে। কারন নায়কে'র কোন নৌকা ছিলনা আর নায়িকার নদী সাতরানো দেখলে অবাস্তব মনেহত।
--- পরিচালক সেই রাতে নায়িকা'কে দিয়ে কেন নৌকা বাওয়ালেন না সেটা একটা প্রস্ন হতে পারে। তবে পরিচালক হয়ত নৌকা বাওয়ার শব্দ নায়িকা'র পিতার ঘুম ভাঙাতে চাননি :-)
--- পরীর বাবা যদি মেয়ের পিতা না হয়ে ছেলের পিতা হতেন তাহলে কী হতো? তা হলেও দারিদ্রের কারণে সে ধনীর মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েকে ছেলের বউ করে ঘরে তুলে আনতেন। কারন দারীদ্র এবং লোভ কোন নিয়ম মানে না। মনপুরা তার প্রমান। পরী'র পিতাও প্রথমে বিয়েতে রাজি হয়নি। কিন্তু লোভ তাকে শেষ পর্যন্ত রাজি হতে বধ্য করেছে। সুতরাং আপনার সমালোচনার এ অংশটি অবান্তর।
---দর্শক দেখা পায় কান্না ভেজা অপেক্ষারত সতী নারীর। যে যেকোন উপায়ে রক্ষা করে চলে তার ভার্জিনিটি। তার সতীত্ব। ভালবাসার মানুষটির জন্য। পরীকে পুরোপুরি সমর্থন যোগায় তার শাশুড়ি।
আপনার উপরোক্ত ব্যক্তব্য প্রকৃত চিত্রটি তুলে ধরতে ব্যার্থ হয়েছে। পরীর শাশুরির পরী'কে সাময়িকভাবে সাপোর্ট দেয়া ছাড়া কোন উপায়ই ছিলনা কেননা তিনি ভয় পাচ্ছিলেন যদি ছবির প্রথমে যে হত্যাকান্ড ঘটেছে সেই ঘটনার আবার পুনরাবৃত্তি হয়।
আর নারী'র কুটনামী'র অংশটি ছবি'র প্রয়োজনে লেখক কে আনতে হয়েছে গ্রহনযোগ্য সমাপ্তি'র স্বার্থে। সুতরাং পরিচালক এখানেও সফল।
এটা কখনই বলা যাবেনা যে ছবিটি খুব অসাধারন কাহিনি নিয়ে তৈরি হয়েছে বা আমাদের কোন নতুন গল্প শুনিয়েছে। এই ধরনের ঘটনা নিয়ে আমরা অনেক ছবি আগেও দেখেছি। তবে বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচালনার মান বিবেচনায় মনপুরা একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিৎ। সামগ্রি বিবেচনায় আমি মনপুরা'কে অবস্য দর্ষনিয় একটি ভাল বিনোদনমুলক ছবির মর্যদা দিব।
বাংলা চলচ্চিত্র'কে উৎসাহিত করার জন্য হলেও মনপুরা সবার দেখা উচিৎ।
২২ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৪৩
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ কষ্টকরে পড়বার জন্য এবং অনেক দীর্ঘ মন্তব্য করবার জন্য।
আমি খুব সবিনিময়ে এ অভিযোগটি অস্বীকার করছি যে, আমি চটকতা আনার উদ্দেশ্যে লাশের ভেজা শরীর ও পুরুষতান্ত্রিক বটিকার সহসম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা করেছি। বরং দেখার ভিন্নতা, অনুবাদের ভিন্নতাকে আমি সব সময় শ্রদ্ধা করি। অভিনন্দন জানাই।
.........
'লাশটি মুলতা রাতে'র বিজলী ঝলকানিতে হঠাৎ ২-১ বার দেখাগেছে। মেয়ে না কি ছেলে তা বুঝতে হয়েছে অনেক কষ্ট করে শুধুমাত্র শাড়ি পড়া দেখে'। ঠিক, দর্শক শাড়ি দেখে চিনতে পেরেছে। কিন্তু এটিও ঠিক যে, প্রথম কযেকটি মুহুর্ত এটি লাশ কি না, সেটি বোঝা যায় নি। তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। সে সময় পর্যন্ত দর্শক ভেজা শাড়ির নারীকে দেখার সম্ভাবনা বেশি। অন্তত দর্শক প্রতিক্রিয়া থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে। বিজলী চমকানি আর বৃষ্টিতে একটি মেয়ে পড়ে আছে। এ পড়া থাকা থেকে যে টানটান উত্তেজনা তৈরি করা অন্যতম টার্গেট সেটি অস্বীকার করতে আমার যথেষ্ঠ দ্বিধা আছে।
'নায়িকার নদী সাতরানো দেখলে অবাস্তব মনেহত'- নায়িকার নদী সাঁতরানোর সম্ভাবনার কথা বলেছি উদাহরণ হিসেবে। তারপরও আপনাকে একটু জিজ্ঞেস করি, সেটি কেন অবাস্তব মনে হতো। মেয়েটিতো সে নদীর তীরে বড় হওয়া। নদী জীবনের সাথে তার পরিচয় আছে। কিন্তু তার একটি জিনিষ নেই। সাহস। পুরুষতন্ত্রে এ সাহসটি শুধু পুরুষের। সুতরাং এ রকম সাহস যখন নারী দেখান তখন পুরুষতন্ত্রের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কী বলেন?
দারিদ্র্যের যে ব্যাখ্যাটি দিযেছেন সেটি গ্রহণ না করার কারণ নেই। কিন্তু দারিদ্রেরও একটি জেন্ডার মাত্রিকতা থাকে। সেখানে দারিদ্র্যের প্রকাশ, এর অভিঘাত আরও গভীর এবং ভয়াবহ হয়। যেটি পরীর ক্সেত্রে হয়েছে। আমি সেদিকটি ধরবার চেষ্টা করেছি বা বলতে চেয়েছি।
আপনি ছবিটিকে যদি সাদা-কালোও করে দেন তাতেও 'অব্জেক্টিফেকেশন অব উইম্যান বডি' র বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। আমি দ্বিধাহীনভাবে বলি, সেলিমের সে চেষ্টা ছিল। খুব সচেতনভাবে। আর কস্টিউমের ব্যাপরে যেটি বলেছি তা হলো যে জীবনধারাকে ঘিরে ছবিটি নির্মিত তার সাথে পরীর কস্টিউম কিছুতেই যায় না। এ কস্টিউম সেলিম নির্বাচন করেছেন ছবির চরিত্র এর জন্য নয়, দর্শকের জন্য। যে দর্শকরা শহুরে।
'পরীর শাশুরির পরী'কে সাময়িকভাবে সাপোর্ট দেয়া ছাড়া কোন উপায়ই ছিলনা কেননা তিনি ভয় পাচ্ছিলেন যদি ছবির প্রথমে যে হত্যাকান্ড ঘটেছে সেই ঘটনার আবার পুনরাবৃত্তি হয়' এটি বোধহয় একমাত্র সত্য নয়। পীরের ভবিষ্যত বানীর সাথে বংশের বাতি রক্ষার একটি সম্পর্ক আছে যেটি আমি পোস্টে বলেছি। আপনি যা বলেছেন সে মনস্তত্ত্বকে আমি অস্বীকার করছি না।
আমি আপনার সম্পূর্ণ একমত যে এটি একটি সফল ছবি। একথা আমি আমার পোস্টের শুরুতেই বলেছি। পরিচালককে অভিনন্দনও জানিয়েছি। সুতরাং এ রকম ছবির সফলতা অবশ্যই কামনা করি। কিন্তু আমার পোস্টটি ছিল জেন্ডার মাত্রিকতার দিক থেকে ছবিটিকে দেখা।
আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।
২৩ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৩১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: 'এটি প্রেমে'র ছবি। নায়িকা'র শরীর'কে মাঝে মাঝে দেখান হতেই পারে। আমি আমার গার্লফ্রেন্ডে'র শরীরে'র দিকে তাকাই। দর্শকও নিশ্চয়ই নায়িকা'র শরীরে'র দিকে তাকাবে'
আপনি আপনার গার্ল ফ্রেন্ডের....নিশ্চই আপনার গার্লফ্রেন্ডও। এটি একটি স্বাভাবিক-সুস্থ্য সমতার সম্পর্ক। অন্তত আমার ধারণা। তার সাথে নায়িকার শরীর দর্শকদের জন্য উপভোগ্য করা তোলা কি এক? আপনার কথা থেকে বোঝা যায় সেলিম এটি করেছেন এবং আমি এটিকেই বলেছি পুরুষতন্ত্রের লক্ষণ।
২৯ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: তীর্থক বলেছেনঠোটের ক্লোজ শট, নয়িকার কোমর থেকে পিঠ পর্যন্ত দেখান ছবিটি'কে আর গ্রহন যোগ্য করেছে দু'টো কারনে:
১) বানিজ্যিক ছবিতে কোমর থেকে বুক দেখান হত এবং নয়িকা মাঝে মাঝে অশ্লিলভাবে ঠোট কামড়াতেন। পরিচালকও তা অশ্লিলভাবেই পর্দায় উপস্থাপন করতেন।
২) এটি প্রেমে'র ছবি। নায়িকা'র শরীর'কে মাঝে মাঝে দেখান হতেই পারে। আমি আমার গার্লফ্রেন্ডে'র শরীরে'র দিকে তাকাই। দর্শকও নিশ্চয়ই নায়িকা'র শরীরে'র দিকে তাকাবে।
--- কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে নায়কের অর্ধ নগ্ন শরীর যে বেশ কয়েকবার দেখাল সেটা কে কিভাবে ব্যক্ষা করবেন?
...................................................................................
দেখুন, আমি শ্লীলতা-অশ্লীলতার প্রশ্নটি তুলিনি, বা তুলতে নারাজ। এটি আপেক্ষিক। যৌনতা পরিবেশনের ফর্ম থেকে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্য চিত্রায়নের উদ্দেশ্য। একই সাথে ঐ চিত্রায়িত দৃশ্যগুলোর টার্গেট ভোক্তা। এ ফ্রেমে ফেলে একবার চিন্তা করবার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
প্রেমের ছবিতে নায়িকার শরীরের ভিজুয়াল বিকিকিনির ফতোয়াটায় আমার বিস্তর আপত্তি আছে।
আমি আগেও বলেছি, আমি উদ্দেশ্যটাকে বিবেচনায় আনতে আগ্রহী। সেদিক থেকে চঞ্চলের যে কিস্টিউম তা কোন ভাবেই যৌনতা পরিবেশেনের জন্য নয়। এটি একটি দিক। অন্যদিকটি হচ্ছে পুরুষের নগ্ন শরীরে ঘুরে বেড়ানো পুরুষতন্ত্রে অনুমোদিত। পুরুষের অনেকগুলো স্বাধীনতার একটি এটি। সে স্বাধীনতা চঞ্চল ভোগ করেছেন। খুব ভাল ভাবে।
৩৭| ১৮ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৭
তীর্থক বলেছেন: কিছু অসঙ্গতি অবস্যই আছে কিন্তু বৃহত্বর স্বার্থে এড়িয়ে গেছি :-))
২৫ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৫৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: সে স্বার্থটা কী যদি ব্যাখ্যা করতেন ভাল হতো। অন্তত আমরা বুঝতে পারতাম। আমারতো মনে হয় সেটি আলোচনা করা গেলে ছবিটিকে সহযোগিতা করা হতো...........
৩৮| ১৯ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:১০
আদৃতা আবৃত্তি বলেছেন: মনপুরা একটি ভাল ছবি। কোন সন্দেহ নেই। এর নির্মাণ, ক্যামেরার কাজ, সাউন্ড অসম্ভব রকম ভাল। ছবির মিউজিক? প্রাণকেড়ে নেয়া। মনে হয় এখনও মনে বাজে। তার গানগুলো অসম্ভব গায়কীতে ভরা। ছবির কুশলীদের স্বকন্ঠে গান গাওয়ার আইডিয়াটাও চমৎকার। ছবি বিমুখ মানুষগুলোকে যেভাবে ছবিঘরে টেনেছে সেটি গিয়াস উদ্দিন সেলিমের অসম্ভব কৃতিত্ব। তবে গল্পটি খুব আহমরি কিছু না। সাধারণ, যা ব্লগার তীর্থক খুব সুন্দরভাবে ওপরে বর্ণনা করেছেন। এটি হচ্ছে ছবির একটি ডাইমেনশন।
.............................................................................................
