গল্পঃ বড় লোকের মেয়ে

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:২৭

-ভালোবাসিস(অবন্তী)
-কাকে(রাকিব)
-আমাকে
-হুম
-ঠাসসসসসস
-জানিতো আমাদের মতো গরীবের ছেলের এই আধুনিক যুগে কোনো ভালোবাসার দাম নেই।কারণ আমরাতো গরীব আর গরীবতো বড়লোক দের বিষ।আমাদের ভাগ্যে ভালোবাসা নেই আছে শুধু এই থাপ্পর আর দু ফোঁটা চোখের নোনা জল
-ঠাসসসসসস
এবার গালে হাত দিয়ে অবন্তীর দিকে তাকালাম ।দেখলাম ওর চোখে আগুনের প্রভাব মনে হয় আমাকে পুড়িয়ে ফেলবে।দুটো থাপ্পর খাওয়ার পর চোখ দিয়ে কখন জি দুফোটা নোনা জল বয়ছে তার খেয়াল করিনি তারপর চোখের পানি মুছে অবন্তীর দিকে না তাকিয়ে মাথা নিচু করে নিলাম
-তোকে প্রথমে কেন থাপ্পর মেরেছি জানিস
-কেন
-এত দিন আমাকে কাদানোর জন্য
-মানে ঠিক বুঝলাম না(একটু অবাক হয়ে)
-সেই প্রথম দিন থেকে আমি তোকে ভালোবাসি আর তুই এখন এসে আমাকে বলছিস তার পর তোকে কতো কষ্টে তোর সাথে বন্ধুত্ব করেছি।
-আমি কি জানি যে তুইও আমাকে ভালোবাসিস
-জানিসইতো মেয়েদের বুক ফাটে তবুও মুখ দিয়ে ভালোবাসি এই ছোট্ট শব্দ বের হয় না
-তাই
-তুই যখন কোনো মেয়ের সাথে কথা বলিস তখন আমার খুব খারাপ লাগে । বাসায় গিয়ে এমন কোনো রাত নেই যে আমি কাদিনি। তোকে এতটায় ভালোবাসি যে তোর পাশে অন্য কাউকে আমি মেনে নিতে পারিনা
-ঠিক আছে আজ থেকে আর কোনো মেয়েদের সাথে কথা বলবো না
-হুম আর দ্বিতীয় থাপ্পর তোকে কেনো মেরেছি জানিস
- না
-সব বড় লোকরা কি এক
-না
-তাহলে তুই বললি কেনো বড়লোকরা গরীবদের ঘৃণা করে
-করেইতো বলেইতো বলছি
-ঠাসসসসস
-কি হলো আবার মারলি কেন
-ভুল কথা বলার জন্য
-আমি আবার কি বললাম
-আমিসহ আমাদের পরিবারের সবাই গরীবদের ভালোবাসে আর তোকে একটা কথা বলি ভালো করে শুন
-হুম বলেক
-বললিনা গরীবদের অবহেলা করা এটা কি আমাদের মতো বড়লোকদের উচিত ,উচিত নয়। কারণ গরীবদের হাতের জিনিস আমাদের কাছে ভালো লাগে কিন্তু তারা যদি আমাদের গায়ে হাত দেয় তাহলে বড়লোকরা বলে তার শরীর নোংরা হয়ে গেছে।কিন্তু তাদের হাতের তৈরি পোশাক পরিধান করতে বড়লোকদের শরির নোংরা হয় না ।
আর তুই বললি যে আমি গরীবদের অবহেলা করি যার কারণে তোকে থাপ্পর মেরেছি
একি তুই কাদছিস কেনো
-কই নাতো
-একদম মিথ্যা কথা বলবিনা
-গরীবের প্রতি তোর এমন ভালোবাসা দেখে চোখ জল এসে গেলো
-থাপ্পরটা খুব জোড়ে লেগেছেনা
-হুম কিন্তু এখন ব্যথা কমে গেছে
-কেমন করে শুনি
_তুইও যে আমাকে ভালোবাসিস তাই
-কিন্তু আমিতো তোকে ভালোবাসিনা
-কেনো
-তুই কি আমাকে এখনো প্রপোজ করেছিস
-না
-তাহলে আমিও তোর ভালোবাসায় সাড়া দিব না
-ওকে ওয়েট করো
হাটু গেড়ে বসে
ওগো বড়লোকের রাজকন্যা তোমার ঐ ছোট্ট মনে এই গরীবের ক্ষাত মার্কা ছেলে একটু জায়গা দিবে
মনে রেখো তোমাকে কখনো কষ্ট দিবোনা
তোমায় নিয়ে থাকতে চাই আমার ঐ ভাঙ্গা কুঁড়ো ঘরে
তুমি কি আমার ঐ ভাঙ্গা কুঁড়ো থাকবে
-হুম আর তুমি মোটেও ক্ষাত নয়। তূমিতো আমার রাজকুমারচলোনা একটু নদীর তীর থেকে ঘুরে আসি
