![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মধ্য রাতে হঠাৎ মুঠোফোনটি ভুমিকম্পের মত ভাইব্রেশন সহ ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোনটা কানে নিতেই “ হ্যালো স্লামলাইকুম, সভ্য মানুষটা কি জেগে আছে ?”
“জ্বী, ওলাইকুমসসালাম, হঠাৎ মধ্যরাতে এই সভ্য মানুষটা কে মনে পড়ার কারণ টা কি জানতে পারি?”
“সভ্য জগতের লোকজন এখন কি করে জনার ইচ্ছা হলো”
“তাহলে সভ্য জগতে আপনাকে স্বাগতম”
“Sorry, আমি আপনাদের সভ্য জগতকে বড় ভয় পাই?”
“না, না ভয় পাওয়ার কিছু নাই, এখনে একবার পা রেখে দেখুন আপনার পৃথিবীটা বদলে যাবে, আপনার স্বপ্নের প্রজপতিরা এখনে রঙ্গিন ডানায় ভর করে অমরাবতী দ্বারে নিয়ে যাবে আপনাকে’’।
“আমার স্বপ্নে প্রজাপতি ওড়ে না ......”
“তাহলে নিশ্চয় ফড়িং ওড়ে”
“তা উড়তে পারে, ছোট ছোট ফড়িং, বল্গা ফড়িং অনেক ফড়িং”
“ আচ্ছা ছোট বেলায় আপনি ফড়িং ধরেছেন ?”
“হ্যাঁ অনেক বার, আমি একটু introvert টাইপের ছিলাম তো তাই অনেক বার, একা একা ফড়িং এর পিছনে ছুটেছি । এক বার স্কুল থেকে আসার পথে বিশাল একটা ফড়িং দেখেছিলাম আমার মাথায় কি হল জানি না; মনে হল একে ধরতে না পারলে আমি আর বাঁচব না, আবার কিছুটা লোভ এই ভেবে এটা যদি ধরে শীলাকে দেখাতে পারি তাহলে ও যে কি খুশি হবে! তাই ছুটলাম ওর পেছনে, স্কুল মাঠ পেরিয়ে, কাঁচা রাস্তা তারপর ধানক্ষেত, তারপর একটা ছোট পাড়া, তারপর আবার ধান ক্ষেত, ততোক্ষনে সন্ধ্যা এরপর আমার ফড়িং আমার হাতে স্বপ্ন ফড়িং, তখন তাকিয়ে দেখি আমি যে জায়গায়, তা আমি চিনি না তারপরও ভয় হচ্ছিল না । শুধু শীলার হাসি মুখটা মনে হচ্ছিল ।"
"আপনি বাড়ি ফিরলেন কেমন করে ?"
"আমি প্রথমে একটা পাড়ায় ওঠেছিলাম তারপর একজন জিঙ্জেস করে পথ দেখে নিয়ে ছিলাম। এ দিকে ভাইয়া আর আম্মা আমকে খুঁজতে বের হয়েছে। পথে দেখা হয়ে গেল যাথারীতি প্রথমে আমার একটা থাপ্পর এর পর কান্নাকাটি যা হয় আর কি?
"আচ্ছা আপনি ফড়িং কি দিয়েছিলেন শীলা কে?"
"আম্মার থাপ্পর খাওয়ার পর যখন প্রশ্ন করল কিই গেছিলি? কেন গেছিলি। আমি মুখ গোমড়া করে ফড়িং ধরতে বলে আর একটা থাপ্পরের জন্য অপেক্ষা করছি। ভাইয়া বলল ফড়িং ধরে কি করবি দেখি তোর ফড়িং। তখন একবার ভয়ে ভয়ে বলতে ধরেছিলাম শীলকে দিবো কিন্তু তখনি আমার বোকামির কথা মনে, শিলা তো তিন দিন আগে কলকাতা চলে গেছে ওর রক্ত বদলাতে তখন তো আমি অনেক কেঁদেছিলাম করণ কে যেন বলেছিল ও নাও আসতে পারে। লিউকোমিয়া কি তখন তো আর বোঝার কথা না । অথচ যখন আমি ফড়িং ধরতেছিলাম একবার ও মনে হয় নি ও নেই শুধু ওর আমার হাসি খেলার কথা ভেবেছিলাম! তাই সুতা বাঁধা ফড়িং টা ভাইয়াকে যখন দেখালাম, আম্মা বলল, প্রাণীকে এভাবে ধরতে হয় না, তখন ফড়িং টা ছেড়ে দিতে আমারা একটু কষ্ট হয় নি আজও হয়না। কিন্তু কিছু একটা মনকে শান্ত দিঘীর মত স্থির করে দেয়িছিল"।
"কিছু মনে না করলে আমি কি শীলা সম্পর্কে জনাতে পারি"?
না মনে করার কিছু নেই, তবে মনটা আজ সেই শান্ত দিঘির জল হয়ে গেল। এতে আর ঢেউ জগাতে মন চাইছে না........ অন্য কোন দিন।"
©somewhere in net ltd.