নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনের কথা বলে যাই

নিঝুমবাবুই

বলি ও লিখি, কারণ বলতে বলতে লিখতে লিখতে বদল হয়, পরিবর্তন হয়।

নিঝুমবাবুই › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণ আদালত থেকে গণজাগরণ মঞ্চ এবং ঘাতকদের ফাঁসি : শহীদ জননীর মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের দায়।

২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:১৮

৯০ এর গণ অভ্যুত্থানের পরে আরো একটি বড় আন্দোলন গড়ে উঠে বাংলাদেশে। আমার মতো যারা এখন ৪০+ নাগরিক তাদের হৃদয় থেকে 'ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'র সেই মহান আন্দোলনের ঘটনাবলি কখনোই মুছে যাবে না। লক্ষ লক্ষ মানুষ সেই আন্দোলনে ছুটে যেতেন শহীদ জননীর ডাকে। সারা জাতি একতাবদ্ধ হয়েছিলো ৭১ এর ঘাতকদের বিচারের জন্য। আর গণ আদালতের রায়ের দিনে যত লক্ষ মানুষের সমাবেশ হয়েছিলো, ৭১ এর পরে এতো মানুষ কোন সমাবেশে হয়েছিলো কিনা জানি না।
সেই আন্দোলনে আমার মতো যারা নিয়মিত গিয়েছিলেন, তারা সবাই যেতেন প্রাণের টানে। আন্দোলনের এতই শক্তি ছিলো আমার মতো ঘরকুণো মানুষগুলোও কাতারে কাতারে ছুটে যেতো। সেই আন্দোলন নিয়ে যতটা ইতিহাস লেখা প্রয়োজন ছিলো, হয়তো তার জন্য সময় লাগবে।
কিন্তু মহান সেই আন্দোলনের দাবি কিন্তু সত্যি সত্যি এই বাংলার মানুষ আদায় করছে। হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সেই আন্দোলনে যারা ছিলেন তারা সম্ভবত ঘরে থাকতে পারেন নি, গণজাগরণ মঞ্চের সেই আন্দোলনে। আমিও পারি নি। সেই আন্দোলনে নিয়মিত যাওয়ার জন্য আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যাপক আর্থিক এবং নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এ রকম হাজার হাজার মানুষ নানাভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে। অনেকেই চাকুরিও হারিয়েছেন।
কিন্তু কেনো গেছি? ওই যে শহীদ জননী হৃদয়ে যে বীজ বপন করে দিয়েছেন, তা তো বয়সের সাথে সাথে আলো বাতাসে ভালোভাবে বেড়ে উঠেছে।
কেন দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অপরিহার্য, তা তো বুঝিয়েছেন শহীদ জননী। পাকিস্তানী দালালদের চিনতাম কীভাবে? এরা শহীদ জননীকে 'জাহান্নামের ইমাম ' বলতো। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস - বাংলার মানুষকে শহীদ জননী তাদের বিচারের যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তার মৃত্যুর দুই দশক পরে সত্যি সত্যি তা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
আমরা যারা অসম্ভব মনে করতাম, শহীদ জননী তা সম্ভব বলতেন এবং তিনি বলতেন বিচার হতেই হবে এবং হবেই। এবং বিচার এখন ঠিকই হচ্ছে।
আমরা হয়তো অনেক কিছু ভুলে যাই। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন যখন শুরু হয়, গিয়ে দেখি সেখানে শহীদ জননীর কোন কথা নেই, তার ছবি নাই - অনেকের ছবি সেখানে আছে। এই ফেসবুকেই তার প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আন্দোলনের ৭ম কী ৮ দিনে শহীদ জননীর ছবি শোভা পায়। এবং আস্তে আস্তে তা কেন্দ্রিক হয়ে উঠে। কিন্তু আমার কাছে ওই ৭-৮ দিন খুব তাৎপর্যপূর্ণ। ওই কয়েকদিন কী করে শহীদ জননীকে ভুলে আন্দোলনে চলেছিলো?
একটা আন্দোলনের ফসল পেতে আমরা আড়াই দশক অপেক্ষা করলাম এবং এটি একটি অসাধারণ সফল আন্দোলন। ঠিক ২০০৭ সালেও বিশ্বাস করা অসম্ভব ছিলো যে মহা প্রতাপশালী ( এবং যাদের বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আছে) ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে এই দেশে!
সেই অসম্ভব ঘটনা ঘটাতে যিনি কোটি মানুষের হৃদয়ে আশা জাগিয়েছিলেন - তিনি শহীদ জননী জাহানারা ইমাম।
এখন সময় হয়েছে, শহীদ জননীর কাছে এ জাতির অনেক দায় আছে, ঋণ আছে - তা কিছুটা শোধ করার।
অনেক কিছুই তার জন্য আমাদের করতে হবে। আপাতত একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাই তাঁর নামে যেখানে ৭টি হল থাকবে ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠদের নামে।
শহীদ জননী ঘুমিয়ে আছেন, আমরা জেগে আছি। ৭১ এর ঘাতকদের বিচার অব্যাহত রেখেই আমরা তার আত্মাকে শান্তি দিতে পারবো। এ বিচার অব্যাহত রাখাও দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার পারি দেবার মতোই।
সাত সাগড় রক্তের বিনিময়ে যে জাতি স্বাধীনতা এনেছে, সেই জাতি ঘাতকের বিচারে আরো ত্যাগ স্বীকার করবেই করবে, তবু যে আগুন শহীদ জননী জ্বালিয়ে গেছেন, ঘাতকের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত সে অগ্নিশিখা জ্বলবে আমাদের চেতনায়।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১:০৮

জুলহাস খান বলেছেন: মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে। আমার প্রশ্ন জাহানারা ইমাম কি করে ‘শহীদ জননী’ হয়?

২| ২৮ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ২:৩৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: @জুলহাস: জাহানারা ইমাম সম্পর্কে কি আপনি জানেন ??

৩| ২৮ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৩১

মায়াবী রূপকথা বলেছেন: জুলহাসেরা কাদের মোল্লার বীরত্ব ভালো জানে।

এ মহিলা পোড় খাওয়া নারী। গনজাগরনমঞ্চ বা এ সে মঞ্চ কি করেছে কেন করেছে কিভাবে করেছে এগুলো নিয়ে প্রশ্ন হয়, কিন্তু উনার থেকে পুরো জাতিরই শেখার আছে প্রস্নাতীত ভাবে।

৪| ২৯ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৬:২৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.