একটি ভাল ছবিকে নানা দিক থেকে দেখা যেতে পারে। ব্লগেও দেখা হচ্ছে। যেমন অমি রহমান পিয়ালের লেখাটি দেখলাম। তার শেষ বর্ণনা দেখলে মনে হবে ছবিটি সুড়সুড়ি জাগাতেও সফল হয়েছে। এবং ছবির ঐ অংশটি নিয়ে অনেকেই সেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। যারা স্রেফ ছবির দর্শক তারা আলোচনায় সে বিশেষ দৃশ্যটি বারবার তাদের গল্পের আলোচনায় এনেছেন। তার মানে ছবিটিতে মূলধারার ছবির মতো নারী শরীর ব্যবহারের (যৌন বস্তু হিসেবে) প্রণোদনা ছিল। তার ব্যবহারও হয়েছে। হয়তো অন্যান্য ঢাকাই ফিল্পের মতো করে নয়।
..............................................................................................
এ পোস্টটি মূলত ছবিটিকে জেন্ডার প্রেক্ষিত থেকে দেখেছে। ফলে ছবির অন্য সফলতাগুলো তার বিবেচনায় আসে নি। যতটা এসেছে জেন্ডার সম্পর্ক কাঠামোটি। এটি অবশ্য শুরুতেই তিনি বলেছেনও।
..............................................................................................
বাংলা চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এটি নিঃসন্দেহে একটি মাইলফলক। কিন্তু জেন্ডার ডাইমেনশন থেকে গতানুগতিক পুরুষতন্ত্রযে ছিল তাও অস্বীকার করার উপায় নেই। আরেকটি কথা, আমাদের ব্যবহারিক ভাষায় শ্লীলতা-অশ্লীলতার সীমারেখাটি সাধারণত নির্ধারিত হয় যৌনতাসংশ্লিষ্ট বিষয় দ্বারা। এ যে সীমারেখা সেটিও পুরুষতন্ত্র নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ কারণে অনেক সুক্ষ বিষয় সরাসরি আমাদের কাছে অশ্লীলতার সীমারেখায় পড়ে না বা আমরা সেভাবে ভাবি না। তার জন্য আরও গভীরে যেতে হয়।
..................................................................................................
গিয়াস উদ্দিন সেলিম খুব শক্তিশালী পরিচালক। তরুন হলেও। তিনি আমাদের সিনেমাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস। ওপরে যে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব এর কথা আলোচিত হয়েছে তার সব কিছু তিনি সচেতনভাবে করেছেন তা হয়তো নয়। এমনও হতো পারে এটি যে পুরুষতান্ত্রিক হতে পারে এটিই তার কাছে স্পষ্ট নয়। যদি সেরকম হয় সেটি কোন অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কারণ আমাদের বেড়ে উঠার প্রক্রিয়ায় আমরা সাধারণত এ ধারনের ভাবনাগুলো পাই না। পরিচালকের ক্ষেত্রেও সেটি ঘটতে পারে। আবার উল্টোটিও হতে পারে।
............................................................................................
একটি ভাল ছবির জন্য পরিচালককে ধন্যবাদ।
ওপরে যারা আলোচনা-সমালোচনা করে নানা মাত্রিকতা যুক্ত করেছেন আমাদের জন্য তাদের সকলকে ধন্যবাদ।
ছবিটির সফলতা কামনা করছি।
২৮ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:১৪
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ছবি বিমুখ মানুষগুলোকে ছবি ঘরে টানার ক্ষেত্রে পরিচালকের যে কৃতিত্ব তাতে দ্বিমত পোষণের কোন অবকাশ নেই। আমাদের সিনে ইন্ডাস্টির জন্য এ ধরনের ছবি আরও দরকার সেটিও ঠিক। কিন্তু জনপ্রিয় ধারার ছবিতে কৌশলে অথবা অবচেতনভাবে পুরুষতন্ত্র পরিবেশনের যে প্রবণতা তাকে বোধহয় প্রশ্ন করাই যায়। সে প্রশ্নটিই মূলত পোস্টে তুলবার চেষ্টা করা হয়েছে।
৩৯| ১৯ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:২৬
তীর্থক বলেছেন: আদৃতা আবৃত্তি'কে ধন্যবাদ ভাল বিশ্লেষনের জন্য।
পরিচালক পুরুষতান্ত্রিক যে মনোভাব ছবিটি'তে প্রদর্শন করেছেন তা সচেতন বা অবচেতন যেভাবেই তিনি করেন না কেন তা আমার কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয়েছে। আমাদের সামগ্রিক সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলেই তা পরিস্কার হয়ে যাবে। এখানে পুরুষতন্ত্র'কে যতটুকু ব্যবহার করা হয়েছে তা না করলেই বরং অস্বাভাবিক মনে হত।
বাংলাদেশে পুরুষতন্ত্র কোথায় কতটা স্বক্রিয় তা বোধহয় আমার সবাই মোটামুটি ভালভাবেই জানি :-))
২৭ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:৫১
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: 'এখানে পুরুষতন্ত্র'কে যতটুকু ব্যবহার করা হয়েছে তা না করলেই বরং অস্বাভাবিক মনে হত' কিন্তু কেন তার বিশ্লেষনটা জরুরি। তার মানে বিদ্যামন মতাদর্শকে চ্যালেঞ্জ করার ভয়। এ ভয়টা কিসের। লগ্নি পুঁজি উঠে না আসার অথবা অধিক মুনাফা না হওয়ার। ছবির পরিচালক-প্রযোজন ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন। সুতরাং তার পুঁজির আদিম সঞ্চায়নটা জরুরি। সেটি হবে পুরুষতন্ত্রের সিঁড়ির ওপর দিয়ে তাইতো। পুরুষতন্ত্র ও পুঁজিবাদ হাত ধরাধরি করে চলে। একে অপরকে সাহায্য করে। পুঁজিবাদের শক্তিটা হচ্ছে সে তার প্রয়োজনে পুরুষতন্ত্রের প্রকাশে সংস্কার আনে। নতুনত্ব আনে। উদ্দেশ্য একটাই। অধিক মুনাফা। আপনি যে অস্বাভাবিকতার কথা বলছেন সেটি কি তার জন্যই???
৪০| ১৯ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:১৩
আদৃতা আবৃত্তি বলেছেন: @ তীর্থক:
ধন্যবাদ তীর্থক। আমাদের সমাজ আগাগোড়া পুরুষতান্ত্রিক। কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া। ছবিতে সে বাস্তবতা এসেছে। এটি হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি গ্রহণযোগ্য হয় কীভাবে? পুরুষতন্ত্র একটি নিপীড়নমূলক মতাদর্শ। এ মতাদর্শ পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া উচিত নয়। পুরুষতন্ত্রের যে ভয়াবহতা তা অবশ্যই সিনেমায় আসতে পারে। তার বিরুদ্ধে লড়বার জন্য। তাকে সমর্থন দেবার জন্য নয়। সুতরাং যে সামাজিক বাস্তবতার জন্য পুরুষতন্ত্র এসেছে সেটুকু হয়তো ঠিক ছিল। কিন্তু সেটি যে নিপীড়নমূলক সে ম্যাসেজটি আমরা মিস করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এখানে একটু দ্বিমত করতে চাই আপনার সাথে।
পুরুষতন্ত্র কোথায় কতখানি সক্রিয় তা ভালভাবে জানি। এটি সত্যি। কিন্তু এর ভয়াভহ দিকে সম্পর্কে আমরা কতখানি সচেতন। এ সচেতনতা নির্মানের কাজটি করে কিন্তু সংস্কৃতি। এখানে দায় টা এসে পড়ে।
তবে আমি আবারও বলি ছবিটি একটি ভাল ছবি সে নিযে কোন সন্দেহ নেই। তবে দুর্বলতা মুক্ত নয়। তার একটি হচ্ছে পুরুষতন্ত্র মতদর্শের পরিবেশন।
আমার মন্তব্যের বিপরেতে প্রতিমন্তব্য করায় অনেক ধন্যবাদ।
৪১| ১৯ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৬
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: যারা ওপরে মন্তব্য করে পুরো আলোচনাটিকে সমৃদ্ধ করেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আজ বড় ব্যস্ততা যাচ্ছে। সকল ব্লগারের গুরুত্বপুর্ণ নিজস্ব মতামতের প্রতিউত্তরে আমার নিজস্ব ব্যাখ্যা দেয়ার ইচ্ছে রাখি। আশা করি আলোচনাটা আরও একটু এগুবে আপনাদের অংশগ্রহণে।
৪২| ১৯ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৯
তীর্থক বলেছেন: আদৃতা আবৃত্ত, গ্রহনযোগ্য কোন সেন্সে বলেছি তা আপনি ধরতে পারেন নি। আমি বলিনি যে আমাদের সমাজে যে পুরুষতন্ত্র ব্যাপারটি আছে তা গ্রহনযোগ্য। আমি বলেছি ছবিটি'তে যে পুরুষতন্ত্র দেখান হয়েছে সেটা আমাদের সমাজে পুরুষতন্ত্র যেভাবে চলে আসছে সেই দৃষ্টিকোন থেকে গ্রহনযোগ্য।
আপনি সম্ভবত মিস করেছেন, "আমাদের সামগ্রিক সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলেই তা পরিস্কার হয়ে যাবে। এখানে পুরুষতন্ত্র'কে যতটুকু ব্যবহার করা হয়েছে তা না করলেই বরং অস্বাভাবিক মনে হত।" কেননা আমাদের সমাজে যুগ যুগ ধরে এটাই চলে আসছে।
পুরুষতন্ত্রে'র ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা নির্মানে'র কাজটি করে সংস্কৃতি, সেটাও মানছি। কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আপনি একটি গ্রামীন প্রেক্ষাপটে নির্মিত ছবি দেখছেন। পরিচালক বাস্তবের কাছাকাছি একটি কাহিনি দাড় করাতে চেয়েছেন। এর ভিতর দিয়েই আপনাকে সচেতনতার বিষয়টি গ্রহন করতে হবে। এটি কোন শিক্ষামুলক বা ডকুমেন্টারি ছবি নয়। পরিচালক নির্মল বিনোদন দেয়ার চেষ্টা করেছেন এবং সামগ্রিক বিচারে সফল হয়েছেন বলেই আমার বিশ্বস।
৩০ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:২৭
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: তীর্থক পরিচালক বাস্তবের কাছাকাছি একটি কাহিনী দাঁড় করতে চেয়েছেন। দ্বিমত এখানে নাই বা করলাম। কিন্তু বাস্তবতা বলতে আপনি যদি সামাজিক বাস্তবতা বুঝিয়ে থাকেন, তাহলে বলতেই হয় সামাজিক বাস্তবতা কিন্তু কনসটেন্ট কোন বিষয় নয়, এটি একটি ডাইনামিক বিষয়। সামাজিক বাস্তবতায় অনেক অন্যয্য বিষয় থাকে। সেলিম সেরকম বেশ কিছু অন্যয্য বিষয়ের বিরুদ্ধে কথা বলবার চেষ্টা করেছেনও।
