নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আল্লাহ তাওয়ালা মানুষকে সৃষ্টির সেরাজীব হিসেবে সৃষ্টি করে নারী পুরুষে বিভক্ত করলেও কোন বৈষম্যমূলক শ্রেণীবিভাগ করেন নি। কিন্তু মানুষ সবচেয়ে মেধাবী প্রাণী হয়ে সৃজনশীলতার চর্চা না করে মানবিকতা বিসর্জন দিয়ে নিজেদের মধ্যে নানা শ্রেণীবিভাগ করে গড়ে তুলেছে বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থা। সাদা-কালো, ধনী-গরীব,ইতর-ভদ্র, উচু-নিচু, ছুত-অচ্ছুত ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত করে নিজেদের মেধা বিভক্ত করে নিজেদের পায়ে নিজরা কুড়াল মেরে গড়ে তুলেছে দ্বিধাবিভক্ত মনুষ্যত্ব হীন প্রাণী যাদের আচার আচরণ অনেক সময় পশুকে হার মানায়। তাইতো মানুষকে আচরণের দিক দিয়ে বিভক্ত করলে গরু, ছাগল,গাধা, কুকুর,বিড়াল, শকুন,হায়না,শিয়াল, বানর, বাঘ, সিংহ ইত্যাদি পশুর সাথে তুলনা করা হয়। তাইতো উত্তেজনা, রাগ বা প্রশংসায় মানুষকে ঐ সমস্ত পশুর নামে ডাকতে কেউ লজ্জিত হয় না।
আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে মানব সমাজ আজ নিম্ন শ্রেণী/নিম্নবিত্ত/গরীব, মধ্যবিত্ত ও উচ্চ বিত্ত/ধনী শ্রেণী এই তিন ভাগে বিভক্ত। শ্রেণীবিভাগের দিক দিয়ে যেমন মধ্যে আছে মধ্যবিত্ত তেমনি সমাজ ব্যবস্থার যাতকলে (বৃত্তাকার দুটি ভারী চাকতি) মধ্যে পিষ্ট মধ্যবিত্ত। এ যেন সার্থক নাম করন। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর আবার তিনটা ভাগ আছে নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত। সাধারণত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও চাকুরীজীবিরা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। আবহমান কালধরে যুগের বিবর্তনের ভিতরেও এদের কোন পরিবর্তন নাই এরা নিয়মের বেড়াজালে এমন ভাবে বাধা যেন বৃত্তের মধ্যে বন্ধী। বৃত্তের সীমারেখার বাইরে বা নিজেদের গন্ডি পেরিয়ে কোথাও যেতে পারবে না এ যেন অলিখিত নিয়ম। এদের আয় একটা নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে উঠানামা করে যে সীমা কখনও অতিক্রম করতে পারে না। সমাজ কাঠামো শক্ত হতে ধরে রাখে মধ্যবিত্ত, সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষা করে মধ্যবিত্ত, সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলে মধ্যবিত্ত, সরকারের ট্যাক্স সময়মতো সম্পূর্ণ রূপে পরিশোধ করে মধ্যবিত্ত কিন্তু প্রাপ্তির বেলা মধ্যবিত্ত শুন্য। প্রাকৃতিক দূর্যোগে ত্রাণ পায় নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্ত আল্লাহর অশেষ কৃপায় বেঁচে থাকেন, সরকারের রাস্তায় নিম্নবিত্ত টংঘর তুলে আশ্রয় নেয় আর ধনীরা গাড়ি চালায়। মধ্যবিত্তের প্রাপ্তি এখানেও নেই বললেই চলে। উচ্চবিত্ত ট্যাক্স ফাঁকি দিলেও সরকারী সুযোগসুবিধা পুরোপুরি ভোগ করে। আর্থিক টানাটানি থাকলে কাউকে বলতে না পারা শ্রেণী হচ্ছে মধ্যবিত্ত। ছেলে মেয়েদের সুশিক্ষিত করাসহ পরিবারের সকলের প্রতি দায়িত্বশীল করতে গিয়ে ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তা। নিম্নবিত্তের মতো বস্তিতে থাকতে পারবে না মধ্যবিত্ত কিন্তু আবাসিক ব্যয়সহ সমাজের সাথে তালমেলাতে আরও কত শত অর্থ দন্ড দিতে হয় তার কোন ইয়েত্তা নেই।
