নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Once I commit to something ... after\nthat I don’t even listen to myself

noman kingdom

noman kingdom › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাম্রাজ্যবাদ

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০৬

অনেকে আমাকে প্রশ্ন করে"নোমান ভাই
অাপনি সিরিয়ার সৈরশাসক বাশার আল
আসকে কেন সাপোর্ট করেন কেন?
আজ তাদের উদ্দেশ্য কিছু লিখলাম।
কিছুদিন আগে রাশিয়ারর প্রেসিডেন্ট
পুতিন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে
এসেছিলেন। থাকলেন সাত
ঘণ্টা। সিরিয়ায় পশ্চিমারা কী ভুল
করেছে, সেটা
লেকচার দিয়ে দুনিয়ার সামনে
দেখালেন। চিনিয়ে
দিলেন, আইএস আসলে মার্কিনি ঘাতক-
পুতুল। হুমকিও
দিলেন, টুইন টাওয়ার ধ্বংসের ‘আসল’
স্যাটেলাইট
ভিডিও দেখিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে
যুদ্ধের
জারিজুরি ফাঁস করে দেবেন। সাধের
‘আইএস’ ধ্বংসের
দর্শক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকল
না
পেন্টাগনের জেনারেলদের। ইসরায়েল
আর কী করবে?
আরও কিছু ফিলিস্তিনি বাড়ি ভাঙল,
কিছু প্রতিবাদী
হত্যা করল। জবাবে আরেকটা ইন্তিফাদার
ঘোষণা এল
গাজা থেকে।
ওবামার সামনে রইল কেবল আলোচনার
টেবিল। পুতিন
তাঁকে বলিয়ে ছাড়লেন, আইএস দমনে
মার্কিনিরা
রাশিয়ার সঙ্গে আছে। আর ইউরোপ?
নিজেদের তৈরি
করা ভূমধ্যসাগরীয় শরণার্থীদের ধাক্কা
সামলাতেই
তারা ব্যস্ত। যুদ্ধে জড়ানো মানে
ইউরোপীয় দুর্গের
দেয়ালে আরও শরণার্থীর ঢল। তুরস্কের
হঠাৎ সুলতান
এরদোয়ানের উসমানিয়া সাম্রাজ্য
প্রতিষ্ঠার
খোয়াবও খতম। ইয়েমেনের ঈদের
জামাতে বোমা
ফেলার তৃপ্তিতে ঢেকুর তুলতে গিয়ে
হেঁচকি উঠল
সৌদি বাদশাহরও। তাঁদের ছড়ানো
ওয়াহাবি-সালাফি
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রাশান
অ্যান্টিভাইরাস ইজ ইন
অ্যাকশন।
সিরিয়ায় রাশিয়ার উদ্দেশ্য কেবল
বাশার আল-
আসাদকে বাঁচানো না। আইএসকে দিয়ে
বৈরী সরকার
ও স্বাধীন সীমান্ত ধ্বংস করে
পশ্চিমারা যে নতুন
মধ্যপ্রাচ্য বানাতে চায়, তাতে রাশিয়া,
চীন ও
ইরানের ঘোরতর বিপদ। বিশ্বের
তেলভান্ডার পশ্চিমা
তেলকুবের কোম্পানিদের হাতে চলে
গেলে রুশ
অর্থনীতি ও চীনের উত্থান থামানো
যেতে পারে।
একদিকে ন্যাটো দিয়ে ঘেরাও হওয়া
অবস্থা,
অন্যদিকে রুশবিরোধী নতুন মধ্যপ্রাচ্য
রাশিয়াকে
থমকে দেবে। তাই ইউক্রেনের পর
দ্বিতীয়বারের
পশ্চিমাদের নাক কাটতেই হলো তাদের।
অন্যদিকে তুরস্ক চায় রাষ্ট্রহীন উত্তর
সিরিয়াকে নয়া
তুর্কি সালতানাতের অংশ করতে।
ভবিষ্যতে কাজে
লাগবে ভেবে লাখো সিরীয় উদ্বাস্তু
আশ্রয় দিয়ে
রেখেছে তারা। পাশাপাশি দক্ষিণ
তুরস্কে মার্কিন
ঘাঁটিও আরও বড় হয়েছে, ন্যাটোর মদদ
তো আছেই। এমন
সময়ে এরদোয়ানের বাড়া ভাতে ছাই
দিল রুশ বোমারু
বিমান। পরপর তিনবার তুর্কি
আকাশসীমা লঙ্ঘন করে
বুঝিয়ে দিল, সিরিয়ার দিকে নজর দিলে