সামাজিক অন্যায্য বিষয়গুলোর একটি পুরুষতন্ত্র। ছবিতে পুরুষতান্ত্রিক বাস্তবতাটা প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু একটি চরিত্রও তার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় নি। কোন সংলাপ বা চিত্রায়নের মাধ্যমে। সেলিমের সীমাবদ্ধতাটা এখানেই
৪৩| ১৯ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১১
ফাহমিদুল হক বলেছেন: পোস্ট ও মন্তব্য দুটাই পড়লাম। আলোচনা ভালো লাগলো। তবে ছবিটি দেখা হয়নি। তাই মন্তব্য করা মুশকিল।
কাহিনী পড়ে ও বিশ্লেষণ দেখে মনে হলো ছবিটিকে জেন্ডার দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করার সুযোগ থাকলেও এবং আপনি সে চেষ্টা করলেও তা আমাকে চমৎকৃত করতে পারেনি। বরং পরীর কস্টিউম কেন অবিশ্বাস্য ঠেকে তার যে কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, তা মনোযোগ কাড়লো। এটির টার্গেট গ্রুপ ও বাণিজ্যিক প্রবণতা এধরনের অসঙ্গতির জন্ম দিয়েছে। দর্শক মনোলোভা ছবিতে গ্লস থাকবে, পালিশ থাকবে, কালার থাকবে। মলিনতা, দারিদ্র্য স্পর্শ করবে না মুখয়াবয়বে, পোশাকে। সেলিম সেটা সচেতনভাবে করেছেন।
পরিচালক দাবি করেছেন এটি বাণিজ্যিক ছবি, এবং দর্শকখরার কালে এটি যেহেতু দর্শক টানছে, না দেখার পরও আমি চোখ বুঁজে এ প্লাস দিতে চাই।
তবে এটা যদি কেউ সমাজের দলিল ইত্যাদি বলতে চায় তবে চুলচেরা বিশ্লেষণে পার পাবেনা। আপনার জেন্ডার দৃষ্টিকোণটাও সেক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে।
কাহিনীটা পড়ে মনে হচ্ছে ছবিটার ভিত্তি গড়ে উঠেছে ওয়ালীউল্লাহর 'চাঁদের অমাবশ্যা' উপন্যাসকে আশ্রয় করে করে। সেখানে গৃহশিক্ষক আলেফ দেখে ফেলে যে আশ্রয়দাতার ভাই বাঁশঝাড়ে এক মেয়েকে ধর্ষণপরবর্তী খুনের অপরাধ করেছে। এই হঠাৎ দেখে-ফেলা তার জীবনে এক অস্তিত্বের সঙ্কট তৈরি করে। এখানে শিমূলের অপরাধের দায় চঞ্চলের জীবনে অস্তিত্বের সঙ্কট তৈরি করেছে।
মৃত্যুমুখী ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে যদি এধরনের 'মিডল সিনেমা' (আর্ট নয়, কমার্শিয়াল নয়, দুইয়ের মাঝামাঝি) বেশি বেশি নির্মিত হয়, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব আরাম পাই। এরকম আরেকটি ছবি কয়েক বছর আগে জনপ্রিয় হয়েছিল -- মোল্লাবাড়ির বউ।
২১ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:৪৩
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: প্রিয় ফাহমিদ ভাই, প্রবাস জীবনের আনুষ্ঠানিক অধ্যয়নের ব্যস্ততার মধ্যেও এসেছেন, পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন দেখে বিনীত কৃতজ্ঞতা। আপনার মন্তব্য আরও দু'একটি দিক-মাত্রা সামনে এনে দিয়েছে।
'জেন্ডার দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করার সুযোগ থাকলেও এবং আপনি সে চেষ্টা করলেও তা আমাকে চমৎকৃত করতে পারেনি' এ সৎ ও খোলামেলা মন্তব্যের জন্য একটি বাড়তি ধন্যবাদ। এটি নিঃসন্দেহে পোস্টের সীমাবদ্ধতা। তবে আরও ভাল লাগতো যদি কেন চমৎকৃত করতে পারেনি, দূর্বলতার জায়গাগুলো কোথায় বলতেন। এতে পুরো আলোচনাটা তুলনামূলক সর্বাত্মক হওয়ার সুযোগ তৈরি হতো। হয়তো আপনার ব্যস্ততার জন্য আমরা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছি।
এটি একটি সফল ছবি। এ নিয়ে বোধহয় কারও মাঝে দ্বিধা নেই। আমার মধ্যেতো মোটেও না। আপনার মতো আমি/আমরাও, যারা এখনও বড় পর্দায় ছবি দেখি, দেখতে চাই, তাদের জন্য এ ছবি একটি বড় পাওনা। সুতরাং আপনি যে আরামের কথা বলেছেন সে আরাম আমারও। বিরাট জনগোষ্ঠীর দেশ বাংলাদেশে বাংলা ছবির নিজস্ব বাজারই ছোট নয়, বরং অনেক বড়। সুতরাং একটি সফল ছবি অভ্যন্তরীণ মার্কেটেই ব্যবসা সফল হতো পারে। সুতরাং এ ধরনের ছবি আমরাও চাই, বেশি বেশি। কিন্ত বাণিজ্যিক উপাদান যুক্ত করতে গিয়ে যে মনোজগতটি 'পুশ ফ্যাক্টর' হিসেবে সক্রিয় ছিল তা যে পুরুষতান্ত্রিক নয়, এটি বলতে আমার যথেষ্ঠ দ্বিধা আছে। আপনার ওপরের মন্তব্যের পরও।
'এটির টার্গেট গ্রুপ ও বাণিজ্যিক প্রবণতা এধরনের অসঙ্গতির জন্ম দিয়েছে। দর্শক মনোলোভা ছবিতে গ্লস থাকবে, পালিশ থাকবে, কালার থাকবে। মলিনতা, দারিদ্র্য স্পর্শ করবে না মুখয়াবয়বে, পোশাকে। সেলিম সেটা সচেতনভাবে করেছেন' এর সাথে কোন দ্বিমত নেই। এটি অবশ্যই সত্য। কিন্তু একমাত্র সত্য নয়। যেমন ধরুন শ্রেণীর প্রশ্নে নায়িকা ও নায়িকা একই মেরুতে অবস্থান করে। কিন্তু সেলিম যখন কস্টিউম নির্বাচন করেন তখন নায়িকার শ্রেণী অবস্থানটা মনে রাখেন না। তাঁর কাছে তখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে দর্শকের শ্রেণীগত অবস্থানটি। কিন্তু দর্শকের শ্রেণীগত ভাবনা নায়কের কস্টিউমে প্রভাব ফেলে না। নায়িকা শহুরে কস্টিউম পরলেও নায়ক আগের অবস্থা অপরিবর্তিত থাকে। সেলিমের এ যে বাণিজ্যিক ভাবনা তার পেছনের প্রেষণাটি নিঃসন্দেহে পুরুষতান্ত্রিক মনোজগত থেকে উৎসারিত। এ পুরুষতন্ত্র সম্পর্কে হয়তো সেলিম নিজেও সচেতন নন। তার বেড়ে উঠা, তার সামাজিকায়নের কারণে।
আরেকটি বিষয় খুব বিনয়ের সাথে শেয়ার করতে চাই। ছবিটি আমি যেদিন দেখি আমরা একসাথে ১১ জন (নারী ও পুরুষ) ছবি ঘরে যাই। ছবির শেষ দৃশ্যে আমি অনেককে কাঁদতে দেখি। পরীর মৃত্যুর জন্য। দর্শককে ছবির কাহিনীর সাথে একাত্ব করতে পারা, এরিস্টোটল তার কাব্যতত্ত্বে যাকে ভাববিমোক্ষণ বলেছেন, নিঃসন্দেহে একটি সফলতা। এ সফলতা অবশ্যই সেলিমের। কিন্তু যাদেরকে কাঁদতে দেখেছি তাদের সবাই (আমার দেখা মত) ৩০-৪০ বছর বয়সী নারী। অন্যদিকে ছবির আরেকটি দর্শক গ্রুপ যারা বয়সে তরুন, বেশির ভাগ পুরুষ, তাদের আলোচনায় প্রধানত স্থান পায় নদীতে নৌকা বাইবার সময় পরীর যে শর্টগুলো ব্যবহার করেছে সেগুলো। এবং সেসব আলোচনায় উপজীব্য হয়ে উঠেছে পরীর শরীর। ব্যবসায়িক অর্থে সেলিম এখানেও সফল। কারণ এ সব তরুনরা অন্য বন্ধুদের সাথে যখন এ আলোচনাটি তুলবেন তখন অন্য অনেকে ছবিটি দেখার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠবে। নারীর শরীরকে বস্তু হিসেবে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবেশনের যে প্রবণতা তার পুরোপুরি উপস্থিতি আমরা এখানে দেখতে পাই। এবং এ প্রবণতা পুরুষতান্ত্রিক।
ছবিটেকে অবশ্যই প্লাস। ছবির অন্যান্য উৎকর্ষতার জন্য। কোনভাবে পুরুষতন্ত্র পরিবেশনের জন্য নয়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
২১ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:০২
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ফাহমিদ ভাই, সিনেমার একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে আমার মধ্যে আরেকটি প্রশ্ন কাজ করে। সেটি হচ্ছে ছবির পাত্র-পাত্রীদের যুক্তিবাদিতা নিয়ে। বাংলা মুলধারার ছবিতে কোন না কোনভাবে চিন্তাশীল, যুক্তিবাদী মানুষ হিসেবে যাদের দেখানো হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা পুরুষ। এ যে ধরাবাঁধা ছক সেটি কিন্তু আমরা এ ছবিতেও দেখতে পাই। পরীকে যখন জানানো হলো সোনাই এর ফাঁসি হয়ে যাচ্ছে, তার কাছে কোন ধরনের যৌক্তিক চিন্তা-ভাবনা কাজ করলো না। আবেগটাই হয়ে উঠলো প্রধান। দুঃখটাই সাথী। ফল হিসেবে আত্মহত্যা। এটি কি নারীর বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা সম্পর্কে প্রচলিত যে ধারণা তারই চিত্রায়ন নয়? আমার কাছে সে রকম মনে হয়েছে। অন্যদিকে সোনাই জেলখাটলেও সে অনেক আত্ম-বিশ্বাসী থাকে। তার ভেতরে যুক্তি কাজ করে। আমরা পরীকেও প্রতিবাদ করতে দেখি। কিন্তু সে প্রতিবাদটা নিজের ওপর। খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়া। এগুলোর প্রত্যেকটিই আমার কাছে সমাজে চলমান পুরুষতান্ত্রিক ভাবনাগুলোর চিত্রায়ন বলেই মনে হয়েছে।
অনেক শ্রদ্ধা আপনাকে।
৪৪| ২০ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:২১
আহসান হাবিব শিমুল বলেছেন: "এরকম আরেকটি ছবি কয়েক বছর আগে জনপ্রিয় হয়েছিল -- মোল্লাবাড়ির বউ"।
মোল্লাবাড়ীর বউ ছবিটা দেখেছি ।তারপর হলে গিয়ে আর বাংলা ছবি দেখিনি।
ছবির চিত্রনাট্য, স্ক্রিন প্লে, কস্টিউম এতো বাজে যে এর পরে এমন নাম ফাটানো সিনেমা দেখতে হলে যাইতে সায় পাইনা।
মনপুরা দেখিনি।তাই অফ গেলাম।
৩০ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৬
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ঠিকাছে...............যখন দেখবেন তখন নাই হয় আবার অন হবেন। সে প্রত্যাশায় থাকলাম..................।
৪৫| ২০ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৪৬
তীর্থক বলেছেন: মনপুরা অবস্যই দেখবেন আশা করি।
২২ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৮:৩৮
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: সহমত........................ধন্যবাদ
৪৬| ২২ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৮:৫০
চিকনমিয়া বলেছেন: দেকিনাই
তয় দেকমু, শইলডা ভালানি জেডা?