-হুম
আজ খুব খুশি লাগছে।কারণ অবন্তীর সাথে ঘুরতে
এভাবে আমরা সন্ধ্যা পযন্ত ঘুরলাম
অবশেষে মেসে চলে এলাম এসেই ডিংগা চিকা লুঙ্গি ড্রান্স দেওয়া শুরু । আমার এক রুম মেট বলল
-ঐ মিয়া আজ কি লাইগা ড্রান্স করুস তোরে আজ খুশি লাগছে কেনো
-মামা সেই কথা কসনা অবন্তীরে আজ মনের কথা কয়ে দিছি
-তাই নাকি সে কি বললো
-সেও আমাকে ভালোবাসে মামা সামথিং সামথিং চলছে আমাদের দুজনের মধ্যে
-তাই তাহলে এত বড় খুশির কথা আমাদের মিষ্টি কই
-আরে মামা এখনি মিষ্টি নিয়া আসতেছি চল
-হুম
আজ মেসের সবাইকে মিষ্টি মুখ করালাম । যখন ঘুমাতে যাব তখনি অবন্তীর ফোন
-হুম বলো
-কি করছো
-ঘুমাচ্ছি
-এই মিথ্যা কথা বলছো কেন ঘুমালে কি আমার সাথে কথা বলতে নাকি
-আরে এখন ঘুমাবোত তাই বললাম
-ওহহ কাল একটু পার্কে দেখা করতে পারবে
-কেন
-তোমাকে আসতে বলছি ব্যাস আসবে
-ওকে মহারানী শুভ রাত্রি
-হুম শুভ রাত্রি
-এই এই এই
-হুম কি
-ভালোবাসি
-আমিও
-কি
-ভালোবাসি
-পাগল একটা
-হুম তোমার জন্য খালি
-যাও এবার ঘুমাও কাল সকালে উঠতে হবেতো
-হুম ওকে তুমিও ঘুমাও
পরের দিন সকালে
-আরে মামা উঠেক কত বেলা হয়ছে জানিস
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় বারোটা বাজে।তারাতারি উঠে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে একটু বাহিরে বেরিয়ে পড়লাম ঘুরার জন্য বিকালে আবার অবন্তীর সাথে দেখা করতে হবে। এভাবে সময় কোন দিক দিয়ে চলে গেলো তার খেয়াল নেই
বিকালে পার্কে গিয়ে দেখি অবন্তী একাই আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।আমি গীয়ে বললাম
-এই কি ভাবছো
-তোমাকে নিয়ে
_আমাকে নিয়ে কি ভাবছো
-বলবোনা
-কেনো
-তুমি এত দেরি করে এলে কেনো
-ওহহ তাই বুঝি মহারানী একটু রাগ করে আসে
-মোটেও আমি রাগ করিনি আর তোমার উপর রাগ করলে আমি যখন তোমাকে দেখি তখন আমার সব রাগ কোথায় যেন হারিয়ে যায়
-কি জন্য ডেকেছো সেটাইতো বললে না
-তোমার সাথে আজকে ব্রেক আপ করবো তাই
-কি কই কেবল একদিন প্রেমের বয়স হলো এতেই আমি গালফ্রেন্ড ছাড়া আমার মতো অকরমার ঢেকি আর কোথাও নেই যে সামান্য ভালোবাসা রক্ষা করতে পারলো না (মনে মনে বললাম)
-এই কি ভাবছো
-ভাবছি তাহলে এক দিনেই সব শেষ
আমার এই কথা শুনে অবন্তীত অট্টহাসিতে মেতে উঠল
-একি তুমি হাসছো কেন
-তে কি হাসবো নাতে কাদবো তোমার মতো হাবলু আর কোথাও মনে হয় নেই
-এই খবর দাড় আমাকে হাবলু বলবেনা আমার একটা নাম আছে
-তোমার সাথে আমি ঝগড়া করতে আসিনি চলোতো একটু শপিং করতে যাবো
কি আর করবো বালিকার কথায় শপিং করতে চলে গেলাম ।একি বালিকাতো সব ছেলেদের পোশাক নিচ্ছে
-এই তুমি কি ছেলেদের পোশাক পড়বে নাকি
-না এগুলো তোমার জন্য
-আমি নিবো না
-তোমাকে নিতেই হবে
এভাবে আমাদের ভালোবাসার খুনশুটি চলতে থাকলো হঠাৎ একদিন বালিকা আমাকে ফোন করে বলল.........---
-
-অচেনা ছেলে (নীল রাজ্যের রাজকুমার)
-

০ টি +০/-০