খবর আছে।
যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে হবে তুরস্ককে।
সিরিয়ার ওপর
মার্কিন-তুর্কি নেতৃত্বে নো ফ্লাই জোন
করার
চিন্তাও বরবাদ। এই সুযোগ কাজে
লাগাচ্ছে তুরস্কের
কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে)
সিরীয় শাখা।
ইতিমধ্যে তারা সিরিয়ার ভেতরে
মুক্তাঞ্চল গড়ে
নিয়েছে। তুরস্কে অভিযান হলে এখন
তারা সিরিয়া
থেকে লড়তে পারবে।
মুখ পুড়ল ইসরায়েলেরও। সিরিয়ার পূর্ণ
পতনের পরে
লেবাননের প্রতিরোধ গুঁড়ানোর ইচ্ছা
ছিল তাদের।
আইএস নামক ফেউকে সামনে রেখে
বৃহত্তর ইসরায়েল
প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যেতে চাইছিল
তারা। আর
সৌদিরা তো ইয়েমেনকে তছনছ করে
ইরানের ডানা
ছাঁটছিলই। মোদ্দাকথা, মধ্যপ্রাচ্যকে
ভাগ-বাঁটোয়ারা
করার পরিস্থিতি তৈরিই ছিল ‘ইসলামিক
স্টেট’
লেলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য। আসল যুদ্ধে
নামার আগে
পুতিনকে তাই যুক্তির যুদ্ধেও নামতে
হলো।
বিশ্বদরবারে তিনি বললেন,
‘প্রেসিডেন্ট ওবামা
প্রায়ই আইসিসের হুমকির কথা বলেন।
ভালো, কিন্তু কে
তাদের সশস্ত্র করল? কে এই বিদ্যমান
রাজনৈতিক
পরিস্থিতি সৃষ্টি করল? কে ওই এলাকায়
অস্ত্র
জোগাল? সিরিয়ায় কারা যুদ্ধ করছে, তা
আপনারা
সত্যিই জানেন না? তাদের বেশির ভাগই
ভাড়াটে
যোদ্ধা। টাকার বিনিময়ে তারা লড়ে।
যে বেশি
দেবে, তারা তাদের হয়েই কাজ করবে।
আমরা জানি,
কত টাকা তাদের দেওয়া হয়েছে...যুক্তরা
ষ্ট্র বলে,
“সিরিয়ার গণতান্ত্রিক সভ্য বিরোধী
পক্ষকে
আমাদের সাহায্য করা উচিত। ” আর
তারা সাহায্য
করল, অস্ত্র দিল এবং তারা যোগ দিল
আইসিসে। এর
থেকে এক ধাপ এগিয়ে ভাবা কি
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে
অসম্ভব? আমরা এ ধরনের কার্যকলাপ
সমর্থন করি না।
আমরা মনে করি, এগুলো ভুল।’
ইতিহাস এ মুহূর্তে পুতিনের পক্ষে।
একদিকে মার্কিন-
ইসরায়েলি-সৌদি-তুর্কি জোট,
অন্যদিকে রাশিয়া-
চীন-ইরান-সিরিয়া-হিজবুল্লাহ জোট।
ইরান ও
হিজবুল্লাহর যোদ্ধারাও যোগ দিয়েছে
আসাদের
সেনাদের সঙ্গে। আসাদ বটেই দুঃশাসক,
কিন্তু
আসাদহীন সিরিয়ার অবস্থা হবে
লিবিয়ার মতো,
সেটা কারও চাওয়া হতে পারে?
গাদ্দাফি হুঁশিয়ারি
করেছিলেন, তাঁকে হত্যা করা হলে
লিবিয়া দোজখ
হবে। হয়েছেও তাই। কার্যত, সভ্যতার
সূতিকাগার
সিরিয়া ও ইরাক ধ্বংসের দায়
যুক্তরাষ্ট্রের। গণতন্ত্র
ও বিপ্লব রপ্তানিযোগ্য নয়, হোক তা
লিবিয়ায় বা
আফগানিস্তান ও চেকোস্লোভাকিয়ায়।
মুক্তি কেউ
কাউকে দিতে পারে না, তা স্থানীয়
জনগণের নিজস্ব
অর্জনের বিষয়।
ক্লিনটন ও বুশ মধ্যপ্রাচ্যে ‘সভ্যতার যুদ্ধ’
আর পূর্ব
ইউরোপের বলকান অঞ্চলে ‘গণতন্ত্রের
যুদ্ধ’ উসকে
দিয়েছিলেন। তার ফল যুদ্ধ ও জাতিগত
গণহত্যায়
লাখো প্রাণের অপচয়। এই দায়
পশ্চিমারা এড়াতে
পারে না। ইউক্রেনে এলিট বিপ্লব
ঘটিয়ে রাশিয়াকে
অপদস্থ করতে গেলে পুতিন রুশ ভালুকের
থাবা
চালালেন। ইউক্রেন থেকে কেটে