২২ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:০৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: জে শইলডা বালা..................। ভাল লাগলো আমার ব্লগে জেডাকে দেখে। মামঝে মাঝে দেখা দিবেন জেডা। আর ছবিটা দেখবেন।
৪৭| ২২ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৮:৫৩
চিকনমিয়া বলেছেন: কামে কাজে বিজি আচি জেডা এই জইন্য কম দেকা যায়
২২ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:০৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: কাজে বিজি...........কামে বিজি...কুব বালা জেডা। তো কাজ-কামের ফাঁকে একটু ঢু মারবেন আর কি? ভাতিজা-ভাতিজীদের দেইখা রাখাও বড় কাজ।
তো ভাল থাকবেন।
৪৮| ২২ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:৪৮
আদৃতা আবৃত্তি বলেছেন: @তীর্থক:
আমি মনে হয় ধরতে পেরেছি। আর ধরতে পেরেছি বলে আমি দ্বিমত পোষণ করেছি কিছু বিষয়ে খুব সচেতনভাবে। আমি আপনার সাথে খুবই একমত যে চলমান পুরুষতন্ত্রের দিক থেকে গ্রহণযোগ্য বিষয়গুলো পরিবেশিত হযেছে। পুরুষতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। পুরুষতন্ত্রের কাছে অস্বাভাবিক হতো। সে জন্যই পরিচালক তার দায়বদ্ধতা প্রমাণ করেছেন পুরুষতন্ত্রের কাছে। এখন পুরুষতন্ত্র যদি একটি ইভিল শক্তি হয়, আর কারও দায়বদ্ধতা যদি সে ইভিল মতাদর্শের কাছে হয়, তাহলে তাকে সমর্থন করি কীভাবে। আমি আবারও বলছি, সামগ্রিক বিচারে মনপুরা নিঃসন্দেহে একটি ভাল ছবি। এখানে আপনার সাথে দ্বিমত এর কোন কারণ নেই।
এটি যে কোন শিক্ষামূলক ডকুমেন্ট নয় এ ব্যাপারে আমি সম্পূর্ন সচেতন। তবু মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
৪৯| ২২ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:১৬
চিকনমিয়া বলেছেন: ঠিকাচে
২২ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:২৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: মারহাবা...............জেডা
৫০| ২৩ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:১২
আরিয়ানা বলেছেন: লেখা আর সমালোচনা পড়ে ছবিটা সত্যিই দেখতে ইচ্ছে করছে।
৩০ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:০০
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: অবশ্যই দেখবেন। কষ্টকরে এতো দীর্ঘ লেখা পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
৫১| ২৩ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৪
সালাহ্ উদ্দিন শুভ্র বলেছেন: আমি ছবি দেখিনাই বলে মন্তব্য করতে চাই নাই। কারণ যারা ছবি বানান বা চলচ্চিত্র বিষয়ে ভাবেন তাদের কাছে একটি সিনেমা কতো দিক থেকে দেখার আছে সেই বিষয়ে সামান্য জানাশোনা আছে। ফলে লেখক যখন এর অশ্লীলতা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন তখন আমি তা নিয়ে আলোচনায় বিরত থেকেছি। কিন্তু অনেকেই আলোচনা করছেন দেখে কিছু কথা বলার ইচছা হল।
প্রথমত পুরুষতন্ত্রের বিষয়টি-যারা বলেছেন এভাবে না দেখলেও চলে বা একটি সিনেমার আরো বিষয় থাকে লিঙ্গীয় উপস্থাপন ছাড়াও তারাও নিশ্চয়ই এই বিষয়কে বাদ দিয়ে মনপুরা সম্পর্কিত আলোচনা শেষ করবেন না। আর তাছাড়া আমার মনে হয়েছে সমালোচকদের বিষয় ভিন্নতা থাকলে তা আমাদের শিল্প অঙ্গণকেই সমৃদ্ধ।
আরেকটি বিষয় যা লেখক নিজেই বলেছেন খেয়াল করেন নি বলে উল্লেখ করেছেন-ছন্নছাড়া পেন্সিল যে মন্তব্য রেখেছেন তাও একটা বড়ো সমালোচনা হতে পারে-সেটা সমালোচনার আরেকটা দিক। কাহিনী নির্ভরতা আমাদের বর্তমান নাটক সিনেমার প্রবণতা। যেখানে চরিত্র গুরুত্ব পায় না। চরিত্রগুলোতে কোন মমতা থাকে না। সব চরিত্রই গা সুন্দর খালতো ভাই।
অদিতা আবৃত্তি একটা ভালো সমালোচনা রেখেছেন কিন্তু সেটা একেবারেই মধ্যবিত্তের টোন এবং বিশেষত ঢাকা শহরে থাকা মধ্যবিত্ত। যে গ্রাম এবং পরিবেশ ও কাহিনী দেখানো হয়েছে তা শহুরে হাপিত্যেশ মেটানোর জন্যে যথেষ্ট। এই সিনেমা আরো যে বড়ো সমালোচনাটি হতে পারে তা হচেছ গান-সঙ্গীত। আঞ্চলিক বা ঐতিহ্যিক গানকে এভাবে জনপ্রিয় করে তোলার মাধ্যমে বিকৃত কারাটা বাণ্যিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচয়। যারা নীনা হামিদের কন্ঠে আমার সোনার ময়না পাখি গানটি শুনেছেন তারা অন্তত এটা বুঝবেন। কন্ঠে আর সঙ্গীতে গান তার অর্থই বদলে ফেলে। অদিতা যেমনটি লিখেছেন-' ওপরে যে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব এর কথা আলোচিত হয়েছে তার সব কিছু তিনি সচেতনভাবে করেছেন তা হয়তো নয়। এমনও হতো পারে এটি যে পুরুষতান্ত্রিক হতে পারে এটিই তার কাছে স্পষ্ট নয়। যদি সেরকম হয় সেটি কোন অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কারণ আমাদের বেড়ে উঠার প্রক্রিয়ায় আমরা সাধারণত এ ধারনের ভাবনাগুলো পাই না। পরিচালকের ক্ষেত্রেও সেটি ঘটতে পারে। আবার উল্টোটিও হতে পারে।' এখানেই পরিষ্কার হয় দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্যই সমালোচনার কারণ। অন্যথায় ব্লগের সমালোচনার ভূমিকা কতটুকুই বা।
তীর্থকও একটা ভালো সমালোচনা দাঁড় করিয়েছেন-----'কিন্তু আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আপনি একটি গ্রামীন প্রেক্ষাপটে নির্মিত ছবি দেখছেন। পরিচালক বাস্তবের কাছাকাছি একটি কাহিনি দাড় করাতে চেয়েছেন। এর ভিতর দিয়েই আপনাকে সচেতনতার বিষয়টি গ্রহন করতে হবে। এটি কোন শিক্ষামুলক বা ডকুমেন্টারি ছবি নয়। পরিচালক নির্মল বিনোদন দেয়ার চেষ্টা করেছেন এবং সামগ্রিক বিচারে সফল হয়েছেন বলেই আমার বিশ্বস।' তার মানে সিনেমা নিছক বিনোদনও হতে পারে। কিন্তু আদৌ কি সিনেমা এমন হাত পা গুটিয়ে কখনো বসে ছিল। মনপুরা থেকে কোন শিক্ষা দর্শক পেল এটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ সমালোচনা।
তীর্থকের আরেকটি মন্তব্য উল্লেখ করবো যা সিনেমাটির আরেক ধরণের সমালোচনা তে পারে। তিনি বলেছেন---- 'পরিচালক সেই রাতে নায়িকা'কে দিয়ে কেন নৌকা বাওয়ালেন না সেটা একটা প্রস্ন হতে পারে। তবে পরিচালক হয়ত নৌকা বাওয়ার শব্দ নায়িকা'র পিতার ঘুম ভাঙাতে চাননি :-)' এই আলোচনার শুরু পুরুষতান্ত্রিকতা হলেও এটা কাহিনী-ক্লাইমেক্স এবং গন্তব্যকে হাজির করে। এই মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ এই জন্যে যে একটি দৃশ্য অনেক আয়োজন নিয়ে তৈরি করতে হয়। নিছকই একটি দৃশ্য কখনোই সিনেমায় তৈরি করা হয় না। এ জন্যেই মনপুরার আলোচনা লিঙ্গ প্রসঙ্গ থেকে মুক্ত থাকতে পারে না কখনোই। আর তা যদি পরিচালক উৎরে যেতে না পারেন-তবে সেই ছবিকে সফল বলার মধ্য দিয়ে সেই ছবি কর্তৃক উপস্থাপিত সংস্কৃতিকেই সমর্থন জানানো হয়। আবার নায়িকার পিতার ঘুম ভাঙ্গানোর বিষয়টি শুধুই কাহিনীর বিষয় নয়-পিতা কন্যার সম্পর্কেরও বিষয়-সমাজেরও বিষয়।
আলাচনায় মোল্লা বাড়ির বউ এর উদাহরণ এসেছে। এই সিনেমার নাম দেখেই মনে হলো-যাকে আমরা সুস্থ্য বলছি তা সবল কি-না। দুর্বলের সুস্থ্যতায় যাদের আস্থা আছে তাদের নিয়ে আলোচনা ভিন্ন। মিডলের আলোচনা অন্তত এই পোষ্টে করা ঠিক হবে না।
৩০ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৮
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: প্রিয় শুভ্র, প্রথমে ছোট্র একটা সংশোধনী দিতে চাই। যদিও দেরি হয়ে গেছে। আসলে অশ্লীলতার অভিযোগ নয, কারন আমার কাছে এটি আপেক্ষিক বিষয়। আমি প্রশ্ন তুলতে চেয়েছি যৌনতা পরিবেশনে উদ্দেশ্য নিয়ে। এবং সে পরিবেশনায় কাকে অব্জেকটিফাই করা হয়েছে সেটি নিয়ে। যে সুক্ষ যৌনতাটুকু পরিবেশিত হয়েছে তার ভোক্তা কারা। এবং ভোক্তা সম্পর্কে পরিচালক সর্ম্পর্ণ সচেতন ছিলেন বলেই আমার মনে হয়।....................................
..........................................................................................
অবশ্যই ছবিটিকে নানা মাত্রিকতা থেকে দেখার সুযোগ আছে। ওপরের মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যই তার প্রমাণ। আমি যেভাবে দেখতে চেয়েছি সেটি একটি মাত্রিকতা।
........................................................................
তীর্থকের ঐ মন্তব্যের সাথে আমি সবিনয়ে দ্বিমত করতে চাই। আমি মনে করি না ছবি নিছক বিনোদনের। এমনকি বিনোদনের হলেও সেটি কোন না কোন মেসেজ ধারণ করে। দর্শকের মধ্যে সেটি অল্প-বিস্তর সংক্রমিতও হয়। তার সামাজিকায়নেও ভূমিকা রাখে। ছবিতো কালেরও স্বাক্ষী। সেদিক থেকে আমি কেবল ছবিটির বিরুদ্ধে পুরুষতন্ত্র পরিবেশনের অভিযোগ তুলেছি। ছবিটি আমার ভাল লাগেনি সেটি নয়।
..................................
দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য আবারও ধন্যবাদ।
৫২| ২৩ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৩
তীর্থক বলেছেন: শামীম, আপনি আমার ব্লগে যেয়ে আমন্ত্রন জানিয়ে নিয়ে এলেন তাই কিছু না লিখে পারছি না।
আমার নিচের প্রশ্নগুলো'র জবাব জানতে ইচ্ছে হচ্ছে:
---- পরী'কে শহুরে স্টাইলে কস্টিউম পড়ান হয়েছে। সোনাই'কে কি পড়ান যেত?
---- তরুন'দের নারী শরীর নিয়ে আলোচনার যে প্রসঙ্গটা এসেছে সেখানে সেলিমে'র কি করা উচিৎ ছিল? পরী'কে বোরখা পড়ান না কি নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে ভিডিও করা? অবস্যই মাথায় রাখুন আমাদের গ্রামের মেয়েরা কিভাবে শাড়ি পড়ে।
---- পরী'র ফাঁসি নেয়ার ব্যাপারটাকে অযৌক্তিক বলেছেন। বাংলাদেশে এধরনের ঘটনায় কত পার্সেন্ট মেয়ে ফাঁসি নেয় সেটাকি হিসেব করেছেন? ফাঁসি নেয়ার হার এদেশে মেয়েদের বেশি না কি ছেলেদের?
---- "সোনাইয়ে'র ভিতরে যুক্তি কাজ করে"----ধরতে পারিনি আপনি কোন যুক্তির কথা বলেছেন। শেষ দৃষ্যটি ভুলে যাননি আশা করি? নৌকাটি কিন্তু দাঢ়হীনভাবে মাঝ নদীতে ভাসছিল। সেটা কি যুক্তির মধ্যে পরে?
