![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জানি এ ঠিক নয় তার পরও আমার মন তোর ফোনের প্রতীক্ষায় চেয়ে থাকে। কেন থাকে জানি না? আর মাঝে মাঝে দুচোখ ছাপিয়ে সুরমা কুশিয়ারার জল গড়ে পড়ে । এ ধারা কিছুতেই বাঁধ মনেনা আমি আটকাতে পারি না। তোকে ভূলব এ আমার সাধ্যের বাইরে; কখনো তাই সে দুঃসাহস করি নাই। কিছুদিন আগে আমার বার কাউন্সিলের ভাইভা ছিল খুব মিস করছিলাম তোকে, ভীষণ। অন্তত এ জন্য যে কেউ আমাকে মনে করিয়ে দিত ভাই্ভার দিনটায় আমি ঠিক মত প্রবেশ পত্র নিয়েছি কিনা, ভাইভা শেষ করে ফোনে এস.এম.এস পরতাম, তারপর ফোন, খারাপ হলে তোর শাসন, ভালো হলে দুষ্টুমি । ২১ তারিখে নিজের মত করে অত্যন্ত গুছিয়ে ভাইভা দিতে গেলাম যা তুই কখনো কল্পনাও করতে পারবি না। ঠিক মত সার্টিফিকেট নিয়েছে, প্রবেশপত্র নিয়েছি, নিজের টাই বেধেছি, অনেকের বেধেও দিয়েছি, জুতো রং করতেও ভুলিনি ।সকলেই আমার এই পরিপাটি চেহারার প্রশংসা করল পারফেক্ট এডভোকেট বলে। কিন্তু আমি তো জানি আমার বিশাল অপূণর্তা, তোকে ছাড়া আমি পরিপূর্ণ ক্যামনে হই বল। সকলের সঙ্গে আড্ডা দিলাম কারণ সাধারন ছুটি ঘোষণা হওয়ায় ভাইবা বাতিল হয়েছে।অথচ যে খবর টা আমি সবার আগে ফোন করে যাকে বলতাম তাকে বলতে পারছি না। আমার অনুভতি গুলো ভাষা গুলো যেন জেলখানার বন্দির গরাদ ধরে গুমরে মরছিল। অস্থির লাগছিল আমার, মাঝে মাঝে ভীষণ রাগ হচ্ছিল নিজের উপর, তোর উপর। আমার চিন্তা চেতনায় এ ভাবে মিশে আছিস কেন তুই? সেদিনটা খুব বাজে কাটল কিছুতেই মন বাসাতে পারলাম, আড্ডায় কোন মজা পেলাম না, ডিপার্টমেন্টের লাইজু আপুর সঙ্গে কথা বলে, চেম্বারের দোহায় দিয়ে পালিয়ে বাঁচলাম। কিন্তু তোকে ছাড়াতে পারলাম না কিছুতেই। চেম্বারে কোন কাজে মন বসাতে পারলাম না তাই কিছুক্ষণ ব্লগ ঘাটাঘাটি করে একটা পোষ্ট দিলাম আমাদের এডমিশন টেষ্টের পর বাড়ি ফেরার কাহিনীটা নিয়ে। কিন্তু ছায়ার মত রয়ে গেলি আমার বাসায়, জোর করে ঘর গোছানোর চেষ্টায়। তারপর এখটা ঘুম দিয়ে তোর থেকে একটু মুক্তি পেলাম।
পরদিন শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে স্বাভাবিকই ছিলাম, একটা ইংলিশ সিনেমা দেখতে বসলাম, দু’জন ক্লাশমেট পালিয়ে বিয়ে করে ইউরোপ যাচ্ছে তাদের যাত্রা মনে করিয়ে দিল বন্ধুদের ফাকি দিয়ে তোর আমার রাজশাহী থেকে বাড়ি আসা, বাগুড়া হয়ে, আমার প্রথম মুঠোফোন কেনার কথা। ভাবতে ভাবতে আমি খেই হারিয়ে ফেললাম হঠা বৃষ্টির মত দুচোখ ছাপিয়ে জল পড়া শুরু হল। তাই তাড়াতাড়ি বন্ধুদের আড়াল করতে বাথরুমে চলে গেলাম। আমি দেখেছি কিছুক্ষণ বেসিনে হাত ভিজিয়ে রাখলে চোখের জল পড়া বন্ধ হয়ে যা্য়, কিন্তু সেদিন কিছুতেই বন্ধ হচ্ছিল না, আমার হাত প্রায় বরফ ঠান্ডা করে মুখে জলের ঝপটা দিয়ে বেরুলাম। সেদিন লিটনের ভাইবা ছিল ও আসল আমাকে বার বার ওর সাঙ্গে যেতে বলল কিন্তু আমি গেলাম না, সুমন লিটন সবাই চলে যাবার পর, আমি বাসায় একা খেয়ে সিনেমা দেখার চেষ্টা করছি, হঠাত তু ই এলি বৃষ্টির ডানায় ভর করে, বাইরে তখন ঝমঝম বৃষ্টি, এক সময় বৃষ্টির প্রতি ফোটাকে তোর স্পর্শ মনে করতাম, তাই ছাদে গেলাম, পাগলা বাতাস বইছিল, বৃষ্টির ছাঁট শরীরে বর্ষার মত বিধঁছিল, তখন মনে হল আচ্ছা তুই ও কি বৃষ্টিতে ভিজছিস? এক সময় আমরা এক স্কুলের আকাশের বৃষ্টিতে ভিজেছে, এক পাড়ার আকাশের বৃষ্টিতে ভিজেছি, তারপর এক শহর, তারপরে এক দেশ, কিন্তু আজ শুধু আকাশটাই এক আর সবকিছু ভিন্ন, আমার অংশে আজ ভীষণ বৃষ্টি ঝরছে, তোর অংশে হয়ত ঝকঝকে নীল। এক আকাশের নিচে তবু কত তফাত, কত দূরত্ব, মাইল-কিমি হিসেবে দুই অথবা তিন ডিজিটের দূরত্ব, কিন্তু অভিমানের স্কেলে মাপলে, কয়েক শ’ আলোকবর্ষ অথবা তারও বেশী। আমরা আজ অভিমানের খাঁচায় বন্দি, যার লৌহ কপাট ভাঙ্গা খুব সহজ হলেও যা আমরা চাইলেই পারি না, কিন্তু ভাঙ্গে না । জানি না এ খাঁচা কেমন করে ভাঙ্গব? কারাবাসী অনুভূতি গুলো মাঝে মাঝেই বিদ্রোহ করে। তোর জন্ম দিনে আবার পংকজ উদাসের ক্যাসেট আর গোলাপ হাতে তোর ব্যালকুনির সামনে দড়াতে চায়। প্রীতিদের লাল পুকুরের পাড়ে দোতালা বাড়ির দেয়ালে Happy Birth Day ..লিখতে চায়, তোর প্রতীক্ষায় স্কুল গেটে দাড়িয়ে থাকতে চায় বিদ্রোহী অনুভুতি গুলো।
©somewhere in net ltd.