ক্রিমিয়াকে
রাশিয়ার অঙ্গীভূত করলেন। সিরিয়ায়ও
তারা দেখাল,
তারা যা করে, ভেবেচিন্তে করে। আর
তা নিরন্তর ও
এবং অব্যর্থ। আফগানিস্তানের ভুল তারা
এখানে
করছে না, মাটিতে রুশ বুটের পাড়া পড়ছে
না। মুফতে
রুশ সমরাস্ত্রের বিজ্ঞাপনও করা গেল।
অস্ত্র-ব্যবসায়
কাজে লাগবে।
যাহোক, নতুন মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনা
ভেস্তে যেতে
দেখে সাবেক মার্কিন নিরাপত্তা
উপদেষ্টা
জবিগনিউ ব্রেজেনিস্কি সামাল সামাল
আওয়াজ
তুলছেন। বৈশ্বিক মার্কিন আধিপত্য
কায়েমে ইসলামি
মৌলবাদীদের ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহারের
বুদ্ধিটা তাঁরই।
এ জন্য তাঁকে বলা হয় জঙ্গিবাদের
গডফাদার। গত
রোববার পলিটিকো ম্যাগাজিনে তিনি
লিখেছেন যে
সিরিয়ায় মার্কিন ‘অ্যাসেটে’ রুশ
হামলা চলতে
থাকলে যুক্তরাষ্ট্র যেন রাশিয়াকে
প্রতিশোধের
হুমকি দেয়। গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা
পরিভাষায়
‘অ্যাসেট’ বলা হয় অন্য দেশে সক্রিয়
এজেন্টদের। এ
এক দারুণ লুকোচুরি খেলা। সিরিয়ায়
কালো মুখোশ
পরা জঙ্গিরা মারা পড়ে, উহ্আহ্ করে
আমেরিকা!
পুতিন এই প্রক্সি ওয়ার বা ছদ্মযুদ্ধকে
সরাসরি করে
তুললেন। মার্কিনি রাষ্ট্রের ভূরাজনীতি
ধর্মযুদ্ধের
মোড়কে আচ্ছাদিত ছিল। মুসলিমদের
বিভক্ত ও শাসন
করা হচ্ছিল। রুশ হস্তক্ষেপে সবার ছদ্মবেশ
মায় গায়ের
কাপড় পর্যন্ত খুলে পড়ল। ভালো সন্ত্রাসী
আর খারাপ
সন্ত্রাসীর মধ্যে তুলনা করার নিষ্ঠুর
কৌতুক আর নয়।
জেহাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের
চাতুরীর ঝালর
খসে পড়ার পরে পৃথিবী আর আগের মতো
থাকল না।
পরাশক্তিদের এই মুখোমুখি অবস্থানে
শত্রু-মিত্র
নির্ধারণ সহজ হবে বিশ্ববাসীর। জগতের
লাঞ্ছিত-
ভাগ্যহত মুসলমানদের এখন ভাবতে হবে,
মন্দের ভালো
নেবে নাকি ভালোর মন্দ? ওয়াহাবি-
সালাফি
জঙ্গিবাদ ভালো নাকি ইরান
+হিজবুল্লাহ+আসাদ
+পুতিন ভালো?
ছাগল তথা জঙ্গিরা নড়ে খুঁটির জোরে।
মুক্তিযোদ্ধারা লড়ে জনতার অংশ হয়ে।
আর
পরাশক্তিরা লড়ে সম্পদ ও ক্ষমতার
স্বার্থে। সিরিয়ায়
আসাদ সরকার টিকে যাচ্ছে, আইএসের
অবসান হচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আধিপত্যের যুদ্ধে
ধর্মের
হিংসাত্মক ব্যবহার শেষ হবে কি?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শাস্ত্র তাই বলে - ধর্মের কল বাতাসে নড়ে!!

আমেরিকার নোংরা খেলাকে স্পষ্ট করে দেবার জন্য পুতিন ধন্যবাদ পেতেই পারে।

আর মুসলমানদের লেবাসে আটকে রাখা অমুসলিম আমেরিকার তাবেদার শয়তানদের বিতারিত করে প্রকৃত মুসলিমদের জাগার সময় বুঝি হল। আত্ম শক্তি আর নিজস্বতা নিয়ে তারা এখনও যদি না দাড়াতে পারে- তবে চিরকালই অন্যের খেলার পুতুল হয়েই থাকতে হবে! সেই লরেন্স অব আরাবিয়ার চল চাতুরি থেকে আজকের আবু বকর খলিফাই হোক!!!

চমৎকার বিশ্লেষনে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.