আগেও বলেছি কিছু অসঙ্গতি ছবিটির মধ্যে আছে। কিন্তু পুরুষতন্ত্র হিসেবে আপনি যা বলতে চাইছেন তা আমার কাছে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে অস্বাভাবিক মনে হয়নি। আমরা অবস্যই এমন কোন ছবি আশা করিনি যেটা মডর্ন ওয়ার্ল্ডে'র কালচার কে ধারন করবে। সেটা দেখতে ভাল লাগলেও অলিক কল্পনা হিসেবে অবস্যই চুড়ান্ত হিসেবে ব্যার্থ হত।
২৯ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:০৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ---- পরী'কে শহুরে স্টাইলে কস্টিউম পড়ান হয়েছে। সোনাই'কে কি পড়ান যেত? যেত কি যেত না সেটি ন্রির্ভর করছে ছবটির বাণিজ্যিকায়নের ওপর। সোনাইকে কেন যেত না আর পরীকে কেন গিয়েছে সে ব্যাখ্যাটি নিশ্চই আপনি করবেন। কিন্তু পরীকে শহুরে যে কস্টিউম পরানো হয়েছে তা ছবির গল্পের সাথে যায় না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। তবু এটি পরিচালক করেছেন, তার টার্গেট ভোক্তার কথা চিন্তা করে। ছবির শৈল্পিক মান এখানে পরাজিত হয়েছে বাণিজ্যিক চাওয়ার কাছে। আপনি যেটাকে স্বাভাবিক পুরুষতন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং বলেছেন এটি না দেখালেই বরং অস্বাভাবিক হতো বলে মনে করেন সেখানে পরীর কস্টিউম এর অস্বাভাবিকতা কীভাবে শিল্পের বিচারে জায়েজ হয় সেটি আমার বোধগম্য নয়।
পরীর বোরকা পরানো বা নিরাপদ দূরুত্বের শট- এসব প্রশ্ন পাসঙ্গিক নয়। কোথাও বোরকা পরানোর কথা বলা হয় নি। কিন্তু কোন শর্ট যখন নিতান্ত উদ্দেশ্যমূলক, অন্তত ক্যামেরার ব্যাকরণের দিক থেকে, তখন সেটি নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থেকে যায়। সেলিম অন্তত কিছু শর্টে 'পরিশীলত যৌনতা' পরিবেশন করতে চেয়েছেন তা অস্বীকার কোন উপায় নেই। এ পরিবেশন প্রক্রিয়ায় নারী 'অবজেক্ট'। স্বাভাবিকভাবেই এর ভোক্তা হিসেবে সেলিম কাদের টার্গেট করেছেন তা না বললেও চলে। আমি অন্য একটি প্রতি মন্তব্যে বলেছি যে, সেলিম এ পরিবেশনে খুব সফল। কারণ এ দৃশ্যগুলোর আবেদন ছবি ঘরের বাইরেও এসেছে। এমনকি এ ব্লগেও একটি পোস্টে সেদৃশ্যের কথা খুব রসালো ভাবে বর্ণিত হয়েছে।
আবারও বিনীতভাবে বলছি, গ্রামীন মেয়েরা যেভাবে শাড়ি পরে সেটি যদি স্বাভাবিকভাবে আসতে তাহলে এ বক্তব্য তোলার প্রশ্নই আসতো না। এমনকি যৌনতার পরিবশেন নিয়েও প্রশ্ন তুলতাম না যদি সেটি স্বাভাবিক সমতার সম্পর্ক কাঠামোর মধ্যে দিয়ে পরিবেশিত হতো। কিন্তু সেলিম যে যৌনতা পরিবেশন করে তার একমাত্র ভোক্তা পুরুষ।
না, আমি পরীর ফাঁসি নেয়াটা ছবির কাহিনীর পরিণতি হিসেবে অযৌক্তিক বলিনি। সম্ভবত আপনি আমার লেখার এসেন্সটা ধরতে পারেন নি। আমি বলেছি, পরী চরিত্র হিসেবে যুক্তিবাদী নন। এটি পুরুষতান্ত্রিক বিশ্বাস। মেয়েরা আবেগী হবে আর পুরুষ যুক্তিবাদী হবে। সুতরাং দু'টি কথা এক নয়।
মেয়েরা বেশি সংখ্যায় ফাসী নেয়। সেজন্য সেলিম ফাঁসির দৃশ্য দেখিযেছেন। আমার কাছে সেটি মনে হয়নি। পুরুষতান্ত্রিক ধারণা হচ্ছে মেয়েরা ত্যাগের আধার। প্রেমের পরীক্ষায় তাদের পাশ করতে হয় জীবন দিয়ে। কষ্ট সহ্য করে। এটি খুব গতানুগতিক পুরুষতান্ত্রিক মূল্যবোধ। যার রিপ্রোডাকশন সেলিম করেছেন খুব আন্তরিকভাবে।
একজন পরিচালকের কাজ শুধু পুরুষতন্ত্রকে তুলে ধরা নয়। তাকে চ্যালেঞ্জ করাও। সেটি মোটেও দেখা যায় নি। একটি চরিত্রের মধ্যেও না।
আপনি মডার্ন ওয়াল্ডের কালচার বলকে কী বুঝিয়েছেন তা আমার বোধগম্য নয়। সুতরাং এ বিষয়ে আপাত জবাব দেয়া আমার সাধ্যের বাইরে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৫৩| ২৪ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:০৪
ফাহমিদুল হক বলেছেন: "মিডলের আলোচনা অন্তত এই পোষ্টে করা ঠিক হবে না।"
শিমূল ছবিটি দেখে এবং শুভ্র সম্ভবত না দেখেই বলছেন যে 'মোল্লা বাড়ির বউ' ছবিটি বাজে।
দুর্ভাগ্যবশত আমি নিজেও 'মনপুরা' না দেখেই আলোচনায় অনুপ্রবেশ করেছি। তবে মোল্লা বাড়ি দেখেছি।
নাম শুনে পুরো ছবি নিয়ে আন্দাজ করা বিপজ্জনক হতে পারে। শহিদুল ইসলাম খোকনের একটা ছবি আছে 'পালাবি কোথায়'। বাংলা ছবি-না-দেখা মধ্যবিত্তকে আমি দেখেছি 'খাইছি তোরে', 'ধর' ইত্যাদি আর 'পালাবি কোথায়' ছবির নাম একসঙ্গে উচ্চারণ করতে -- যে কী নামের ছিরি, অশ্লীল ইত্যাদি। অথচ 'পালাবি কোথায়' একটা এন্টারটেইনিং, ক্লিন কমেডি এবং ঐ মধ্যবেত্তের প্রিয় স্টাররাই ওখানে অভিনয় করেছেন -- আফজাল, সুবর্ণা, ফরিদী, চম্পা প্রমুখ।
মোল্লাবাড়িও একটা ক্লিন কমেডি যদিও শেষটা একটু ট্র্যাজিক এবং অবশ্যই সুস্থ -- সুস্থ চলচ্চিত্র বলতে আমরা যা বুঝি সেই অর্থে। এর চিত্রনাট্যকার মাসুম রেজা, পরিচালক সালাহ উদ্দিন লাভলু, টিভির 'রঙের মানুষ' আর 'ভবের হাট' সিরিয়ালের জুটি এরা। এবং ছবিটা দর্শক টেনেছে। প্রধানত মধ্যবিত্ত দর্শকরাই দেখেছে এই ছবি।
তবে সত্যিই এটা হয়তো 'সবল' ছবি নয়, কাহিনী, চিত্রবিন্যাস, ঐ কস্টিউম সব অর্থে। কিন্তু এধরনের ছবি প্রচুর হলে আমি খুশি হই, কারণ তা দর্শক টানে, ইন্ডাস্ট্রি টিকে থাকে। এই মুহূর্তে শাকিব আর অপু ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে রেখেছে, কিন্তু যদি অনেক 'মনপুরা' ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে তবে তা একটি ম্যাচিউরড ইন্ডাস্ট্রিকে নির্দেশ করবে। একজন এফ আই মানিকের চাইতে একজন গিয়াসউদ্দিন সেলিম অনেক বেশি ম্যাচিউরড। বহির্বিশ্বে একটি ইন্ডাস্ট্রি ফিল্মই তখন অনেক সম্মান নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে।
তবে অনুমান করি মোল্লা বাড়ির চেয়ে মনপুরা বেশ খানিকটা ভালো ছবি হবে। কারণ লাভলুর চেয়ে সেলিম পরিচালক হিসেবে বেটার, তাদের টিভি ক্যারিয়ারই সেটা বলে দেয়।
মিডল সিনেমার আলোচনা এইসব বিচারে জরুরি।
৫৪| ২৪ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:০৬
ফাহমিদুল হক বলেছেন: শামীম, আপনি যে-দীর্ঘ প্রতি-মন্তব্য করেছেন, ছবিটি না দেখে সেই আলোচনায় আসলেই আগানো মুশকিল। যদি ছবিটি দেখা হয়, তবে একদিন আবার আলোচনা করবো।
৩০ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:১৭
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ঠিক আছে, ফাহমিদ ভাই.....................অপেক্ষায় থাকলাম অধীর আগ্রহে....
৫৫| ২৪ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৫৯
সালাহ্ উদ্দিন শুভ্র বলেছেন: ফাহমিদুল হক বলেছেন:
তবে সত্যিই এটা হয়তো 'সবল' ছবি নয়, কাহিনী, চিত্রবিন্যাস, ঐ কস্টিউম সব অর্থে। কিন্তু এধরনের ছবি প্রচুর হলে আমি খুশি হই, কারণ তা দর্শক টানে, ইন্ডাস্ট্রি টিকে থাকে।
অথচ 'পালাবি কোথায়' একটা এন্টারটেইনিং, ক্লিন কমেডি এবং ঐ মধ্যবেত্তের প্রিয় স্টাররাই ওখানে অভিনয় করেছেন -- আফজাল, সুবর্ণা, ফরিদী, চম্পা প্রমুখ।
তবে অনুমান করি মোল্লা বাড়ির চেয়ে মনপুরা বেশ খানিকটা ভালো ছবি হবে। কারণ লাভলুর চেয়ে সেলিম পরিচালক হিসেবে বেটার, তাদের টিভি ক্যারিয়ারই সেটা বলে দেয়
ওপরের মন্তব্যগুলো সম্পূর্ণই মধ্যবিত্তীয়। এটা নিয়ে এখানে আলাচনা অন্যদের মনোযোগ আকর্ষণ নাও করতে পারে। যে পর্ণোগ্রাফি যে দেখে তার নিজস্ব যুক্তি আছে-কিন্তু সেটা সমাজে যে ক্ষয় তৈরি করে তার প্রতিদান কে দিবে। যার মাথা ব্যথা নেই সবল কিছুর জন্যে তিনি নির্মলতায় আনন্দ পেতে পারেন-তাতে কোন কিছু তৈরি হয় না। ভেসে যাওয়া হয় কেবল। এই দেশে বাঙালী আছে ম্রো, বমরাও আছে। সমস্ত মিলিয়েই এদেশের সিনেমা। কোন সিনেমায় পোশাক ছোট আর কোন সিনেমায় তা যথার্থ এতেই সন্তুষ্টি নির্ধারণ করা কোন সংস্কৃতিকে কোন রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেয়। এখন যারা এক অপরের চাইতে ভালো পরিচালক তাদের হাত ধরে কারা বেড়ে উঠবে ভবিষ্যতের সিনেমা তৈরিতে।
আর তিনি যে বলেছেন---
শুভ্র সম্ভবত না দেখেই বলছেন যে 'মোল্লা বাড়ির বউ' ছবিটি বাজে।
আমি কোথায় বলেছি ছবিটি দেখিনি এবং বাজে বলেছি। এতো উষ্মা প্রকাশের কারণ বোঝা গেল না। এও হয়ত একটা প্রক্রিয়া আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার। হয়তো পালাবে কোথায়ের মতো। এই ছবিটারও অল্পকিছু অংশ আমার দেখা হয়েছে।
২৪ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৩৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: শুভ্র, আপনার জিজ্ঞাসার জবাব হয়তো ফাহমিদ ভাই দিবেন। কিন্তু তাঁর মন্তব্যগুলোকে স্রেফ মধ্যবিত্তীয় মেরুকরণে আমার খানিকটা আপত্তি আছে। তাঁকে কাছে থেকে চিনি বলে। মানে তাঁর লেখালেখির সাথে পরিচিত বলে। এটি হয়তো ঠিক যে, আপনি যে মধ্যবিত্ত ধ্যাণ ধারণার কথা বলেছেন, সেটি আমাদের সবার না হলেও অনেকের আছে। এটি সমাজকাঠামোর শক্তি এ অর্থে যে আমরা চাই বা না চাই সমাজ কাঠামো এর প্রবল চিন্তা-মতাদর্শ আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এটি অন্য আলোচনা। এতে মনোযোগ মনপুরা থেকে অন্যদিকে চলে যেতে পারে।
তবে আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস ফাহমিদ ভাই দীর্ঘদিন বাংলাচচ্চিত্র নিয়ে একাডেমিক জায়গা থেকে কাজ করছেন। এখন ফিল্ম স্ট্যাডি নিয়ে বাইরে পড়ছেন। এ পড়ালেখা-গবেষণার হাত ধরে তাঁর যে অভিজ্ঞতা তাকে একটি ফ্রেমে ফেলেছেন। তার মানে এ নয় যে, অন্য ফ্রেম-অন্য ডাইমেনশন নেই। এটি নিতান্ত আমার ব্যক্তিগত মতামত। ফাহমিদ ভাই হয়তো তার অবস্থানটি অন্যভাবে ব্যাখ্যা করবেন।
আপনাকে শুভেচ্ছা আবারও।
৫৬| ২৪ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:৩৩
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: লেখাটা খুব মন দিয়ে পড়লাম। ভীষন ভাল লেগেছে। লেখার গাথুনী খুবই শক্ত। ছবিটি আমি দেখিনি, কিন্তু পড়েই মনের পর্দায় যেন অর্ধেকটা দেখে ফেলেছি। ছবিটি দেখার প্রতি আগ্রহ খুবই তীব্র হয়েছে।
যে ভাল লেখে তার সমালোচনা থাকে। দু হাত ভরে লেখ ভাই .... দুহাত ভরে লেখ.................. পরবর্তী লেখার আশায় থাকলাম চাতক পাখির মতো ...........................