সামাজিক রীতিনীতির ক্ষেত্রে নিম্নশ্রেণী বা উচ্চশ্রেণী নিয়মকানুন না মানলে ক্ষতি নাই কিন্তু মধ্যবিত্তদের সবকিছুই মেনে চলতে হবে। একজন রিক্সা চালক বা দিনমজুর দুই তিনটি বিয়ে করলে সমস্যা নাই, উচ্চবিত্ত রক্ষিতা রাখুক, দুই তিনটা বিয়ে করুক সমস্যা নাই। শুধু মধ্যবিত্তদের কারও পান থেকে চুন খসলেই তঘলকী কান্ড ঘটে যাবে।
ধরুন কয়েকবছর আগে একজন প্রথম শ্রেণীর একজন সরকারি কর্মকর্তার মূলবেতন ছিল ১১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া বাবদ পেত ৬৬০০ টাকা। একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা যাকে উচ্চ মধ্যবিত্ত বলা যেতে পারে যিনি তথাকথিত সমাজ ব্যবস্থার সাথে তালমেলাতে গিয়ে বস্তিতে থাকতে পারবে না আবার ৬৬০০ টাকায় ঢাকার শহরের কোথায় বাড়ি ভাড়া পাবে তাই নিয়ে গবেষণা করতে হয়। বেতনের বাকি ১১০০০ টাকা + মেডিকেল ভাতা ১০০০ টাকা দিয়ে সংসার খরচ মিটিয়ে সামাজিকভাবে বেঁচে থাকা কতটা মানবেতর বা চ্যালেঞ্জিং তা বোঝার জন্য গবেষণা করতে হয় না। তারপরও মাথা সমুন্নত রেখে সমাজকাঠামো কিভাবে ধরে রেখেছেন মধ্যবিত্তরা তা আল্লাহ্ মালুম।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্ত আর টিকে থাকতে পারবে কি সেটাই এখন প্রশ্ন। সমাজের নিয়মকানুন মানতে গিয়ে So Called Society এর সাথে তাল মিলাতে গিয়ে কখন যে মধ্যবিত্ত শ্রেণী তাদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলেছে বা যে শক্তি দিয়ে সমাজটাকে আগলে রেখেছে তা হারিয়ে ঋণের জালে বা ক্রেডিট কার্ডের ফাঁদে বা সমাজ/পরিবারের প্রতি অতিরিক্ত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে নিজেই নীরবে শেষ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে।
এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের একটাই উপায় নিজেকে সৃষ্টিকর্তার নিকট আত্মসমর্পণ করা এবং সত্য কে গ্রহণ করা। আমি যা তাই প্রকাশ করা। সমাজের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে নিজেকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে প্রকাশ না করে সত্য প্রকাশ এবং নিজের অবস্থান অনুযায়ী নতুন সমাজ গড়ে তোলা। আমারা যদি নিম্নবিত্ত,মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের পাশাপাশি নিজেদের প্রকৃত অবস্থা অনুযায়ী আদর্শ শ্রেণী(নতুন সমাজ/আদর্শ সমাজ) গঠন করা হয় তবে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না এটা নিশ্চিত। AM
২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০৭
আহমেদ জী এস বলেছেন: রবিন.হুড,
মধ্যবিত্ত শ্রেনীর চিত্রায়ন সঠিক হয়েছে।
এরা আপনার বলা "যাতাকল"য়ের মাঝে বিভিন্ন আঙিকে সবসময়ই পিষ্ট হতেই থাকে। এ থেকে পরিত্রানের কোনও পথ নেই....
৩| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
আল্লাহ কি অনেক জ্ঞানী?
৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে হত দরিদ্র মানুষের চেয়ে মধ্যবিত্তের সংখ্যা অনেক বেশী।
৫| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভোর ৫:৪০
স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: শ্রেণীর এই চরম বৈষম্য দূর করতে যে কল্যানমুলক রাষ্ট্রের মতো সিস্টেম প্রবর্তন প্রয়োজন তার জন্যও দেশের জনগণ সচেতন এবং আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত আছে কি ? সম্পদশালীদের উপর অধিক কর আরোপ করে সুষম বন্টন প্রয়োজন তার জন্য আপনি কিছুটা স্বার্থ ত্যাগ করতে পারবেন কি ?
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: মধ্যবৃত্ত শ্রেনী কোন দিকে চলে যাবে বলে আপনার ধারনা?