![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে কি লিখবো সেটা বুঝতে পারছি না। আমি এখানে একদমই নতুন। লেখায় ভুল ত্রুটি হলে অবশ্যই জানাবেন। আমার লেখা গল্প ভালো লাগলে অবশ্যই জানাবেন। এছাড়াও আমাকে ফেসবুকে পেতে পারেন এই লিঙ্কে গিয়েঃ https://www.facebook.com/maskneon
"এই মামা রাখো।" রিকশাওয়ালাকে রিকশা থামাতে বলল অভ্র। আজ কপালে শনি আছে ভাবছে সে। আজকেও বড্ড দেরি করে ফেলেছে ও। ওর নিজেরই বা কি করার আছে? সকাল থেকে ঝুম বৃষ্টি। একটা রিকশা ও নাই রাস্তায়। যাও একটা পেয়েছে তাও দ্বিগুণ ভাড়া চেয়েছে। অগত্যা তাতেই রাজি খুশি হয়ে যেতে হল।
"আজ ও তুমি লেট। আর এদিকে সেই কখন থেকে আমি তোমার জন্য দাড়িয়ে আছি সেটা তোমার খেয়াল আছে? এই বৃষ্টিতে অর্ধেকতো ভিজেই গেছি।" এভাবেই অভ্রর প্রতি রাগ প্রকাশ করলো নীলা। আর অভ্র একদৃষ্টিতে দেখছে নীলাকে। বেশ সুন্দরী দেখাচ্ছে মেয়েটাকে। ফর্সা গালদুটো লাল হয়ে আছে রাগে। বাতাসের কারনে মুখের ডানপাশটায় কিছু চুল এসে সামান্য ঢেকে রেখেছে মুখের কিছু অংশ। রাগে তিরতির করে কাঁপছে নীলার ঠোঁটজোরা। বাম পাশে ঠোঁটের নিচের ছোট্ট তিলের জন্য নীলার সৌন্দর্য যেন কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে।
"এভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেন?" নীলা রাগ ঝাড়লো।
"রিকশায় উঠে আসো।" বাম হাত দিয়ে আলতো করে নীলার হাত ধরে ওকে রিকশায় টেনে তুলল অভ্র।
"তোমার এতো সময় কেন লাগলো?"
"বৃষ্টিতে রিকশা পাওয়া যাচ্ছিলো না।" নীলার জেরার মুখে অভ্র উত্তর দিলো। উত্তরটা মনে হচ্ছে নীলার মনপুত হল না। রাগী রাগী চোখে তাকিয়েই রইলো অভ্রর মুখের দিকে। অভ্রর ভালো লাগছে। ও চায় নীলা ওর উপর রাগ করুক। রাগলে নীলাকে সত্যিই অনেক বেশি সুন্দর লাগে। অভ্রর বুকের বাম পাশের রিকশার পাশটায় বসে আছে নীলা। রিকশা চলছে।
"এই মামা পর্দা নাই? একদম ভিজে যাচ্ছি তো!" রিকশাওয়ালাকে প্রশ্ন করলো নীলা।
"গেরেজ থেইকা পর্দা লওনের টাইমটা ও তো দিলো না মামায় আমারে। নিজেই আমার রিকশাটা টাইন্না বাইর করলো গেরেজ থেইকা। আমারে কইল তুমি জলদি চালাও।"
আবারো অভ্রর দিকে তাকিয়ে রইলো নীলা।
এবার পিঠের পিছন থেকে ডান হাত বের করে আনল অভ্র। রজনীগন্ধার ৫টা সটীক হাতে করে বেরিয়ে আসলো। এবার নীলার চোখগুলো উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। এক নিমেষেই সব রাগ পানি। প্রিয় ফুল বলে কথা!!