৩০ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৫২
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: হা হা
লায়লা আপা কেমন আছেন??
ছবিটি দেখবেন। তারপর আলোচনার দাওয়াত থাকলো।
৫৭| ২৪ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:৪৪
আমিই স্রোত বলেছেন: ভাইজান,
আমনের দেহি উপরের লেভেলে বিরাট কানেকশান!
মুখ ফসকায়া একটা কমেন্ট না হয় লেইখাই ফালাইচি।
হের লাইগা আমারে এক্কেরে জেনারেল/সাদারণ কইর্যা দিলেন।
আমনেরে কসটো দিয়া থাকলে আমি খুবই লইজ্জিত।
আসলে এত্তো ভালো একটা সিনেমা।
মানুষেও দেকতেছে। আর হেইডার মইদ্যেও কেউ যখন আজাইরা জেন্ডার বিষয়ক খুত বিচরায়া বাহির করে। মেজাজ কতখখন ঠিক রাখন যায়।
যাই হোক, শেষ বিচারে আমি ছড়ি কইতাচি।
আমারে আবার আমনে পিলিজ সেভ/নিরাপদ ব্লগার কইরা দেন!!
আমি আর জীবনেও আমনের লেখায় কমেনট তো করুমই না।
ভুলেও ডুকুম না।
আমনের তনে ১০০ লিংক দূরে থাকুম।
২৫ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:১৮
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: খুব বিনয়ের সাথে বলি, আপনার এবারের ধারণাটিও ভুল। ঐ রকম কানেকশনে আমার আস্থা নেই। আপনি যে রকম কানেকশনের কথা বলেছেন। সাইন এর ব্যবস্থাপনার সাথে যারা আছেন তাদের কাউকেই আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। আলাপও নেই। অন্তত সামনাসামনি। সুতরাং এটি আপনার ভূল ধারণা।
..............................................................................................
আর শব্দ প্রয়োগের কথা বলি। এটি মানুষ তার বেড়ে উঠার মধ্যে দিয়ে আত্মস্থ করে। সুতরাং আপনি যে নেতিবাচক শব্দগুলো ব্যবহার করেছেন তার দায়দায়িত্ব আপনার। আমি শুধু বলেছি, পোস্টের কোথায় আমি ভুল করেছি, কোন বিষয়গুলোর সাথে আপনি একমত না সেগুলো নিয়ে যদি আপনার আগ্রহ থাকে তবে স্বাগতম। আমার মতের সাথে দ্বিমত করে এখানে অনেক দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আমি সব আলোচনাগুলোকে সাদরে গ্রহণ করেছি।
.............................................................................................
কারও কাছে যদি জেন্ডার ইস্যুটি আজাইরা মনে হয় আমার তো কিছু বলার নেই। এটি তার ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা। প্রতিটি সামাজিক সম্পর্কের একটি রাজনীতি আছে। আছে জেন্ডার প্রেক্ষিত। সেটি ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক সেটি বিশ্লেষণের বিষয়। সুতরাং যে উপাদানগুলো অনিবার্যভাবে আসে সেগুলোকে আজাইরা বলার মধ্যেও আমি সমস্যা দেখি।
মেজাজ? আমার তো ধারণা মানুষই তার মেজাজ ঠিক রাখতে পারে। আর পারে বলে মানুষ ইতিহাস রচনা করে। সৃজনশীল। অন্য প্রাণীর সেটি নেই। তবু আপনি আমার জন্য মেজাজ ঠিক রাখতে পারেন নাই। আমার দু:খ প্রকাশ করা উচিত তার জন্য।
আমার লেখায় প্রাসঙ্গিক কমেন্ট (সহমত অথবা দ্বিমত) করার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এমন কিছু সমর্থন যোগ্য নয়, যেটি আলোচনার পরিবেশটি নষ্ট করে দেয়।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৫৮| ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১২:১৯
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ভালো বিপদ হলো।
শিমূল বলেছেন, ছবির চিত্রনাট্য, স্ক্রিন প্লে, কস্টিউম এতো বাজে যে এর পরে এমন নাম ফাটানো সিনেমা দেখতে হলে যাইতে সায় পাইনা।
শুভ্র বলেছেন, আলাচনায় মোল্লা বাড়ির বউ এর উদাহরণ এসেছে। এই সিনেমার নাম দেখেই মনে হলো-যাকে আমরা সুস্থ্য বলছি তা সবল কি-না।
আমি বলেছি, শিমূল ছবিটি দেখে এবং শুভ্র সম্ভবত না দেখেই বলছেন যে 'মোল্লা বাড়ির বউ' ছবিটি বাজে।
শিমূল সরাসরি বাজে বলেছেন, আর শুভ্র ছবিটি সম্পর্কে বক্রোক্তি করেছেন। আমি দুজনের নাম একসঙ্গে নেওয়ায় 'বাজে' কথাটা গড়পড়তা বলেছি। ঠিক আছে মানছি দুজনকে একসঙ্গে এক কথায় মূল্যায়ন করা ঠিক হয়নি। কিন্তু শুভ্রর কথায় এরকমও ভাবার অবকাশ আছে যে তিনি ছবিটি দেখেননি। এই দেখা না দেখা অস্পষ্ট বলেই আমি 'সম্ভবত' শব্দটাও রেখেছিলাম।
আমি যা বলেছি তা মধ্যবিত্তীয়। কিন্তু মধ্যবিত্তীয় মানেই কি সমস্যাজনক? আদিবাসীদের নিয়ে ছবি হতেই পারে, কিন্তু চলচ্চিত্র শিল্প, মনপুরা, পালাবি কোথায় মিলে যে ডিসকোর্স তা অ-আদিবাসীয়। সেখানে আদিবাসী-ভাবনাকে প্রবিষ্ট করাই কী প্রকারে?
কোনো দেশের চলচ্চিত্র-শিল্প কেবল আর্ট বা উন্নত রুচির সিনেমা নিয়ে টিকতে পারেনা। সিনেমা একটা কালচারাল ইন্সটিটিউশন, সিনেমা দেখা একটা সংস্কৃতি, জনসংস্কৃতি। সেই ইন্সটিউশনে, জনসংষ্কৃতিতে সূর্যদীঘল বাড়ি যেমন একটা অবস্থান নিয়ে থাকবে, সেখানে পালাবি কোথায় বা শাকিব খানের ছবিরও একটা অবস্থান থাকবে।
আমার আপনার ব্যক্তিরুচিতে সব ছবি উৎরালো কিনা, সেইটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। আমি সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে, তার জীবনদৃষ্টিতে অনেক সমস্যা দেখি। এছাড়া বিশ্বচলচ্চিত্রে সত্যজিতের অবস্থান খুঁজতে অনেক কসরৎ করতে হয়। কিন্তু বিশ্ব চলচ্চিত্রের দিকপাল বার্গম্যান-গদার থেকে হিচকক-স্করসিস-কুব্রিক-এর ছবিতেও মতাদর্শিক অনেক সমস্যা দেখি।
শুভ্র, খেয়াল করেন, আমি সেই জায়গা থেকে আলাপ করছিলাম না।
৫৯| ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১২:৩৮
সালাহ্ উদ্দিন শুভ্র বলেছেন: ফাহমিদুল হক যা বললেন তারপর আসলে আলোচনা এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হয়। ব্যাক্তিগত অভিরুচির জায়গা থেকে আলোচনা করিনি। আমি বলতে চাচ্ছি সিনেমা শিল্পমাধ্যম। এবং এর দায়বদ্ধতা আছে দেশ কালে এবং মহাকালে। এই বিচার ভঙ্গী যেমন জরুরি-তেমনি ঢাকা শহরে এক ঝলক বাতাসের দামও আছে কতোজনের কাছে এই অভ্যস্ততাকে চিহ্নিত করাও জরুরি।
আবার প্রবিষ্ট করানোর বিষয়ে জোর করা অনুচিত যেমন তেমনি অভাবটাও দেখিয়ে দেয়া জরুরি।
সত্যজিতের ভুল সফলতা যদি আলাপ করতে চান তাহলেও আগ্রহী আছি।
কিন্তু মনপুরা-মধ্যবিত্তের কসমেটিক্স সংস্কৃতি। এ থেকে কোন প্রাপ্তিই নেই। এমনকি ইন্ডাস্ট্রিও রক্ষা হবে না এতে।
৬০| ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১:০৯
আশফাক সফল বলেছেন: সহমত
২৮ শে মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ........................
কিন্তু কীসের সাথে সহমত প্রকাশ করলেন বুঝতে পারলাম না। মন্তব্য, প্রতিমন্তব্য অথবা পোস্টের সাথে??????
৬১| ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ১:১৮
খারেজি বলেছেন: লেখাটা চমৎকার।
চলচ্চিত্র নিয়ে এ ধরনের আলোচনা কমই হয়্
আপনার কি মনে হয় চলচ্চিত্রে বীভৎসতা শুধু পর্দাতেই না, প্রযোজক-পরিচালক- নায়ক- নায়িকা বাছাই প্রক্রিয়া থেকেই শুরু হয়?
