![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখা যাক, গত ৫ দশকের সেরা সুযোগগুলো কী কী ছিলো -
১. ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে যারা একটু দূরদর্শী ছিলেন, তারা অন্তত বিত্ত বৈভবে দারুণ আছেন (বুদ্ধিমানদের কথা বলছি, চালাকদের নয়), তারা একটা নতুন স্বাধীন দেশের সুযোগগুলো ঠিকভাবে নিতে পেরেছেন এবং কাজেও লাগিয়েছেন। সুযোগ কিন্তু বার বার আসে না!
২. ১৯৭৬ এর পরে বিশ্বব্যাংক বন্যার স্রোতের মতো টাকা ‘ঋণ’ দিয়েছে। সেই টাকা ব্যাংক লোনের নাম ব্যবসায়ীদের হাতে ফ্রি দেয়া হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়েছে অনেকে – এভাবেই বাংলাদেশে ব্যবসায়ী শ্রেণি তৈরি হয়েছে (সব দেশেই নাকিই এভাবেই রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমেই ব্যবসায়ী শ্রেণি তৈরি হয়)। যদিও জনগণ এখনও ঋণের বোঝা টানছে। সুযোগ কিন্তু বার বার আসে না!
৩. ১৯৭৮ সালের এনজিও অ্যাক্টের ফলে হাজার হাজার কোটি টাকা ‘অনুদান’ হিসাবে এনজিওরা পেয়েছে এবং লুটপাট করে খেয়েছে। সেই সব লুটপাটকারী এনজিও এখন বড় বড় কর্পোরেট হয়েছে। কিন্তু এখন সেই সোনালী দিন আর নেই। সুযোগ কিন্তু বার বার আসে না!
৪. ১৯৮২-৮৩ থেকে শুরু হয়েছে গার্মেন্টস ব্যবসা। সেই সময়ের কোন কোন গার্মেন্টসের কর্মচারীরাও নিজেরাই গার্মেন্টস ব্যবসা করে বিজিএমই এর সভাপতিও হয়েছেন এবং শত শত নয় তারা হাজার কোটি টাকার মালিক। কিন্তু সেই ব্যবসা যতো বড় হচ্ছে, মাঝারি আর ছোট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সুযোগ ততো কমছে। আগামীতে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হবে কিন্তু তাতে অন্যদের সুযোগ কম। বড় বড় ব্যবসায়ীরা মোটামুটি এখন পুরো গার্মেন্টস ব্যবসা দখল করে ফেলেছে। সুযোগ বার বার আসে না!
৫. ১৯৯০ সালের পরে রিয়েল অ্যাস্টেট, ব্যাংক আর হাসপাতাল ব্যবসার সোনালী যুগ শুরু হয়ে যায়। রাজনৈতিক নেতারা বিশেষ করে ছাত্রনেতাদের বিশাল সম্ভাবনার দূয়ার খুলে যায়। অনেকগুলো বেসরকারী ব্যাংকের জোয়ার আসে। এক কোটি টাকার নিচেও বেসরকারি ব্যাংকের ডিরেক্টর হওয়া গেছে, আজ তার মূল্যমান কোটি কোটি টাকা। ১ কোটি টাকায় টিভি চ্যানেলও খোলা গেছে। আজ কি তা সম্ভব? রিয়েল অ্যাস্টেটে ঘুষ, দুর্নীতির টাকা স্রোতের মতো ঢুকেছে আর শত শত কোম্পানি দাড়িয়ে গেছে। টানা ২০ বছর সুপার ডুপার ব্যবসা করেছে – রড ব্যবসা, সিমেন্ট ব্যবসা, স্যানিটারি ব্যবসার স্বর্ণযুগ গেছে এসময়ে। যারা কামানোর তারা বিপুল কামাই করে নিয়েছে। সুযোগ বার বার আসে না!
৬. ২০১৬-২০২৫ কিন্তু চাকুরির দশক নয়! চাকুরির দশক বাংলাদেশে চলে গেছে। এই দশকটি উদ্যোক্তাদের দশক। একসময় লেখাপড়া মানেই চাকুরি ছাড়া আর কিছুই ঢুকাতে পারেনি – না রাষ্ট্র, না পিতামাতা, না শিক্ষকরা। সবাই চাকুরির পিছনে ছুটিয়ে বড় একটা ক্ষতি করেছেন। সবাই চাকুরি করলে চাকুরিজীবীদের বেতন কারা দিবে, রাষ্ট্র চালানোর খরচ কে দিবে? বাজেট যেই হারে লাফিয়ে লাফিয়ে বড় হচ্ছে! কয়েক লক্ষ কোটি টাকার বাজেট? টাকা আসবে কোথা থেকে? বেতন তো আসে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য থেকে। ব্যবসা হলেই ভ্যাট আসবে, ট্যাক্স আসবে - বেতন হবে।
৭. ২০১০ সালের পরে লুটেরা, ধনী, টাউট, বাটপার ছাড়াও অন্যদের জন্য উদ্যোক্তা হওয়ার দুয়ার খুলে গেছে। দেশে এখন বিদ্যুৎ সংকট আসলেই নেই। তৈরি হয়েছে বড় আকারের ভোক্তা শ্রেণি। কত ধরণের ব্যবসা যে হচ্ছে, তার হিসাব নেই।
চাকুরির ফাঁকে ফাঁকে অনেকেই সন্ধ্যায় বসছেন নতুন নতুন কোম্পানি খুলার মিটিং। এবং খুলছেন। রেষ্টোরেন্টে বসে কয়েকজন যেন কী ফুসুর ফুসুর করছে!! আসলে ফুসুর ফুসুর করছে না! ওরা কিন্তু আগামী দিনে উদ্যোক্তা! একটু গুছিয়ে নিয়ে অনেকেই চাকুরি ছাড়ছেন এবং ছাড়বেন। যদিও তাদের একটু বেশি বয়সে নামছেন, তবে তাদের অভিজ্ঞতা এখানে একটা বড় সম্পদ।
সুযোগ কিন্তু এবারই:
যারা চালাক তারা তথ্য আর সুযোগগুলোকে লুকিয়ে রেখে নিজেরাই এগিয়ে যেতে চায়। এটা আমাদের দেশে একটা বড় সমস্যা। দেশে যে পরিমাণ সুযোগ তৈরি হয়েছে, তার তথ্যগুলো আমরা কোথাও খুব সহজভাবে পরিষ্কারভাবে পাই না।
কিন্তু এবার আশা করি ‘সম্ভাবনার ট্রেন’ মিস হবে না। তরুণদের উচিত চাকুরির নামে প্রতিদিন ২+২ =৪ , এইসব সহজ কাজ আর বসদের ঝাড়িকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার সাহস নিয়ে এখনি নেমে পড়া।
অনেকেই নেমে পড়েছে – গোপনে, গোপনে!
তুমিও নেমে পড়ো। তুমি কোন ব্যবসা করবে? আগে তোমার পছন্দ জেনে নাও, উত্তর পেয়ে যাবা।
ভারতে কর্পোরেটের উঁচু পদের যাদের বেতন সবচেয়ে বেশি তাদের ৩৫% চাকুরি ছেড়ে নিজেরাই উদ্যোক্তা হচ্ছেন। বাংলাদেশেও তাই হবে, হচ্ছে –তুমি কেনো পিছিয়ে থাকবা?
সুযোগ কিন্তু বার বার আসে না!
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সুযোগ কিন্তু বার বার আসে না!
+++++++