"এই বৃষ্টির সময় তুমি কোথায় পেলে এই ফুল?" উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে প্রশ্নটা করলো নীলা।
"কিছু কিছু ফুল বিক্রেতা বৃষ্টির মধ্যেও ফুল বিক্রি করে।" স্বল্প শব্দে নিচুস্বরে জবাব দিলো অভ্র।
ইতিমধ্যে রিকশা শাহবাগ পার হয়ে টিএসসির দিকে যাচ্ছে। ফুটপাথে কিছু বাচ্চা ছেলে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মার্বেল খেলছে। একজন পথচারীকে কাদাপানিতে ভিজিয়ে দিয়ে সাঁই করে ছুটে চলে গেলো একটা লাল রঙের মিতসুবিশি গাড়ি।
নীলা তাকিয়ে আছে অভ্রর দিকে। মায়া লাগছে ছেলেটার জন্য। নীলা জানে অভ্র তাকে খুব ভালোবাসে। নীলা নিজেও অভ্রকে খুব ভালোবাসে। নীলার মনে পড়ে যায় ওদের প্রথম পরিচয়ের স্মৃতি। পাঁচ বছর আগের সেদিনটা ও ছিল বৃষ্টির দিন। ছাতা মাথায় করে দাড়িয়ে থাকা এবং কড়া করে ধমক দেয়া সেই ছেলেটি যে শেষ পর্যন্ত নীলার জীবনেই আসবে তা সে কখনোই ভাবেনি নীলা। ভাববেই বা কিভাবে? অপরিচিত একটা ছেলে ছিল তখন। আর এখন নীলার মনে হয় ও নিজের থেকেও বেশি চেনে অভ্রকে। নীলা হাসে। অভ্র তাকায় নীলার মুখের দিকে। এখন মনে হচ্ছে নীলাকে আরও বেশি সুন্দরী মনে হচ্ছে। অভ্র নীলার হাতটা ধরে রাখে। ভালো লাগে ওর। ওদের প্রনয়ের কথা দুই পরিবারের সবাই জানে।
হঠাৎ ফ্যাকাসে হয়ে গেলো নীলার মুখটা। পুরনো ভয়টা জাগ্রত হয়ে উঠলো অভ্রর মনে।
"মামা তাড়াতাড়ি ঢাকা মেডিক্যাল যাও। তাড়াতাড়ি কর মামা" অভ্র চেচিয়েই রিকশাওয়ালাকে কথাটা বলল।
নীলার মনে হল মাথার ভেতর কেউ হাতুড়ি দিয়ে জোরে জোরে আঘাত দিচ্ছে। নীলা বুঝতে পারছে একটু পরই ও অচেতন হয়ে যাবে। ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে ওর দৃষ্টি। মনে হচ্ছে কেউ নীলা নীলা বলে ওকে ডাকছে।
"নীলা! এই নীলা! নীলা ..." অচেতন নীলাকে এভাবেই ডাকল অভ্র। সেই পুরনো ভয়টা আবারো ফিরে এসেছে। ব্রেইন টিউমার। এবার হয়তো নীলাকে নিয়েই যাবে ওর কাছ থেকে। ডাক্তার এমনটাই বলেছিল দুই বছর আগে যখন ওর মাথায় এই ব্যথাটা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল।
৩ ঘণ্টা পর নীলা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখল ওর মুখে একটা অক্সিজেন মাস্ক পরানো হয়েছে। ওর ডান পাশে ওর হাত ধরে বসে মাথা নিচু করে নীরবে কাঁদছে অভ্র। দুই পরিবারের প্রায় প্রতিটা সদস্যই বাইরের দরজায় ভিড় করেছে। মুরুব্বীরা দোয়া করছেন আল্লাহ্র দরবারে। নীলার চোখের কোনা দিয়ে গড়িয়ে পড়লো অশ্রু। ও ভাবছে ও হয়তো আর পারবে না ওর ভালোবাসার মানুষটার কাছে সারাজীবন থাকতে। স্বল্পভাষী অভ্র কেঁদেই চলেছে। পাগলের মত ভালোবাসে নীলাকে। যেকোনো ভাবে ও নীলাকেই চায়। হঠাৎ নীলার হাত স্পর্শ করলো অভ্রর অশ্রুভেজা গাল। চমকে উঠলো অভ্র।
"তোমাকে আমি অনেক বেশি ভালবাসি অভ্র।" অশ্রুর স্রোতে ভেসে উঠলো নীলার চোখ।
অভ্রর মনে হচ্ছিলো ওর বুক ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। বের হয়ে আসতে চাইছিল বুকফাটা আর্তনাদ। বাহিরে কালো আকাশটা তখনো কেঁদে চলেছে। মুষলধারায় বৃষ্টি পরছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৩৪
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
কাহিনীতে খুব একটা বৈচিত্র্য পেলাম না। তবে খারাপ না।