এবং এ প্রসঙ্গটি প্রায় আড়ালে থাকে। ভিজু্য্যাল মিডিয়াম একটা টেরিবলি পুরুষতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।
২৭ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ১০:২৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সাংবাদিকতার সুবাধে কিছু দিন বিনোদন পাতায়ও কাজ করেছি। নিয়মিত এফডিসিতে যাওয়া হতো। তখনকার কিছু ঘটনা কাছ-দূর থেকে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ হয়েছিল। তার ওপর ভিত্তি করে বলতে পারি ওখানে কীভাবে এবিউসিভ প্রক্রিয়াটি চালু আছে। চলচ্চিত্রে যাদের তথাকথিত 'একস্ট্রা' (এ নামে আমার ব্যক্তিগতভাবে ঘোর আপত্তি আছে) বলা হয় তাদের সাথে স্পটবয়রা পর্যন্ত কতটা নিপীড়নমূলক আচরণ করেন, কমেন্স করেন, সে ভেতরের কাহিনী নাইবা বললাম। সেটি এ পোস্টের আলোচনার বিষয় না হওয়াতে এগুলাম না।
আমি শুধু মধ্যবিত্তের কাছে খুব গ্রহণযোগ্য ছবিতে কীভাবে পুরুষতন্ত্র পরিবেশিত হয়, এবং সেটি মুনাফা অর্জনের একটি ফিল্মী উপায়ও তা ধরবার চেষ্টা করেছি। সীমিত সাধ্যের মধ্যে।
কষ্টকরে পড়বার জন্য এবং মন্তব্য করবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
৬২| ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:৪৪
জামাল ভাস্কর বলেছেন: একজন এফ আই মানিকের চাইতে একজন গিয়াসউদ্দিন সেলিম অনেক বেশি ম্যাচিউর...
তবে অনুমান করি মোল্লা বাড়ির চেয়ে মনপুরা বেশ খানিকটা ভালো ছবি হবে। কারণ লাভলুর চেয়ে সেলিম পরিচালক হিসেবে বেটার, তাদের টিভি ক্যারিয়ারই সেটা বলে দেয়...
ফাহমিদুল হকের মতোন একজন একাডেমিশিয়ানের লেখায় এইরম মন্তব্য হাস্যকর লাগে। এফ আই মানিকের চাইতে গি. সেলিম কী অর্থে ম্যাচিওর? টিভি ক্যারিয়ার দেইখা যদি ভালোত্ব নির্ধারন করতে হয় তাইলে লাভলু'রে নামাইয়া সেলিমরে উঠানের প্রক্রিয়া বা মানদন্ডটা কি?
এইবার পোস্ট নিয়া কই...
গিয়াসউদ্দিন সেলিমরে আমি একজন পুরুষতন্ত্র বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গী সম্পন্ন মানুষ হিসাবেও উপস্থিত হইতে দেখি নাই কোন খানে। তিনি মানবিকতাসম্পন্ন পুরুষ...তার ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনে নারীর অবমাননা বিরোধী বক্তব্যও আসে...কিন্তু বেসিক্যালি পুরুষতান্ত্রিকতারে তা কখনোই উৎরাইয়া যায় না। এইটারে আমি অপরাধ হিসাবেও দেখি না। নন একটিভিস্ট একজন মানুষের কাছ থেইকা সামাজিক মূল্যবোধ-রুচী-সংস্কৃতির বাইরে কিছু আশা করাটা বরং বাতুলতা মনে হয় আমার কাছে।
মনপুরা সিনেমাটা তৈরী করাতে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য আছে। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য মানে দর্শকের উপস্থিতি...যতো বেশী দর্শক ততো বেশী টাকা...কেবল সিনেপ্লেক্স না এই ছবি মহল্লার সিনেমা হলেও মুক্তি দেওনের পরিকল্পনা শুরু থেইকাই ছিলো জানি। আর তাই এই সিনেমার নারী অনেক নায়িকা'ই হয়...যেই নায়িকা দর্শকরে চোখে আঙ্গুল দিয়া রূপ দেখাইতে জানে, যাতে এক্কেরেই রুচী'র নিরীখে যৌনতা লালিত হয়।
মুনিরউদ্দিন শামীমের চেষ্টাটা ভালো লাগছে...তয় বিদ্যমান সামাজিক বাস্তবতায় তিনি নিজেও নিশ্চয়ই গি. সেলিমের নিকট থেইকা এর বেশি কিছু প্রত্যাশা করেন নাই...নাকি মধ্যবিত্ত খানিকটা প্রতিবাদী এইরম ধইরা নিছিলেন?
২৫ শে মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:২৫
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ে দীর্ঘ মন্তব্য করবার জন্য। আপনার মন্তব্য চলমান আলোচনাকেটাকেই আরেকটু এগিয়ে দিল।
.......................................................................................
' সিনেমার নারী অনেক নায়িকা'ই হয়...যেই নায়িকা দর্শকরে চোখে আঙ্গুল দিয়া রূপ দেখাইতে জানে, যাতে এক্কেরেই রুচী'র নিরীখে যৌনতা লালিত হয়' এ সত্যটাই অনেকেই স্বীকার করতে নারাজ। আমি সরাসরি যৌনতার কথা বলিনি। তারপরও অনেকে ভীষণ নাখোশ হয়েছেন।
.............................................................................................
আমার চেষ্টাটা ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগলো। আপনি ঠিকই ধরেছেন আমি গি; সেলিমের কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করিনি। এবং মধ্যবিত্ত খানিকটা প্রতিবাদী সে চিন্তাও করি নাই। অন্তত এ ক্ষেত্রে। আর বাকি বিষয়টা আপনি বলেদিয়েছেন 'কিন্তু বেসিক্যালি পুরুষতান্ত্রিকতারে তা কখনোই উৎরাইয়া যায় না' এর মাধ্যমে।
কৃতজ্ঞতা আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য।
৬৩| ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:৪৬
ফাহমিদুল হক বলেছেন: সিনেমা কেবলই আর্ট অর্থে শিল্পমাধ্যম কখনোই ছিলনা। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি অর্থে শিল্প প্রথম থেকেই।
লুমিয়ের ব্রাদার্সের তোলা ওয়ান-রিলারগুলো মানুষ টিকেট কেটেই দেখেছিল। ১৯১০-এর দশকে গ্রিফিথের ছবির মাধ্যমে আমেরিকায় ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়িয়ে যায়।
ভারতের প্রথম চলচ্চিত্রকার হীরালাল সেন নিজেই একটা প্রোডিউসার কোম্পানি খুলে বসেন।
সিনেমা যেহেতু প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষযজ্ঞ কাণ্ড তাই প্রথম থেকেই এখানে পুঁজির লগ্নী হয়ে এসেছে। সেই অর্থে এটা প্রথমত ইন্ডাস্ট্রি। আর্টের ধারণা পরে যুক্ত হয়েছে। যে-ছবি দাবি করছে বাণিজ্যিক তাকে আপনি আর্টের ফিতায় মাপবেন তা হয়না। সেটা কোয়ালিটি বাণিজ্যিক ছবি কিনা তা দেখেন। বলিউডের ছবিগুলো এখন কোয়ালিট ইন্ডাস্ট্রি প্রডাকশন যেমন, কন্টেন্ট এবং ফর্ম উভয় অর্থে।
যখন ঋত্বিকের ছবি দেখি তখন রাজনৈতিক চেতনার মানদণ্ডে লম্বু সত্যজিৎকে বামন মনে হয়। কন্টেন্ট ভারতীয়, কিন্তু ফর্মে পুরোপুরি পশ্চিমা। ঋত্বিক কন্টেন্ট-এ ভারতীয়, বলা যায় বাঙালি, কিন্তু চলচ্চিত্র পুরোপুরি পশ্চিমা একটা মাধ্যম হবার পরেও যতটা পারা যায় ভারতীয় থাকার চেষ্টা করেছেন।
৩১ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:১৮
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: ফাহমিদ ভাই...........একটি সিনেমা মানে অনেক টাকার লগ্নী। এটি অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। এ অর্থে এটি অবশ্যই ইন্ডাস্ট্রি। তবে এর হয়তো একটি নান্দনিক অবয়বও দেখতে চাইবে কেউ কেউ। আমি দু'টোর কোন ধারণাকে বাতিল করার পক্ষে নই। এখন সিনেমাকে যদি একটি নান্দনিক ফর্ম হিসেবে ধরি, তাহলে সেখানেও নারী-পুরুষের সম্পর্ক এবং ক্ষমতা কাঠামোর একটি প্রতিফলন আছে। এবং থাকাটাই স্বাভাবিক। এ সম্পর্ক কাঠামোর মূল ট্রেন্ডটি কী? এ পর্যব্ক্ষেণ অবশ্যই আপনার আছে। সেটির বিশ্লেষণ হয়তো এ পোস্ট এর সাথে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হবে।
দ্বিতীয়ত সিনেমা অবশ্যই শিল্প ইন্ডাস্ট্রি অর্থে। পুঁজি কিন্তু কতগুলো পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে বিকশিত হয়। আবার এখানে যেহেতু লগ্নির প্রশ্ন আছে সেহেতু অবশ্যই মুনাফার প্রশ্নও থাকবে। এখন পুঁজির আদিম সঞ্চায়ন এবং বেশি বেশি মুনাফা তৈরির কৌশল হিসেবে প্রযোজক-পরিচালক নারীর শরীরকে কতখানি অবজেক্টিফাই করছেন, এবং বাণিজ্যিক ছবি বলে তাকে হালাল করার চেষ্টা করছেন সে প্রশ্নগুলো বিবেচনায় এনে আলোচনাটা হয়তো আরও এগুত পারে খুব প্রাসঙ্গিকভাবে। আর ছবির গল্পের মধ্য দিয়ে যে ক্ষমতা কাঠামোটির প্রতিফলন ঘটে সেখানে নারীর অবস্থা ও অবস্থান কী জেন্ডার মাত্রিকতার দিক থেকে আমার কাছে সব সময় গুরুত্বপূর্ণ।
.......................................................................................
আপনার ওপরের মন্তব্যের সাথে দ্বিমত করার কোন কারণ নেই।
আপনাকে ধন্যবাদ।
৬৪| ২৫ শে মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:৪৭
ফাহমিদুল হক বলেছেন: সত্যজিৎ সম্পর্কে এবার আপনার কথা শুনি, শুভ্র।
৬৫| ২৬ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৮
ফাহমিদুল হক বলেছেন: @জামাল ভাস্কর, আপনার কাছে হাস্যকর মনে হলেও সেলিমের সঙ্গে লাভলুর তুলনা আর সেলিমের সঙ্গে এফ আই মানিকের তুলনা আমি করেছি তাদের নির্মিত টেক্সট দেখে। টেক্সট তো আর কেবল গল্প না তাতে কন্টেন্ট আছে, ফর্ম আছে, জীবনদৃষ্টি আছে, মতাদর্শ আছে।
আমি লাভলু, সেলিম, এফ আই মানিকের প্রডাকশন দেখেছি। সিনেমাটিক ফর্ম (টিভি নাটককে অডিওভিস্যুয়াল একটা প্রডাকশন এবং সেই অর্থে সিনেমাটিক ফর্ম যদি ধরি), জীবনদৃষ্টি, গল্প বলার ক্ষমতার তুলনা এজন্য আমি করতে পারি। সবার না হলেও এফ আই মানিকের 'বিদ্রোহী সালাউদ্দিন' (২০০৪) ছবির বিস্তারিত বিশ্লেষণ আমি করেছি আমাদের বই 'বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প: সংকটে জনসংস্কৃতি' (শ্রাবণ, ২০০৮) বইতে। সেখানে দেখা যাবে এফ আই মানিকের কাহিনী ও নির্মাণশৈলী কতটা ইমম্যাচিউরড। আজকের সুস্থ ছবির ভ্যানগার্ড এফ আই মানিকের সেই ছবিতে তিনটি পর্নোগ্রাফিক দৃশ্য ছিল। বিদেশে থাকার কারণে মানিক-শাকিব-অপু ত্রয়ীর সাম্প্রতিক ছবিগুলো আমার দেখা নাই। তাই তার উত্তরণ কতখানি বলতে পারছি না।
লাভলুর রঙের মানুষ, ভবের হাট সিরিয়াল এবং মোল্লা বাড়ির বউ দেখেছি এবং তিনি গ্রামবাংলার কনটেক্সটে কমেডি টেক্সট নির্মাণ করতে চান। সেই কমেডি কেবলই কমেডি, চ্যাপলিনীয় অভিঘাত তো তাতে নেই। অথচ সেলিম সবসময় সিরিয়াস বিষয় নিয়েই কাজ করতে চান।
৬৬| ২৮ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১০
ওমর হাসান আল জাহিদ বলেছেন: আমি গতকালই মনপুরা সিনেমাটি দেখেছি।
আজ আপনার এই লেখাটি পড়লাম। আমি খুবই অবাক হয়েছি আপনার বিশ্লেষণী ক্ষমতা দেখে।
লৈঙ্গিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আপনার প্রায় সব বক্তব্যের সাথেই একমত। কিন্তু এটি মনে রাখতে হবে- সিনেমাটি তৈরী করা হয়েছে প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থাকে মাথায় রেখেই। সিনেমার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে- প্রচলিত সমাজকে ফুটিয়ে তোলা।
০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ২:২৭
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: প্রচলিত সমাজের অসংগতি-সংগতিগুলোকে ফুটিয়ে তোলা অবশ্যই কাজ। কিন্তু জায়েজ করা নয়। প্রশ্ন আসতে পারে কীভাবে জায়েজ হলো। ঐযে মৌনতা সম্মতির লক্ষণ। সেদিন বিপাশার লিখিত একটি নাটক দেখছিলাম। পুরো নাটকটি দেখে মনে হতে পারে ছবিটিতে নারীর বঞ্চনা ও অবহেলার সামাজিক এবং ঐতিহাসিক প্রক্রিয়াগুলো বিবৃত করছে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে একটি মাত্র সংলাপ দিয়ে বিপাশা গোটা প্রক্রিয়াটাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। প্রতিবাদের জায়গাটা তৈরি করে দিয়েছেন। এবং এটি করতে গিয়ে কিন্তু শিল্পের সাথে আপোষ করেছেন বলে মনে হয়নি। আমি কিন্তু সেলিমের ক্ষেত্রে সেখানে আপত্তি করেছি। অন্য কোথাও নয়।
পড়বার জন্য, মন্তব্য করবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৬৭| ২৯ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৬
কিসলু বলেছেন: আপনার বিশ্লেষন পড়লাম । দরিদ্র এলাকায় নায়িকার কস্টিউম নিয়ে আপনার প্রশ্নটা ঠিক আছে । মনপুরা ছবির প্রতি আপনার একটি অভিযোগ , পরিচালক অহেতুক নায়িকার শরীর প্রদর্শনী করে দর্শক টানতে চেয়েছে । মনপুরা ছবিটা দেখিনি , তাই বুঝতে পারছিনা , কতটুকু অপ্রাসঙ্গিকভাবে নায়িকার শরীর দেখানো হয়েছে । বাংলাদেশী ছবি খুব একটা দেখা হয়না , বাংলাদেশী ছবির প্রতি অভিযোগ শুনা যায় , প্রায় সব বাংলাদেশী ছবিতেই নায়িকার কোমর দোলানো নাচের দৃশ্য থাকে , দর্শক টানার জন্য । বাংলা ছবির দর্শকরা হয়ত এধরনের দৃশ্য দেখতে পছন্দ করে । তাই শুধু পরিচালককে দোষ দিতে চাইনা ।
বিদেশী (ইংরেজি/হিন্দি/এমনকি কলকাতা বাংলা) জনপ্রিয় ছবিতে নায়িকার শরীর, চুম্বন ও যৌনতার দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত । তখন আমাদেরকে কোন অভিযোগ করতে দেখা যায় না । সেসব ছবিতে পুরুষতান্ত্রিক ভুতও কেউ খুজে পান না । এখন প্রশ্ন হতে পারে - বাংলাদেশের বাংলা ছবিতে এই ধরনের দৃশ্য দেখতে আমাদের আপত্তি কেন ? অথবা বাংলাদেশের বাংলা ছবিতে এই ধরনের দৃশ্য দেখতে আমরা কবে অভ্যস্ত হবো ? আরো একশো বছর পরে ?
০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ২:৪০
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: জনাব কিসলু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। কষ্ট করে পড়বার জন্য এবং মন্তব্য করবার জন্য।
আমার মনে হয় আমি আমার মূল জায়গাটায় আপনাকে নিতে ব্যর্থ হয়েছি। পুরুষতন্ত্র শুধু নায়িকার শরীর দেখানো বা না দেখানোর বিষয় নয়, তার চাইতেও এর শেকড় গভীরে। যেটি আমি বলবারও চেষ্টা করেছি। পুরুষতন্ত্রকে বুঝতে হবে প্রকাশিত ক্ষমতাকাঠামোর মধ্য দিয়ে। শরীরকে ভোগ্যকরে উপস্থাপন হয়তো একটি দিক। একমাত্র দিক নয়।
দর্শক দেখতে চায় আর পরিচালক দেখান। এ দেখা এবং দেখির ব্যকারণটা তৈরি করতে হয়। ভিজুয়্যাল যৌনতা এখন বড় ইন্ডাস্ট্রি। মুনাফা আসে। পুজির বিকাশের জন্য সুতরাং পুরুষতন্ত্রও দরকার। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইংরেজি ছবিতে আপনি কেন পুরুষতন্ত্রের ভুত দেখতে পান না? আমি কি ধরে নেব ওখানে পুরুষতন্ত্র নেই। অবশ্যই না। আবারও বলি যৌনতার দৃশ্যায়ন নিয়ে আমি যতটা আমি প্রশ্ন তুলেছি তার চেয়ে আমার কাছে বেশি প্রশ্ন হচ্ছে সে দৃশ্যায়নে কে ভোক্তা, কে পণ্য এবং প্রকাশিত ক্ষমতা কাঠামোটি কী?
আপনাকে বলি, ছবির নায়িকা যদি বোরকা পরেন তাহলেকি সেছবিটি পুরুষতন্ত্র মুক্ত হয়ে যাবে? অবশ্যই না। আপনার আলোচনা বা মনোযোগ একটি জায়গায় গিয়ে কেন্দ্রীভূত হয়ে যাবার কারণে সম্ভবত এ রকম ব্যাখ্যাটি এসেছে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৬৮| ০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৩
সুশান্তু সরকার বলেছেন:
অসধারন, প্রাসঙ্গিক এবং যৌক্তিক লেখা । ভালো লেগেছে বিবেচনা বোধ; দুইটি কারণে ১. বর্তমান সময়ে ভালো চলচিত্র হিসেবে মূল্যায়ণ
২. শিল্পের সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন ( জেন্ডার আসপেক্টস)। পরিচালকের মেধা নিয়ে কেউ সংশয় প্রকাশ করেনি তবে বোধের ক্ষেত্রে প্রশ্ন আছে; নারীকে পণ্য হিসেবে দেখার সামাজকি মনোবৃত্তির উর্দ্ধে তিনি উঠতে পারেননি । প্রথাগত পুরুষের মত এক্ষেত্রে তিনি অনেকখানি চতুর । তবে আমরা প্রত্যাশা করি শিল্পের সৃজনশীল বিনোদনের পাশাপাশি সমাজিক দায়বদ্ধতাও থাকবে ।
০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৩:০৮
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: হা হা
সুশান্ত এত কমকথায় এত বেশি কথা কীভাবে প্রকাশ করলেন???
লেখার কোন দিকগুলোর সাথে আপনি একমত না সেগুলো বললে আরও ভাল লাগতো। আলোচনার হয়তো অন্য ডাইমেনশন বেরিয়ে আসতো.............................
আপনাকে ধন্যবাদ।
৬৯| ০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৩:৪৮
দ্বিতীয়নাম বলেছেন: কোন পুরুষই নিজে পুরুষতান্ত্রিকতা থেকে মুক্ত নয়; অবচেতনে, গোপনে তা উপভোগও করে প্রায় সবাই। তবে নিজেকে অগ্রসর হিসাবে (বিশেষ করে নারী মহলে) বিজ্ঞাপিত করা খায়েসে অন্য পুরুষ/পুরুষদলের পুরুষতান্ত্রিকতা উন্মোচন করার প্রয়াস তার মাঝে সব সময় দেখা যায়। এইটারে পুরুষের পুরুষোত্তম হবার বাসনার ইদুর দৌড়ও বলা যায়।
দুঃখিত অপ্রাসংগিক মন্তব্যের জন্য।
০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৭
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: জ্বী, আপনার সাথে আমার কোন দ্বিমত নেই যে, কোন পুরুষই পুরুষতান্ত্রিকতা থেকে মুক্ত নয়। আরেকটু বাড়িয়ে বলি, নারীও কিন্তু পুরুষতান্ত্রিকতা থেকে মুক্ত নয়। কিন্ত কেন না সেটি আপনি ব্যাখ্যা করেন নি। করলে ভাল হতো। মূলপোস্টের সাথে এটি পুরোপুরি প্রাসঙ্গিক না হলেও আমি অপ্রসাঙ্গিক মনে করি না এ জন্য যে, পোস্টটিতে পুরুষতন্ত্র নিয়ে অল্পবিস্তর আলোচনা এসেছে।
.....................................................................................
আপনার দ্বিতীয় বক্তব্যে আমার খানিকটা আপত্তি করার কারণ আছে। একটি মাত্র মেরুকরণের কারণে। হতে পারে আপনার অভিজ্ঞতা এমন। কিন্তু ভিন্ন অভিজ্ঞতা যে, থাকতে পারে তাকে সরাসরি বাতিল করে দেয়াটা কেন যেন উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়।
আপনি মোটেই অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য করেন নি। আমারতো মনে হয় খুব সচেতন জায়গা থেকে আপনি বলতে চেয়েছেন এবং অবস্থানটাও পরিস্কার করেছেন। কিন্তু এ অবস্থানের কারণগুলো ব্যাখ্যা করলে আমাদের জন্য/ অন্তত আমার জন্য ভাল হতো। পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলাটা আপনার কাছে কেন শুধু পুরুষের পুরুষোত্তম হওয়া মনে হলো সে সম্পর্কে নিশ্চই অনেক যুক্তি-ব্যাখ্যা আছে।
আমার নিজের বিশ্বাস যারা পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলেন, বা বলবার চেষ্টা করেন তারা পুরুষতন্ত্র মুক্ত তেমনটি নয়। একটি প্রবল সামাজিক-রাজনৈতিক মতাদর্শ থেকে মুক্ত হওয়া এত সহজও নয়। কিন্তু প্রচেষ্টাকে আমি সব সময় অভিনন্দন জানাই। সেলুট করি।
আপনাকে ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।
৭০| ০২ রা এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২৪
আমড়া কাঠের ঢেকি বলেছেন: ভালা পাইলাম +++
০৭ ই এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৩:৫০
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আপনেরে একটা বড় ধন্যবাদ..........................বালা পাওনের জন্য। আর কষ্টকরে পড়বার জন্য।
৭১| ২০ শে এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ২:৫২
নুসরাত জাহান যুথি বলেছেন: আমি স্টার সিনেপ্লক্সে মুভিটি দেখেছি। শুরুটা চমৎকার হলেও মাঝখানে এসে যেন থৈ হারিয়ে ফেলল। তখন কাহিনী স্লো হয়ে গেল আর বেশ বোরিংও লাগল। ফিনিশিংটাও সুন্দর হতে পারত। মুভিটি খুব চমৎকার, সন্দেহ নেই, কিন্তু আগে থেকে অনেক প্রচারনার কারনে আর সুন্দর গানগুলো আগে থেকেই শোনার কারনে হয়ত এক্সপেক্টেশন বেশি ছিল। সেই বেশি এক্সপেক্টেশনটুকু মিটেনি। তারপরও আমাদের দেশের আর দশটা মুভির সাথে তুলনা করলে অনেক ভাল মুভি।
২১ শে এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ২:২৯
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: আমার কাছে ছবির গল্পের চেয়ে ক্যামেরার কাজ বেশি ভাল লেগেছে। বাংলা সিনেমা যে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে সে বিচারে এ ছবিটিকে সাধুবাদ দিতে আপত্তি থাকবার কোন কারণ নেই। গানগুলোও ভাল লাগার মতো।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ..............................।
৭২| ১৪ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ৯:০৩
ঋফায রহমান বলেছেন: ..
২৯ শে অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৪:৩০
মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: কই কিছুইতো বললেন না...............?????
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৪২
সু্মিত বলেছেন: একমত না